নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম।ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু ।
আজকে আপনাদের সামনে যে বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব তা হল-" ধরাধামকে সংকটমুক্ত করতে ,কিভাবে আবির্ভাব মায়ের জানুন সেই কাহিনী" ।
মা দুর্গা তিনি একদিকে মহামায়া আবার অন্যদিকে তিনি নারী শক্তির প্রতীক। তিনি ছিলেন মহিষাসুরমর্দিনী।বিশ্বব্রহ্মান্ডের জীবকুল যখন নির্যাতিত, নিপীড়িত সেই সংকটময় অবস্হা থেকে সমগ্র ব্রহ্মান্ড-কে রক্ষা করতে ধরাধামে অবর্তীণ হন জগৎজ্ননী মা দুর্গা। দেবতাদের সম্মিলিত শক্তি, তপস্যা এবং জ্যোতি দ্বারা সৃষ্ট হন দুর্গা। এছাড়া তিনি সমগ্র নারী তথা মাতৃজাতির প্রতীক। সনাতন ধর্মানুসারে যিনিই ব্রহ্ম, তিনিই শক্তি। দুর্গাপূজা মূলত শক্তির আরাধনা।
'দুর্গা' নামের অর্থ হল- 'দ' অক্ষরটি দৈত্য বিনাশ করে, উ-কার বিঘ্ননাশ করে, 'রেফ' রোগ নাশ করে, 'গ' অক্ষরটি পাপনাশক এবং 'অ'-কার ভয় শত্রু নাশক। দৈত্য, পাপ, বিঘ্ন, ভয় ও শত্রু বিনাশ করেন যিনি। যিনি দেবী অগম্যা বা যাকে পাওয়া যায় না, তিনিই দুর্গা। আবার চন্ডীর বর্ণনা অনুযায়ী দুর্গম নামের অসুর-কে বধ করার জন্য মায়ের নাম হয়েছে দুর্গা। বিভিন্ন নামে ও বিভিন্ন রুপে পুজিত হন মা দুর্গা। মহিষাসুরমর্দিণী, পার্বতী, উমা, কালিকা, গিরিজা, লক্ষী, চন্ডী, হৈমবতী, কমলা, শিবানী, কৌমারী, অম্বিকা, নামেও পরিচিত তিনি।
আরও পড়ুন-
ধরাধাম কে সংকটমুক্ত করতে কিভাবে আবির্ভাব মা দুর্গার জানুন সেই কাহিনী
পুরাণ অনুযায়ী, মহিষাসুর নামের অসুর স্বর্গ থেকে দেবতাদের বিতাড়িত করে স্বর্গে নিজের ক্ষমতা দাবী করে। ফলে দেবতারা ব্রহ্মার শরণাপন্ন হন। ব্রহ্মা এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিষ্ণুর কাছে উপস্হিত হন। মহিষাসুর-কে একমাত্র নারী শক্তি দ্বারা বিনাশ করা সম্ভব ছিল। তাই দেবতারা নিজেদের শক্তি দিয়ে তৈরি করলেন নারীমুর্তি। এরপর মহাদেবের তেজে মুখ, যমের তেজে চুল, বিষ্ণুর তেজে বাহু, ইন্দ্রের তেজে কটিদেশ, ব্রহ্মার তেজে পদযুগল, সূর্যের তেজে পায়ের আঙুল, বসুদের তেজে হাতের আঙুল, কুবেরের তেজে নাসিকা, প্রজাপতির তেজে দাঁত, অগ্নির ত্রিনয়ন, সন্ধ্যার তেজে ভুরু ও অন্যান্য দেবতার তেজে সৃষ্টি হল মা দুর্গার। এছাড়া একে একে দেবতারা তাঁকে অস্ত্র ও বস্ত্র দান করলেন। মহাদেব দিলেন শূল, বিষ্ণু দিলেন চক্র, অগ্নি দিলেন শক্তি, বায়ু দিলেন ধনু, ইন্দ্র দিলেন বজ্র, যম দিলেন কালদন্ড, ব্রহ্মা দিলেন কমণ্ডলু, বিশ্বকর্মা দিলেন পরশু সহ বিভিন্ন অস্ত্র, হিমালয় দিলেন সিংহ, এইভাবে দেবতারা তাঁদের সাধ্যমত জিনিস দিয়ে সাজিয়ে দিলেন মা দুর্গা-কে। আর্বিভূত হলেন মা দুর্গা।
দুর্গাপূজাকে কেন বলা হয় অকালবোধন, জেনে নিন এর আসল কারণ-
আশ্বিন মাসের শুক্লাষষ্ঠী থেকে শুক্লা নবমী পর্যন্ত দেবী দুর্গার পূজা হয়ে থাকে। হিন্দু সনাতন ধর্ম মতে চৈত্র মাসে অর্থাৎ বসন্তকালে দুর্গাপূজার আসল সময়।
কিন্তু আশ্বিন মাসে দুর্গাপুজোর সঠিক সময় নয়। আমরা সকলেই জানি রামচন্দ্র সীতাকে রাবণের থেকে উদ্ধারের সময় মা দুর্গাকে অসময়ে পূজা করে তাকে জাগরণ করেছিল। যেহেতু রামচন্দ্র অসময়ে মা দুর্গাকে পূজা করে মাকে জাগরন করেছিল। সেই অনুযায়ী আশ্বিন মাসে যে দুর্গাপূজা হয় সেটি অকালবোধন নামে পরিচিত।
দেবী দুর্গার সঙ্গে মর্ত্যে আসেন বিদ্যার দেবী সরস্বতী, ধন ও ঐশ্বর্য প্রদায়িনী দেবী লক্ষী, সিদ্ধিদাতা গনেশ, ও কার্তিক। ঊর্ধ্বে অবস্হান করেন দেবাদিদেব মহাদেব। শাস্ত্রমতে মহাষষ্ঠীর এই দিনটিতেই মা দূর্গার তাঁর সন্তানদের নিয়ে মর্তে আগমণ ঘটে। মহাসপ্তমীতে কলাবউ স্নানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় পুজোর। এরপর মহাষ্টমীতে মহাষ্টমীকল্পারম্ভের পূজা, সন্ধিপূজা শুরু হয়। নবমীতে মহানবমী বিহিত পূজা। বিজয়া দশমীতে বির্সজনের পূজা দিয়ে দশমীর পালা শেষ হয়।
পৃথিবীতে আজ প্রতি নিয়ত শুভ-অশুভের লড়াই চলছে। তারই মধ্যে মা দুর্গার আগমনী বার্তা যেন শান্তির বানী নিয়ে আসে। মঙ্গলময়ী মা-এর কাছে আমাদের এই প্রার্থনা তিনি যেন ধরাধামে শান্তির বানী ছড়িয়ে দেন।
আশাকরি লিখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হতে পেরেছেন। ভালো লাগলো আপনজনের সাথে শেয়ার করবেন ।
ভাল থাকুন ,সুস্থ থাকুন ।।
নমস্কার, ধন্যবাদ।।
ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা