Breaking

Search Content

Follow Us

শনিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

সকল স্ত্রীদের মাতা সীতা থেকে শেখা উচিত এই কাজ গুলি || জানুন মাতা সীতার গুণ ।





নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু ।


বন্ধুরা, আজ আমরা রামায়ণের সেই কাহিনী বলতে চলেছি যা সমস্ত নারী জাতির মনে প্রেরণা জোগায়। এখন আমরা যে বিষয়ে আলোচনা করব তা হল - দেবী সীতা কে নিয়ে। 


দেবী সীতা মিথিলার রাজা জনকের জ্যেষ্ঠ কন্যা ছিলেন, এই কারণে তাকে জানকিও বলা হত। জীবনের সমস্ত পদক্ষেপে তাকে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আর তিনি সমস্ত পরীক্ষা গুলিকে সাহস এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে পার করেছেন। 


তাহলে চলুন এখন এই লেখার মাধ্যমে জানা যাক কোন গুণটি তার ব্যক্তিত্বকে বেশি ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছে এবং যেই গুণগুলি নারী জাতির মধ্যে থাকলে যেকোনো নারীর জীবন সহজ এবং সুন্দর হবে।


বন্ধুরা রামায়ণের আমরা দেখেছি মাতা সীতার বিভিন্ন গুন রয়েছে, যার মধ্যে একটি হলো- 'ত্যাগ'। দেবী সীতার সম্পূর্ণ জীবন ত্যাগের মধ্যে দিয়ে কেটেছে। দেবী সীতার ছোটবেলা খুবই আদর যত্নের মধ্যে দিয়ে কেটেছে। তার ধন সম্পত্তির কোনো অভাব ছিল না। কিন্তু, প্রভু শ্রী রামের সাথে বিবাহ সম্পূর্ণ হওয়ার পর, কৈকেয়ী চক্রান্ত করে রাজা দশরথের কাছে চেয়েছিলেন রামকে ১৪ বছরের জন্য বনবাসে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। তখন দেবী সীতাও প্রভু শ্রী রামের সাথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, আর অযোধ্যার রাজকার্য সব ত্যাগ করেন। এর থেকে বোঝা যায় ধনসম্পত্তির প্রতি তাদের কোনো লোভ ছিল না। শুধু তাই নয় বনবাসের পর যখন তারা অযোধ্যায় ফিরে আসেন তখন আবার প্রজাদের খুশির জন্য এবং প্রভু শ্রী রামের করিমা ও প্রতিষ্ঠা রক্ষার উদ্দেশ্যে পুনরায় আবার মাতা সীতা রাজপাঠ ত্যাগ করে দেন এবং ঋষি বাল্মীকির আশ্রমে নিজের জীবন কাটান। বর্তমানে মহিলারা মাতা সীতার এই গুণ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে।



দ্বিতীয় গুন হলো 'সাহসী'। রাবণ যখন ছলনা করে দেবী সীতাকে অপহরণ করে লঙ্কার অশোক বাটিকায় রেখেছিল, তখন রাবণ দেবী সীতাকে অনেক সময় মায়াবী রাক্ষস দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, তিনি একটুও ভয় পাননি এবং অনেক বার রাবণের হুমকি দেওয়া ও ভয় দেখানোতেও তার সাহসকে কেউ দমাতে পারেনি। আর তিনি সেই মায়াবী অশোক বাটিকাতে প্রভু শ্রী রামের অপেক্ষায় ছিলেন। যা থেকে বোঝা যায় দেবী সীতা কতটা সাহসী ছিলেন। 


তিনি এতটাই পরাক্রমী ছিলেন যে - যেই ধনুক রাবণ ওঠাতে পারেনি তিনি সেটি নিয়ে ছোটবেলায় খেলতেন। তিনি সমাজকে বলেছিলেন, নারীজাতিকে কখনোই দুর্বল এবং অসহায় ভাববে না। কঠিন থেকে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা সাহসের সাথে করতে পারে তারা।


মাতা সীতার সব থেকে বড়গুণ - 'পতিব্রতা' বা পতির উপর পবিত্রতার প্রতীক ছিলেন তিনি। তিনি চাইলে পারতেন অযোধ্যায় সুখ ও আরামের সাথে জীবন কাটাতে কিন্তু নিজের স্বামীর সাথে বনবাসে যাওয়ার জেদ তার মধ্যে ছিল। তিনি বলেছিলেন, আমার স্বামী আমাকে যেখানে যে অবস্থায় রাখবে আমি তার সাথে সেই ভাবেই থাকবো। এই কারণে তিনি অযোধ্যার সুখ ও আরামপ্রিয় জীবন ছেড়ে; কঠিন রাস্তা বেছে নেন। তিনি নিজের স্বামীকে খুবই ভালবাসতেন। 

বন্ধুরা আজ যেখানে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে ভাঙন দেখা দিচ্ছে সেখানে মাতা সীতা নারী জাতির জন্য এক বড় উদাহরণ স্বরূপ।


মাতা-সীতার আরেকটি গুণ হলো- আত্মনির্ভর। অযোধ্যা ছাড়ার পরে মাতা সিতা যদি চাইতেন যে, তিনি তার পিতা জনকের বাড়িতে গিয়ে আরামের সাথে জীবন কাটাবেন - তা করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। বরং ঋষি বাল্মীকির আশ্রমে থেকে সাধারণ জীবন যাপন করেন এবং একাই তার দুই পুত্র লব ও কুশকে মানুষ করেন। যা থেকে বোঝা যায় মাতা সিতা ছিলেন আত্মনির্ভর। একজন নারীর অন্য কোনো সাহারা ছাড়া নিজের দুই সন্তানকে একাই লালন পালন করা কোনো সাধারন কর্য নয়।

বন্ধুরা আজকাল যেখানে মানুষ নিজের ধনসম্পত্তি দেখিয়ে গর্ব করেন, সেখানে দেবী সীতা দামি দামি গয়না, কাপড় কোনো শখ ছিল না।


মাতা সীতার সকল গুণের মধ্যে অন্যতম একটি গুণ হলো -অহংকার না থাকা। তার মধ্যে এক ফোঁটা অহংকার ছিল না। মিথিলারাজের অত্যান্ত ভালোবাসার রাজকন্যা হওয়া সত্বেও তার মধ্যে কোনো অহংকার ছিল না। অযোধ্যা রানি হওয়ার পরেও তার জীবন খুবই সহজ এবং সরল ছিল। তিনি তার জ্ঞান এবং ভালো ব্যবহারের দ্বারাই সব সময় মানুষের মনকে জয় করতেন। তিনি সহজ-সরল জীবনই পছন্দ করতেন। বর্তমানে নারী জাতিকেও সীতা দেবীর গুন গুলি কে নিজেদের জীবনে আনতে হবে, কেননা আসল সৌন্দর্য একেই বলে। 

 

তাহলে বন্ধুরা আপনারা দেখলেন মাতা সীতা কত মহান ছিলেন। মাতা সীতার চরিত্র ছিল - সত্যনিষ্ঠা, পতি পরায়ন ও নিজের কর্তব্যের প্রতি সম্মান দেওয়া - এক নারীর চরিত্র। তার এই গুণগুলিকে যে মহিলা নিজের জীবনে কাজে লাগাবে তিনি যে কোনো সমস্যার মোকাবিলা খুব সহজেই করতে পারবেন।


আরো পড়ুন - ভগবান পরশুরাম কেন তার মাতা কে হত্যা করেছিলেন - Click here


আশাকরি বন্ধুরা আমাদের আজকের এই লেখাটি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে আপন জনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা