শুধু সৎ হলেই চলবে না, চালাক হওয়াটাও জরুরী || জীবনের নীতি নির্ধারণের কলাকৌশল।

 

নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।  

আজকে আপনাদের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হল- বোঝাপড়া গ্রহণের প্রথম ধাপ। সৎ ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কিভাবে চালাক হওয়াটাও বর্তমান সময়ে জরুরী।

 

বন্ধুরা আমাদের যদি কারো সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব বা ঝামেলা যদি না থাকে, জীবনে যদি আমরা শুধু সৎ হয়ে থাকি; কিন্তু তা সত্ত্বেও আমাদের যে চাওয়া পাওয়া গুলো রয়েছে সেগুলো যদি পূর্ণ না হয়, তাহলে আমাদেরকে বুঝতে হবে আমাদের মধ্যে একটু চালাকির অভাব রয়েছে। চালাক তো অবশ্যই হওয়া জরুরী। আপনি যদি সৎ মানুষও হয়ে থাকেন তা সত্ত্বেও আপনাকে চালাক হতেই হবে। চালাক না হলে জীবনে সফলতা পাওয়া যাবে না। 

বাবা লোকনাথ বলছেন জীবনে হিসেব নিকেশ করে চলা খুবই দরকার। যদি আপনি একজন সাদাসিধে মানুষ হয়ে থাকেন, বেশি না বোঝেন তাহলে এই পৃথিবীতে এই ঝামেলাময় জগৎ-এ আপনার সঙ্গেও অনেক বড় বড় ঝামেলা হতে পারে। যেহেতু এই পৃথিবীতে অন্য যেসব মানুষ রয়েছেন সকলেই সমান নয়। বেশিরভাগ মানুষেরই বর্তমানে চিন্তাভাবনা কি করে অন্যের 2 টাকা ক্ষতি করে নিজে 4 টাকা লাভ করা যায়। দ্বিতীয় ব্যক্তি এটা চিন্তাই করে না যে অন্য ব্যক্তির কতটা পরিমাণ ক্ষতি হয়ে যাবে। দ্বিতীয় ব্যক্তির যদি একটু কোথাও লাভ হয়ে থাকে তাহলে সেই ব্যক্তির কাছে সেটা বড় জরুরী, সেটা খুবই দরকারি। বর্তমানে জগৎ-এ অনেকটা এইরকমই পরিস্থিতি। 

আমাদের মনের মধ্যে যে প্রশ্নগুলি চলে তার উত্তর কিন্তু অন্য কারো কাছ থেকে নিলেও আমাদের মন তাতে সন্তুষ্ট হয় না। আমাদের মনে অনেক সময় এরকমটা হয় যে আমরা কোনো বিষয়ের উপর এমনটা ভাবতে থাকি যে আমরা এটা করব আবার এরকমটাও ভাবি যে এটা করলে কোনো সমস্যা হতে পারে। এরকম পরিস্থিতিতে অন্য মানুষরা যখন কোনরূপ উপায় বলে তাও আমাদের মন তখন বলে এটার মধ্যে কোন প্রকার সমস্যা হতে পারে। তখন আমরা এটাই ভেবে নি যে আমার মন যেটা বলে এবং যেটা ঠিক মনে হয় সেটাই আমি করবো। মানুষের মন যখন চালাক থাকে তখন সে ভালো করে জিনিস গুলিকে বোঝার চেষ্টা করে। আর বোঝার জন্যই প্রতিটা বিষয় সম্পর্কে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। 

যে মানুষ এই জিনিসটির হিসাব করতে জানে যে আমি এই সারাদিনে কতগুলি ভালো কাজ করলাম ও কতগুলি খারাপ কাজ করলাম এবং আমার ভালোর পরিমাণ খারাপের পরিমাণ থেকে কতটা বেশি না কম; যদি কম থেকে থাকে তাহলে আমাকে কালকে তা বাড়াতেই হবে, আর যদি বেশি থেকে থাকে তাহলে সেটাকে আরও ভালো করতে হবে। এই হিসেব নিকেশ এই অংকের কাজ আমাদের প্রতিদিন করতে হবে। আর এই অংকে আমাদের সকলকে গুরুত্ব দিতে হবে যাতে করে আমরা এই হিসেব নিকেশের মাধ্যমে নিজেকে সৎ এবং তার সাথে সাথে চালাক করে তুলতে পারি। যে মানুষ এই অংকে গুরুত্ব দিয়ে নিজেকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পেরেছে - সেই মানুষকে চট করে কেউ বোকা বানাতে পারবে না। এই মানুষ হবে সৎ কিন্তু, সে জানে জীবনে চালাক হওয়া কতটা প্রয়োজন।  

এই পৃথিবীতে অনেক খারাপ ব্যক্তিত্বের মানুষ রয়েছেন। তারা সবসময়ই সহজ সরল এবং ভালো কোনো মানুষকে বোকা বানিয়ে দেয়। এই কারণেই আমাদেরকে সৎ হতে হবে কিন্তু, খুব বেশি সরল হওয়া যাবেনা। 

পৃথিবীতে সিধা এবং সৎ আপনি খালি আপনার মনের সাথে থাকুন। কিন্তু, যে মানুষগুলি আপনার সঙ্গে বারবার চালাকি করতে আসে এর জন্য আপনাকে সবসময় নিজের মনের মধ্যে নিজের অংকটা ঠিক রাখতে হবে। যে কোন মানুষটিকে কতটা প্রশ্রয় দেওয়া দরকার, কোন মানুষের সঙ্গে কতটা বন্ধুত্ব রাখা দরকার আছে, কোন মানুষের কোন কথাটি শোনার প্রয়োজন আছে, কোন কথাটি ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন আছে আর কখন সে আপনাকে বিপদে ফেলতে এসেছে সেটা বুঝে, তার অংকটাকে বুঝে নিয়ে নিজের মতো করে সেই চালাকির উপযোগিতা বের করে সেই পথ কে খুঁজে বার করুন যেই পথে আপনার সফলতা রয়েছে। অন্যের কোনরকম বাজে নজর তার ওপর নেই। 

আশাকরি বন্ধুরা এই লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। এটি ছিল বোঝাপড়া গ্রহণের প্রথম ছোট্ট পদক্ষেপ বা প্রথম ধাপ। আশাকরি লেখাটির পরে আপনারা বুঝতে সক্ষম হয়েছেন সৎ ব্যক্তিত্বের সাথে সাথে চালাক হওয়াটাও কেন জরুরী। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।

আরো পড়ুন:- জীবনের সকল পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কৌশল সম্পর্কে জানুন - CLICK HERE