নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
আজকে আপনাদের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হলো- মহাভারতের 7জন মায়াবী নারীদের সম্পর্কে।
বন্ধুরা মহাভারত কালের বিভিন্ন প্রভাবশালী পুরুষের নাম আর তাদের কাহিনি তো আপনারা অনেকেই শুনেছেন। যাদের কাছে বিভিন্ন অদ্ভুত শক্তি ছিল যা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধতেও দেখা গেছে। কিন্তু, এরকমটা নয় যে মহাভারতের শুধু পুরুষেরাই তাদের দক্ষতা দেখিয়েছেন। বরং এরকম অনেক বীর মহিলারাও ছিলেন যারা তাদের বুদ্ধি আর রহস্যময় শক্তি দিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিল। আর এদের সামনে বড় বড় শক্তিশালী যোদ্ধাদেরও মাথা নত করতে হয়েছিল। আজ আমরা মহাভারতের সেইসব মহাশক্তিশালী নারীদের মধ্যে কিছু নারীর কথা জানব যারা নিজেরাই বিভিন্ন রহস্য মোরা ছিলেন।
আজকের এই লেখাটি শুরু করব সেই মানুষটিকে নিয়ে যাকে সময় অসময়ে মহাভারতে যুদ্ধের কারণও বলা হয়, যিনি হলেন দ্রৌপদী।
বন্ধুরা দ্রৌপদী মহাভারতের সেই ক্রীতদার যাকে ছাড়া মহাভারত কল্পনাও করা যায় না। দ্রোপদী কোনো সাধারণ কন্যা ছিলেন না। আর যেহেতু তার জন্ম যোগ্য থেকে হয়েছিল তাই তাকে যোজ্ঞাসিনীও বলা হতো। দ্রৌপদী সুন্দর হওয়ার সাথে সাথে বুদ্ধিমতিও ছিলেন। মহাভারত কালে বিভিন্ন সারাংশে তার বুদ্ধিমত্তারও পরিচয় পাওয়া যায়। এছাড়া অনেক সময় তার বুদ্ধি পান্ডবদের প্রেরণার উৎস হিসেবেও কাজ করেছিল।
বন্ধুরা হিন্দু ধর্ম শাস্ত্র অনুসারে শুধুমাত্র পাঁচজনই এরকম নারী ছিলেন যাদের বিবাহ হওয়ার পরেও কন্যার সমান পবিত্র বলে মনে করা হতো। যাদের পঞ্চকন্যা নামে জানা যায় সেই পাঁচজনের মধ্যে একজন ছিলেন দ্রৌপদী। তাছাড়া অহল্যা, কুন্তী, তারা এবং মন্দাদরীকেও এই শ্রেণীতে যুক্ত করা হয়েছে। যে যুগের তারা নারী ছিলেন সেই যুগে এত বুদ্ধিমতী হওয়া একটি আলাদাই ব্যাপার ছিল।
দ্রৌপদী তার সমস্ত কথা তর্কবিতর্কের মধ্যেই রাখতেন। আর তিনি সব সময় ন্যায় ও ধর্মের সাথে ছিলেন। আর যুদ্ধ তার জন্য প্রতিশোধ, ন্যায়ের এক পথ ছিল।
হিড়িম্বা - হিড়িম্বা 'হিড়িম্ব' নামের এক ভয়ঙ্কর রাক্ষসের বোন ছিল। সে নিজেও অনেক মায়াবী শক্তির জ্ঞানী ছিল। বন্ধুরা হিড়িম্বা রুপ পরিবর্তনে পারদর্শী ছিল। তাছাড়া হিড়িম্বা একসাথে অনেক মানুষকে নিয়ে আকাশে উড়তে পাড়ায় সক্ষম ছিল। একবার যখন লাক্ষা গৃহ থেকে জীবন্ত বেঁচে ফেরার সময় পান্ডবরা এক ঘন জঙ্গলে বিশ্রামের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। এখন তারা কিভাবে জানবে যে এই জঙ্গল রাক্ষস হিড়িম্ব-এর জঙ্গল। হিড়িম্ব মানুষের শরীরের গন্ধ পেয়ে তার বোন কে পান্ডবদের মারার জন্য পাঠায়। সেই সময় ভীম বাদ দিয়ে সবাই ঘুমাচ্ছিলেন কিন্তু হিড়িম্বা যখন ভীম কে দেখল তখন সে তার ওপর মোহিত হয়ে গেল এবং সে তার রূপ পরিবর্তন করার শক্তি প্রয়োগ করে এক সুন্দরী নারীর রূপ ধারণ করে যাকে দেখে ভীমের ভালোবাসাও জেগে ওঠে। এরপর অনেকক্ষণ ধরে যখন হিড়িম্বা বাড়ি না ফেরে তখন তার ভাই সেই স্থানে গিয়ে পৌঁছায়, তখন সে দুজনকে ভালবাসতে দেখে তারপর সে খুব রেগে যায়। রাক্ষস আর ভীমের মধ্যে ভয়ানক যুদ্ধ হয়, যার ফলে রাক্ষসের মৃত্যু হয়। যার পড়ে ভীম হিড়িম্বা কে বিয়ে করে নেয়। আপনারা এটা জেনে খুবই অবাক হবেন যে রাক্ষসী হিড়িম্বার কাছে আর একটি শক্তি ছিল। যা হলো সে গর্ভধারণ করার সাথে সাথেই শিশুকে জন্ম দিতে সক্ষম ছিল কিছু বছর পর হিড়িম্বা যখন গর্ভধারণ করল তখন এক বালকের জন্ম হয়। আর তার নাম - ঘটোৎকচ রাখা হয়। যে স্বয়ং এক শক্তিশালী যোদ্ধা ছিল।
গান্ধারী- ইনি ছিলেন গান্ধার দেশের সুবল নামক রাজার কন্যা। গান্ধার দেশের রাজকুমারী হওয়ার কারণে তার নাম গান্ধারী দেওয়া হয়। গান্ধারী ভগবান শিবের এক অন্যতম ভক্ত ছিলেন। এই ভক্তির ফলস্বরূপ সে ১০০ পুত্রের জননী হওয়ার বরদান পায়। গান্ধারীর চোখ সাধারণ মানুষের মতো ছিলনা বরং তার চোখে এক অদ্ভুত শক্তি ছিল। গান্ধারী এই অলৌকিক শক্তির সাহায্যে একবার দুর্যোধনের শরীরকে বজ্রের সমান বানিয়ে দিয়েছিলেন।বন্ধুরা গান্ধারীর শক্তি কতটা প্রবল ছিল আপনি এই ঘটনার মধ্য দিয়েই বুঝতে পারবেন। মহাভারতের যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর পান্ডবদের মধ্যে কেউই তার সামনে যাওয়ার সাহস পেত না। আর শেষে ভগবান কৃষ্ণকেই তার কাছে যেতে হয়েছিল গান্ধারী যদিও পান্ডবদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছিল; কিন্তু কৌরবদের চিতা জ্বলার সময় শ্রীকৃষ্ণ কে বংশ বিনাশ হওয়ার অভিশাপ দেন। যেই অভিশাপ পরবর্তীতে কোথাও না কোথাও সত্যি হয়েছিল।
কুন্তী- কুন্তী এক তপস্বী ও অদ্ভুত নারী ছিলেন। ইনি হস্তিনাপুর রাজ্যের মহারানী ও ইন্দ্রপ্রস্থ সাম্রাজ্যের রাজমাতা ছিলেন। বন্ধুরা বলা হয় যে কুন্তীর কাছে এক চমৎকারী মন্ত্র ছিল। যা দুর্বাসা মুনি তাকে দান করেছিল। সেই মন্ত্র এত বেশি শক্তিশালী ছিল যে, যদি কুন্তী একবার মন্ত্রটি উচ্চারণের মাধ্যমে যে দেবতা কে স্মরণ করে তাহলে সেই দেবতা তাড়াতাড়ি প্রকট হতো কুন্তীর মনোকামনা পূরণ করার জন্য। এই মন্ত্র তাকে দুর্বাসা ঋষি তার সেবা যত্নে প্রসন্ন হয়ে দিয়েছিলেন। এই মন্ত্রের ফলস্বরূপ মহাপ্রতাপ কর্ণের জন্ম হয়েছিল। পরে কুন্তী এই মন্ত্র মাদ্রীকে দিয়েছিলেন।
কুন্তী তার জীবনে অনেক কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। তার পিতার মৃত্যুর পরে তিনি তার পুত্রের লালন পালনে কোন ত্রুটি রাখেনি। তিনি পাণ্ডবদের হস্তিনাপুরে দাখিল করে গুরু দ্রোণাচার্যের কাছ থেকে ভালো শিক্ষা লাভ করিয়াছিলেন। আর শুধু এই পর্যন্তই নয় শেষে তিনি রাজ্যের অধিকার তাদের দেওয়ার জন্য প্রার্থনাও করেছিলেন। এই সবে জানা যায় যে কুন্তীর রাজনীতি সম্বন্ধে ভালো বুদ্ধি ছিল। একজন নারীর এইসব কাজ করা নিজেই নিজের মধ্যে সংঘর্ষের এক বড় ঘটনা।
উলূপী- ইরাবত বংশের নাগরাজ বাসুর আর রাজমাতা বিষবাহিনীর দত্তক কন্যা ছিল- উলূপী। উলূপী কে জলপরী আর নাগকন্যা দুই বলা হয়। আর তার কাছে অনেক মায়াবী শক্তিও ছিল। ইন্দ্রপ্রস্থ স্থাপনের সময় যখন অর্জুন রাজদূত হয়ে নেত্র অভিযানে বের হয় তখন তিনি সর্বপ্রথম নাগলোক যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে উলূপীর সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। উলূপী অর্জুনকে দেখে তার ওপর মুগ্ধ হয়ে যায় আর সে অর্জুনকে পাতাললোকে নিয়ে যায়। আর তার সাথে বিবাহ করার অনুরোধ জানায় যা অর্জুন স্বীকারও করে নেন। আর দুজনের বিবাহ সম্পন্ন হয়। নিজের মনোকামনা পূরণ হওয়ায় উলুপি খুবই খুশি হয়ে অর্জুনকে সমস্ত জলচরের স্বামী হওয়ার বরদান দেয়। উলূপীর শক্তির আন্দাজ এই ঘটনার মধ্যে থেকেই বোঝা যায় যে, মহাভারত যুদ্ধ নিজগুরু ভীষ্ম পিতামহ হত্যা করার পর বম্মপুত্রের কাছ থেকে অভিশাপ পাওয়ার পর উলুপিই অর্জুনকে সেই অভিশাপমুক্ত করে। একটি অন্য যুদ্ধে নিজের পুত্রের হাতে অর্জুনের মৃত্যু হওয়ার পর 'উলূপী'-ই অর্জুনকে পুনর্জীবিত করে।
বন্ধুরা মহাভারতের এমন অনেকেই ছিলেন যারা ছিল খুবই শক্তিশালী এবং গুণী। কিন্তু, তাদের চর্চা খুবই কম হয়। এর মধ্যে একজন হলো ভানুমতী।
ভানুমতী- যিনি ছিলেন কম্বোজ রাজা চন্দ্রবর্মনের কন্যা। সে দেখতে খুবই আকর্ষণীয়, সুন্দর ও শক্তিশালী ছিলেন। আর তার সৌন্দর্যের চর্চা বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে ছিল। এই কারণেই তাঁর স্বয়ংবরে বড় বড় রাজারা এসেছিলেন। স্বয়ংবরে শিশুপাল, জরাসন্ধ, রুকমি, বক্র, দূর্যোধন ও কর্ণ সহ অনেক রাজা নিমন্ত্রিত ছিলেন।
বন্ধুরা আপনারা সবাই তো এই কথাটি শুনেছেন যে- কেউ যদি মন থেকে কোন কিছু না চায় তাহলে সেটা কখনোই সম্ভব নয়। এর মানে হলো যখন দুটি আলাদা বস্তুকে মিলিয়ে কোনো সার্থক বস্তু বানানোর চেষ্টা করা হয় - তখন সেই চেষ্টা ব্যর্থ চেষ্টা রূপে স্বীকৃতি পায়। আসলে দূর্যোধন ভানুমতির সাথে জোর জবরদস্তি বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু, দুজনের মধ্যে কোনো মিল ছিল না। এই বিবাহকে সঠিক বোঝানোর জন্য দূর্যোধন তার কিছু পূর্বপুরুষের উদাহরণ দেন।
ভানুমতী অনেক গুণসম্পন্ন ছিলেন। গান্ধারী সতীপর্বে বলেছেন যে, ভানুমতি কুস্তিতে পারদর্শী ছিলেন। আর সে অনেকবার তার স্বামী দুর্যোধনকে পরাস্ত করেছিলেন। শুধু শরীর থেকেই মজবুত নয় বরং ভানুমতী অত্যন্ত সুন্দর আর সুবুদ্ধি সম্পূর্ণা নারী ছিলেন।
সত্যবতী- ইনি হলেন শান্তনুর দ্বিতীয় স্ত্রী। সত্যবতীর আরেক নাম হল- মৎস্যগন্ধা। কেননা তার জন্ম মাছের গর্ভ থেকে হয়েছিল। আর তার শরীর থেকে মাছের গন্ধ বের হতো। এর আগে পরাশর ঋষির তার সাথে প্রেম হয়েছিল। আর এইসময় তিনি এক পুত্রের জন্ম দেয়, যে পরে 'বেদব্যাস' নামে পরিচিত হয়। পরাশর ঋষি সত্যবতীকে বরদান দিয়েছিলেন যে, তার শরীর থেকে মাছের গন্ধ দূর হয়ে ভালো সুগন্ধ বের হবে। এই অদ্ভুত সুগন্ধের কারণেই তার নাম পরিবর্তন হয়ে -'সত্যবতী' অর্থাৎ 'সত্যের গন্ধধারী' রাখা হয়। এর ফলে মানুষেরা তার দ্বারা আকৃষ্ট হয়।
সত্যবতী কূটনীতিতে অত্যান্ত পারদর্শী ছিলেন। বিভিন্ন সময় তার উদাহরণ আমরা দেখতে পাই। শান্তনু ও সত্যবতীর বিবাহের পেছনেও এক মজার ঘটনা রয়েছে।
একবার রাজা শান্তনু শিকারের জন্য নদীতে যায় তখন সত্যবতীর রূপ দেখে শান্তনু মুগ্ধ হয়ে যায়। তিনি সেই সময় সত্যবতীর পিতা দাসরাজের কাছে তার কন্যাকে বিবাহ করার প্রস্তাব জানায়। তখন দাসরাজ এক শর্ত রেখেছিলেন যে, আমার মেয়ের থেকে জন্মানো সন্তানই আপনার রাজ্যের সিংহাসনের অধিকারী হবে। কিন্তু শান্তনু এই শর্ত অস্বীকার করে। কেননা সে প্রথমেই দেবব্রতকে (ভীষ্ম) যুবরাজ বানিয়ে রেখেছিলেন। এইসব ঘটনার পরে শান্তনু উদাস হয়ে থাকে। উদাস হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করার পরেও শান্তনু এই কথা দেবব্রতকে বলেনি। তখন দেবব্রত মহারাজ শান্তনুর সারথির কাছ থেকে সব জানতে পারে, আর স্বয়ং দাসরাজেরর কাছে যান এবং নিজের পিতার জন্য সত্যবতীর হাত চান। দাসরাজ তখনও সেই শর্তই রেখেছিলেন। তখন দেবব্রত প্রতিজ্ঞা নেন এই কন্যা থেকে জন্মানো পুত্রই রাজ্যের উত্তরাধিকারী হবে। তখন দাসরাজ বলেন যদি তোমার পুত্র তাকে মেরে রাজ্য ছিনিয়ে নেয় তখন কি হবে। এই কথা শুনে দেবব্রত সকল দেবতাদের সাক্ষী মেনে সারা জীবন ব্রহ্মচারী থাকার ও বিবাহ না করার প্রতিজ্ঞা নেন। আর তার এই ভীশন প্রতিজ্ঞার জন্য তিনি 'ভীষ্ম' (পিতামহ) নামে খ্যাত হন।
বন্ধুরা তাহলে দেখা যায় এখান থেকেই মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের বীজ রোপন হয়েছিল। আর বলা হয় যে শান্তনু যদি সত্যবতীকে না চাইতেন তাহলে কুরু বংশের ভাগ্য অন্য কিছু হতো।
তো বন্ধুরা মহাভারতের এই সেই মহিলারা যারা মহাভারতের যুদ্ধে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।
বন্ধুরা আশাকরি এই লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
আরো পড়ুনঃ- কল্কি অবতারের 4 টি শক্তিশালী অস্ত্র - যা মহাভারতের সময় থেকেই এই পৃথিবীতে রয়েছে || Kalki Avatar Real Power- CLICK HERE
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা