নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
আজকে আপনাদের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হলো - রাবন কি আজও বেঁচে আছে? আর কিভাবে পাওয়া গেল শ্রীলঙ্কায় রাবণের বেঁচে থাকার প্রমাণ? বিজ্ঞানীরা কি সত্যি করে খুঁজে বার করলেন রাবণের মৃতদেহ!
শ্রীলঙ্কায় আজও রামায়ণের সাথে জড়িত অনেক ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে, যা ঘটে যাওয়ার রামায়ণ কালের ইতিহাস সম্পর্কে বলে। এই কথাগুলি তো সবাই জানেন যে, যখন ভগবান রাম আর লঙ্কার অধিপতি রাবণের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল তখন প্রভু শ্রী রাম রাবণের বধ করেছিলেন। আর রাবণের অন্তিম সংস্কারের জন্য তার মৃতদেহ রাবণের ভাই বিভীষণ কে দিয়ে দিয়েছিলে। বিভীষণকে লঙ্কা অধিপতি রাবণের মৃতদেহ দেওয়ার পর তার অন্তিম সংস্কার হয়েছিল, না হয়নি ! এই বিষয়ে কেউ কিছু জানে না। কিন্তু , যদি আমি আপনাদের বলি যে, রাবণ মরেনি বরং রাবণ আজও বেঁচে আছে আর এই পৃথিবীতেই আছে তাহলে আপনারা কি বলবেন? আপনারা এটাই বলবেন যে, এসব কিভাবে সম্ভব! কিন্তু, আপনারা মানুন কি না মানুন - রাবণ বেঁচে আছে।
তাহলে আসুন জানা যাক আর শুরু করা যাক এই বিশেষ তদন্ত।
আসলে শ্রীলঙ্কার ইন্টারন্যাশনাল রামায়ণ রিসার্চ সেন্টার আর টুরিজম্ মিনিস্ট্রিরা মিলে ৫০টি এমন জায়গা খুঁজে বার করেছে যেখানে রামায়ণের সাথে জড়িত ঘটনার উল্লেখ রয়েছে, আর এর মধ্যে একটি জায়গা এমনও রয়েছে যেখানে রাবণের বেঁচে থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। রিসার্চ এর মতে, শ্রীলংকার রেংলা জঙ্গলের মাঝে এক বিশাল বড়ো পাহাড় রয়েছে, যেখানে রাবণের গুহা রয়েছে। এই গুহা অনেকটাই উঁচু এবং বলা হয় যে, এখানে রাবণের মৃতদেহ আজও সুরক্ষিত রয়েছে। এটা জানা গেছে যে, রাবণ এই গুহাতে এসে পূজা পাঠ এবং ভগবান শিবের তপস্যা করতেন। পাহাড়ে এই গুহা প্রায় ৮ হাজার ফুট উঁচুতে তৈরি হয়েছে, যেখানে ১৮ ফুট লম্বা কফিনে রাবণের মমি রাখা হয়েছে। কিন্তু, ঘন জঙ্গল ও হিংস্র পশুদের কারণে এই গুহায় আজও কেউ পা রাখতে পারেনি। রাবণের মৃত্যুর পর ভগবান রাম বিভীষণকে লঙ্কার সাথে রাবণের মৃতদেহকেও দিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু, বিভীষণ রাজ পাট সামলানোর চক্করে রাবণের মৃতদেহকে সংস্কার না করেই ফেলে দেন। এরপর রাক্ষস কভিলের লোকেরা রাবনের শবদেহকে তাদের সাথে নিয়ে যায় ও সেই মৃতদেহকে সেই গুহাতে নিয়ে যায়, যেখানে রাবণ পূজা পাঠ করতেন। রাক্ষসেররা রাবনকে বাঁচিয়ে তোলার অনেক চেষ্টা করে কিন্তু, কোনো সফলতা তারা পায়নি। শেষে তারার রাবণের শরীরকে মমি বানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তারা আশা করেছিল এইভাবে সে অবশ্যই বেঁচে যাবে, এখন না হলেও ভবিষ্যতে বেঁচে যাবে।
রিসার্চ এর মতে রাবণের মমি লঙ্কার রিংলা বা রেংলার জঙ্গলে সুরক্ষিত রাখা হয়েছে। কিছু মানুষ তো এমনটাও মানেন যে, একদিন রাবণের মৃত শরীর পুনরায় বেঁচে উঠবে আর হয়তো সেটা কলি যুগেই হবে। রাবণের মৃতদেহ যেই কফিনে রাখা হয়েছে, তাতে এক বিশেষ প্রলেপ লাগানো রয়েছে। বলা হয় যে এই প্রলেপের কারণে কফিনটি আজও সুরক্ষিত রয়েছে আর কেনই বা হবে না, এই কফিনটি ১৮ ফিট লম্বা আর ৫ ফিট চওড়া। কিছু মানুষ এমনও বলে যে এই কফিনের নীচে রাবণের অনেক মূল্যবান খাজানা রয়েছে। হিন্দু মান্যতা অনুযায়ী রাবণ ক্রেতা যুগের সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী রাজা ছিলেন। তার নিজের শক্তির ওপর খুবই অহংকার ছিল। আর এই অহংকারের কারণে রাবণ, ভগবান শ্রী রামের স্ত্রী মাতা সীতাকে হরণও করেছিলেন। অনেক বোঝানোর পর যখন সে না মানে, তখন ভগবান রাম আর রাবনের মধ্যে এক ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হয়। রাবণের কাছে অনেক শক্তিশালী সেনা ছিল। কিন্তু, অহংকারের কারণে সে মারা যায়। এই কথার প্রমাণ আজও শ্রীলঙ্কায় স্থায়ী রয়েছে। রাবণ যে জায়গায় মাতা সীতাকে হরণ করে রেখেছিলেন তার পাশে একটি ঝর্ণা রয়েছে যেখানের পাথরে আজও ভগবান হনুমানের পায়ের চিহ্ন রয়েছে।
আপনারা হয়তো অনেক শুনেছেন বা কোনো ভিডিওতে দেখেছেন, শ্রীলঙ্কায় একটি এমন গুহা রয়েছে যার নাম "রাবনাস্কেফ" একে "রাবনএলা্" নামেও জানা হয়। কেননা এই গুহা শ্রীলংকার এলা্তে অবস্থিত রয়েছে যেখানে রাবণ কিছু বছর কাটিয়েছিলেন। এই জায়গা সমুদ্র থেকে প্রায় ৪৪৯০ ফিট উচ্চতায় এবং এখানে পৌঁছাতে একদিন সময় লাগে। গুহা পর্যন্ত পৌঁছানোর রাস্তা অনেক কঠিন এখানের সিঁড়ি গুলি অনেক ভেঙ্গে চুরে গেছে।
যদিও রাবণ মাতা সীতাকে অশোক বাটিকাতে রেখেছিলেন এটা আমরা সবাই জানি, আর সেটিও এখান থেকে কিছুটা কাছে। গুহা পর্যন্ত পৌঁছানোর রাস্তা কিছুটা ভয়ংকর, ঘন জঙ্গল হওয়ার কারণে এখানে বন্য জানোয়ারের বিপদ সবসময় থেকেই থাকে। আর এই গূহার কাছেই একটি ঝর্ণা রয়েছে যাকে "রাবনাস-ফল" নামে জানা যায়।
শ্রীলঙ্কায় "রাবনাগোদা্" নামে একটি জায়গাও রয়েছে যেখানে অনেক গুহা এবং অনেক সুরঙ্গ পথ রাবণের গুহাকে ভেতরে ভেতরে যুক্ত করে। কিছু লোক বলে যে, অনেক সুরঙ্গ এমন রয়েছে যা দক্ষিণ আফ্রিকা পর্যন্ত যায়। যেখানে রাবণ তার অনেক মূল্যবান খাজানা লুকিয়ে রেখেছিলেন। রাবণের জীবন্ত থাকা আজও একটি রহস্য হয়ে রয়েছে। এই বিষয়ে কিছু বলা মুশকিল, শ্রীলঙ্কার রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী এরকম মনে করা হয় যে, হয়তো রাবণের শরীর আজও সঠিকভাবে রাখা হয়েছে।
আর এরকম হতে পারে যে কলিযুগে রাবণ পুনরায় কলি পুরুষ দ্বারা বেঁচে উঠতে পারে, তাহলে কী সেই সময় কল্কি অবতার যিনি হলেন ভগবান শ্রীবিষ্ণুর অবতার তার সামনে কি এটি একটি চুনতি হয়ে দাঁড়াবে যে, সে কলি মানুষদের পাশাপাশি রাবণের সাথেও যুদ্ধ করবে !!
তাহলে আশা ষকরি বন্ধুরা আজকের লেখা থেকে আপনারা অনেক কিছু জানতে পেরেছেন এবং লেখাটি আপনাদের ভালো লেগেছে। শেষ পর্যন্ত মন দিয়ে লেখাটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
আরো পড়ুন - শিব পুরাণ্ অনুযায়ী, সকল মানুষের করা উচিত - এই 6 টি জিনিসের দান। CLICK HERE
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা