নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
সনাতন ধর্মে যেকোনো শুভকার্য শুরু করার পূর্বে গণেশজিকে স্মরণ করা হয়। সবার প্রথমে গণপতির পূজা হয়, তারপর গনেশজীর কাছে প্রার্থনা করা হয় যে কার্যটি যেন মঙ্গলজনক হয়। বন্ধুরা এরকম অনেক পর্ব রয়েছে যেগুলি শুধুমাত্র গণেশজিকে সমর্পণ করা। তার মধ্যে অন্যতম একটি পর্ব হল - গণেশ চতুর্থী।
বন্ধুরা গণেশ উৎসব পুরো ভারতবর্ষে খুবই উল্লাসের সঙ্গে উদযাপন করা হয়। গণেশ চতুর্থীর দিন থেকে শুরু হয়ে এই উৎসব অনন্ত চতুর্দশীর দিন শ্রী গনেশজির মূর্তি বিসর্জনের সাথে শেষ হয়। তো বন্ধুরা, শ্রী গনেশজির মূর্তির বিসর্জন কেন করা হয়? আর কি করে উৎপত্তি হল গণেশ পূজার? -সেই সম্পর্কে আমরা জেনে নেব আজকের এই বিশেষ লেখাটিতে। গণেশ চতুর্থী পালন করা সকল শ্রদ্ধালু ভক্তরা এই দিন স্থাপিত করা শ্রী গনেশজির মূর্তি ১১ তম দিন অনন্ত চতুর্দশীর দিন বিসর্জন করে। আর এভাবে গণেশ উৎসবের সমাপ্তি ঘটে।
ধার্মিক গ্রন্থ অনুসারে যখন বেদব্যাস মহাভারতের কথা দশ দিন পর্যন্ত গনেশজিকে শুনিয়েছিলেন তখন তিনি নেত্র বন্ধ করে নিয়েছিলেন। আর দশ দিন পর যখন তিনি তার চোখ খোলেন তখন তিনি দেখেন গনেশজির শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে গিয়েছিল। তখন বেদব্যাস তাকে নিকটের একটি জলাশয়ে নিয়ে গিয়ে স্নান করান। যার ফলে গনেশ জির শরীরের তাপমাত্রা কম হয়। এই কারণে গণেশ চতুর্থীর দিন গনেশজির মূর্তি স্থাপনার পর পরবর্তী 10 দিন গণেশ জী পূজা করা হয়ে থাকে। আর তারপরে ১১ তম দিন জলে গনেশজির মূর্তিকে বিসর্জন করা হয়। গণেশ বিসর্জন এই কথাটিরও প্রতীক যে, শরীর মাটি দিয়ে তৈরি এবং সবশেষে এই শরীর মাটিতেই মিশে যাবে।
তো বন্ধুরা, এবার জেনে নেওয়া যাক গনেশ উৎসব কবে থেকে পালন করা হচ্ছে?
বন্ধুরা এই উৎসব অনেক বছর ধরেই পালন করা হয়ে আসছে। কিন্তু, তা সত্যেও ১৮৯৩ সালের আগে পর্যন্ত এই উৎসব শুধুমাত্র প্রতিটি মানুষের গৃহেতেই হত। সেই সময়তে বর্তমানের মত এত ঘটা করে সাময়িক উৎসব করা হতো না। আর না তো বড় বড় প্যান্ডেল করে গনেশজির পূজা করা হতো। ১৮৯৩ সালে শ্রী বালগঙ্গাধর তিলক ইংরেজদের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের একত্রিত করার উদ্দেশ্যে একটি বড় স্তরে এই উৎসবটির আয়োজন করেন। যেখানে হাজার হাজার ভারতীয়রা একত্রিত হয়ে এই উৎসবে অংশ নেয়। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে এই উৎসব পুরো ভারতে প্রচলিত হয়। বালগঙ্গাধর তিলক - এই উৎসবটির আয়োজন মহারাষ্ট্র তে করেছিলেন। এই কারণেই বন্ধুরা ভারতের মহারাষ্ট্রতে সব থেকে বেশি পরিমাণে এই উৎসব অত্যন্ত ধুমধামের সঙ্গে পালন করা হয়ে থাকে। বালগঙ্গাধর তিলক সেই সময় ইংরেজদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছিলেন সকল ভারতীয়দের স্বরাজের জন্য। এই কারণে তার এমন একটি মঞ্চের দরকার বা প্রয়োজন ছিল যার মাধ্যমে তিনি অধিক থেকে অধিকতর ভারতীয়দের নিজের সঙ্গে জোটবদ্ধ করতে পারেন। সেই কারণের জন্যই তিনি গণপতি উৎসবের সূচনা করেন এবং একে একটি ভাব্য রূপ দেন। যার ছবি আমরা আজও মহারাষ্ট্রে গণেশ চতুর্থীর সময় দেখতে পাই।
তো বন্ধুরা, আশাকরি লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপন জনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আজ এখানেই শেষ করলাম। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
আরো পড়ুন:- রামায়ণ থেকে আমরা পাই, এই 5 টি মুখ্য শিক্ষা! CLICK HERE
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা