নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
ভগবান বিষ্ণুর কল্কি অবতার সম্পর্কে আপনারা সবাই হয়তো জানেন। ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, এটি হলো ভগবান বিষ্ণুর শেষ অবতার। যখন পৃথিবীতে পাপ চরম সীমানায় পৌঁছে যাবে, চারিদিকে যখন অধর্ম এবং অত্যাচার হতে থাকবে সেই সময় সৃষ্টিকে উদ্ধার করার জন্য ভগবান কল্কি অবতারের রূপ নেবেন। আর কলি যুগের শেষ করে পুনরায় ধর্মযুগ স্থাপন করবে। আজ আমি আপনাদের বলব সেই ছয়টি লক্ষণ যা দেখে কলিযুগের অবসানের সময় বোঝা যেতে পারে।
কলিযুগের অবসানের সমস্ত কাহিনী শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণে পাওয়া যায়, এতে কলিযুগের লক্ষণ থেকে শুরু করে কল্কি অবতারের রং , রূপ পর্যন্ত সমস্ত কিছু বলা রয়েছে। তার সাথে এখানে বলা আছে যে, যখন কলি যুগ একদম শেষ মুহূর্তে চলে যাবে তখন কোন কোন লক্ষণ দেখা দিতে পারে ?
শ্রীমদ্ভাগবদ মহাপুরাণ অনুসারে ভগবান বিষ্ণু পৃথিবী থেকে অধমের্র বিনাশ করার জন্য কল্কি অবতারের রূপে এসে মাত্র ৩ দিনে কলিযুগে বিনাশ করে দেবে। পাপ যুগ শেষ করার পরে ভগবান পুনরায় ধর্মযুগ স্থাপন করবেন। ভগবান অবতারের রূপ নেওয়ার আগে কিছু এমন লক্ষণ দেখা দেবে যা অসম্ভব। এই লক্ষণ পৃথিবীতে বেড়ে যাওয়া পাপের চরম সীমার সংকেত, যার পরে ভগবান এসে সবকিছু শেষ করে দেবেন।
চলুন এখন জানা যাক শ্রীমদ্ভগবদ মহাপুরাণে বলা এমনই ছয় সংকেতের ব্যাপারে।
প্রথম সংকেত, মানুষ সবসময় ক্ষুধা তৃষ্ণা আর আলাদা আলাদা চিন্তা নিয়ে ঘিরে থাকে তাদের শরীরে বিভিন্ন রকমের রোগ সৃষ্টি হবে আর মানুষের অতিরিক্ত আয়ু কেবল কুড়ি থেকে ত্রিশ বছরই পর্যন্তই থাকবে।
দ্বিতীয় সংকেত, পৃথিবীতে উপস্থিত বেশিরভাগ নদী শুকিয়ে যাবে।পৃথিবীতে জল শেষ হয়ে যাওয়ার জন্য পুরো সৃষ্টিতে হাহাকার শুরু হয়ে যাবে, অকাল চলাকালীন সমস্ত গাছপালা শুকিয়ে যাবে।
তৃতীয় সংকেত, স্বামী-স্ত্রী ব্যভিচার হয়ে যাবে, তারা একে অপরকে ছেড়ে অন্য স্ত্রী পুরুষের সাথে সম্বন্ধ তৈরি করবে। মানুষ বিয়ে না করে, সাথে থাকা শুরু করবে আর সম্পর্কের কোন সীমা থাকবে না।
চতুর্থ সংকেত, তীর্থস্থানে ধর্ম এবং পবিত্রতার জায়গায় অধর্ম এবং অপবিত্রতার কথা শুরু হবে। সেখানে বেদ,পূজা,পাঠ হওয়ার বদলে অনাচার শুরু হবে। বেশিরভাগ ধর্মস্থান টাকা কামানোর সংস্থানের পরিণত হয়ে যাবে।
পঞ্চম সংকেত, মানুষ ছোট ছোট স্বার্থের জন্য বেইমানি আর হত্যার মতো অপরাধ করবে। মানুষের জীবনের কোনো মূল্য থাকবে না। যে কেউ টাকা পয়সা কামানোর জন্য অনৈতিকতার রাস্তা বেছে নেবে। সবমিলিয়ে মানুষ জাতির পতন শুরু হবে।
ষষ্ঠ এবং অন্তিম সংকেত, সমস্ত দিকে ধর্মের রূপে অধর্মের পূজা শুরু হবে। নিজের স্বার্থকে পূরণ করাই সবথেকে বড়ো ধর্ম হিসেবে মানা হবে। ধর্মকে মেনে চলা বেশিরভাগ মানুষই শেষ হয়ে যাবে আর বেশিরভাগ মানুষই নাস্তিকতাকে বেঁছে নেবে। এর মধ্যে বেশিরভাগ কথা আজকের দিনেও অবাক করা কথা নয়। কিন্তু বন্ধুরা, কলি যুগের এখনো লাখ লাখ বর্ষ বাকি রয়েছে। কলিযুগের শেষ আসতে আসতে এই সমস্ত অন্যায় তার চরমসীমায় পৌঁছে যাবে, আর তারপর ভগবান বিষ্ণুর কল্কি অবতার আসবে।
আশাকরি বন্ধুরা আজকের লেখা আপনাদের ভালো লাগেছে এবং আপনারা কলিযুগের অন্তের সেই গুরুত্বপূর্ণ সংকেত গুলি সম্পর্কে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। বন্ধুরা এই কারণেই আপনি যদি কলিযুগের পাপের ভাগীদারের থেকে বাঁচতে চান, তাহলে সদা সর্বদা নিজের ধর্মের পালন করুন। নিজের মধ্যে সঠিক বিচার করার ধ্যান-ধারণা আনুন। গরীব দুস্থদের উদ্দেশ্যে দান করুন এবং সর্বদা ধর্মের পথে চলুন।
আজ এখানেই শেষ করলাম। ভালো লাগলে লেখাটি আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন।। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
আরো পরুন - অর্জুনের দিব্যিও রথের রহস্য ! || মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর - কেন জ্বলে গিয়েছিল অর্জুনের রথ ? CLICK HERE
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা