Breaking

Search Content

Follow Us

শনিবার, ১৮ জুন, ২০২২

গরুড় পুরাণ - যমলোকের প্রকৃতি কেমন হয়ে থাকে ? || Description of Yamlok in Garud Puran



নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।


বন্ধুরা গরুড় পুরাণের পাঠ বেশিরভাগ সময়ই এই সংসার থেকে কেউ চলে গেলে করা হয়। আপনি কি জানেন কেন?  

বন্ধুরা এটা হল এমন একটি পুরাণ যা মানুষের মৃত্যুর পর আত্মার সঙ্গে কি হয়, আত্মা কোথায় যায় এবং কোন প্রকারের আত্মার যমলোক প্রাপ্ত হয় ইত্যাদির বিস্তার পূর্বক বর্ণনা পাওয়া যায় এই পুরাণে, অথবা এই বিষয়টাকে এভাবে বলা যেতে পারে যে, মৃত্যুর পরে একটি মানুষের আত্মার সঙ্গে কি কি হয় ও আত্মার মৃত্যুর পরের যাত্রা সম্পর্কে সম্পূর্ণ বর্ণনা রয়েছে এতে। 


গরুড় পুরাণে বলা হয়েছে - যে আত্মাগুলি পাপ করে থাকে তাদের কোন প্রকারের জ্বালা যন্ত্রণা দেয়া হয়, সেই সম্পর্কে। এই পুরাণে উল্লেখিত রয়েছে যে, আত্মা গুলির করা পাপ কর্মের আঁধারের ভিত্তিতে তাদের যমলোকে জ্বালা-যন্ত্রণা দেওয়া হয়। 


বন্ধুরা গরুড় পুরাণের সম্পর্কে আমাদের এই ওয়েবসাইটে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা রয়েছে অন্যান্য লেখাতে। আপনারা প্রয়োজন বোধ করলে আমাদের এই ওয়েবসাইটে গিয়ে সেই সমস্ত লেখা গুলো দেখে নিতে পারেন। নিচে ওয়েবসাইটের লিংক দেয়া হল - Amrita Katha.Com


বন্ধুরা আজকে আমরা জানবো গরুর পুরাণ অনুযায়ী যমলোকের প্রকৃতি কেমন হয়? আর এখানে কি কি হয়ে থাকে? 


গরুড় পুরাণে ' গরুড় ভগবান ' - যখন শ্রীহরি বিষ্ণুর কাছে যমলোক সম্পর্কে প্রশ্ন করেন তখন উত্তরে ভগবান শ্রী বিষ্ণু একজন লোককে যাওয়ার পথ এবং যমলোকের ব্যাখ্যা করেন। তো বন্ধুরা চলুন জেনে নেওয়া যাক ভগবান বিষ্ণুর যমলকের ব্যাখ্যা কোন প্রকারে করেছেন? 


বাস্তবের যমলোক সেই আত্মাগুলোকেই নিয়ে যাওয়া হয় যারা পাপী হয়ে থাকে। যমলোকে যমরাজ নিবাস করেন, যেই আত্মাগুলি ভালো কাজ করে থাকে যেমন- দয়া, দান ইত্যাদি তাদের আত্মাগুলির স্বর্গলোক প্রাপ্ত হয়। যখন কোনো পাপী ব্যক্তির মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসে তখন যমরাজের দূতেরা তার কাছে আসে, আর যখনই আত্মা শরীর থেকে বাইরে বের হয় তখনই যমদূতেরা আত্মাটিকে সঙ্গে করে নিয়ে যমলোক চলে যায়। যমদূতের রূপ খুবই ভয়ঙ্কর হয়ে থাকে। যমদূতেরা দেখতে খুবই ভয়ানক হয়, আর পাপী আত্মাগুলোকে জ্বালা-যন্ত্রণা দিতে দিতে যমলোকে নিয়ে যায়। এর অর্থ হলো শরীর ত্যাগ করার সাথে সাথেই পাপী মানুষের আত্মা গুলির জ্বালা যন্ত্রণা ভোগ করা শুরু হয়ে যায়। 


যমদূতেরা যেই রাস্তা দিয়ে আত্মাকে যনলোকের উদ্দেশ্যে নিয়ে যান - সেই রাস্তাও খুবই কষ্টদায়ক ও ভয়ঙ্কর হয়ে থাকে। পাপী আত্মার সুখ-শান্তি পিরিত হবে এরকম কোনো বস্তু এই রাস্তায় থাকে না। এই রাস্তা ভয়ঙ্কর উষ্ণতা ভরপুর এবং রাস্তায় কোথাও এক ফোটা জল অথবা বৃক্ষের ছায়া থাকে না। এই পথ অনেকটা গলিত লাভার মধ্যে কাঁটা ভরা ও ভূমির অগ্নির সমান গরম হয়ে থাকে। এই রাস্তায় পাওয়া জ্বালা-যন্ত্রণার ফলে আত্মা নিজের পরিবার পরিজনদের প্রচুর পরিমাণে মনে করে। আর অত্যন্ত ভাবুক হয়ে তখন তরপাতে/ছটফট করতে থাকে। বন্ধুরা এইরকম কষ্ট সহ্য করে আত্মা শেষমেষ যমলোকে গিয়ে পৌঁছায়। 


লুন বন্ধুরা এবার জেনে নেওয়া যাক গরুড় পুরাণ অনুযায়ী যমলোক কেমন প্রকৃতির হয় - যমলোক 86,000 হাজার যোজনের একটি ক্ষেত্র জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। বন্ধুরা, 1 যোজন প্রায় 1 হাজার কিলোমিটারের সমান। যমলোকের 4টি দুয়ার রয়েছে। দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে ' যমপুরী ' রয়েছে। যমপুরীর দেওয়াল গুলি এত শক্তিশালী যে এগুলোকে ভেদ করা অসম্ভব। আর এখানে যমরাজের অনুমতি ছাড়া দেবতাও প্রবেশ করতে পারেন না। যমপুরী তে যমরাজ সমেত তার সকল দূতদের নিবাস স্থল রয়েছে। গরুড় পুরাণে উল্লেখিত আছে যে যমপুরী বিদ্যুতের মত চকমক করে। 


ভগবান বিষ্ণু যমরাজের ভবনের ব্যাখ্যা করে বলেন যে, যমরাজের ভবনের চমক স্বর্ণের সমান। আর এখানে সবসময় কর্ণ প্রিয় ধ্বনি শোনা যায়। অগুণিত প্রকারের পুষ্প ভবনকে সুগন্ধিত করে থাকে। এই ভবনে একটি আকর্ষণীয় সিংহাসন রয়েছে, যেখানে স্বয়ং যমরাজ বিরাজমান হয়ে থাকেন। আর অনেক গন্ধর্ব্য-অপ্সরা তার সেবার জন্য সেখানে উপস্থিত থাকে। এখানে যমরাজের সভাও হয়ে থাকে। গরুড় পুরাণ অনুযায়ী এই সভায় কেবল ধর্মের মার্গে চলা আত্মা প্রবেশ করতে পারে। এমন আত্মা যে কখনো কোনদিন মিথ্যা কথা বলেনি, শান্ত ও আধ্যাত্বিক প্রকৃতির আত্মা এবং যেই আত্মার দান, পূর্ণ করেছে - শুধুমাত্র তারাই যমরাজের ওই সভায় যোগদান করতে পারে। এই প্রকারের আত্মার সঙ্গে যমরাজ মিত্রতার ব্যবহার করেন। এরকম আত্মা ও যমরাজ সমেত এই সভায় অনেক ঋষি মুনি এবং তপস্যীও উপস্থিত থাকে। এই যমপুরীর অন্দরেই রয়েছে চিত্রগুপ্তের ভবন। যা খুবই আকর্ষণীয় প্রকৃতির। সেখানে সবসময় বাদ্যযন্ত্র বাজতে থাকে। আর এই চিত্রগুপ্তের ভবনে মনি ও রত্নের আকর্ষণীয় সিংহাসন রয়েছে। যেখানে বসে চিত্রগুপ্ত প্রতিটি আত্মার পাপ কর্ম ও ভালো কর্মের লেখাজোকা করে থাকেন। আর এখানে লেখা কর্মের আঁধারের ভিত্তিতেই পাপী আত্মাগুলোকে জ্বালা যন্ত্রণা দেয়া হয়।


তো বন্ধুরা এই ছিল গরুড় পুরাণ অনুযায়ী যমলোকের বর্ণনা। লেখাটি পড়ে যদি সমৃদ্ধ হন তাহলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আজ এখানেই শেষ করলাম। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো পড়ুনঃ- মৃতব্যক্তির শরীরকে কেন তাড়াতাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়?

CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা