Breaking

Search Content

Follow Us

শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২২

সূর্যদেবের 5টি পুত্রের মধ্যে সবথেকে শক্তিশালী কে? || Surya Dev top 3 most powerful sons



নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু। 


বন্ধুরা আজকে আপনাদের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি তাহলো - কর্ণ কি, সুগ্রীবের থেকে অধিক শক্তিশালী ছিল? যমরাজ ও শনিদেবের মধ্যে কে বেশি শক্তিশালী ছিল? নাকি অশ্বিনী কুমার-ই সবথেকে অধিক শক্তিশালী ছিল? কে ছিল সূর্যদেবের সবথেকে অধিক শক্তিশালী পুত্র? 


সুগ্রীব- বন্ধুরা শারীরিক দিক থেকে সুগ্রীব নিজের বড় ভাই বালির মতনই বলবান ছিলেন। তিনি বড় বড় পাথর খন্ড এবং বড় বড় গাছ উপড়ে ফেলতে সক্ষম ছিলেন। সুগ্রীব কুম্ভকর্ণের পুত্র কে রামায়ণের যুদ্ধের সময় পরাস্ত করেছিলেন। শুধু তাই নয় সুগ্রীব কুম্ভকর্ণের নাক এবং কানও কেটে ফেলেছিলেন। এছাড়াও সুগ্রীব যখন রাবণের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন তখন তিনি রাবণকেও নিজের শক্তির কিছুটা ঝলক দেখিয়েছিলেন। অবশ্য তিনি রাবণের সঙ্গে পেরে ওঠেননি তা সত্বেও রাবণকে তিনি ভালই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনিও ক্ষমতাবান। যখন রাবণ তার সঙ্গে পেরে উঠছিল না তখন রাবণ তার মায়াবী শক্তি গুলি প্রয়োগ করতে শুরু করে, তখন সুগ্রীব পিছু হেটে যায়। 


কর্ণ- বন্ধুরা অন্যদিকে যদি বলা হয় কর্ণের কথা। তাহলে প্রথমেই বলি কর্ণ ছিল - মাতা কুন্তি ও সূর্যদেবের পুত্র। কর্ণ কবজ ও কুণ্ডলের সঙ্গে জন্ম নিয়েছিলেন। যা ছিল মূলত তার পিতা সূর্যদেবের আশীর্বাদ। কর্ণ অত্যন্ত শক্তিশালী একজন ধনুর্বিদ ছিলেন। তার গুরু ছিলেন পরশুরাম। তার থেকেই কর্ণ নিজের শিক্ষা লাভ করেছেন। পরশুরামের থেকে কর্ণ ব্রহ্মাস্ত্র, আগ্নেয় অস্ত্র ও অন্যান্য শক্তিশালী অস্ত্র প্রাপ্ত হয়েছিল। বন্ধুরা শারীরিক বলের ক্ষেত্রে যদি কর্ণ এবং সুগ্রীবের মধ্যে পার্থক্য করা হয় তাহলে সুগ্রীব কিছুটা হলেও কর্ণের থেকে এগিয়ে। কিন্তু কর্ণকে যে জিনিসগুলি এগিয়ে রাখত তা হলো - তাঁর ধনুর্বিদ্যা ও দিবিও অস্ত্রগুলি। শারীরিক বলের ক্ষেত্রে কর্ণও অনেক বলশালী ছিলেন। কিন্তু, সুগ্রীবের সঙ্গে তার পার্থক্যে সুগ্রীব বেশি বলশালী ছিল। এই কারণে এই দুই বিন্দুই এই দুজনের মধ্যে সমানতা বজায় রাখে।


যমরাজ - প্রাণীর মৃত্যু কিম্বা অন্ত কে ডেকে আনা দেবতা হলো- যমরাজ। যমলোক অর্থাৎ পিতৃলোকের প্রধান হওয়ার কারণে তিনি যমরাজ নামে পরিচিত। যদি কোনো প্রাণীর মৃত্যু হয় তাহলে সে সর্বপ্রথম যমলোকেই পৌঁছায়। সেখানে চিত্রগুপ্ত ওই প্রাণীটির ভালো খারাপ কর্মের বর্ণনা করেন। আর তার আধারের ভিত্তিতেই ওই জীবাত্মার পুনর্জন্ম হওয়ার আগে যমরাজ এটা নির্ধারণ করেন যে, সেই জীবাত্মাটি স্বর্গে থাকবে নাকি নরকে যাবে। গরুড় পুরাণ অনুসারে যমলোকের চারটি দুয়ার এবং সেখানে যমরাজের অস্ত্রশস্ত্রও খুব শক্তিশালী। যমরাজের কাছে মহা ভয়ংকর কাল দণ্ড রয়েছে। যা তিনি ব্রহ্মাজীর কাছ থেকে লাভ করেছিলেন। এই কাল দন্ড যদি একবার কারো উপর ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে সে শত্রুকে নষ্ট করে তারপরেই ফিরে আসে। রামায়ণের উক্তকালে যখন রাবণ যমের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল তখন সেই সময় যমরাজ রাবণের উপর কাল দন্ডের প্রহার করতে উদ্যত হয়েছিলেন। আর তখনই সেখানে ব্রহ্মাজি কি উপস্থিত হন এবং রাবণকে রক্ষা করেন। ব্রহ্মা জি যমরাজকে বলেন - এই কাল দ্বন্দ্বের প্রহার তুমি রাবণের উপর করোনা। আমি এটাকে এভাবেই বানিয়েছি যে এর প্রহারের ফলে কোনো প্রাণী এক মুহূর্ত বেঁচে থাকতে পারে না। এর প্রহার কখনো নিষ্ফল হয় না। আর অন্যদিকে আমি রাবণকে বরদান দিয়েছি - তো আমার কথা তোমার অসত্য মনে করার কোন দিকই আমি দেখছি না। এরপর ব্রহ্মাজি সেখান থেকে চলে যান। বন্ধুরা এছাড়াও যমরাজ এর কাছে একটি শক্তিশালী গদা ও দড়ি রয়েছে। 


শনিদেব - সূর্যদেব ও ছায়ার পুত্র শনির জন্মের সময়ে সকল দেবতা, অসুর ও মানুষেরা ভয় ভীত হয়ে গিয়েছিল। কেননা জন্মের পরেই তিনি ত্রিলোকে নিজের অধিকার করে নিয়েছিল। দেবরাজ ইন্দ্র ও ব্রহ্মা জি শনিদেবের এই কার্যতে অত্যন্ত ভয় পেয়েছিলেন। শুধু তাই নয় শনিদেবের দৃষ্টি থেকে তো স্বয়ং তার পিতা সূর্য দেবও বাঁচতে পারেননি। শনিদেবের দৃষ্টি তার পিতা সূর্যদেবের উপর পড়ার ফলে তার পিতার পা জ্বলে যায়। ভগবান শিব সবশেষে শনিদেব কে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য গ্রহে স্থান দেন। শুধু তাই নয় ভগবান শিব শনিদেব কে বলেছিলেন অন্য গ্রহের তুলনায় তোমার আরাধনা অধিক হবে। তুমি প্রসন্ন হওয়ায় যে কোনো মানুষকে রাজযোগ এবং ক্রুদ্ধ হওয়ায় সেই মানুষকে সকল সুখ সমৃদ্ধি থেকে বঞ্চিত করতে সক্ষম হবে। তোমার ক্রোধিত দৃষ্টি পড়ার ফলে দেবতা, সিদ্ধ, বিদ্যাধর, মানুষ্য সকলেরই নাশ শেষ হয়ে যাবে।


ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের গণপতি খন্ডে একবার গণেশ কে দেখতে সকল দেব-দেবতারা আসেন। সেখানে শনি দেবও গিয়েছিলেন শনিদেব সেখানে নিজের মুখ নিচের দিকে ঝুকিয়ে রেখেছিলেন। তখন মাতা পার্বতী তাকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করেন? তখন শনিদেব তার পাওয়া অভিশাপের সম্পর্কে বলেন যে, তিনি যার দিকে নিজের দৃষ্টি দেন সে নষ্ট হয়ে যায়। একথা শুনে মাথা পার্বতী হাসতে লাগলেন এবং শনিদেবকে বলেন, তুমি আমার বালকের দিকে দেখো। শনিদেবের দৃষ্টি পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বালক গণেশের মস্তক ধর থেকে আলাদা হয়ে যায়। বন্ধুরা এ থেকে শনিদেবের শক্তির আন্দাজ পাওয়া যায়। শনিদেবের অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে রয়েছে - শক্তিশালী গদা, শূল । শনিদেব সর্বদা কর্মের অনুযায়ী ফল দেয়। যদি কর্ম ভালো হয় তাহলে শনিদেবের শুভদৃষ্টি পাওয়া যায়। আর যদি কর্ম খারাপ হয় তাহলে সেই ব্যক্তিকে শনির সাড়ে সাতির প্রভাব ভোগ করতে হয়।


বন্ধুরা উপরিক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে একথা স্পষ্ট যে কেউ কারো থেকে কম শক্তিশালী ছিল না। প্রত্যেকের কাছেই নিজস্ব গুণ ও শক্তিশালী অস্ত্র রয়েছে, যে কারণেই শক্তির আধারের বিচার করতে গেলে প্রত্যেকেই একে অপরের থেকে কোনো না কোনো দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে। সূর্যদেবের প্রত্যেকটি পুত্রটি বলশালী ছিল।


আশাকরি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন এবং প্রত্যেকের শক্তির সম্পর্কে আন্দাজ পেয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আজ এখানেই শেষ করলাম। নমস্কার, ধন্যবাদ । 

ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো পড়ুন:- গায়ত্রী মন্ত্র ও তার গুরুত্ব || কেন এই মন্ত্র এত ভয়ানক? CLICK HERE



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা