নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
বন্ধুরা সন্তান হওয়া টা সম্পূর্ণ ভাবেই নির্ভর করে সৃষ্টিকর্তার ওপর। ছেলে বা মেয়ে যে সন্তানই হোক না কেন সে সন্তান যাতে সুস্থ সবল হয় সেই কামনাই করে থাকে বাবা এবং মায়েরা। কিন্তু অনেকের মনের মধ্যেই সন্তান নিয়ে আলাদা আলাদা বাসনা থাকে।কারও কাছে মেয়ে পছন্দের আবার কারো কাছে ছেলে সন্তান হওয়া অত্যন্ত পছন্দের। সমাজে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের গুরুত্বই সমান। সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তারা পরস্পরের পরিপূরক। তাই যে সন্তানই জন্ম লাভ করুক না কেনো তাকে সুন্দর ভাবে মানুষ করে তোলাই বাবা মায়ের প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য। বন্ধুরা আমাদের অনেকের মনের মধ্যেই কন্যা সন্তান বা পুত্র সন্তান লাভের বাসনা থাকে। এই বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভর করছে আপনার ওপর।
আর এই লেখার মাধ্যমে আপনাদের সাথে আলোচনা করব যে, কোন উপায় অবলম্বন করে আমরা কন্যা সন্তান বা পুত্র সন্তান লাভ করতে সক্ষম হব।
তবে লেখা শুরু করার আগে পরিস্কার এ বিষয়ে বলে রাখি যে, এই প্রতিবেদন কোনভাবেই শুধুমাত্র কন্যা সন্তান বা শুধুমাত্রই পুত্র সন্তান জন্ম দেওয়ার বিষয়টিকে উৎসাহিত করার জন্য নয়। এটি একটি গবেষণা মূলক তত্ত্ব। পুত্র বা কন্যা সন্তান যাই হোক না কেনো - সন্তান লাভ সব ক্ষেত্রেই জীবনের এক অনন্য অভিজ্ঞতা।আশা করি আপনারা এই লেখাটিকে একটি শিক্ষামূলক বিষয় হিসেবে বোঝার চেষ্টা করবেন।
বন্ধুরা কন্যা সন্তান নাকি পুত্র সন্তান লাভ করতে চান এই বিষয়টিকে ভাবার পূর্বে আগে ডিম্বপাত বা ওভুলেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে আপনাদের জানা প্রয়োজন এবং তার সঙ্গে জানা প্রয়োজন - শুক্রাণু বা Sperm কি করে কাজ করে? কারণ এই বিষয়টির ওপর নির্ভর করে সন্তান পুত্র হবে, নাকি কন্যা সন্তান হবে।
সন্তান হওয়ার জন্য নারী শরীরের ডিম্বাণুর সঙ্গে পুরুষের শরীরের শুক্রানুর মিলনের প্রয়োজন। ডিম্বাণুর এবং শুক্রাণুর মিলনের ফলেই সন্তানের ভ্রূণের জন্ম হয়। এ বিষয়টি নিশ্চই আপনি জানেন, সন্তান হওয়ার জন্য দুই ধরনের ক্রোমোজোম রয়েছে - একটি হল ''X'' এবং অপরটি হল ''Y''। একটি নারী শরীরের ডিম্বাণুর মধ্যে সর্বদাই X ক্রোমোজোম থাকে। অন্যদিকে একটি পুরুষের শরীরের শুক্রাণুর মধ্যে X এবং Y, দুই ধরনের ক্রোমোজোমই থাকে। যখন নারী শরীরের এক্স (x) ক্রোমোজোমের সঙ্গে পুরুষের শরীরের এক্স (x) ক্রোমোজোমের মিলন ঘটে, তখন কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।ঠিক উল্টো দিকে নারীর ডিম্বানুর এক্স(x) ক্রোমোজোম এর সঙ্গে পুরুষের শুক্রাণুর ওয়াই(y) ক্রোমোজোমের মিলন ঘটলে তখন পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। তাই সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে হবে সেটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে পুরুষের ওপর। এখানে মেয়েদের কোন ভূমিকা নেই। কিন্তু, তারপরেও আমাদের সমাজে এখনও অনেকক্ষেত্রে মেয়েদেরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে পুরুষকে আবার বিবাহও দেওয়া হয়। যেটা সম্পূর্ণরূপে অনৈতিক। কিন্তু, প্রশ্ন হলো কি করলে - পুত্র সন্তান বা কন্যা সন্তান হবে?
প্রতিটি নারীর শরীরে প্রতি মাসে পাঁচ দিনের একটি সময়সীমা থাকে, যাকে ওভুলেশন বা ডিম্বপাতের সময় বলা হয়। মূলত এই ডিম্বপাতের তিন দিন আগে থেকে শুরু করে একদিন পর পর্যন্ত গর্ভধারণের জন্য সবথেকে কার্যকরী সময় বলে মনে করা হয়। কারণ মেয়েদের শরীরে এই ডিম্বাণু কেবল মাত্র একদিন বা 24 ঘন্টার জন্যই কার্যকরী থাকে। তাই যেহেতু ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিশ্রণে একটি সক্রিয় ভ্রুন তৈরি হয়, তাই এই সময়টা শুক্রাণুর ক্ষেত্রেও কার্যকরী হবে বলে গণ্য করা হয়। তবে শুক্রাণু নারী শরীরে 5 দিন পর্যন্ত কার্যকরী থাকতে পারে, তাই এই সময় গর্ভধারণের ক্ষেত্রে উপযুক্ত। সন্তান পুত্র হবে নাকি কন্যা এই সময়ে স্থির করতে হয়।
শারীরিক মিলনের পর যখন শুক্রাণু পুরুষের শরীরে থেকে মহিলার শরীরে প্রবেশ করে তখন ক্রোমোজোমের একটা জীবনকাল থাকে (y) ক্রোমোজোম অর্থাৎ পুত্র সন্তানের ক্রোমোজোম, পুরুষ শরীর থেকে মেয়েদের শরীরে প্রবেশ করার পর 1 থেকে 3 দিন বেঁচে থাকে। অন্যদিকে (x) ক্রোমোজোম অর্থাৎ কন্যা সন্তানের ক্রোমোজোম, পুরুষের শরীর থেকে মেয়েদের শরীরে প্রবেশ করার পর- 3 থেকে 5 দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে এবং ওয়াই (y) ক্রোমোজোম খুবই দ্রুতগতি সম্পন্ন এবং শক্তিশালী হয়ে থাকে। তাই যদি মহিলার শরীরে এক্স(x) এবং ওয়াই (y) দুটিই উপস্থিত থাকে তাহলে Y ক্রোমোজোম মহিলা শরীরের ডিম্বাণু কে নিষিক্ত করবে এবং তখন পুত্র সন্তান হবে।
অন্যদিকে অনেক ক্ষেত্রেই ডিম্বাণু তৈরী হওয়ার সময় জীবনকাল কম থাকার কারণে Y ক্রোমোজোম যখন উপস্থিত থাকে না - তখন X ক্রোমোজোম দ্বারা ডিম্বাণু নিষিক্ত হয় এবং সেক্ষেত্রে কন্যা সন্তান জন্মলাভ করে। তাই পুত্র সন্তান চাইলে ছেলেদের Y শুক্রাণু যাতে খুব দ্রুত ডিম্বাণুর কাছাকাছি যেতে পারে সেই ব্যবস্থা করা উচিত এবং সেই জন্যই নারীর যেদিন ডিম্বপাত হচ্ছে সেইদিনই মিলিত হওয়াটা জরুরী। অন্যদিকে আপনি যদি কন্যা সন্তান চান তবে - ডিম্বপাতের দুই থেকে তিন দিন আগে মিলিত হতে হবে। কারণ, ডিম্বপাত হওয়ার আগেই সমস্ত Y শুক্রাণু মারা যায় ফলে ছেলে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে সে ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বেঁচে থাকে এক্স শুক্রাণু গুলি - যা কন্যা সন্তানের ভ্রুন তৈরি করে। তাই আপনি কন্যা সন্তান চান নাকি পুত্র সন্তান তার আগে আপনাকে জানতে হবে আপনার সঙ্গিনীর শরীরে কখন ডিম্বাণু তৈরি হয় এবং তার জীবনকাল কত? মেয়েদের শরীরে ডিম্বাণুর জীবনকাল 12 থেকে 24 ঘন্টা থাকে। সুতরাং আপনি যদি পুত্র সন্তান চান তাহলে এই 12 থেকে 24 ঘন্টার মধ্যেই মিলন প্রয়োজন। আর যদি কন্যা সন্তান চান তাহলে ডিম্বপাতের দু-তিন দিন আগে মিলন প্রয়োজন।
সাধারণত নারীর শরীরে এই ডিম্বাণু তৈরি হয়। তার ঋতুচক্র শুরু হওয়ার 12 থেকে 18 দিনের মধ্যে। আপনার সঙ্গিনীর ক্ষেত্রে এই বিষয়টি কখন হয় সেই বিষয়টি আপনাকেই জানতে হবে এবং সেই অনুযায়ী কন্যা সন্তান বা পুত্র সন্তান আপনি লাভ করতে সক্ষম হবেন।
তবে সবশেষে বলব যে সন্তান হোক না কেন তাকে যথাযথ মানুষ করার চেষ্টা করুন কারণ সকল সন্তানই হল সমান।
আশাকরি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
আরো পড়ুনঃ- সু-সন্তান লাভের জন্য গর্ভধারণের নিয়ম - সঠিক গর্ভধারণ পদ্ধতি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা