৭ টি এমন কর্ম - যা আপনার আয়ু কমিয়ে দেয়।

 

নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু ।

আজকে আপনাদের সামনে যে বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব তা হল- "৭ টি এমন কর্ম সম্পর্কে - যা আপনার আয়ু কমিয়ে দেয়।"

বন্ধুরা প্রতিটি মানুষই চায় অনেকদিন বাচঁতে। কিন্তু কিছু লোকের এই ইচ্ছাটি পূর্ণ হয় না। তাদের অনেক রোগ-ব্যধি ঘিরে ধরে। যার ফলে তাদের মৃত্যু হয়ে যায়। কিন্তু আপনি কি জানেন কিছু কর্মের ফলে মানুষের আয়ু কমে যায়। আজকের এই লেখাটিতে এই কর্মগুলিই নিয়ে আলোচনা করব আপনাদের সঙ্গে। যার ফলে মানুষের শরীর সময়ের আগেই দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তাদের আয়ু কমে যায়।

বন্ধুরা মহাভারতের অনুশাসন পর্বে এরকম অনেক কর্মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যে কর্মগুলি করলে ব্যক্তির আয়ু কমে যায়। এই পর্ব অনুসারে মৃত্যুর পরে মানুষের ভালো-খারাপ প্রত্যেকটি কর্মেরই গুণাবলী নিশ্চিত করে সেই ব্যক্তির স্বর্গবাস অথবা নরকবাস। কিন্তু জীবন্ত অবস্থায় মানুষটি কি কর্ম করছে তার ভিত্তিতেই তার পরবর্তী সময়ে স্বর্গবাস অথবা নরকবাস নিশ্চিত হয়ে থাকে। চলুন বন্ধুরা জেনে নেওয়া যাক সেই কারণগুলি সম্পর্কেঃ- 

প্রথমতঃ- (ধর্মকথা উল্লঙ্ঘন)

মহাভারত গ্রন্থ অনুসারে যে ব্যক্তি ধর্ম কথার উল্লঙ্ঘন করে বা যদি কেউ ধর্মের নিন্দা করে তার আয়ু কমে যায়। অন্যদিকে যেসব ব্যক্তিরা সঠিকভাবে ধর্ম পালন করে এবং ধর্মের প্রত্যেকটা কথার গুরুত্ব দেন সেই ধরনের মানুষ দীর্ঘজীবী হয় এবং ভগবানের আশীর্বাদ সদা সর্বদা তাদের সঙ্গে থাকে।

দ্বিতীয়তঃ (ব্যবহার)

বন্ধুরা ব্যবহার হলে এমন একটি জিনিস যা আপনাকে কারো বন্ধু অথবা কারো শত্রুতে পরিণত করে। যে ব্যাক্তি সকলের সাথে ভাল করে কথা বলে, কখনো খারাপ শব্দ ব্যবহার করে না, আর নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী অন্যান্য মানুষদের সাহায্য করে এই ধরনের মানুষদের আয়ু বৃদ্ধি ঘটে। এরই সাথে বয়স্ক মানুষদের সঙ্গে ভালোভাবে ব্যবহারকারী ব্যক্তিগণের আয়ু বৃদ্ধি হয়।

অন্যদিকে যেসব ব্যক্তিরা সাধারণ এবং সাদাসিধে মানুষদের ক্ষতি করার চেষ্টা করে অথবা তাদের বিরক্ত করে সেই ধরনের মানুষদের আয়ু কম হয়ে যায়।

তৃতীয়তঃ (অন্নের অপমান) 

কিছু মানুষের এমন অভ্যাস হয় তারা খাবারের খুত বার করে অন্নের অপমান করে। যেমন- খাবারে নুন কম হয়েছে কিংবা বেশি, খাবারটি খেতে ভালো হয়নি, তেল বেশি হয়ে গেছে ইত্যাদি। কিন্তু এমনটা করা শাস্ত্রসম্মত নয়। কেননা অন্নকে আমাদের ধর্মে দেবতা বলে মনে করা হয়। এইজন্য ভোজন কে ঈশ্বরের প্রসাদ মনে করে গ্রহণ করা উচিত। আর তার নিন্দা কখনো করা উচিত নয়।

চতুর্থতঃ-  এছাড়াও গরুর পুরানে জীবনকে সঠিক ভাবে পরিচালনা করার জন্য কিছু নিয়ম বা অভ্যাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই নিয়ম বা অভ্যাস গুলোর মধ্যে অন্যতম কিছু অভ্যাস হলো- 

সকালবেলায় দ্রুত ঘুম থেকে ওঠা অর্থাৎ ব্রম্য মুহুর্তে ঘুম থেকে ওঠা সবথেকে উপযুক্ত বলে মনে করা হয়। ভোরবেলা ৪টে থেকে ৫ টা বেজে ৩০ মিনিট পর্যন্ত সময় ব্রম্য মুহূর্ত বলে বিবেচিত। ব্রম্য মুহুর্তে ঘুম থেকে ওঠার ফলে মানুষের জীবনে- সুন্দরতা, আয়ু এবং স্বাস্থ্য এই তিনটির বৃদ্ধি হয়।

অন্যদিকে যেসব ব্যাক্তিরা দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন তাদের অনেক ধরনের শারীরিক এবং মানসিক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এর সাথেই সেইসব মানুষের পাচনতন্ত্র বিপর্যয় ঘটতে থাকে।

পঞ্চমতঃ-  এছাড়াও আরো কিছু খুঁটিনাটি কারণ রয়েছে যার ফলে মানুষের আয়ুতে গভীর প্রভাব পড়ে। এর মধ্যে একটি হলো  - নিজের নখ খাওয়া বা দাঁত দিয়ে নখ চাবানো। বন্ধুরা আপনারা অনেকেই দেখেছেন হয়তো নিজের নখগুলো দাতে করে চেবাতে, এমনটা করা একদমই ঠিক না। এর ফলে আপনার শরীরে বিভিন্ন ছোট ছোট ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে। যা আপনার শরীর অসুস্থ করে দেয়। যা আপনারা আয়ুর ওপর একটি গভীর প্রভাব ফেলে।

ষষ্ঠতঃ- যে ব্যক্তি প্রতিদিন স্নান করে না তার আয়ু কমতে থাকে। এইজন্য ব্রম্য মুহুর্তে ঘুম থেকে ওঠার পর স্নানপর্ব সেরে নেওয়া শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে সর্বোত্তম বলে বিবেচিত।

এরই সাথে নোংরা জিনিস এর সঙ্গে যুক্ত আরেকটি বিষয় হল-আমাদেরকে আমাদের রান্নাঘর গুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আর ভুলেও কখনো এঁটো থালায় পুনরায় খাবার খাওয়া যাবেনা।

সপ্তমতঃ- বাসি মাংস ভক্ষণ করা। হিন্দু ধর্মে আমিষ ভক্ষণ করা নিষেধ। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু লোক মাংস ভক্ষণ করে থাকেন। যদি বন্ধুরা আপনারা বাসি মাংস ভক্ষণ করেন তাহলে এটি আপনার শরীরের পক্ষে বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এক্ষেত্রে সর্বদা মনে রাখবেন বাসি মাংস তে বিভিন্ন প্রকার ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া চলে আসে। যা খাওয়ার ফলে গম্ভীর কোনো রোগের উৎপত্তি ঘটার সম্ভাবনা থাকে। এই রোগগুলোর ফলে আপনার আয়ু কম হয়ে যেতে পারে। 

বন্ধুরা আপনারা যদি দীর্ঘায়ু লাভ করতে চান তাহলে এই বিষয়গুলো অবশ্যই মেনে চলুন এবং এই কর্মগুলো সঠিকভাবে পালন করুন। আশাকরি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনার সম্মৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনদের উদ্দেশ্য অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

 ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।