নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
আজকে আপনাদের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হল- আমরা দোলযাত্রা পালন করি কেন? হিন্দু ধর্মে হোলি উৎসবের কি মাহাত্ম্য রয়েছে?
হোলি উদযাপনের পৌরাণিক কথা
হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী হোলি উৎসব এর পিছনে রয়েছে আছে এক ইতিহাস। প্রাচীনকালে হিরণ্যকশিপু নামে একরাজা ছিল। হিরণ্যকশিপু ছিলেন হিন্দু ধর্মে বর্ণিত জনৈক দৈত্যরাজ। তিনি পরম বিষ্ণুভক্ত প্রহ্লাদের পিতা। তিনি কঠিন তপস্যা করে ব্রহ্মার বর লাভ করেন যে এই সংসারের কোনো জীব জন্তু, রাক্ষস অথবা মানুষ তাকে যেন না মারতে পারে। শুধু তাই নয় - রাত্রে অথবা দিনে, পৃথিবীতে অথবা আকাশে, ঘরে অথবা বাইরে কোথাও যেন তার মৃত্যু না হয়। এরূপ বরদান পারার পর হিরণ্যকশিপু নিজেকে ভগবান বলে মনে করতে লাগলো। হিরণ্যকশিপু চাইতেন ভগবান বিষ্ণুর মতো সবাই যেন তার পূজা করে। জনৈক দৈত্যরাজ হিরণ্যকশিপু ভগবান বিষ্ণুর পূজার ঘোর বিরোধী ছিলেন। কিন্তু, অন্যদিকে তার পুত্র প্রহ্লাদ ছিল বিষ্ণুর পরম ভক্ত। সেই অনুযায়ী তার পুত্র প্রহ্লাদ কখনোই তার পূজা করতে রাজি হয় না। কিন্তু প্রহ্লাদ ভগবান বিষ্ণুর পরমভক্ত হওয়ার কারণে তার উপর ভগবান বিষ্ণুর অসীম কৃপা ছিল।
নিজের পুত্রকে ভগবান বিষ্ণুর পূজা করতে দেখে হিরণ্যকশিপু অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়। এরপর তিনি তার পুত্র প্রহ্লাদ কে কঠোর শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু, তাতে কোন লাভ হয় না। সর্বদা ভগবান বিষ্ণুর আশীর্বাদ প্রহ্লাদের সঙ্গে থাকায় সেই শাস্তির কোনো প্রভাবই তার ওপর পড়ে না। ভগবান বিষ্ণু তাকে সকল বিপদ থেকে বাঁচান। এরপর হিরণ্যকশিপু ও তার বোন হোলিকা মিলে একটি ষড়যন্ত্র করেন যে হোলিকা প্রহ্লাদের সঙ্গে একটি চিতায় বসবেন। হোলিকার কাছে একটি বস্ত্র ছিল যেটা পড়ার পর কোনভাবেই তার গায়ে আগুন লাগবে না। (মতান্তরে বলা হয় হোলিকা কখনোই আগুনে পুড়বে না এই বরদান লাভ করেছিল।) অন্যদিকে প্রহ্লাদের নিজেকে বাঁচানোর জন্য কিছুই ছিল না। এরপর যখন হিরণ্যকশিপু ও তার বোন হোলিকা মিলে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করে ঠিক তখনই চিতায় আগুন জ্বলতে শুরু হলেই ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় হোলিকার গায়ে থাকা ঐ বস্ত্র বা চাদরটি উড়ে গিয়ে প্রহ্লাদের গায়ের উপর পরে। আর এই ভাবেই প্রহ্লাদের জীবন বেঁচে যায় এবং তার জায়গায় হোলিকা ওই আগুনে পুড়ে যায়। এরপর থেকেই প্রতি বছর এই দিনে পূর্ণিমা তিথিতে হোলি উৎসবের প্রথম দিন সমস্ত অশুভ শক্তির দমন করার জন্য আগুন জ্বালানো হয় এবং হোলি উৎসবকে খারাপ, অশুভ শক্তির উপর শুভশক্তির বিজয়ের প্রতীক হিসেবে পালন করা হয়।
এজন্যই দেখবেন বন্ধুরা হোলি উৎসবের আগের দিন সন্ধ্যা রাত্রে একটি পবিত্র আগুন জালানোর নিয়ম রয়েছে। যেই আগুনে সমস্ত রকমের অশুভ শক্তি, অহংকার ও অসততা কে পুড়িয়ে ফেলা হয়। আর তার পরের দিন সকালে আমরা আমাদের আপনজনের সঙ্গে রং মেখে উৎসবের শুভকামনা জ্ঞাপন করি।
আশাকরি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনার সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজন দের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
আরো পড়ুন:- পেঁয়াজ রসুন আমিষ না নিরামিষ? হিন্দুধর্ম মতে খাদ্য তালিকার ভাগগুলি কি?Click here
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা