সকল মানুষেরই করা উচিত - এই ৬ টি জিনিসের দান || দুর্ভাগ্য দূর করতে - করুন এই ৬ টি জিনিসের দান || শিব পুরাণ্

নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু। 

বন্ধুরা দানের বিষয়ে এমন বলা হয় যে, এটি একটি এমন কাজ যা না শুধু আমাদের ধর্মের সাথে যুক্ত করে বরং জীবনের কঠিন সমস্যা থেকে বেরোতেও সাহায্য করে। তাদের মধ্যে আয়ু রক্ষা আর সুস্থতার জন্য দানকে খুবই মহত্ত্বপূর্ণ বলে মানা হয়েছে। বিশেষ করে শিব পুরাণে এমন ৬ টি জিনিসের ব্যাপারে বলা হয়েছে যা দান করলে, যেমনই দুর্ভাগ্য হোক না কেনো তা নষ্ট হয়ে যায়। চলুন তাহলে আজকের এই লেখার সাহায্যে জানা যাক সেই ৬ টি জিনিস কী কী?

বন্ধুরা দান যেমনই হোক না কেনো ! হতে পারে কোনো প্রকারের অন্ন দান হোক, বস্ত্রদান হোক, বিদ্যা দান হোক, সতর্কতা দান হোক অথবা টাকা পয়সা দান করা হোক, সমস্ত দান মানুষকে পুণ্যের ভাগীদার বানায়। এর সাথেই তার খারাপ কর্মের ক্ষমা পাওয়ায় সাহায্য করে। শিব পুরাণে এমন ৬ টি জিনিসের কথা বলা হয়েছে যা দান করলে আপনার দুর্ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। 

যার মধ্যে একটি হলো-

1. শিবলিঙ্গের ওপর চাল ছড়ালে, ভক্তের সমস্ত মনোকামনা পূরণ হয়। মনে রাখবেন অর্পিত করা এই চাল পূজার শেষে বেঁচে থাকবে। তখন এই চাল কোনো এমন মানুষকে দান করুন যার চাল দরকার।

2. দ্বিতীয় দান হল লবণ। প্রত্যেক সোমবার লবণ দান করলে, আপনার জীবনের সমস্ত প্রত্যক্ষ চিন্তা এবং অপ্রত্যক্ষ চিন্তা নষ্ট হয়ে যাবে। আপনাকে জানিয়ে দেই যে, যদি আপনি লবণ দান করেন তাহলে তা সর্বশ্রেষ্ঠ দানের মধ্যে একটি দান হিসেবে মানা হয়। কিন্তু, দান করার সময় এই ব্যাপারটি অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন যে কখনোই আপনার হাত থেকে লবণ সরাসরি অন্য কারো হাতে দেবে না, সেটি দেওয়ার সময় নীচে রেখে দিন।

3. এসব ছাড়া বন্ধুরা যদি আপনার সম্পর্কে সেই মিষ্টতা না থাকে, যা আগে ছিল ; সে হতে পারে পিতা-পুত্রের সম্পর্ক অথবা স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক। এইরকম ভেঙে যাওয়া সম্পর্কে যদি সমাধান চান তাহলে প্রত্যেক সোমবার গুড় দান করুন। এই দান আপনাদের সম্পর্কে সেই পুরানো মিষ্টতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। তার সাথে গুড়ের ব্যাপারে বেদেও বলা হয়েছে যে, গরুকে রুটির সাথে গুড় খাওয়ালে ঘরের লক্ষ্মীর বাস হয় এবং সম্পর্কের কাঠিন্যতা শেষ হয়ে যায়।

4. শিব পুরাণে চতুর্থ যে দানের কথা বলা হয়েছে, তা হলো তিল দান। সোমবারে নিয়মিত রূপে তিল দান করলে আপনার মধ্যে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে। কেননা এরকম অনেক লোকের মধ্যে দেখা যায় যে তাদের মধ্যে গুণ এবং জ্ঞানের কোনো কমতি থাকেনা। কিন্তু, সব জায়গাতে তার আত্মবিশ্বাস তাকে পিছনে ফেলে রাখে। এরকম মানুষদের জন্য এই তিল দান সব থেকে বেশি কার্যকরী মানা হয়। তিলের মধ্যে যদি কেউ কালো তিল দান করে তাহলে তার শনিবার দান করাই বেশি ফলদায়ক।

5. পঞ্চম যে দানের কথা বলা হয়েছে তাহলো - ঘি দান। যদি আপনার ঘরে কেউ অনেকদিন ধরে অসুস্থ থাকে এবং হঠাৎ করে কেউ যদি বার বার অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে সেই ব্যক্তির দ্বারা স্পর্শ করিয়ে ঘি দান করলে ওই ব্যক্তির সুস্থতায় নিশ্চিত রূপে পরিবর্তন আসবে। তার মধ্যে যদি আপনি গরুর দুধ দিয়ে তৈরি ঘি দান করেন তাহলে তা অত্যধিক শুভ বলে মানা হয়।

6. শিব পুরানে সর্বশেষ যে দানের কথা বলা হয়েছে তা হলো - বস্ত্রদান। হ্যাঁ বন্ধুরা ! কোনো বস্ত্র যার প্রয়োজন, এমন ব্যক্তিকে বস্ত্র দান করলে আপনার আয়ু বৃদ্ধি হয় অর্থাৎ দীর্ঘায়ু হয়। যদি কেউ নিয়মিত রূপে অসুস্থ হয় অথবা যে ব্যক্তির তার জীবন নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে তাহলে তার দ্বারা করা এই দান তার স্বাস্থ্যে পজিটিভ প্রভাব দেখায়। 

বন্ধুরা এগুলি ছিল শিব পুরাণে বর্ণিত কিছু এমন দান যার দ্বারা আপনি আপনার দুর্ভাগ্যকে সৌভাগ্যে পরিবর্তন করতে পারবেন।

জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, ভিন্ন ভিন্ন বস্তু দানের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়। যেমন, ধান বা চাল দান করলে জীবনে কখনো অন্নের অভাব হয় না। বস্ত্র দান করলে আর্থিক পরিস্থিতি সবসময় ভালো থাকবে, কিন্তু লক্ষ্য রাখবে তার মধ্যে একেবারে ছেঁড়া, পুরানো বস্ত্র যেন না থাকে। আর কিছু বিশেষ পরিস্থিতির সাথে ধাতুর দান করার কথাও বলা হয়েছে, যার ফলে বিপদ কেটে যায়। এই দান সেই ব্যক্তিকেই করতে বলা হয় যিনি দান করা জিনিসগুলিকে প্রয়োগ করেন।

গ্রহের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিশেষ করে কুন্ডলীতে চন্দ্রের অশুভ প্রভাবে চিন্তিত থাকলে তা নিবারণের জন্য নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী নিয়মিত রূপে এক মুঠো চাল দান করুন। এই উপায় আপনার চন্দ্রদোষ দূর করবে। জ্যোতিষীরা মানেন যে যেই ব্যক্তি কাউকে দান করে আনন্দ পায় এবং সে তার ক্ষমতা অনুযায়ী দান করে তাহলে সে ঈশ্বরের অসীম কৃপা লাভ করে। কেননা দান মানুষকে শ্রেষ্ঠ ও সৎ কর্মী বানায়।‌ যার কারনে সে এক অদ্ভুত আত্মশুখ লাভ করে। যদি আপনি এই অদ্ভুত খুশিকে অনুভব করতে চান তাহলে যাদের প্রয়োজন তাদের দান করুন।

বন্ধুরা আশা করি আজকে আপনাদের এই লেখাটি ভালো লেগেছে। আর প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।

আরো পড়ুন - ৫ টি এমন সংকেত - যা বলে দেয় হনুমানজি আপনার উপর রেগে রয়েছেন || হনুমানজির রাগের প্রতিকার কিভাবে করবেন?  CLICK HERE