Breaking

Search Content

Follow Us

রবিবার, ২৬ জুন, ২০২২

ঘরের এই স্থানে - ঘড়ি লাগাতে নেই কেন? || Where Should the Clock be placed?



নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।


বন্ধুরা বাস্তুশাস্ত্রে আমাদের বাড়িতে প্রত্যেকটা জিনিস রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ নিয়ম সম্পর্কে বলা হয়েছে। যা এটার ইঙ্গিত দেয় যে এর বিপরীতে রাখা কোনো জিনিস বাড়িতে নেগেটিভ এনার্জির জন্ম দেয়। আর এমনই বস্তুর মধ্যে আজকে আমরা একটি এমন জিনিসের সম্পর্কে কথা বলতে চলেছি যা আপনি প্রতিটি ঘরেই দেখতে পাবেন। হ্যাঁ বন্ধুরা, আমরা এখন কথা বলছি ঘরের দেয়ালে লাগানোর ঘড়ির সঠিক জায়গা ও দিশা সম্পর্কে। আপনি কি কখনো ঘরের দেয়ালে ঘড়ি লাগানোর সময় এটা কখনো ভেবে দেখেছেন যে, ঘড়িটির কোন দিকে হওয়া উচিত? - যদি না ভেবে থাকেন তাহলেও কোনো অসুবিধা নেই। কেননা আজকের আমাদের এই লেখাটি পড়ার পর আপনি ঘরের কোন দিকে ঘড়ি লাগাবেন তা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে যাবেন। 


বন্ধুরা বাস্তুশাস্ত্রের কথা বলতে গেলে এটা বলতে হয় যে, বাড়িতে রাখা প্রত্যেকটি জিনিস ভালো এবং খারাপ উর্জা বহন করে। প্রতিটি বস্তু বা জিনিসগুলোকে সঠিক জায়গায় রাখার মানে হল পজিটিভ এনার্জি সবসময় গৃহে বিরাজমান থাকবে এবং এই বস্তু বা জিনিসগুলি কে ভুল জায়গায় রাখার অর্থ গৃহে ধীরে ধীরে নেগেটিভ শক্তি ছড়াতে থাকে। আর শুধু ধর্মশাস্ত্রই নয় বিজ্ঞানও এই জিনিসটিকে স্বীকার করে নেয় যে, বাড়িতে রাখা প্রত্যেকটি জিনিসই উর্জা, তরঙ্গ ছাড়তে থাকে। আর যদি ঘড়ির কথা বলতে হয় তাহলে আপনি এই জিনিসটা জেনে অবাক হবেন যে, ঘরের মধ্যে রাখা সকল বস্তুর থেকে ঘড়ির প্রভাব আমাদের জীবনে সবথেকে বেশি পড়ে। হ্যাঁ বন্ধুরা, ঘড়ি শুধুমাত্র আপনার ঘটে যাওয়া কাল কিংবা আসছে চলা ভবিষ্যতের সময়ের সূচক নয় বরং আপনি খারাপ সময় কে কিভাবে ঠিক করে নিতে পারবেন সেই সম্পর্কেও ইঙ্গিত বহন করে।


তো চলুন বন্ধুরা এখন ঘরের কিছু এমন স্থান অথবা দিশা সম্পর্কে আলোচনা করা যাক যেখানে ঘড়িকে লাগানোর শুভ বা অশুভ বলে মনে করা হয়। বন্ধুরা সবার আগে আমরা যেটি নিয়ে কথা বলব তা হল - ঘড়ির সঠিক দিশা সম্পর্কে। 


প্রথমত, বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী ঘরের দক্ষিণ দিকে কখনো ঘড়ি লাগাবেন না। কেননা এই তথ্যটি সম্পর্কে আপনিও অবগত হবেন হয়তো যে আমাদের ধর্ম পুরাণে দক্ষিণ দিশাকে যমলোকের দিশা মানা হয়েছে। এমনকি কালের অন্তিম চক্র এই দিশা থেকেই শুরু হয়। এই কারণেই শাস্ত্র অনুযায়ী এই দিশা ঘড়ি লাগানোর জন্য উপযুক্ত নয়। কেননা এটা করার ফলে আমাদের ঘরে নেগেটিভ এনার্জি প্রভাব বৃদ্ধি হতে পারে। এই জন্য চেষ্টা করবেন বাড়িতে সবসময় ঘড়িকে উত্তর অথবা পশ্চিম দিকে লাগানোর। এরই সাথে এই বিষয়টিও মাথায় রাখবেন যে, ঘড়িকে কখনো যাওয়া-আসার দরজাতে যেন না লাগানো হয়। কেননা এমনটাও হতে পারে যে এর প্রভাব আপনার বাস্তবিক জীবনে পড়তে পারে।


দ্বিতীয়ত, যা আপনাকে সর্বদাই নজরে রাখতে হবে তা হলো - ঘড়ির আকার। হ্যাঁ বন্ধুরা, ঘড়ির আকারও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যদি আপনার বাড়িতে লাগানো ঘড়ির আকার গোল অথবা ডিম্বাকৃতি হয় তাহলে এটি খুবই শুভ বলে মানা হয়। কিন্তু, বন্ধুরা আপনিও হয়তো লক্ষ্য করেছেন যে আজকাল বাজারে নানান ধরনের আকারের ঘড়ি বিক্রি হচ্ছে। যার মধ্যে কিছু এমন ঘড়িও রয়েছে যেখানে ভগবানের চিত্র কিংবা নিজের পরিবার পরিজনের ছবি লাগানোর সিস্টেম রয়েছে। বন্ধুরা আপনাকে বলে দি যে, এরকম ঘড়ি আপনার বাড়িতে নেগেটিভ এনার্জি সৃষ্টি করে। বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী ঘড়িতে এই ধরনের জিনিস গুলো লাগানো একদমই উচিত নয়। আর এর ফলে আপনার বাড়ির পরিবার পরিজনদের উপর সময়ের প্রভাব লক্ষ্য করা যেতে পারে। বিশেষ করে যেসব ঘড়িতে ভগবানের চিত্র রয়েছে সেই ঘড়ি ভুলেও বাড়িতে লাগাবেন না। কেননা সনাতন ধর্মে ভগবানের প্রতিমা হোক কিংবা মূর্তি তাদের ‌রোজ পুজো করা হয়। যেখানে ঘড়ি তে থাকা এই ভগবানের চিত্রটি অনেকদিন ধরেই ময়লা পড়ে থাকে ও প্রতিদিন পুজোও করা হয় না। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে এটা একদিক দিয়ে ভগবানের অপমান করা হচ্ছে। ভগবানের অপমান করে আপনার ঘরে পজিটিভ এনার্জি বৃদ্ধি হবে এমনটা কখনোই সম্ভব না। 


তৃতীয়ত, ঘড়ি সম্পর্কে আরেকটি জিনিস আপনাদেরকে বলে দি যে, ঘড়ি কে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখা উচিত। বলা হয়ে থাকে ঘড়িতে পড়া ময়লা, ধুলো, মাকড়সার জাল এই সমস্ত কিছু পরিষ্কারের ফলে আমরা আমাদের জীবনের সময় কেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে সাজিয়ে তুলতে পারি এবং তারই সাথে জীবনের সঠিক দিশা খুঁজে পাই। এর ফলে আমাদের ভাগ্যও খারাপ হওয়া থেকে বেঁচে যায়। 


চতুর্থত, অনেক এমন মানুষ রয়েছেন যারা তাদের পুরনো ঘড়িটি খারাপ হওয়ার সাথে সাথেই সেটিকে পুনরায় ঠিক করে নিয়ে আসেন কিংবা এরকম মানুষ রয়েছে যারা নতুন ঘড়ি আনার সঙ্গে সঙ্গে পুরনো ঘড়িটিকে না ফেলে সেটিকে বাড়ির অন্য কোন স্থানে লাগিয়ে দেয় ; এই ধরনের মানুষের ক্ষেত্রে পুরনো ঘড়িটি রেখে দেওয়ার অর্থ হলো তাদের দুর্ভাগ্য কে তাদের সঙ্গে বাঁধিয়ে রাখা। এরই সাথে এই বিষয়টির উপর নজর দেওয়া উচিত যে বাড়িতে ভাঙ্গা ঘড়ি কিংবা বন্ধ হওয়া ঘড়ি কখনোই যেন না লাগানো থাকে। কেননা এটা গৃহে দরিদ্রতা ও নেগেটিভ এনার্জি কে আমন্ত্রণ জানায়। শুধু তাই নয় এটা আপনার জীবনে আসতে চলা ভালো সময় গুলোকেও আটকে দেয়। এই কারণে পুরনো ঘড়িটিকে পারলে কাউকে দান করে দেবেন। ( কিন্তু, এর অর্থ এটা নয় যে আপনি আপনার দুর্ভাগ্য টি কেও কাওকে দান করে দিচ্ছেন। দান নেওয়া মানুষটির জীবনে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। )


পঞ্চমত, বন্ধুরা লেখাটি শেষ করার সাথে সাথে আপনাদেরকে আরেকটি বিষয় সম্পর্কে অবগত করতে চাইছি। ঘড়ির সাথে সাথে বাড়িতে লাগানো ক্যালেন্ডার সম্পর্কেও আপনাদের নজর দেওয়া উচিত। কেননা ঘড়ি যদি সময় প্রতিক হয় তাহলে ক্যালেন্ডার হলো - তারিখের প্রতীক। এই কারণে বাস্তুশাস্ত্র মতে বাড়িতে ভুল করেও উত্তর অথবা পূর্বদিকে ক্যালেন্ডার লাগাবেন না। এতে বাস্তু দোষ হতে পারে। এরই সাথে এই বিষয়টিও মাথায় রাখবেন যে, পুরনো ক্যালেন্ডারের সাথে নতুন ক্যালেন্ডার কখনোই জানো না লাগানো হয়। কেননা এগুলি সময়ের এমন সূচক যা আমাদের নতুন সময়ে এগিয়ে চলার প্রেরণা জোগায়। এই কারণেই পুরনো সময়ের সঙ্গে এগুলিকে একত্রিত রাখা একদমই উচিত নয়। এগুলিকে সবসময় আসতে চলা সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লাগানো উচিত।


তো বন্ধুরা আশাকরি লিখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন যে ঘড়ি বাড়ির কোন স্থানে এবং কিভাবে লাগানো উচিত। লেখাটি পড়ে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আজ এখানেই শেষ করলাম। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো দেখুন - গর্ভবতী মহিলাদের অন্তিম সংস্কারে যেতে মানা করা হয় কেন? || Garud Puran - CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা