Breaking

Search Content

Follow Us

রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০২২

মৃত্যুর পরে - কে, কোন পর্যন্ত সাথে থাকে? || Who goes with you after death?

 


নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু। 


বন্ধুরা মানুষের শরীর হলো নশ্বর যার নষ্ট হওয়া নিশ্চিত। আপনারা শুনেছেন হয়তো - মানুষ না কিছু নিয়ে এসেছে, না কিছু নিয়ে যাবে। এর সাথে এও বলা হয়েছে যে, কেউ মরার সময় সাথে যায় না, যতই সে পরিবারের সদস্য হোক বা বন্ধু হোক। বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের এই লেখার মাধ্যমে বলব যে, মরার পরে পরিবার পরিজন, আত্মীয়-স্বজনরা সকলে কোন পর্যন্ত মৃতদেহের সাথে থাকে? আপনারা ঠিকই শুনেছেন মরার পরেও আপনাদের সাথী আপনাদের সাথ দেয়, সে স্ত্রী হোক বা পুত্র। কিন্তু, কোন পর্যন্ত সাত দেয় তা জানার জন্য লেখাটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অবশ্যই পড়ুন।


বন্ধুরা আপনারা অনেকবার এটা ভেবেছেন হয়তো যে আপনার কোনো আপন জনের মৃত্যুর পর সে আপনার সাথে আর থাকবে না। কিন্তু, এমনটা একেবারেই নয়। আসলে এটা হয় যে, একটি পর্যাপ্ত সময় পর্যন্ত মৃত ব্যক্তির সাথ আপনি দিতে পারবেন। ধরুন যখন কারও স্বামীর মৃত্যু হয় এবং তার শরীর শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় তখন স্ত্রীকে সমাজের অন্যান্য লোক দরজার কাছেই আটকে দেয়। বাইরে বেরোনোর অনুমতি দেওয়া হয় না, অর্থাৎ স্বামীর মৃত্যুর পরে স্ত্রী শুধুমাত্র দরজা পর্যন্তই আসার অধিকার আছে। ঠিক একইভাবে মৃতের পুত্ৰের সাথও শ্মশান পর্যন্তই থাকে, পিতার চিতায় আগুন দেওয়ার পরেও তার সাথ সেখানেই শেষ হয়ে যায়। বন্ধুরা আপনাদের বলে দেই যে, মৃতের আত্মীয়-স্বজন, পরিজন, বন্ধু-বান্ধব এবং প্রতিবেশীদের সাথও অন্তিম যাত্রা পর্যন্তই থাকে। যার পরে শুধুমাত্র মনে কিছু স্মৃতি থেকে যায়। এছাড়া যেসব মানুষদের তার টাকা পয়সার প্রতি অহংকার থাকে মৃত্যুর পরে সেই টাকা পয়সা শুধুমাত্র তার সাথে হাসপাতাল পর্যন্তই থাকে। আমরা কষ্ট করে যতই টাকা-পয়সা রোজগার করি না কেন, এই টাকা দিয়ে আমরা কখনোই আমাদের শেষ নিঃশ্বাস কিনতে পারি না, যদি এমন হতো তাহলে ধনী মানুষদের কখনোই মৃত্যু হতো না।


সারা জীবন সাথ দেওয়া শরীর মৃত্যুর সময় শুধুমাত্র চিতা পর্যন্তই থাকে, চিতার আগুন লাগার সাথে সাথে একটি মোমবাতির মতো মৃতদেহের শরীর গলে যায় আর তাও সাথ ছেড়ে দেয়। 


মানুষের মৃত্যুর পর তার সাথে যা যায় তা হলো শুধুমাত্র তার কর্ম। মানুষ তার সারাটা জীবন চিন্তা করে কাটিয়ে দেয়। কিন্তু, এই কথাটি ভুলে যায় যে তারা যখন এই সংসার থেকে যাবে তখন খালি হাতেই তাদের যেতে হবে। শুধুমাত্র তাদের সাথে যাবে তার দ্বারা করা পাপ আর পূন্য কর্মগুলি। বন্ধুরা এই কারণে বলা হয় যে, জীবনে ধর্মকার্য এবং সৎকার্যের জন্য সময় বার করা উচিত, যাতে সৎকর্মের পাল্লা ভারী থাকে এবং মানুষেরা সৎগতি লাভ করে। 


বন্ধুরা গরুড় পুরানে বলা হয়েছে যে, মৃত্যুর সময় মানুষের সমস্ত শরীর শিথিল হয়ে যায়। কিন্তু, তাদের অনেক বছর পুরনো কথাও মনে পড়তে থাকে। সে তার জীবনের সমস্ত ভালো খারাপ কর্ম একটি সিনেমার মতো দেখতে পায়, তার চোখের সামনে সে সমস্ত লেখালেখি চলে আসে যা সে তার সম্পূর্ণ জীবনে করে এসেছে, তার সাথে মানুষ এই সময় কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।


বন্ধুরা, বলে দেই যে গরুড় পুরানে এও বলা হয়েছে যে, যখন কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হয় তখন যমরাজের যমদূত তাকে যমলোকে নিয়ে যায়। যমলোকে তার ভালো এবং খারাপ কর্মের হিসাব হয়। তারপর ২৪ ঘন্টার মধ্যে যমদূত তার আত্মাকে পুনরায় বাড়িতে রেখে যায়। মৃতের আত্মা তার পরিবার পরিজনের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে থাকে। আর তার পরিবার-পরিজনদের ডাকে কিন্তু, তার আওয়াজ কেউ শুনতে পায় না। এইসব দেখে মৃত ব্যক্তির আত্মা বিরক্ত হয়ে যায় আর চেঁচামেচি করতে থাকে। বন্ধুরা এরপর আত্মা তার শরীরে প্রবেশ করার জন্য অনেক চেষ্টা করে কিন্তু যমদূতের কাছে বন্দি থাকার কারণে ওই আত্মা মৃত শরীরে প্রবেশ করতে পারে না।


গরুড় পুরানে বলা হয়েছে যখন কোনো মানুষের মৃত্যু হয়ে যায় তখন তার আত্মা ১৩দিন পর্যন্ত তার পরিবার-পরিজনদের সাথে বাড়ির মধ্যে ঘুরে বেড়াতে থাকে। তারপরে আত্মা মর্তলোক থেকে যমলোকের পথে রওনা দেয়, যা পূরণ করার জন্য তাকে বারো মাস অর্থাৎ এক বছর সময় লাগে। শুধু এই পর্যন্তই নয়, গরুর পুরান অনুসারে ১৩ দিন পর্যন্ত মৃত ব্যক্তির নামে করা পিন্ডদান তার এক বছরের ভোজনের সমান হয়। এইটুকুই নয় শিব পুরাণে সেই সংকেতের কথা বলা হয়েছে, যা মৃত্যুর আগে দেখা যায়। শিব পুরানে বলা হয়েছে যে মৃত্যুর কিছু মাস আগে যেই মানুষের মুখ জিহ্বা চোখ কান আর নাক পাথরের মতো মনে হয় তাহলে তা ব্যক্তিটির তাড়াতাড়ি মৃত্যু হওয়ার সংকেত মনে করা হয়। 


শিব মহাপুরান অনুযায়ী যদি আপনার ছায়া আপনি দেখতে না পান তাহলে তা মৃত্যু কাছে চলে আসার সংকেত মনে করা হয়। শিব পুরাণ অনুযায়ী ভগবান শিবের মতে যদি কোনো ব্যক্তি শরীর নীল এবং হলুদ হয়ে যায় অথবা তার শরীরে কোথাও লাল চিহ্ন দেখা যায় তাহলে তা সংকেত দেয় যে খুব শীঘ্রই ব্যক্তিটির মৃত্যু হবে।


বন্ধুরা আপনারা আজ এই লেখায় দেখলেন যে মৃত্যুর পর কে কোন পর্যন্ত সাথে থাকবে, সে স্ত্রী হোক বা পুত্র। তার সাথে আমি আপনাদের এও বললাম যে, মৃত্যুর পর আমরা আমাদের সাথে কী নিয়ে যাই। 

আজকের লেখাটি এই পর্যন্তই, আশা করি এই লেখার মাধ্যমে আপনারা আপনাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। 

নমস্কার। ধন্যবাদ। 

আজ এখানেই শেষ করলাম। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো পড়ুন:- কর্ণ ও যুধিষ্ঠিরের মধ্যে কে সবথেকে বেশি দানবীর?  CLICK HERE 


আরো পড়ুন:-২০২২ - দুর্গাপূজার সময়সূচী || মা দুর্গার আগমন || DURGA PUJA DATE AND TIME 2022 CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা