নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
আজকে আপনাদের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হল- ৫ টি এমন কর্ম সম্পর্কে যা করলে মা লক্ষ্মী আপনার গৃহে অবস্থান করবেন না।
বন্ধুরা সকল মানুষের ইচ্ছা সে যেন অধিক থেকে অধিকতর মাত্রায় অর্থ উপার্জন করতে পারে। কিন্তু অনেকবার কর্ম করার পরেও আমাদের জীবনে মূলধনের অভাব থাকে। আর আমরা তখনই খুব দুখী হয়ে পড়ি। কিন্তু বন্ধুরা আপনারা কি জানেন মূলধনের অভাব এটি শুধুমাত্র আমাদের কর্মের উপর নির্ভর করে না। কর্মের সঙ্গে সঙ্গে আমরা কিভাবে আমাদের জীবন যাপন করছি এবং আমাদের জীবন যাপন করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভাবে প্রভাব ফেলে আমাদের অর্থনৈতিক জীবনের উপর। তো বন্ধুরা চলুন জেনে নেওয়া যাক আমাদের জীবন যাপন করার ক্ষেত্রে সেই বিষয়গুলো কি? যার মাধ্যমে মা লক্ষ্মী আমাদের ঘরে অবস্থান করে না; কিংবা আমাদের মূলধনের অভাব দেখা যায়।
গৃহে দরিদ্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ
১) পরিষ্কার পরিছন্নতা- শাস্ত্রমতে মা লক্ষ্মী সেই ঘরে কখনো প্রবেশ করে না যে ঘর সব সময় নোংরা ও অপরিষ্কার থাকে। আপনার বাড়ি যদি এরকম থাকে তাহলে আপনি আপনার নিজের ক্ষতি নিজেই করছেন।
২) রান্নাঘর ও খাবার-দাবারের এঁটো থালা পরিষ্কার রাখা:- খাওয়াদাওয়া সাড়ার পর এটো থালা-বাসন কখনো ফেলে রাখা উচিত নয়। বরং সেগুলি দ্রুত পরিষ্কার করে নেওয়া প্রয়োজন । বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী প্রত্যেক গৃহের রান্নাঘরে উপস্থিত নোংরা ও এটো থালা বাসন অশুভ শক্তির উর্যার প্রভাব বাড়ায়। ফলে বাড়িতে অশান্তি লেগেই থাকে এবং রান্নাঘরে পড়ে থাকা এটো থালা-বাসন দরিদ্রতা বৃদ্ধি করে। এরকম অবস্থায় কখনো মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পাওয়া যায় না। আপনিও যদি এই অভ্যাস গুলো প্রতিনিয়ত করে চলেছেন তাহলে এগুলি পরিবর্তন করে ফেলুন। কেননা ঠাকুর ঘরের পর রান্নাঘর কে যে কোনো বাড়ির দ্বিতীয় পবিত্রতম স্থান বলে মনে করা হয়। যদি আপনারা চান যে আপনার ঘরে সুখ শান্তি বজায় থাকুক তাহলে অবশ্যই বাড়ির রান্নাঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।এর সঙ্গেই যুক্ত আরেকটি বিষয় যেটি বেশিরভাগ মানুষ গুরুত্ব দেন না, তা হল- সূর্যাস্তের পর বাড়িতে ঝাড়ু ব্যবহার করতে নেই। আর ব্যবহার করলেও ধুলো-ময়লা গুলিকে বাড়ির বাইরে না ফেলে বাড়ির কোনো এক কোনায় জরো করে রেখে পরদিন সকালে ফেলা উচিত। বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী সূর্যাস্তের পরে ঝাড়ু ব্যবহার করে গৃহের ধুলো-ময়লা, মাটি বাড়ির বাইরে ফেললে সেগুলি সাথে সাথে মা লক্ষ্মীকেও বাইরে ফেলে দেওয়া হয়, এই কারণেই সূর্যাস্তের পর গৃহে ঝাড়ুর ব্যবহার করতে নেই।
৩) দ্বন্দ্ব ও কলহ:- যে সমস্ত গৃহে প্রতিনিয়ত দ্বন্দ্ব-কলহ লেগেই থাকে ও খারাপ শব্দ প্রয়োগ করা হয়, এইরকম গৃহে মা লক্ষ্মী অবস্থান করেন না। এইরকম গৃহে নেগেটিভ শক্তি তাড়াতাড়ি প্রবেশ করে এবং দরিদ্রতা বৃদ্ধি পায়। কারণ মানুষ যখন তার প্রতিটি দিনের বেশিরভাগ সময় দ্বন্দ্ব কলহ এর মধ্যেই কাটিয়ে দেবে তাহলে সে অন্যান্য কর্মের উপর চিন্তা ভাবনা করার সময়ই পাবে না। এই কারণে গৃহে সব সময় শান্তি ও ভালোবাসার মহল তৈরি করা রাখা উচিত। যদি নিজের লোকের সঙ্গে কোন সময় দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে পড়তে হয় তাহলে খুব দ্রুত ঠান্ডা মাথায় সেটি মিটিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।
৪) নারী জাতির অপমান:- বন্ধুরা আমাদের হিন্দু ধর্মে নারী জাতি অর্থাৎ মা, বোনেদের মা লক্ষ্মীর সমতুল্য বলে মনে করা হয়। এই কারণেই যে গৃহে স্ত্রী জাতির অপমান করা হয়, সেই গৃহে মা লক্ষী কখনোই থাকেন না। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী যে গৃহে মা লক্ষ্মীর অনাদর হয়, সেই গৃহে শুক্রদেব ও চন্দ্রমা অশুভ ফল দেয়। এইজন্য গৃহের মহিলাদের সম্মানহানি করা একদমই উচিত নয়। এর ফলে মা লক্ষ্মী অত্যান্ত রুষ্ট হন। যখন ঘরের নারীদের পাশাপাশি প্রত্যেকটা মানুষের সম্মান বজায় থাকবে ও সকলে শান্তিতে একত্রে জীবন যাপন করবে তখন মা লক্ষ্মী প্রসন্ন হয়ে নিজেই আপনার দরজায় এসে হাজির হবে।
৫) অলসতা:- বন্ধুরা আমাদের সনাতন ধর্ম কর্মের উপর নির্ভরশীল। এখানে কর্মের কথা গুরুত্বপূর্ণ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। অলস মানুষের গৃহে কখনো ধনসম্পত্তি আসবেনা। সময় খুবই মূল্যবান এর সঠিক ব্যবহার করা উচিত। বন্ধুরা কিছু মানুষ এমন আছেন যারা দিনের বেলায় ঘুমিয়ে থাকেন, এমনটা করলে গৃহের দরিদ্রতা বৃদ্ধি পায়। ব্রম্য মুহুর্তে ঘুম থেকে দ্রুত স্নানপর্ব সেরে নিয়ে পূজার্চনা করার পর প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ করে নিজের প্রত্যেকদিনের কর্মের উপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
আশাকরি বন্ধুরা লিখাটি পড়ে আপনার সমৃদ্ধ হয়েছেন এবং বুঝতে সক্ষম হয়েছেন প্রতিদিনের আমাদের বেশ কিছু খুঁটিনাটি বিষয় যেগুলোর কারণে মা লক্ষ্মী আমাদের গৃহে বাস করেন না ও আমাদের সংসারে দরিদ্রতা আসে।
ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
আরো পড়ুনঃ- শরীর ত্যাগ করার পূর্বে যখন শ্রীকৃষ্ণ কর্ণের কাছে গেলেন তখন কর্ণ শ্রীকৃষ্ণের কাছে তার শেষ ইচ্ছা কি চাইলেন?CLICK HERE
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা