নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম।ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই চ্যানেল এর প্রধান বিষয়বস্তু ।
আজকে আপনাদের সামনে যে বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব তা হল- 'চার ধরনের মানুষের মধ্যে কে শ্রীকৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয়'? ভক্তি কি মানুষের জীবনকে দুর্বল করে?
আমরা মানুষরা চাই জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ আনন্দ। কিন্তু মানুষ দুঃখের সাগরে বা ভব সাগরে পতিত। সুখের আশায় মানুষ জগতে ঘুরে বেড়ায় ।কিন্তু জগৎ-ও হলো অপূর্ণ। তাই মানুষ সেই প্রকৃত সুখ লাভ করতে পারে না। কিন্তু ভগবান হলেন পূর্ণ। তার কোনো অভাব নেই ,তাই তিনি সুখ স্বরূপ, শান্তি স্বরূপ,আনন্দ স্বরূপ। শাস্ত্র বলে- তিনি হলেন সচ্চিদানন্দ। এই অখণ্ড সুখ লাভের আশায় মানুষ কে ভগবানের সঙ্গে যুক্ত করে রেখেছে। মানুষ মাত্রেই শ্রী ভগবান কে ভালোবাসে। তার কাছে যেতে চায়। কিন্তু শাস্ত্র বলে ভগবান হলে নিরাকার।তার কোনো আকার নেই, তবে মানুষ তাঁর কাছে যাবে কি করে! করুণাময় হলেন শ্রী ভগবান। তাই তিনি গরু রূপে ভক্তের সম্মুখে আসেন। ভক্তের দুঃখ কষ্ট দূর করে। কিন্তু প্রশ্ন হল, ভগবান কি সব ভক্তের কথাই শোনেন, সব ভক্তের দুঃখ ,কষ্ট ,জ্বালা দূর করেন। শ্রীশ্রীঠাকুর দুর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেব বলেন, ভক্তির কোন দোকান নেই, ভক্তি বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না। ভক্তির জন্মস্থান হল মন ।মনেতেই ভক্তি থাকে। তাই শাস্ত্র বলে ভক্তের হৃদয় টি হল ভগবানের বাসস্থান। শ্রীভগবান- গীতাতে চার প্রকার ভক্তের কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ভগবান এটাও বলেছেন যে এই চার প্রকার ভক্তের মধ্যে কোন প্রকার ভক্ত তার প্রিয়। শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেন "হে অর্জুন" চার প্রকার ভক্ত ভালোবেসে আমার শরণাগত হয়ে থাকে।
প্রথম হল, কিছু ভক্ত আছে যারা বিপদগ্রস্ত হয়ে আমাকে স্মরণ করে। যেমন, কুরুসভায় দ্রোপদী বিপদে পড়ে ভগবানকে স্মরণ করেছিল রক্ষা পাবার জন্য।দ্বিতীয় হল, জিজ্ঞাসূ! অর্থাৎ কিছু ভক্ত আছে যারা জ্ঞান লাভের জন্য আমাকে স্মরণ করে। যেমন, রাজশ্রী জনক। তৃতীয় হল, অর্থ লাভের জন্য। অর্থাৎ কিছু ভক্ত আছে যার অর্থ লাভের জন্য আমার পূজা করে থাকে। এরকম ভক্তরা ইহকাল-পরকালএ ভোগ সুখ লাভ করে। যেমন- ধ্রুব ,বিভীষণ ,সুগ্রীব ইত্যাদি।চতুর্থত হল, জ্ঞানী। অর্থাৎ কিছু কিছু ভক্ত আছে যারা নিত্যদিন ভগবানের আরাধনা করে থাকেন। এরকম ভক্তরা হলো ভগবত প্রেমিক।" শ্রীভগবান আরো বলেন, এই চার প্রকার ভক্তর মধ্যে-নিত্য যুক্ত আমাতে একনিষ্ঠ অর্থাৎ ভক্তি সম্পন্ন জ্ঞানই হলো শ্রেষ্ঠ ভক্ত"। কারণ অন্য তিন প্রকার ভক্ত কার্যসিদ্ধির পর আমাকে ভুলে যায়। কিন্তু, যে সকল ভক্তগন অতি শ্রদ্ধা করে, আমাতে মনোনিবেশ করে আমার ভজন ও উপাসনা করে। শ্রী ভগবান এর মতে সেই ভক্তই হল শ্রেষ্ঠ ভক্ত।
কিছু কিছু মানুষ বলে ভক্তি মানুষকে দুর্বল করে দেয়! শক্তিহীন করে দেয়! কিন্তু ভাবুন যদি তাই হত, তবে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে পান্ডবদের জয় হতো না। তাই ভক্তি-ধারা এ জগৎ-এ ধর্মের প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়। এর সাথে সাথে মনে প্রকৃত শান্তি বা সুখ লাভের উপায় টিও শ্রীভগবান বলেন গীতায়। তিনি বলেন, আমাতে মন সমাহিত করো। আমাতেই বুদ্ধি নিবেশ করো, এইরূপ করতে পারলে তুমি নিশ্চয়ই সৎ স্বরূপে স্থিতি লাভ করবে,এতে কোন সন্দেহ নেই। যে ভক্ত সমস্ত কর্মই প্রভু উচ্চারণে সমর্পণ করে, এইরূপ ভক্ত কে ভগবান মৃত্যুর সাগর থেকে উদ্ধার করার জন্যও একবারও ভাবেন না। এটিই ছিল ভগবানের বাণী।
ভালো লাগলে আপনজনের সাথে শেয়ার করবেন । সকলেই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন আজ এখানেই শেষ করলাম ।নমস্কার , ধন্যবাদ; ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা