Breaking

Search Content

Follow Us

মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০২২

সু-সন্তান লাভের জন্য গর্ভধারণের নিয়ম - সঠিক গর্ভধারণ পদ্ধতি।


নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।


বন্ধুরা আজ এই লেখার মাধ্যমে আপনাদের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আর তা হলো গর্ভধারণের জন্য কোন দিন উপযুক্ত এই সময় কি করা প্রয়োজন এবং শাস্ত্রীয় মত অনুযায়ী সু সন্তান লাভের জন্য গর্ভধারণের নিয়ম।


বন্ধুরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় সন্তান জন্মানোর পর থেকে মাতা-পিতারা পরিকল্পনা শুরু করেন। কিন্তু, এই বিষয়টি তারা আগে থেকেই করা প্রয়োজন। এমনটাই বলছে আমাদের সনাতন ধর্মে সন্তান না থাকা যেকোনো দম্পতির কাছেই এক চরম অভিশাপ। কিন্তু সেই সন্তান জন্ম লাভ করার পর, যদি সু সন্তান না হয় তাহলে সেই সন্তান থাকা না থাকা সমান। যদিও এই বিষয়টি ধ্রুব সত্য যে, সন্তান উপযুক্ত হবে কিনা সেই বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভর করে, তাকে ছোটবেলা থেকে কি শিক্ষা দান করা হচ্ছে, তার প্রতিপালন কিভাবে হচ্ছে এবং কোন পরিবেশে হচ্ছে। এই সমস্ত কিছু সত্বেও অনেক সময়ে কিন্তু এ বিষয়টি দেখা যায় যে সন্তান জন্মানোর পূর্বে মাতা পিতা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বা সন্তান ধারণের কি পরিকল্পনা করছে তার ওপরই কিন্তু অনেকখানি নির্ভর করে থাকে।


    আজকে এই লেখার মাধ্যমে সেই বিষয় নিয়েই আপনাদের সাথে আলোচনা করব। তাই এই বিষয়ে জানতে যদি আপনি আগ্রহী থাকেন লেখাটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি এই লেখা থেকে আপনি উপকৃত হবেন।


বন্ধুরা এই বিষয়টি মোটামুটি প্রায় সকলেই জানেন এবং এটি বৈজ্ঞানিক সত্য যে ঋতুর প্রথম দিন থেকে 16 দিন পর্যন্ত স্ত্রীর গর্ভধারণ করার শক্তি থাকে। আর এই সময়েই যে সমস্ত বিষয়গুলি মেনে চলা প্রয়োজন তা হলো-

                                   

 প্রথমত, ঋতুর প্রথম চারদিন অর্থাৎ 11 তম এবং 13 তম দিন কখনোই কিন্তু সহবাস করা উচিত নয়।কারণ এই সময়ে সহবাস করলে শরীরের রোগ ব্যাধি বৃদ্ধি পায় এবং আয়ুক্ষয় ঘটে।

      ‌‌ 

 দ্বিতীয়ত, এই ছয় দিন বাদ দিয়ে বাকি 10 দিনের মধ্যে গর্ভধারণ করতে হয়। এই দশদিনের মধ্যে যত বেশি দিন পরে গর্ভধারণ করা যায়, সন্তান তত বেশি সুস্থ এবং বলবান হয় এবং তার পরম আয়ু বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ এই দশদিন সময়কালের মধ্যে দশমদিন সবচেয়ে কার্যকর, তারপর ক্রমান্বয়ে নবম দিন অষ্টম দিন ইত্যাদি।

                                      

 তৃতীয়ত, এই বিষয়টি সর্বদাই মাথায় রাখা প্রয়োজন যদি এই দশদিনের মধ্যে কোনো অমাবস্যা, পূর্ণিমা ,চতুর্দশী, অষ্টমী, সংক্রান্তির দিন গুলি থাকে তাহলে সেই দিনগুলিতে কখনোই সহবাস করা উচিত নয়। কারণ এই দিনগুলি পুরুষ এবং স্ত্রীর শুক্র ও শনি দুষ্ট থাকে ফলে এইসময় গর্ভধারণ করলে সন্তান বেশ কিছু নেতিবাচক দিক নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। তাই শাস্ত্রে বারবারই এই সমস্ত দিনগুলিতে সহবাস করা উচিত নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

                            

 এরপর আসবো চতুর্থ বিষয়ে, রাত্রির প্রথম প্রহরে গর্ভধারণ করলে সেই গর্ভস্থ সন্তান রুগ্ন এবং স্বল্প আয়ুর হয়ে থাকে।রাত্রির দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রহরে গর্ভধারণের জন্য খুব একটা আদর্শ সময় নয়। চতুর্থ প্রহরে গর্ভধারণ করলে সন্তান দীর্ঘায়ু এবং নীরোগ হয়। এই চতুর্থ প্রহর গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযুক্ত ভালো সময়।

                               

এরপর আসবো পঞ্চম বিষয়ে, কোন দিন গর্ভধারণের পক্ষে সবথেকে শুভ দিন। শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা অনুসারে সোমবার দিন, বৃহস্পতিবার দিন এবং শুক্রবার দিন রাত্রি চতুর্থ প্রহরে গর্ভধারণের উদ্দেশ্যে সহবাস করা সবথেকে উপযুক্ত আদর্শ।

                               

ষষ্ঠত, সকালবেলা সন্ধ্যেবেলা এবং দ্বিপ্রহরে গর্ভধারণের উদ্দেশ্যে সহবাস হানি কারক এবং এই বিষয়টি সর্বদাই মাথায় রাখা প্রয়োজন যে আপনি সন্তান লাভের চিন্তা তখনই করবেন, যখন আপনার শরীর এবং মন সম্পূর্ণ সুস্থ থাকবে এবং মনের ভিতর কোন খারাপ চিন্তা থাকবে না এবং দীর্ঘ সময় ধরে খালি পেটও থাকবে না। তখনই গর্ভধারণের জন্য সহবাস উপযুক্ত। গর্ভধারণের জন্য সহবাস করার সময় পায়খানা, প্রস্রাব, খিদে বা পিপাসার্ত থাকা কখনোই কিন্তু কাম্য নয় এবং রজস্বলা অবস্থায় সহবাস করা একেবারেই উচিত নয়। এই সময়ে যদি সহবাস করে গর্ভধারণ করা হয় তাহলে, সেই সমস্ত সন্তান স্বল্পায়ু এবং অসুস্থ হয়ে জন্মগ্রহণ করে।

                                  

সপ্তম যে বিষয়টির কথা বলব তা হল, গর্ভধারণের পর কি করা প্রয়োজন? উপযুক্ত দিনে, উপযুক্ত সময়ে সন্তান যখন গর্ভে আসবে তখন ধর্মচিন্তা এবং সৎ চিন্তা সর্বদা করবেন। তাহলে সন্তান ধার্মিক ও সুখী হয়। গর্ভবতী মহিলাদের রাগ, হিংসা, মিথ্যা কথা বলা প্রভৃতি অন্যায় আচরণ এবং লোভ করলে গর্ভস্থ সন্তান সেই সমস্ত খারাপ গুন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে থাকে। প্রায় গর্ভধারণ অবস্থায় সর্বদাই পজেটিভ চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন। গর্ভের চতুর্থ মাসে গর্ভস্থ সন্তানের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং চৈতন্যের প্রকাশ পায় আর এই সময়ে মা যে ধরনের বিদ্যা চর্চা করবে সন্তান সেই ধরনের গুন নিয়েই জন্মগ্রহণ করে থাকে। একটি শিশুকে জন্ম দেওয়ার অর্থ হলো ঈশ্বরের আশীর্বাদ প্রাপ্ত হওয়া। তবে সেই শিশুকে জন্ম দেওয়ার পরই শুরু হয় পিতা-মাতার প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাই শিশুর জন্মের পর তাকে যথার্থ শিক্ষা প্রদান করুন, উপযুক্ত পরিবেশ প্রদান করুন এবং তাকে ভালোবাসায় ও স্নেহে বড় করে তুলুন। জন্মানোর সময় যদি কোনো খুঁত নিয়েও সে জন্মায় তাকে উপযুক্ত শিক্ষা প্রদান করে, আপনি তাকে দেশ ও দশের একজন করে তুলতে পারেন। তাই শিশুর জন্মের পর শুধু পরিকল্পনা না করে জন্মের পূর্বেও পরিকল্পনা করুন। নিশ্চিত রূপেই আপনি একটি সুসন্তান সমাজকে উপহার দেবেন।


আশাকরি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো পড়ুনঃ- ঘুম থেকে উঠেই হাতের তালু দর্শনের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে এক অলৌকিক রহস্য - সনাতন ধর্ম

Click here

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা