Breaking

Search Content

Follow Us

শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০২২

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অনুসারে - মৃত্যু আসলে কি? | গরুর পুরান - মৃত্যু রহস্য



নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।   


'মানুষের মৃত্যু' -এই বিষয়টি সম্পর্কে দুনিয়া ভরে বিভিন্ন ধরনের মান্যতা রয়েছে। কিন্তু এই ধরনের বেশিরভাগ মান্যত্যাই কাল্পনিক, মনগড়া ও মিথ্যা হয়ে থাকে। কিন্তু যোগী ব্যক্তিরা ভালো করেই জানেন জীবনের না কোনো দিন প্রারম্ভ(শুরু) হয়, আর নাতো তার অন্ত (মৃত্যু/শেষ) হয়। মানুষেরা যাকে মৃত্যু বলেন তা শুধুমাত্র সেই শরীরটির অন্ত; যা প্রকৃতির পাঁচটি তত্ব পৃথিবী, জল, অগ্নি বায়ু ও আকাশ দ্বারা মিলিত হয়ে তৈরি হয়। 


এমনটা মনে করা হয় যে মানব শরীর কোনো না কোনো দিন নষ্ট হবেই। যে মানুষ জন্ম নিয়েছে তাকে একদিন তার শরীর থেকে নিজের প্রাণ ত্যাগ করতেই হবে। কিন্তু মৃত্যুর পরে যখন মৃত দেহকে অন্তিম বিদায় দেওয়া হয় তো এরকম অবস্থায় আত্মার কি হয়? - এই বিষয়টি এখনও বহু মানুষই জানেন না কিংবা বুঝে উঠতে পারেননি।


একবার যখন জীবাত্মা নিজের শরীর ত্যাগ করে পুনরায় সেই শরীরে প্রবেশ করা অসম্ভব'। মৃত্যুর পরের দুনিয়া কেমন হয় এটি এখনো পর্যন্ত একটি রহস্যই রয়ে গেছে। কিন্তু গীতার উপদেশে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন - আত্মা হলো অমর, তার কখনো অন্ত হয়না। আত্মা শুধুমাত্র মানব শরীররুপি বস্ত্র পরিবর্তন করে।


গরুড় পুরাণ আবার মানুষের মৃত্যুর পর আত্মার সঙ্গে হওয়া ব্যবহারের ব্যাখ্যা করে। গরুড় পুরাণ অনুযায়ী যখন আত্মা শরীর ত্যাগ করে তখন সেই আত্মাকে যমদূতেরা অর্থাৎ যমরাজের পাঠানো দূতরা নিতে আসে। মানুষ নিজের জীবনে যে কর্ম করে থাকে, যমদূত তাকে সেই অনুসারে নিজের সাথে করে নিয়ে যায়। যদি মৃত ব্যক্তি একজন সৎ মানুষ হয়ে থাকে কিংবা পূর্ণ আত্মা হয়ে থাকে তাহলে তার প্রাণ ত্যাগ করতে কোনো সমস্যা হয় না, সেই পূর্ণ আত্মাকে নিজের প্রাণ ত্যাগ করার সময় কোনো পীড়ন বা যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় না। কিন্তু যদি সে পাপী হয়ে থাকে কিংবা অপূর্ণ বা খারাপা আত্মা হয়ে থাকে, তাহলে তার প্রাণ ত্যাগ করার সময় প্রচন্ড পীড়ন বা যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। 


গরুর পুরাণে এই উল্লেখও পাওয়া যায় যে মৃত্যুর পরে আত্মাকে যমদূত শুধুমাত্র 24 ঘন্টার জন্য নিয়ে যায়। আর এই সময়ের মধ্যেই সেই আত্মাটিকে দেখানো হয় সে কতটা পূর্ণ করেছে এবং কতটা পাপ করেছে। এরপর আবার পুনরায় আত্মাটিকে সেই ঘরেই ছেড়ে দেওয়া হয় যেখানে সে তার প্রাণ ত্যাগ করেছিল। তারপরে 13 দিনের শ্রাদ্ধশান্তি কর্ম পর্যন্ত সে সেখানেই থাকে। তারপরে 13 দিন বাদে সে পুনরায় আবার যমলোকে যাত্রা করে।


অন্যান্য পুরাণ অনুযায়ী যখনই কোনো মানুষ মারা যায় তখনই আত্মা শরীরকে ত্যাগ করে যাত্রা শুরু করে। এই সময়ে সেই আত্মাটি তিন প্রকার মার্গের সম্মুখীন হয়। সেই আত্মাটিকে কোন মার্গে চালনা করা হবে এটা শুধুমাত্র সেই আত্মার মানবজীবনে থাকাকালীন কর্মের উপর নির্ভর করে। সেই আত্মা যদি ভালো, সৎ কর্ম করে থাকে তাহলে তাকে সেই তিনটি মার্গের মধ্যে সবথেকে ভালো মার্গে চালনা করা হবে। এই তিনটি মার্গ হল - অরচিমার্গ, ধূমমার্গ ও উৎপত্তি বিনাশ মার্গ।


অরচিমার্গ ব্রহ্মলোক ও দেবলোকে যাত্রার জন্য হয়ে থাকে। ধূমমার্গ পিতৃলোকের যাত্রাপথে নিয়ে যায়। আর উৎপত্তি বিনাশ মার্গ নরকের যাত্রাপথের জন্য হয়ে থাকে।এইভাবে মৃত্যুর পরে একটি আত্মা তার যাত্রাপথে যাত্রা শুরু করে।


 এই বিষয়গুলি থাকা সত্বেও কোথাও-না-কোথাও মৃত্যুর পরে আত্মার কি হয়? -এই সম্পর্কে আজও একটি বিশাল বড় রহস্য রয়ে গেছে। যার সঠিক ও সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তর কারো কাছে নেই।


বন্ধুরা আশাকরি এই লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক। 

আরো পড়ুনঃ- স্বপ্নে ভগবানের দেখা পেলে কি হয়? | স্বপ্ন শাস্ত্রের মাহাত্ম্য - 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা