Breaking

Search Content

Follow Us

মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২১

শ্রী কৃষ্ণের নিত্য পূজা পদ্ধতি || শ্রী কৃষ্ণের পূজার আরতি, মন্ত্র, প্রণাম।

 




নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম।ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু ।


আজকে আপনাদের সামনে যে বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব তা হল- ভগবান শ্রী কৃষ্ণের নিত্য পূজা পদ্ধতি সম্পর্কে।


"হরেকৃষ্ণ হরেকৃষ্ণ

কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে

হরে রাম হরে রাম

রাম রাম হরে হরে"


বন্ধুরা সকলেই মনে রাখবেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ এবং ব্যয় সাপেক্ষ নয়। পূজার প্রধান বিষয় হলো তার প্রতি আপনার সম্পূর্ণ সমর্পণ এবং ভক্তি ও নিষ্ঠা। তাই প্রত্যেকদন সহজ-সরলভাবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এইভাবে আরাধনা করুন। দেখবেন না চাইতে আপনি অনেক কিছুই পেয়ে গেছেন। 


• কিভাবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বা তার বাল্য রূপ গোপালের পূজা করবেন?


সবার প্রথমেই বলি যদি আপনার বাড়িতে গোপালের অথবা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কোন মূর্তি থাকে, তাহলে আপনি সেই মূর্তিতেই পূজা করতে পারবেন। আর যদি না থাকে তাহলে অন্তত একটি ফ্রেমে বাঁধানো শ্রীকৃষ্ণের ফটো অথবা একটি শ্রী কৃষ্ণের মূর্তি বাড়িতে নিয়ে আসুন। এর সাথে সাথেই ভগবান শ্রী কৃষ্ণের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করলে একটি গণেশ মূর্তিও প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং গনেশ জির মূর্তিটি আপনি ঠাকুর ঘরে বসাতে পারেন। মনে রাখবেন স্নান করে শুদ্ধ পোশাক ধারণ করে মূর্তি দুটি স্থাপন করবেন।


মনে রাখবেন বাড়িতে যদি শ্রী কৃষ্ণের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন সিঙ্গার করা প্রয়োজন। অর্থাৎ আপনাকে সেই শ্রী কৃষ্ণের মূর্তিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং যে সিংহাসন বা ঠাকুরের আসনে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করবেন সেটি সাজিয়ে রাখা প্রয়োজন। সাজান সময় আপনি বিভিন্ন ফুল ব্যবহার করতে পারেন। তবে রজনীগন্ধা কিংবা গাঁদা ফুল যদি ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে খুবই ভালো।


সর্বদা একটি কথা মনে রাখবেন শ্রীকৃষ্ণকে কোনো ভগবান বা দেবতারূপে পূজা করার থেকে তাকে একজন বাড়ির সদস্য অথবা সন্তান হিসাবে পূজা করবেন। এক্ষেত্রে তে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অধিক সন্তুষ্ট হন। ঠিক যেমন আপনার বাড়িতে কোন সন্তানকে যত্নআত্তি করেন, ঠিক সেরকম ভাবে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের মূর্তিকে প্রতিদিন যত্ন-আত্তি করুন। তাই বাড়ির সন্তানরা যে ফল বা ফুল ভালোবাসে অথবা মিষ্টি খেতে ভালোবাসে সেসব দিয়েই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজা করবেন। 


পূজা সর্বদা স্নান করার পরে দেবেন। আর শ্রীকৃষর পূজার জন্য যে জিনিসটি অবশ্য প্রয়োজন তাহলো তুলসী পাতা। তাই প্রত্যেকদিন স্নান পর্ব সারার পর তুলসী পাতা তুলবেন , সেই দিয়ে এবং তার সাথে ফুল দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের পূজা করবেন।


শ্রী কৃষ্ণের পূজার প্রারম্ভে যে বিষয়টি করতে হবে সেটি হল গণেশ বন্দনা। আমরা সবাই জানি যে কোন শুভ কাজের সূচনা রাগে গণেশ জি কে স্মরণ করা হয়। কিংবা বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম পূজা হিসেবে গনেশ পূজা করা হয় । গনেশ জির পূজা শুভ সূচনা বলে মনে করা হয়।


স্নানপর্ব সারার পর তুলসী পাতা তুলে ঠাকুর আসনের সামনে বসে প্রদীপ ও ধুপকাটি জালুন। তারপর গনেশ জির উদ্দেশ্যে প্রদীপখানি নিবেদন করুন এবং গণেশ বন্দনা মন্ত্র পাঠ করুন। আর গনেশ জির এই প্রার্থনা মন্ত্রটি হলো- 

"ওঁম গন্ গনেশায় নমঃ।।"


এই মন্ত্রটি যদি সম্ভব হয় তাহলে 108 বার জপ করুন। আর যদি সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে আপনি তিনবার জপ করতে পারেন। এরপর কিছুক্ষন ধ্যান করে মনকে শান্ত করুন। 


তারপরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে আপনার কাছে ডাকুন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে স্মরণ করার সময় এই মন্ত্রটি উচ্চারণ করুন-


"ওঁম নমঃ ভগবতে বাসুদেবায় ।।"


মন্ত্রটি 108 বার উচ্চারণ করতে করতে শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে ফুল নিবেদন করুন এবং শ্রীকৃষ্ণের বুকে তুলসী পাতা নিবেদন করুন। এরপর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য নিবেদন করুন এবং তাতেও তুলসী পাতা দিয়ে রাখুন। এরপরে সর্বশেষে ঘরে চারিদিকে গঙ্গা জল ছিটিয়ে দিন। তারপরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে আরতী প্রদান করুন। আপনি প্রদীপ জ্বেলে এবং ঘণ্টাধ্বনি সহযোগে আরতী করতে পারেন। আর এই সমস্ত কিছু করার সময় একটি মন্ত্র উচ্চারণ করে যেতে হবে 108 বার।


"ওম নমঃ ভগবতে বাসুদেবায়ো।।"


আরতি পূজা শেষ হলে সবশেষে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে প্রণাম জানান। তাকে প্রণাম করুন এবং প্রণাম করার সময় কখনই তার কাছে কোন পার্থিব বিষয় চাইবেন না। তার কাছে শুধুমাত্র এই একটি প্রার্থনায় করবেন প্রণাম করার সময়-যে তিনি যেন সদা সর্বদা আপনার এবং আপনার পরিবারের সহায় থাকেন। দেখবেন এই একটি ছোট্ট প্রার্থনায় আপনার জীবনে অনেক ভালো কিছু এনে দিয়েছে। সেই কারণে  অন্য কোনো বিষয়ে পার্থিব কোনো জিনিস চাইবেন না।


পূজা পর্ব সমস্ত শেষ হয়ে যাবার পর ভগবত গীতা পাঠ করুন। যদি সম্ভব না হয় তাহলে অন্তত একটি মাত্র শ্লোক হলেও পাঠ করবেন।


ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ধর্মীয় আচার আচরনের থেকে কর্ম করাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রতিটি মানুষের সহায় ভগবান আছেন। এই বিষয়টি ভেবেই আমাদের কর্ম করে যেতে হবে। ফলের প্রতি চিন্তা না করে, নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের কর্তব্য ও কর্ম করে যাওয়া এটাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আমাদের শ্রেষ্ঠ পূজা। তাই নিষ্ঠার সহযোগে কর্ম করে যান এবং এই ভাবেই শ্রী কৃষ্ণের নিত্য পূজা করুন। অবশ্যই শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ পাবেনই পাবেন।


আশা করি বন্ধুরা আজকের বিষয়টি আপনাদের ভালো লেগেছে, লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অথবা যারা শ্রী কৃষ্ণের নিত্য পূজা করতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন আমাদের অমৃতকথা ইউটিউব চ্যানেলটিকে ফলো করতে পারেন।


ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।


নমস্কার ধন্যবাদ।।


ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।








কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা