নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
বন্ধুরা হিন্দু ধর্মে এরকম মনে করা হয় যে, যেসব মানুষ সৎ মন দিয়ে হনুমানজির নাম জপ করে তাদের প্রতি ভগবান না শুধু প্রসন্ন থাকে বরং তাদের চমৎকারী ফলও প্রদান করেন। কিন্তু, বন্ধুরা হনুমানজি যেমন তাড়াতাড়ি ভক্তদের ওপর কৃপা করেন ঠিক তেমনি তাড়াতাড়ি কেউ যদি খারাপ কাজ কর তাহলে তার ওপর তিনি রেগেও যান। বন্ধুরা আজ আপনাদের এই লেখার মাধ্যমে এমন ৮ প্রকার মানুষের কথা বলব যাদের উপর ভগবান হনুমান সবসময় ক্রুদ্ধ হয়ে থাকেন।
বন্ধুরা আমাদের শাস্ত্রে এমন লেখা হয়েছে যে, ভগবান রামের নাম জপ করা মানুষদের হনুমান সবসময় রক্ষা করে। আর কলি যুগের শক্তি ও বলদেবতা হওয়ার কারণে ভগবান হনুমানকে শীঘ্র ফল প্রদানকারী দেবতা হিসাবে মানা হয়েছে। তার পূজা পবিত্রতা এবং শ্রদ্ধার সাথে করা উচিত। কেননা উগ্র হওয়ার কারণে তিনি অপবিত্রতার কারণে না শুধু রাগ হতে পারেন বরং আপনাকে চিরকালের জন্য গরিব করেও দিতে পারেন।
বন্ধুরা আমাদের শাস্ত্রে এরকম বলা হয় যে, ভগবান পূজা অর্চনা করা ঘরেই বাস করেন। যেসমস্ত লোক সকাল সন্ধ্যা ভগবানের ভক্তিতে লিন থাকে, তার প্রতি মা লক্ষ্মীও প্রসন্ন থাকেন। আর তার ঘরে সবসময় ধন-সম্পত্তির বর্ষা হয়। এরকম ঘর যেখানে কখনো পূজা হয় না, যে পরিবারের মানুষ ভগবানের প্রতি বিশ্বাস রাখে না, সেখানে ভগবান হনুমান কখনোই বাস করেন না। এছাড়া যেসব লোক ভগবান শ্রী রামের অপমান করে, তাদের ওপর হনুমানজি সবসময় ক্রুদ্ধ থাকেন। ভগবান হনুমান এমন মানুষদের প্রতিও ক্রুদ্ধ থাকে যারা মদ্যপান করে, এরকম বাড়ির মানুষেরা সবসময় গরিবই থাকে।
বন্ধুরা আপনারা তো জানেননি ভগবান হনুমান ব্রহ্মচারী ছিলেন। তিনি সর্বদা স্ত্রী জাতিকে সম্মান করতেন, এই অবস্থায় যেসব পুরুষ মহিলাদের সাথে বাজে ব্যবহার করে তাকে ভগবানের রাগ সহ্য করতে হয়। এছাড়া যেই ঘরে পুরুষ মহিলাদের মারধর করে তাদের ওপরও ভগবান হনুমান সবসময় রেগে থাকেন। তারা না শুধুমাত্র মৃত্যুর পরে নরক পায় বরং তাদের জীবনে গরিব এবং দরিদ্রতার মোকাবিলা করতে হয়।
বন্ধুরা ভগবান হনুমানজি এমন পরিবারের উপরও অসন্তুষ্ট থাকে যে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একতা নেই, যে ঘরে ভাই বোন সবসময় ঝামেলা করে থাকে। এই কারণে ধর্ম শাস্ত্রে এমন লেখা হয়েছে যে, ভাইদের মধ্যে প্রেম রাম-লক্ষণের মতো হওয়া উচিত। কেউ বলে যে পবন পুত্র এমন ঘরে কখনোই বাস করে না যেখানে নোংরা ছড়িয়ে থাকে, আর যেখানে পশুদের হত্যা করা হয় ও তাদের কষ্ট দেওয়া হয়। এরকম কার্য করা মানুষদের ওপর হনুমানজি সবসময় ক্রুদ্ধ থাকে।
বন্ধুরা এছাড়া যে পরিবারের সদস্যরা অন্য কাউকে অপমান করে, অন্যের কথার মজা ওরায় তাদেরও হনুমানজির রাগের মোকাবিলা করতে হয়। এছাড়া যে সমস্ত মানুষ চরিত্রহীন হয় অর্থাৎ অন্য স্ত্রীর ওপর নজর দেয় সেও ভগবানের ক্রোধের ভুক্তভোগী হয়। তো বন্ধুরা এই হল সেই আট প্রকার লোক যাদের না শুধু হনুমানজির রাগের মোকাবিলা করতে হয় বরং তাদের সবসময় অভাবের মধ্যে দিয়েও চলতে হয়।
চলুন এখন আপনাদের এমন কিছু উপায়ও বলে দেবো, যা মেনে চললে পবনপুত্রের কৃপা সর্বদা আপনার ওপর থাকবে।
ভগবান হনুমানকে প্রসন্ন করার জন্য সবথেকে বড়ো উপায় হল মঙ্গলবার ব্রত রাখা। এই দিন ব্রত রাখলে এবং বিধি বিধান অনুযায়ী পূজা করলে হনুমানজি প্রসন্ন হন। আর আপনার সমস্ত মনোকামনা পূরণ করেন। কিন্তু, এই পুজোয় সবথেকে লক্ষণীয় বিষয় হলো যে, বেশিরভাগ মানুষ যখন হনুমানজির পূজা করেন তখন শুধু তারই মূর্তিতে পূজা করে যেখানে ভগবান হনুমান নিজেই বলেন যে তার আরাধ্য দেবতা হলেন প্রভু শ্রীরাম। এই কারণে প্রভু শ্রীরামের পূজা অবশ্যই করুন। আর তারপর ভগবান হনুমানের পূজা করুন। এর ফলে আপনার পূজা অবশ্যই সফল হবে। এছাড়াও বলা হয় যে মহিলাদের, ভগবান হনুমানের পূজা করা উচিত নয়। যদিও শাস্ত্রসম্মত এই কথা মানুষ মানেন না, যেখানে যুক্তি রয়েছে যে হনুমান ব্রহ্মচারী হওয়ার জন্য মহিলাদের তার মূর্তি স্পর্শ করার অধিকার নেই। কিন্তু, মূর্তিকে স্পর্শ না করে মহিলারা মঙ্গলবারের ব্রত রাখতে পারে। আর মনে মনে ভগবান হনুমানের ধ্যান করতে পারেন। এছাড়া যদি আপনি মঙ্গলবার এর ব্রত না করতে পারেন তাহলে মঙ্গলবারের দিন অথবা প্রতিদিন রামচরিতমা্নস্ সুন্দরকান্ড-এর পাঠ করতে পারেন। এরমধ্যে ভগবান হনুমানের লঙ্কা যাওয়া এবং সেখানে গিয়ে মাতা সীতার সাথে দেখা হওয়ার পরে লঙ্কায় আগুন লাগার বর্ণনা রয়েছে। বলা হয় যে হনুমানজি রাবণের বল এবং বুদ্ধির সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন , যে মাতা সীতাকে অপহরণ করেছিল। প্রভু শ্রী রামের আদেশে লঙ্কায় পৌঁছে ভগবান হনুমান যেভাবে লঙ্কাকে পুড়িয়ে দেন, আর তারপর মাতা সীতাকে যেভাবে বৃহৎ রূপ দেখিয়ে সমস্ত চিন্তা দূর করে আর প্রভু শ্রী রাম কে সীতা মাতার খোঁজ দেয়, এইসব পাঠ করে মানুষের সমস্ত মনোকামনা পূরণ হয়।
তাছাড়া যে কলিযুগে আমি আর আপনি বেঁচে রয়েছি সেখানে শুধুমাত্র ,ভগবানের নামের জপ করার মাধ্যমেই ও সৎকর্ম করে এবং দান ধ্যান করে নরকের বৈতরণী নদী পার করা সম্ভব। এরকম অবস্থায় ভগবান শ্রী রামের নাম জপকারী ও নিজের ইষ্ট দেবকে হৃদয়ে স্থান দেওয়া হনুমানজি এবং কলিযুগের একমাত্র এমন ভগবান যিনি এখনো বেঁচে রয়েছেন - তার আরাধনা করলে আপনারা সমস্ত কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কিন্তু, যদি তাকে রাগিয়ে দেন তাহলে তার রাগ আপনার জীবনে ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তাহলে বন্ধুরা আজকের লেখা এই পর্যন্তই, আশাকরি লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে।।
নমস্কার। ধন্যবাদ।।
ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
আরো পড়ুন - হিন্দু ধর্ম অনুসারে, খাবার খেয়ে পূজা দিলে কি হয়? CLICK HERE
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা