নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু ।
আজকে আপনাদের সামনে যে বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব তা হল - "মহাভারতের কিছু গোপন রহস্য - যা সাধারণ মানুষেরা জানেন না; আজও অজানা এইসব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি!"
বন্ধুরা হিন্দু ধর্মে 'মহাভারত' কে পঞ্চম বেদ বলে মনে করা হয়। যা বিশ্বে সবথেকে বড় মহাকাব্য গুলির মধ্যে একটি। মহাভারত থেকে যে সমস্ত জ্ঞান প্রাপ্ত হয় তার মান্যতা আজও রয়েছে। কিন্তু, মহাভারতে যেটুকু বলা হয়েছে আসলে কি 'মহাভারত' সেটুকুই - নাকি আরো কোনো বিষয় লুকিয়ে রয়েছে? - যা সাধারণ মানুষ অনেকেই জানেন না। এজন্য আজকের এই লেখাটিতে এরকম মহাভারতের 10 টি গোপন রহস্যের কথা উল্লেখ করব।
প্রথমত, (১৮ অংকের রহস্য)
বন্ধুরা মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ হয়েছে বহুদিন আগে। কিন্তু আজও বহু মানুষের মনে এই যুদ্ধ নিয়ে অনেক প্রশ্ন সামনে এসেছে, আজও অনেক এমন রহস্য ঐ যুদ্ধ নিয়ে সামনে উঠে আসছে। এরকমই একটি রহস্য ১৮ অংকের সঙ্গে যুক্ত।
মহাভারতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ চলছিল ১৮ দিন ধরে। এছাড়াও কৌরবদের (১১ অক্ষসহিনী) এবং পান্ডবদের (৭ অক্ষসহিনী) সব মিলিয়ে প্রধান সেনা সংখ্যা ছিল - ১৮ অক্ষসহিনী অর্থাৎ ১৮ জন প্রধান সৈন্য দ্বারা ঘোড়ার রথ পরিচালক। শুধু তাই নয় ঋষি বেদব্যাস মহাভারত গ্রন্থের রচনা করেছিলেন যেখানে মোট ১৮ টি পর্ব রয়েছে এবং এরই সাথে ঋষি বেদব্যাস ১৮ টি পুরাণও রচনা করেছেন। আর শ্রীমৎভগবত গীতাতে ১৮ টি অধ্যায় রয়েছে। এসব বাদ দিয়েও মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সব শেষে ১৮ জন যোদ্ধা বেঁচে ছিলেন। এই সবকিছু জানার পর এটা একেবারেই পরিষ্কার মহাভারত এবং ১৮ অংকের মধ্যে একটি গভীর সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এমনটা কেন ছিল এটি এখনো পর্যন্ত একটি রহস্যই রয়ে গেছে।
দ্বিতীয়তঃ- অশ্বথামা কি এখনো জীবিত? বন্ধুরা মহাভারতের এক শক্তিশালী যোদ্ধা ছিলেন অশ্বত্থামা। মনে করা হয় তিনি এখনো জীবিত রয়েছেন। অশ্বত্থামা কৌরব এবং পান্ডবদের গুরু দ্রোণাচার্যের পুত্র ছিলেন। মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে কৌরব দের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। যুদ্ধে তিনি কৌরব দের পক্ষ নেওয়াযর কারণে তিনি অভিশাপ প্রাপ্ত হন। যে কারণে বলা হয়ে থাকে অশ্বথামা পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার শেষ সময় পর্যন্ত জীবিত থাকবে।
দ্রোণাচার্যের পুত্র অশ্বথামা কে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অমর থাকার স্রাপ দিয়েছিল। কারণ অশ্বত্থামা ব্রম্ভাস্ত্র এর খারাপ ব্যবহার করেছিলেন। যে কারণে স্ত্রী কৃষ্ণ ক্রুদ্ধ হন এবং অশ্বথামা কে অভিশাপ দেন।
বন্ধুরা আজও অনেক নির্জন জায়গায় অশ্বত্থামা কে দেখা গিয়েছে বলে বিভিন্ন কথা শোনা যায়। কিন্তু, এর সত্যতা কতখানি সেই সম্পর্কেও সঠিক ব্যাখ্যা কেউ দেয়নি।
তৃতীয়তঃ- (বিমান ও পরমাণুর ব্যবহার)
বন্ধুরা বর্তমানে এরকমটা বলা হচ্ছে যে মহাভারতে নাকি বিমান ও পরমাণুর ব্যবহার করা হয়েছিল। মহেঞ্জোদারোর খনন কার্যে কিছু এমন কঙ্কালের মিলেছে যার মধ্যে রেডিয়েশনের সন্ধান পাওয়া গেছে। মনে করা হয় মহাভারতে প্রথম পরমাণু ব্রম্ভাস্ত্র এর ব্যবহার অশ্বথামা করেছিল।
শুধু তাই নয় মহাভারতের সাত্বিক পর্বে ১৩ থেকে ১৫ অধ্যায়ে ব্রহ্মাস্ত্র ব্যবহারের পরিনাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই পরমাণুই কি ব্রহ্মাস্ত্র নাকি এই বিষয় নিয়ে কেউ কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। মে কারনেই মহাভারতে বিমান ও পরমাণুর ব্যবহার হয়েছিল কিনা তা আজও রহস্যময় রয়ে গেছে ।
চতুর্থতঃ- (কৌরবদের শত পুত্রের রহস্য)
বন্ধুরা বাস্তবে গান্ধারী 101 টি সন্তানের মা ছিল। যার মধ্যে 1টি কন্যা সন্তান এবং বাকি 99 টি পুত্র ছিল।আপনারা হয়তো শুনেছেন কৌরবদের 1 সৎ ভাই ছিল। যে ছিল গান্ধারীর দাসীর ছেলে।
গান্ধারী - ব্যাসদেবের সেবা করলে, তিনি গান্ধারী কে বরদান করায় গান্ধারী শত পুত্র সন্তান লাভ করেন। গান্ধারী অন্তঃসত্ত্বা হলে প্রসবের সময় পার হয়ে গেলেও তার প্রসব হয় না। এইভাবে প্রসবের দীর্ঘ সময় পার হয়ে যাওয়ার পর গান্ধারী এক মাংসপিণ্ড জন্ম দেন। এরপর ব্যাসদেবের কথা অনুযায়ী সেই মাংসপিণ্ড গুলি 100টি ভাগে টুকরো করা হয় এবং টুকরো গুলিকে আলাদা আলাদা পাত্রে রাখা হয়। এইভাবে দুই বছর রাখার পর সেই মাংসের টুকরোগুলো মানব শিশু তে পরিবর্তন হলো। এই ভাবেই ১০০ টি কৌরব রাজকুমার এবং ১ টি কৌরব রাজকুমারীর জন্ম হলো।
কিন্তু, বন্ধুরা কিভাবে এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলো সেই সম্পর্কে কোনো সঠিক তথ্য আজও পাওয়া যায়নি। যে কারণেই গান্ধারীর শতপুত্র জন্ম দেওয়ার ঘটনাটি আজও রহস্যময় হয়ে রয়েছে। বন্ধুরা ওই কৌরব রাজকুমারীর নাম রুশালা রাখা হয়। তার বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল সিন্দু অঞ্চলের রাজা জয়দৃতের সঙ্গে।
পঞ্চমতঃ- বন্ধুরা আপনারা কি জানেন মহাভারতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময়ে কোনো প্রকার রাশির অস্তিত্ব ছিল না। তখনকার সময়ে জ্যোতিষীরা 27 টি নক্ষেত্রের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তির ভবিষ্যৎবাণী করতেন। নক্ষত্র গুলির মধ্যে প্রথম স্থানে - রোহিনী।
যত সময় অতিক্রম হয়েছে ধীরে ধীরে চন্দ্র ও সূর্যেরদেবের ভিত্তিতে রাশিচক্রের উৎপত্তি ঘটেছে এবং সেই রাশি চক্রের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির ভবিষ্যৎবাণী করতে শুরু করে জ্যোতিষীরা। কিন্তু, বেদ কিংবা মহাভারতে রাশিচক্রের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
বন্ধুরা এই ছিল মহাভারতের কিছু গোপন রহস্য। যা সাধারন মানুষটা হয়ত জানেন না।
আশাকরি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ্য হয়েছেন। ভালো লাগলে আপন জনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন অথবা আমাদের অমৃত কথা ইউটিউব চ্যানেলটিকে ফলো করতে পারেন।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা