ভগবান শিব এই সকল ব্যক্তির সকল মনোকামনা পূরণ করেন

 ব্যক্তির মধ্যে এই সমস্ত লক্ষণ যদি দেখা যায় তাহলে ভগবান শিবের পূজা করলে তিনি তার সকল মনোকামনা নিশ্চিতরূপেই পূরণ করেন। ভগবান শিব অল্পতেই সন্তুষ্ট হন,তাই তিনি আশুতোষ নামে পরিচিত। আমরা সকলেই ভগবান শিবের কৃপা পাওয়ার জন্য তাঁর পূজা করে থাকি। অনেকেই শ্রাবণ মাসের সোমবার দিন পূজা করেন, অনেকে ষোল সোমবার ব্রত রাখেন, অনেকে আবার শিবরাত্রির দিন ভগবান শিবের পূজা করে থাকেন বা বাড়িতে নিত্য শিবের পূজা করে থাকেন - এই সমস্ত কিছুর উদ্দেশ্য হল নিজের এবং পরিবারের মঙ্গল কামনা করা অথবা অন্য কোন উদ্দেশ্য নিয়ে ব্যক্তি ভগবান শিবের পূজা করে থাকেন । কিন্তু সকলেই ভগবান শিবের পূজা করলে সকলেরই মনোকামনা কি তিনি পূর্ণ করেন? তা কিন্তু কখনই নয় । ভক্ত ভগবানের কাছে অনেক চাওয়া- পাওয়া নিয়ে পূজা করে থাকলেও ভগবান কিন্তু তার ভক্তের কাছে প্রচুর কিছু আশা করে না। তিনি ভক্তের ভক্তি ও শ্রদ্ধাতেই সন্তুষ্ট হন। তবে ভগবান শিব সেই ভক্তের ওপর অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন এবং তিনি তার সমস্ত মনোকামনা পূর্ণ করেন যার মধ্যে বিশেষ কিছু লক্ষণ থাকে । ঠিক তেমনি ব্যক্তির মধ্যে যদি এই সমস্ত নেতিবাচক দিক থাকে তাহলে ভগবান শিব তাতে আরো তার প্রতি রুষ্ট হন তাই ঠিক কোন কোন লক্ষণ গুলি আপনার মধ্যে থাকলে আপনি ভগবান শিবকে খুব সহজেই প্রসন্ন করতে পারবেন তা প্রত্যেক শিব ভক্তের জানা প্রয়োজন । 

বন্ধুরা,সবার প্রথম যে লক্ষণ টির কথা বলব তা ভগবান শিব অত্যন্ত পছন্দ করেন। আর তা হলো কোন ব্যক্তির কাছে অর্থ, ধন ,সম্পদ এই সমস্ত কিছু থাকা সত্ত্বেও যদি তার মধ্যে কোন প্রকার অহংকার না থাকে তাহলে ভগবান শিবের কৃপায় তার সর্বদা মঙ্গল হয় কিন্তু যদি এই অর্থ ধন-সম্পদই তার মধ্যে অহংকার তৈরি করে তাহলে তার পতন সুনিশ্চিত। সে হাজার ভগবান শিবের পূজা করুক না কেন এই অহংকারই তার পতনের কারণ হবে, ঠিক যেমনটি ঘটেছিল রাবণের সঙ্গে। তাই বন্ধুরা আপনি যদি ভগবান শিবের ভক্ত হয়ে থাকেন তাহলে মনের মধ্যে কোন বিষয়কে কেন্দ্র করে কখনো অহঙ্কার পোষণ করবেন না ।

দ্বিতীয়ত, যে লক্ষণ টির কথা বলব ভগবান শিবের অত্যন্ত পছন্দের এবং তিনি নিজেও এই প্রকৃতির ব্যক্তি আর তা হলো যে সর্বদা অপরের সঙ্গে নম্র ব্যবহার করেন, তার চেয়ে ভক্ত যতটা বিনয় হবেন ততটাই তিনি তার কৃপা পাবেন। উশৃংখল, ছন্নছাড়া উগ্র ব্যক্তি ভগবান শিবের কৃপা থেকে অনেকাংশে বঞ্চিত থাকেন। তাই যদি আপনি শিব ভক্ত হয়ে থাকেন ভগবান শিবের কৃপা পেতে চান তাহলে অতি অবশ্যই আপনাকে বিনয়ী এবং নম্র হওয়া প্রয়োজন।

 তৃতীয় লক্ষণটির কথা বলব তা হলো যে ব্যক্তি পশুপাখি খুব পছন্দ করেন। যিনি এই পশুপাখিদের যত্ন নেন, তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেন সেই ব্যক্তি ভগবান শিবের অত্যন্ত পছন্দের আর যে ব্যক্তি অকারণে পশু-পাখিকে নিধন করে তাদেরকে হত্যা করেন বা তাদেরকে পীড়া দেয় তাদের প্রতি ভগবান শিব অত্যন্ত রুষ্ট হন। তাই পশুপাখিদের প্রতি আপনার যদি উদার দৃষ্টিভঙ্গি থাকে তাহলে ভগবান শিবের পূজা করলে আপনি আপনি সহজে তার কৃপা পাবেন।

 চতুর্থ যে লক্ষণ টির কথা বলব তা হলো যে ব্যক্তির রাগ অত্যন্ত কম, কাউকে খারাপ কথা বলেন না, কারো খারাপ চান না, যে সকলের মঙ্গল কামনা করে থাকেন সেই ব্যক্তি ভগবান শিবের অত্যন্ত পছন্দের । সেই ব্যক্তি ভগবান যদি ভগবান শিবের পূজা করে থাকেন সঙ্গে সঙ্গেই তার সমস্ত মনোকামনা তিনি পূরণ করেন কিন্তু ব্যক্তির মধ্যে যদি অত্যন্ত ক্রোধ থাকে এবং কথায় কথায় যদি তিনি মানুষকে অপমান করেন তাহলে ভগবান শিবের কৃপা দৃষ্টি থেকে তিনি অনেকাংশে বঞ্চিত হন।

পঞ্চম যে বিষয়টির কথা বলব তা হলো যে ব্যক্তি নিজের কথা না ভেবে অন্যকে সাহায্য করেন এবং যে ব্যক্তি জীবনের যে কোন অবস্থাতে সাধারণ জীবন-যাপন করতে পছন্দ কাউকে নিচু করার প্রবণতা যাদের মধ্যে থাকে না এবং সবথেকে বড় বিষয় সে যদি নিজে নির্ধনও হয়ে থাকেন তাহলেও অন্যকে দান করার মনোবৃত্তি যার মধ্যে থাকে সেই ব্যক্তি ভগবান শিবের অত্যন্ত পছন্দের ব্যক্তি হয়ে থাকেন। সেই ব্যক্তি ভগবান শিবের কাছে যে উদ্দেশ্য নিয়ে পূজা করে থাকেন সেই উদ্দেশ্যে তিনি নিশ্চিত রূপে সফল হয়ে থাকেন। তাই আপনি যদি ভগবান শিবের পূজা করে থাকেন তার কৃপা দৃষ্টি পেতে চায় তার আশীর্বাদ পেতে চান তাহলে এই সমস্ত গুণগুলো আপনার মধ্যে রোপন করা প্রয়োজন আর সেই সমস্ত নেতিবাচক দিকগুলো পরিত্যাগ করা প্রয়োজন।

একজন ব্যক্তির মধ্যে এই সমস্ত গুণ থাকলে সেই ব্যক্তি সমাজের কাছে একজন আদর্শ ব্যক্তি হিসেবে গণ্য হন। আর এই গুন গুলি আমাদের প্রত্যেকেরই বিকশিত করা প্রয়োজন। আমাদের ধর্ম আমাদের শেখায় এই গুনগুলো কে নিজেদের মধ্যে লালন-পালন করতে তবেই ভগবানের কৃপা পাওয়া যায়।