Breaking

Search Content

Follow Us

বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৩

ভগবান কি সত্যিই আছে নাকি নেই? || ঈশ্বরের অস্তিত্ব কি সত্যিই আছে? || Existence of God



নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।


বন্ধুরা ঈশ্বর আছেন, নাকি নেই ? - এই প্রশ্ন আদিকাল ধরেই চলে আসছে। আজও এরকম মানুষের অভাব নেই যারা ঈশ্বরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে না। এই মানুষগুলির মতে, এই সৃষ্টি তৈরি ও চালনা করার জন্য কোনো চৈতন্য সত্তা বা দিব্য শক্তি নেই। অর্থাৎ এই মানুষগুলি মনে করেন প্রকৃতির জড় পরমাণু গুলি নিজে নিজেই সৃষ্টি। এখানে ঈশ্বরের কোনো হাত নেই। কিন্তু, বন্ধুরা এটাকে কি আদৌ সত্য বলে মেনে নেওয়া যায়? তো চলুন আজ এই বিষয়টিরই পরীক্ষা করে নেওয়া যাক।


বন্ধুরা যদি নাস্তিকদের ওই বিষয়ে কথা বলা হয়, তবে আমাদের এটা দেখতে‌ এবং বুঝতে হবে যে, সমস্ত জড়পদার্থ কি চেতন শক্তি ছাড়া কার্য করা জারি রাখতে পারবে? মানব নির্মিত বস্তু যেমন - গাড়ি, মটর, জাহাজ ইত্যাদি যতই শক্তিশালী হোক না কেন তাকে চালানোর জন্য চালক ও বিদ্যুৎ - এই দুটি জিনিস অবশ্যই প্রয়োজন। একটি ছোট খেলনা থেকে শুরু করে বিশাল বিশাল রকেট পর্যন্ত একা একা চলতে পারে না। যদি এই বস্তুগুলি একা একা চলতে চলতে পারত তাহলে তাদের কখনো জড়বস্তু বলা হত না। এই কারণে বন্ধুরা যদি একটি সাধারন মানুষের তৈরি যন্ত্র একা একা না চলতে পারে তাহলে আমরা এটা কি করে ভাবতে পারি যে এত বড় একটি সৃষ্টি একা একাই তৈরি হয়েছে ! এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। অবশ্যই কোনো শক্তি রয়েছে - যা হাওয়া কে চালনা করে, ঋতুকে পরিবর্তন করে, উদ্ভিদকে জন্মাতে সাহায্য করে, নদীকে বয়ে চলতে সাহায্য করে। এই শক্তিকে আমরা 'প্রকৃতি' বলি অথবা 'ঈশ্বর' বিষয়টি কিন্তু একই।


বন্ধুরা কোনো পদার্থের মধ্যে অসীম ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু, সেই ক্ষমতাটিকে জাগ্রত করার কোনো শক্তি অবশ্যই রয়েছে। ছোট ছোট অনু থেকে শুরু করে বড় বড় গ্রহ-নক্ষত্র ও চাঁদ নিজের নিজের কক্ষপথে ঘুরে চলেছে, যদি এদের মধ্যে সামান্য কিছু পরিমাণ অন্তর দেখা দেয় তাহলে এই সমস্ত গ্রহ নক্ষত্র একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সমস্ত কিছু নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এমনটা কখনোই হয় না। কারণ কোনো দিব্য শক্তি বা চৈতন্য সত্তা সমস্ত কিছুকে সবসময় পরিচালনা করছেন।


বন্ধুরা ভাবার বিষয় এটাও রয়েছে যে, আমাদের কাছে যে সকল বস্তুগুলি উপযোগী বা উপভোগের জন্য আসে সেটি কারো না কারো দ্বারা তৈরি করা হয়ে থাকে। খাদ্যদ্রব্য, পোশাক-আশাক, ঘরবাড়ি ইত্যাদি কারো দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। বন্ধুরা এখানেই রয়েছে এই সংসারের পঞ্চতত্ত্বের মূল মন্ত্র।(পঞ্চতত্ত্ব অর্থাৎ পৃথিবী, জল, অগ্নি, বায়ু ও আকাশ।) কিন্তু এই পঞ্চতত্ত্ব কে তৈরি করেছেন? এগুলিকেও তো তৈরি করার জন্য কেউ হওয়া উচিত? এই নির্মাণকর্তা ও সঞ্চালনকর্তাই হলেন - ঈশ্বর। 


বন্ধুরা এই সংসারের পুরো সৃষ্টি ভালো করে দেখার পর এটা বলা যায় যে, এই সংসারের নির্মাণকর্তা কতটাই না বুদ্ধিমান। নির্মাণকর্তা যেই প্রাণীটিকে যেইভাবে উৎপন্ন করেছেন তার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ঠিক একই প্রকার সাধনাও দিয়েছেন। মাংসাশী জীবের দাঁত এবং নখ এমন তৈরি করেছেন যাতে সে শিকার করে খেতে পারে। শাখাহারি জীবেদের তাদের অনুকূলে শরীর প্রাপ্ত হয়েছে। শীতল বরফ যুক্ত এলাকায় থাকা প্রাণীদের শরীরে মোটা চামড়া ও বড় বড় লোম দেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে সে সেই ঠান্ডা থেকে বাঁচতে পারে। শুধু তাই নয় যদি বন্ধুরা আপনি নিজের শরীরকেই দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন আমাদের শরীরের এক একটি অঙ্গ কতটা সংবেদনশীল ও অদ্ভুত। অঙ্গগুলি একা একাই কার্য করে কিংবা একা একাই তৈরি হয়েছে এমনটা মেনে নেওয়া যায় না। একই প্রকারভাবে যেই ঋতুতে যেই রোগ হয়ে থাকে, সেই রোগ কে ধ্বংস করার জন্য প্রাপ্ত জরিবুটিও একই ঋতুতে হয়ে থাকে - এটা যে কারোর তৈরি নিয়ম নয়, এমনটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। এই সকল কিছু থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে কোনো মহান সত্তা অবশ্যই রয়েছে যে এই সকল কিছু নির্মাণ করেছেন।


সবশেষে সবথেকে মাহাত্ম্যপূর্ণ তত্ত্ব এটাও রয়েছে যে, পৃথিবীতে প্রাণীদের উৎপত্তি এবং বিনাশের প্রক্রিয়াতেও সনতুলন অবশ্যই বজায় রয়েছে। প্রতিদিন যেমন পরিমাণে প্রাণী জন্মগ্রহণ করে এই পৃথিবীতে ঠিক তেমন পরিমাণই প্রাণী এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়। এই বিষয়টিও কি সম্পূর্ণ আপনা থেকেই হচ্ছে - এটাও একদমই মেনে নেওয়া যায় না। এই কার্যটি কোনো নিয়ন্ত্রক ছাড়া কখনোই হতে পারে না। দেখার বিষয় হলো একটি মানুষ গড়ে তিন থেকে চারটি সন্তান জন্ম দেয়। কিন্তু কুকুর, ছাগল, মৌমাছি ইত্যাদিরা মানুষের তুলনায় বেশি পরিমাণে বংশবিস্তার করে। যদি এত বিপুল পরিমাণে বংশবিস্তারের মাত্রা বাড়তে থাকে তাহলে এই পৃথিবীতে এত প্রাণী এবং মানুষ কখনোই একসঙ্গে থাকতে পারবে না। এই কারণেই এই সকল কিছু নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একজন অবশ্যই রয়েছে। যিনি এই সকল কিছু নিয়ন্ত্রণ করার জন্য - অভাব, যুদ্ধ, রোগ ইত্যাদি দিয়ে থাকেন।


অতএব বন্ধুরা এই সংসার একা একাই চলছে - এমনটা ভাবা একদমই ভুল। এই সংসার ও সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডে নিশ্চয়ই কোনো মহান শক্তি রয়েছে। সেই জ্ঞানী বিচার বুদ্ধি সম্পন্ন মহান সত্ত্বাকে 'ঈশ্বর' নাম দেওয়া হয়েছে।


আশাকরি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন এবং ভগবান আছেন কি নেই এই প্রশ্নের উত্তরটিও আপনাদের কাছে স্পষ্ট। ভালো লাগলে আপন জনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। 

আজ এখানেই শেষ করলাম। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো পড়ুন:- বাস্তু টিপস || বাড়তে চলা ঋণ মুকুবের উপায় || ঋণের হাত থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন? CLICK HERE


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা