এই 7 টি জিনিস সবসময় মেনে চললে - জীবনে কখনো সমস্যায় পড়বেন না || গরুড় পুরাণ

নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু। 

গরুড় পুরান, বেশিরভাগ সময় এর পাঠ কারো মৃত্যুর সময় করা হয়। গরুড় পুরানে আত্মার রহস্য ছাড়া জ্যোতিষ, আয়ুর্বেদ, নীতি নিয়ম, ধর্ম এবং জীবনের সঙ্গে জড়িত কথা লেখা রয়েছে। গরুড় পুরানে এমন কথারও উল্লেখ রয়েছে যেসব জিনিসকে ধর্মে বর্জন করা হয়েছে। যদি আপনি সেসব করেন তাহলে আপনি বরবাদ হয়ে যেতে পারেন। এই কারণে আমরা আজ আলোচনা করব গরুড় পুরানে উল্লেখিত এমন সব কথা যা মেনে চললে আপনি এক সমৃদ্ধ এবং ভালো জীবন কাটাতে পারবেন।

(সবার প্রথমে দরকার সংযম এবং সতর্ক থাকা) গরুড় পুরানের নীতি অনুসারে বলা হয়েছে যে, শত্রুদের সাথে দ্বন্দ্বের সময় সতর্ক থাকতে হয় এবং চালাকির সাহায্য নিতে হয়। শত্রু সব সময় আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করতে থাকে, এই সময় যদি আমরা চালাকি না করি তাহলে অবশ্যই আমাদের ক্ষতি হবে। এই কারণে শত্রু যেমন হবে সেই অনুযায়ী নীতির প্রয়োগ করে তাকে দুর্বল করে রাখা উচিত।

(পরিষ্কার এবং সুগন্ধযুক্ত বস্ত্র পড়ুন) যদি আপনি ধনী, ধনবান এবং সৌভাগ্যশালী হয়ে থাকতে চান তাহলে আপনার উচিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সুন্দর আর সুগন্ধিত বস্ত্র পড়া। গরুড় পুরান অনুযায়ী‌ তাদের সৌভাগ্য নষ্ট হয়ে যায়, যারা নোংরা বস্ত্র পরিধান করে। সেই ঘরে কখনোই লক্ষ্মী আসে না, যার কারনে সেই ঘর থেকে সৌভাগ্যও চলে যায়, আর দারিদ্রতা বসবাস করে। দেখা যায়, যে সমস্ত মানুষ ধন-সম্পত্তি এবং বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত হয় কিন্তু, তবুও তারা নোংরা কাপড় পরিধান করে তাদের ধনসম্পত্তি ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। এই কারণে আমাদের উচিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং সুগন্ধিত বস্ত্র পরিধান করা।

আমাদের প্রতিদিন জ্ঞানের অভ্যাস করা প্রয়োজন। যতই কঠিন থেকে কঠিন প্রশ্ন হোক, জ্ঞান হোক, বিদ্যা হোক অথবা মনে রাখার কোন বিষয় হোক - তা অভ্যাসের মাধ্যমেই সংরক্ষিত থাকে। অভ্যাস করতে থাকলে ব্যক্তি উচ্চ জ্ঞানে তো পারদর্শী হয়ই, তার সাথে সে তা কখনোই ভোলে না। অভ্যাস ছাড়া বিদ্যা নষ্ট হয়ে যায়। যদি জ্ঞান এবং বিদ্যার সময়ে সময়ে অভ্যাস না করা হয় তাহলে তা ভুলে যাবেন। গরুড় পুরানে বলা হয়েছে যে, আমরা যাই পড়ি আমাদের তা সবসময় একবার হলেও অভ্যাস করা উচিত, যার ফলে সেই জ্ঞান যেন আমাদের মস্তিষ্কে ভালোভাবে গেঁথে যায়।

(সুস্থ শরীর) সঠিক ভোজন করলেই সুস্থ শরীর লাভ করা যায়। খাবার খেয়েই মানুষ সুস্থ থাকে আর খাবার থেকেই তারা রোগীও হয়ে যায়। খাবারে আমাদের শরীরের মুখ্য উৎস। আমাদের বেশিরভাগ রোগ এই কারণেই হয়ে থাকে কারণ আমরা ভালো খাবার দাবার খাই না, যার কারনে আমাদের পাচক তন্ত্র ঠিকমত কাজ করে না। এই কারণে আমাদের সব সময় ভালো হজম হওয়া খাবারই খাওয়া উচিত। এরকম খাবার খেলে পাচক তন্ত্র ঠিকমতো কাজ করে। আর পাচনতন্ত্র সুস্থ থাকলে আমরাও রোগমুক্ত থাকবো।

(একাদশী ব্রত) একাদশী ব্রতকে গ্রন্থ এবং পুরানে শ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে। গরুড় পুরানে এর মহিমাকে ভালোভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যে ব্যক্তি একাদশী ব্রত রাখেন তিনি সমস্ত কষ্ট থেকে বেঁচে থাকেন, তিনি ওই ব্রতের নিশ্চিত সময় ফল লাভ করেন। একাদশী ব্রত রাখার জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে, এই ব্রতকে নিয়ম অনুসারেই রাখা উচিত। এই দিন শুধুমাত্র ফলই আহার করা যাবে, তখনই এই ব্রত ফল দেয়। জ্যোতিষিদের অনুসারে এই ব্রত রাখলে চন্দ্রের যেমনই খারাপ প্রভাব থাকুক তা শেষ হয়ে যায়।

(তুলসীর গুরুত্ব) যদিও তুলসীর গুরুত্ব গরুড় পুরান ছাড়া অন্য অনেক পুরানেও বলা হয়েছে। তুলসীকে ঘরে রাখলে সমস্ত প্রকার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, এটি প্রতিদিন সেবন করলে ব্যক্তির কোনো প্রকারের রোগই হয় না। তুলসীকে নিজেদের বাড়িতে স্থান দিলে এবং তাতে জল দিলে বন্ধ রাস্তা খুলে যায়। এই তুলসী পাতাকে ভগবানের প্রসাদের সাথে সেবন করলে সমস্ত শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা দূর হয়ে যায়। 

(মন্দির এবং ধর্মের সম্মান করা) কোনরকম দেব-দেবী এবং ধর্মকে অপমান করা মানুষকে জীবনে একদিন পস্তাতেই হয়, আর তারা নরকে যায়। গরুড় পুরান অনুসারে, এরকম মানুষদের সম্পর্কে অনেক কিছু লেখা রয়েছে। মন্দিরের মতো পবিত্র স্থানে খারাপ কাজ করলে, ভালো মানুষদের ধোকা দিলে, কারো ঋণ শোধ করার বদলে তাকে গালি দিলে এবং তার সাথে দুর্ব্যবহার করলে - ধর্ম, বেদ, পুরাণ এবং শাস্ত্রের অস্তিত্বের ওপর প্রশ্ন করলে, সেইসব মানুষকে নরক যাওয়া থেকে কেউ বাঁচাতে পারে না।

তাহলে বন্ধুরা আশাকরি গরুড় পুরানে লেখা এই সাতটি কথার খেয়াল আপনারা অবশ্যই রাখবেন।লেখাটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।।

আরো পড়ুন:-  5 টি সংকেত - যা বলে দেয় মানুষের খারাপ সময় আসতে চলেছে !? CLICK HERE