প্রতিদিন সকালের 5 টি অভ্যাস- জীবন বদলে দেবে আপনার || সফলতা পাবেন অবশ্যই।

  নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম।ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু ।

আজকে আপনাদের সামনে যে বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব তা হল সকালের মাত্র 5 টি অভ্যাস যা করলে সত্যিই আপনার জীবন ভাবনাতে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে। সকালে যে 5 টি অভ্যাস আপনার জীবন সত্যিই বদলে দেবে এবং এটি সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যারা এই ছটি অভ্যেস পূর্বেই করে আসছেন তাদের জীবন আশাকরি সম্পূর্ণরূপে বদলে গেছে, এর মধ্যে আবার অনেকেই এই ছটি অভ্যাস করে থাকেন আবার অনেকেরই অজানা যারা জানেন না- তাদের উদ্দেশ্যে এই লেখাটি মূলত আলোচনা করব।

এই অভ্যাস গুলো যদি আপনিও আপনার জীবনে রপ্ত করতে পারেন তাহলে নিশ্চিতরুপ আপনি আপনার জীবনে এক বিশাল বড় কিছু পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবেন।

বন্ধুরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমদ্ভগবদগীতায় ষষ্ট অধ্যায়ঃ এই বিষয়টি নিয়ে তিনি আলোচনা করেছেন। এছাড়াও পৃথিবীর সমস্ত ধর্মেই এই 6 টি অভ্যাস কে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

পূর্বেই বলে রাখি এই অভ্যাসগুলো তখনই কার্যকারী হবে যখন আপনি এই অভ্যাসগুলোকে সকাল আটটা বাজার পূর্বেই করে ফেলতে সক্ষম হবেন। অন্তত নিজের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে টানা 21 দিন আপনি এই অভ্যাস গুলি করবেন। একটি দিন বাদ দিলে কিন্তু চলবে না। 

• সকালের ৬ টি অভ্যেস সম্পর্কে জানুনঃ- 

প্রথমে যে বিষয়টির কথা বলব তা হল প্রার্থনা বা ধ্যান। বর্তমান যুগে অনেকেই কিন্তু মনে করেন মেডিটেশন বা ধ্যান শুধুমাত্র একটি আধ্যাত্মিক বা স্পিরিচুয়াল বিষয়। এই বিষয়টি কখনোই কিন্তু তা নয়। আধ্যাত্মিকতার বাইরে ও যদি কেউ এই ধ্যান বা প্রার্থনা করে থাকেন- তাহলে তার চিন্তাভাবনা, আচরণ অন্যদের থেকে অনেক বেশি সঠিক হয়। সেইসঙ্গে সে যে কোন বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন। বর্তমান বিশ্বের সমস্ত সফল মানুষেরা এই বিষয়টাকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। আপনি কোন ধর্মে বিশ্বাসী বা কোন দেবদেবীকে মানেন সেটি সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু যাকে আপনি মানেন না কেন তার উদ্দেশ্যে কিছুক্ষণ ধ্যান করা প্রয়োজন। সেই দেবতার উদ্দেশ্যে কিছুক্ষণ প্রার্থনা করা প্রয়োজন। তার কাছে আপনি এতদিন পর্যন্ত যা কিছু পেয়েছেন তার জন্য তাকে কৃতজ্ঞতা জানানো প্রয়োজন। বন্ধুরা সৃষ্টিকর্তার কাছে এই বিষয়টি যদি কেউ ঘুম থেকে ওঠার পর করে থাকে তাহলে মনের ভিতরে একটা দারুন পজিটিভ অনুভূতির সৃষ্টি হয়।

বন্ধুরা দ্বিতীয়তঃ যেই কথাটা বলব তা হল- নিজের সঙ্গে কথা বলা। নিজেকে বারবার ভালো কথা বলা। এটি মূলত একটি পজেটিভ ঘোষণা। যা আপনি প্রতিদিন কিছুক্ষণের জন্য বারবার বলবেন। পৃথিবীর বহু সত্তিকারের সফল মানুষেরা নিয়মিত এই কাজটি করে থাকেন। কোন বিষয় যদি আপনি মনে প্রানে চান সেটিকে বারবার যদি এই সকালের মুহূর্তে আপনি মনের মধ্যে বলেন তাহলে এই বিষয়টি আপনার অবচেতন মনের স্থায়ী হয়ে যাবে। আর কোন বিষয়ে যদি আপনার অবচেতন মনে একবার প্রবেশ করে তাহলে সেই লক্ষ্য পূরণে আপনি নিজে থেকেই যা যা বিষয় করতে হয় তাই করতে থাকবেন। সেই সঙ্গে লক্ষ্য যতই বড় হোক না কেন বারবার নিজেকে এই কথা যদি নিজেই বলা যায় সে ক্ষেত্রে লক্ষ্য ধীরে ধীরে সহজ মনে হবে। তাই যে বিষয়টি আপনি মনে প্রান চান বা যে সমস্ত দুর্বলতা গুলো আপনি কাটিয়ে উঠতে চান সেগুলি বারবার আপনার মনে বলুন। যেমন ধরুন আপনার বিশ্বাসের যদি অভাব থাকে এবং আপনি এক বছরের মধ্যে কোনো একটা জিনিস চাইছেন, সেই কথাটি এই সময় নিজেকে 50 থেকে 100 বার বলুন যে- "আমি একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষ, আমার এই বছরের মধ্যে এই জিনিসটিই চাই।"  তাহলে দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে আপনার মাঝে এক দারুণ আত্মবিশ্বাস এসে গেছে। আপনার মন তখন বলতে শুরু করবে আপনি এই জিনিসটির নিশ্চিত ভাবে পাবেন। আর মন যখন কোনো কিছু বিশ্বাস করবে সেই অনুযায়ী আপনি কর্ম করবেন এবং আপনার কর্ম অনুযায়ী আপনি ফল প্রাপ্ত হবেন।

তৃতীয়তঃ যে বিষয়টির কথা বলব তা হল- মনো ছবি বা কল্পনা। ইংরেজিতে যার আরেক নাম- ভিজুয়ালাইজেশন। এর অর্থ হলো আপনি যে বিষয়টি পেতে চান তা মনে মনে কল্পনা করুন এবং মনে মনে সেই বিষয়টির একটি ছবি নিজের মনে কল্পনা করুন। ভাবুন আপনি ওই বিষয়টি প্রাপ্ত হয়েছেন। ওই বিষয়টি পাওয়ার পর আপনার কি অনুভূতি হচ্ছে সেই বিষয়টি মনে মনে কল্পনা করুন। বারংবার ওই বিষয়টির নিজের মনে ছবির আকারে তৈরি করুন। মনের মধ্যে এই বিষয়টি আপনি যদি কল্পনা করতে পারেন তাহলে নিশ্চিত রূপে সেই বিষয়টি আপনি পাবেনই পাবেন। কারন কোন একটি বিষয়কে যদি কোন মানুষ বারংবার আপন মনে বলতে থাকে এবং তার সাথে সাথে তার একটি চিত্র আপন-মনে কল্পনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলে তাহলে সেই বিষয়টি কিছুদিনের মধ্যেই সে পাবে বলে বিশ্বাস করতে থাকে। আর যদি নিজের মনে একবার এই বিশ্বাস ঢুকে যায়- 'সে পাবেই' - তাহলে সেই বিষয়টি অবশ্যই প্রাপ্ত হয়।

চতুর্থতঃ যে বিষয়টির কথা বলব তা জানলেও আমরা করিনা। আর এটি হল এক্সারসাইজ, ব্যায়াম বা ইয়োগা। সকালে কেউ যদি কিছুক্ষণের জন্য হলেও যোগব্যায়াম বা এক্সারসাইজ করেন তাহলে শরীর ও মন উভয়ই ভালো থাকে। মাত্র কিছুক্ষণের জন্য যদি এটা করা যায় তাহলে সারাদিনের এনার্জি লেভেল হাই হয়ে যায়। কেউ যদি সারাদিনের এক মিনিটের জন্য হলেও একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে বা বসে কিছু একটি ব্যায়াম করে তাহলেও সাধারণ দিনের থেকে তার এনার্জি অনেক বেশি থাকবে।

সকালে উঠে কোন ধরনের ইয়োগা বা ব্যায়াম করবেন এই বিষয়ে অধিক জানতে আপনারা আমাদের অমৃত কথা ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওটি দেখে নিতে পারেন- 

 পঞ্চমত যে বিষয়টির কথা বলব তা 100% মানুষের মধ্যে 90% মানুষই করেন না। যে কারণে পৃথিবীতে শুধুমাত্র 10% মানুষই সব দিক থেকে সফল। স্কুল ও কলেজে লেখাপড়া শেষ হয়ে যাবার পর যখন মানুষ কর্মব্যস্ততায় ঢুকে পড়ে তখন অধিকাংশ মানুষই এই পড়া ও লেখাকে একেবারেই গুরুত্ব প্রদান করে না। আর এই বিষয়টি ব্যক্তিকে তার উন্নতির একটি সীমার পর আটকে যায়। তাই নিজের যদি আরো উন্নতি চান তাহলে এই পড়া ও লেখাকে কখনই একেবারে ত্যাগ করা উচিত নয়। 

কিন্তু, প্রশ্ন হলো কি আমাদের লেখা প্রয়োজন এবং কি আমাদের পড়া প্রয়োজন?

এমন কিছু প্রতিদিন পড়ুন যা আপনার উন্নতিতে সাহায্য করবে। যা আপনাকে পজিটিভ রাখে। যেমন ধরুন বিভিন্ন বিখ্যাত মানুষদের জীবনী অথবা গীতার বাণী অথবা বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের অমূল্য কথা।

আর লেখার বিষয়ে বলব আপনার সারাদিনের কর্ম পরিকল্পনার কথা কি কি আপনি করবেন সে গুলি লিখুন এবং সেগুলি সম্পন্ন করে তার পাশের টিক মার্ক দিন। তাছাড়া আপনি আপনার জীবনের বড় গোলের কথা লিখতে পারেন। সেই গোল আপনি কত দিনের মধ্যে পূরণ করতে চান এইসব বিষয় সম্পর্কেও লিখতে পারেন।

আশা করি বন্ধুরা লিখাটি পড়ে আপনারা সম্মৃদ্ধ হয়েছেন এবং বুঝতে সক্ষম হয়েছেন সকালের কোন অভ্যাস গুলো করা খুবই প্রয়োজন। এই অভ্যেস গুলি যদি আপনি প্রতিনিয়ত করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার জীবন বদলে যাবে। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন অথবা আমাদের অমৃতকথা ইউটিউব চ্যানেলটিকে ফলো করতে পারেন।

ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

 নমস্কার, ধন্যবাদ ।।

ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।