Breaking

Search Content

Follow Us

মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২২

জ্ঞানী ব্যক্তির সম্মান হানি হলে কি করা উচিত || কোনো পুরুষের নিজের সম্মান বজায় রাখতে কি করা প্রয়োজন।




নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম।ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু ।


আজকে আপনাদের সামনে যে বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব তা হল- "কোনো পুরুষের তার নিজের সম্মান বজায় রাখতে ও নিজের শ্বশুরবাড়িতে সম্মানের জায়গাটি টিকিয়ে রাখতে " - কি করা প্রয়োজন ?? 


• জ্ঞানী মানুষের সম্মান হানি হলে কি করা উচিত?


বন্ধুরা যদি আপনি একজন বিবাহিত পুরুষ হন এবং আপনি ভাবছেন আপনার শ্বশুর বাড়িতে ঘরজামাই হয়ে থাকবেন, তাহলে এখনই থেমে যান। মানছি কোনো পূজার্চনা বা অন্য কোনো অনুষ্ঠান হলে আপনাকে আপনার শ্বশুড়বাড়ি অবশ্যই যেতে হবে। কিন্তু এরকম করলে আপনার জীবনে একটি পরিবর্তন আনতে পারে। এই পরিবর্তন কি সেই সম্পর্কে একটি গল্প কথার মাধ্যমে চলুন আপনাদের বোঝাই।


বন্ধুরা আপনারা যদি -

 "কোনো পুরুষের তার শ্বশুরবাড়িতে বেশি থাকতে নেই কেন  " - সেই কারণ গুলি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ুন। 



জীবন-বদলে-দেওয়া-গল্প 


একটি গ্রামে একজন জ্ঞানী ব্যক্তি ছিল। পুরো গ্রামে তার খুব নাম ডাক ছিল। কিন্তু তার বাবা কখনোই তার প্রশংসা করতেন না। কেউ তার বাবাকে যদি জিজ্ঞাসা করত আপনি কখনো আপনার ছেলের প্রশংসা করেন না কেন? তখন তার বাবা উত্তরে বলতো- এখনো তো সে বাচ্চা! 


একদিন সে এই বিষয়টির উপর ভেবে বিরক্ত হয়ে তার বাবাকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। রাত্রিবেলায় সে একটি ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার বাবার ঘরের সামনে গিয়ে পৌঁছায়। সে দরজার কাছে পৌছিয়ে তার মার গলা শুনতে পায়। তার মা তার বাবার সাথে এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করছিল।


তার মা তার বাবাকে বলছিল - যে আমাদের ছেলে একজন বড়জ্ঞানী মানুষ হয়েছে। পুরো গ্রাম আমাদের ছেলের প্রশংসা করতে থামেনা। কিন্তু, সেতো তোমারি ছেলে, তাহলে তুমি কেন তার প্রশংসা করো না? 

প্রশ্নের উত্তরে তার বাবা তার মাকে বললেন-হ্যাঁ, আমি জানি আমাদের ছেলে খুবই জ্ঞানী মানুষ। আমি কখনোই চাইনা তার ভিতরে এই জ্ঞানী হওয়ার জন্য কখনো অহঙ্কারের জন্ম নিক। কিন্তু, হ্যাঁ! আমাদের ছেলের পিঠ পিছে আমি ওর অনেক প্রশংসাই করি। কিন্তু, ওর সামনে কখনো করিনা।


এই সমস্ত কথা দরজার আড়াল থেকে ওই জ্ঞানী পুরুষ শোনার পর ভাবতে শুরু করলো সে কত বড়ই না ভুল করতে যাচ্ছিল। এরপর সে তাঁর পিতার চরণে পড়ে ক্ষমা চাইতে লাগলো এবং বলল- হে পিতা তুমি আমাকে ক্ষমা করো। আমি মতিভ্রম হয়ে নিজের পিতাকে মেরে ফেলার মত চিন্তা আমার মাথায় এনেছিলাম। আমাকে এই ধরনের কাজের জন্য উপযুক্ত শাস্তি দিন। প্রথমে তার পিতা তাকে মানা করলো। কিন্তু, ছেলের বারবার একই কথা বলে যাওয়ার কারণে সে তার ছেলেকে বলল- তোমার সব থেকে বেশি সম্মান কোথায় করা হয়? উত্তরে জ্ঞানী পুরুষটি বলল- শ্বশুরবাড়িতে।

এই উত্তর শোনার পর তার পিতা তাকে বলল এবার থেকে সামনের ৬ মাস তুমি তোমার শশুর বাড়িতে থাকবে। এরপর সেই জ্ঞানী পুরুষটি তার স্ত্রীর সঙ্গে শশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিল। শ্বশুর বাড়ি পৌঁছানোর সাথে সাথেই তাকে দেখে সকলে দেখে খুব খুশি হলো। 


প্রথমে তার জন্য নানান রকমের খাবারের আয়োজন করা হলো। দ্বিতীয় দিন হতে না হতেই খাবারের আয়োজন কিছুটা কমে গেল। এইভাবে ধীরে ধীরে যত দিন যাচ্ছে তত খাবারের রকমারি আয়োজন কমতে থাকে। এমনকি এমন দিন আসতেও দেরি হলো না যে খাবারে বাসি রুটি তাকে খেতে দেওয়া হল। শুধু তাই নয় তাকে দিয়ে তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কাজ করাতে শুরু করলো। তাকে দিয়ে গরু চরানো এবং গরুর গোবর পরিষ্কার করানো হল। তার স্ত্রী এই সমস্ত কিছু সহ্য করতে না পেরে তার সাথে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে লাগলো। তার স্ত্রী তাকে সে বলতে লাগল যে এত জ্ঞানী হওয়া সত্ত্বেও সে তার শ্বশুরবাড়িতে এসে এই ধরনের কাজ কেন করবে এবং সে আরও বললো এর থেকে ভালো আমরা আমাদের বাড়ি চলে যাই। কিন্তু, সেই জ্ঞানই মানুষটি তার শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে যেতে রাজি হল না। সে তার স্ত্রীকে মানা করে দিল। সে যাবেই বা কিভাবে, সে তো তাঁর পিতার কাছে কথা দিয়ে এসেছে, তার পিতার দেয়া উপযুক্ত শাস্তি মাথা পেতে নেবে।


একদিন সেই জ্ঞানী বিদ্বান মানুষটি শান্তভাবে তার শ্বশুর বাড়ি বসে একটি শ্লোক লিখছিলেন। তাকে তার স্ত্রী শ্লোক লিখতে দেখে তখনই বলতে লাগলো- শ্লোক বানাচ্ছেন, এগুলো আর বানাতে হবে না। এগুলোর কোনো অর্থই নেই- এর কোনো দাম নেই। তখন সে বিদ্বান জ্ঞানী মানুষটি তার স্ত্রীকে বলেন- না! এরকমটা না। আমার এক একটি শ্লোকের অনেক দাম আছে। এই কথা শোনার পর তার স্ত্রী তার লেখা শ্লোকগুলি নিয়ে বাজারে রওনা দিলেন বিক্রি করার উদ্দেশ্যে। সবাই সেখানে খাবার-দাবার, পণ্য সামগ্রী ও বস্ত্র শস্ত্র বিক্রি করছিল। কিন্তু, সে সেখানে শ্লোক বিক্রি করতে শুরু করলো। বাজারে যাওয়া প্রত্যেকটি মানুষই প্রায় তার কাছে গিয়ে শ্লোক গুলির দাম জিজ্ঞাসা করতে লাগলো।তখন সে বললো ১ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা। কিন্তু, তা কেউ কিনল না। অথচ ধীরে ধীরে বাজারের অন্যান্য পণ্য সামগ্রী বিক্রি হয়ে গিয়েছিল।


তখনই সেখানে উপস্থিত হলেন রাজা। রাজার ওই রাজ্যের নিয়ম ছিল যদি কোনো ব্যক্তির বাজারে কোনো কিছু বিক্রি না হয় রাজা তা কিনে নেবে। তখন রাজা সেই বৃদ্ধ পুরুষের স্ত্রীর কাছে গিয়ে বললেন- এটা তুমি কি বিক্রি করছো? উত্তরে তাঁর স্ত্রী বললেন এটি হলো 'শ্লোক'। যা আমার স্বামী লিখেছেন। রাজা দাম জিজ্ঞাসা করাতে-বিদ্বান ব্যক্তি স্ত্রী তখন বললেন ১ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা। রাজার রাজ্য যেহেতু নিয়ম ছিল সেই অনুযায়ী রাজা তা সেই দামেই কিনতে বাধ্য হলেন। আর বিদ্বান ব্যক্তির স্ত্রী ১ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে বাড়ি ফিরে এলেন। 


বাড়ি ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ির প্রত্যেকে তার হাতে স্বর্ণমুদ্রার থলেটি দেখে অবাক হলেন এবং পুনরায় আবার আগের মতোই তার স্বামীর আদর যত্ন করতে লাগলেন। এইভাবে ৬ মাস কেটে গেল। তারপর সেই বিদ্বান ব্যক্তি ও তার স্ত্রী পুনরায় তার বাড়ি ফিরে এলেন।


বন্ধুরা এই গল্পটি থেকে এটি শিক্ষা নেওয়া যায়-পৃথিবীতে বেশিরভাগ মানুষই টাকা-পয়সা ধন দৌলতের সঙ্গী। এখানে কেউ কারো সম্মান করে না। এখানে কেউ কারো নিজের হয় না। ‌সম্মান করলে শুধু করে সেই ব্যক্তির সঙ্গে যুক্ত তার পদ, ধন-দৌলত, পদোন্নতি এবং তার থেকে হওয়া নিজের লাভের অংশকে। তাছাড়া খুবই কম মানুষ আছে যারা বাস্তবিকতার সঙ্গে আপনাকে মানে বা সম্মান করে। এই জন্য যে পুরুষেরা ভাবেন শ্বশুরবাড়িতে তার খুবই আদর যত্ন হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্যে এটি বোঝা প্রয়োজন শ্বশুরবাড়িতেও আদর-যত্ন কিছু সময়ের জন্যই হয়। এই কারণেই আপনি যতই দূরত্ব বজায় রাখবেন, ততোই সম্মান পাবেন।


আরো পড়ুনঃ- ভালো সময় আসার আগে মেলে এই ৭ টি সংকেত-Click here


আশাকরি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন এবং বুঝতে সক্ষম হয়েছেন কোনো পুরুষের নিজের ব্যক্তিত্ব ও সম্মান কিভাবে টিকিয়ে রাখতে হয় এবং তারি সাথে নিজের শ্বশুরবাড়িতে কিভাবে সম্মানের জায়গাটি ঠিক রাখতে হয়। ভালো লাগলে আপন জনের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন অথবা আমাদের অমৃত কথাই ইউটিউব চ্যানেলটি ফলো করতে পারেন।

ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। 

নমস্কার ধন্যবাদ ।।

ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা