ধর্মের প্রয়োজনীয়তা আজকের দিনে কতখানি? অমৃতকথা

বর্তমান দিনে ধর্মের প্রয়োজনীয়তা কতখানি?

এই জগতের উচ্চ শ্রেণীর জীব মানুষ থেকে অতি নিম্ন শ্রেণির জীব কীটপতঙ্গ পর্যন্ত, সকলেই সুখের জন্য  দিবারাত্র লালায়িত - সুখের জন্য প্রতিক্ষণ ব্যস্ত। তাদের স্বভাব, গতীয় ব্যবহার দেখলে বুঝতে পারা যায়, সকলেই সুখের আশা করে থাকেন। কিন্তু প্রকৃত সুখী কে? অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে, পৃথিবীর একচ্ছত্র অধিপতি সম্রাট থেকে কিথির ভিকারি পর্যন্ত সকলেই আশা-আকাঙ্ক্ষার তীব্র দংশনে প্রতিনিয়ত অস্থির। ধন, জন, বল, রুপ ঐশ্বর্য, খ্যাতি প্রতিপত্তি কিছুতেই মানুষ তৃপ্ত হতে পারে না। কারণ মানুষের মনের আকাঙ্ক্ষা এগুলি আরো পাবার আশায় নিরন্তর ছুটে থাকে। তাই বিশ্বের শক্তিশালী সম্রাটগণও মৃত্যুশয্যায় সময় সুখী হতে পারেননি। এই সংসারে কেউ একটি বিষয়ে সুখী হলেও দেখা যায় অন্যান্য পাঁচটি বিষয়ে নিরন্তর মনোকষ্টে কাল যাপন করছে। তাই প্রকৃত সুখী কে? কোথায় প্রকৃত সুখ রয়েছে তার প্রশ্ন যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। আর এখানেই প্রয়োজন ধর্মের।

যথার্থ ধর্ম জ্ঞান মানুষের অন্তর আত্মার সঙ্গে পরিচয় করায়। মানুষ তখন উপলব্ধি করে প্রকৃত সুখ বাহ্যিক বস্তুর অপেক্ষা অন্তরের মধ্যে বিরাজ করে। মানুষ যথার্থ ধর্মের মাধ্যমে নিজের ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে। আর যে ব্যক্তি নিজের এনজিও কে নিয়ন্ত্রন করতে পারেন তিনিই প্রকৃত সুখী। বাহ্যিক বিষয় আমাদের সাময়িকের জন্য সুখ এনে দিলেও সেই সুখ চিরস্থায়ী হয় না যতক্ষণ পর্যন্ত না যথার্থ ধর্ম পালিত হয়। ধর্ম বলতে এখানে বোঝায় ব্যক্তি যা ধারণ করেন তার চরিত্রে। মানুষের দেহপাত হলে পরলোকের পথে তার ধন, জন, বল, প্রভাব-প্রতিপত্তি, স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, বন্ধুবান্ধব, অর্থ সম্পদ টাকা পয়সা কেউই তার সাথে হবে না, তখন কেবল মাত্র তার আত্মার সঙ্গে যাবে তার ধর্ম অর্থাৎ জীবিত থাকাকালীন অবস্থায় তিনি কি কি ধারণ করেছেন অর্থাৎ তার কর্মফল।

তাই চরিত্রকে সুদৃঢ় করা, আত্মজ্ঞান লাভ এবং প্রকৃত সুখ প্রাপ্তির জন্য যথার্থ ধর্মের বর্তমানেও দিনেও সমান প্রয়োজন।