Breaking

Search Content

Follow Us

মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২

ভারতের কোথায় রয়েছে পান্ডবদের বংশ? অধিকতর হিন্দু এটি জানেন না || Is Pandav dynasty still Alive


নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু। 


বন্ধুরা এটা তো আপনারা জানেনই যে মহাভারতের যুদ্ধ যখন সমাপ্ত হল তার কিছুকাল পড়ে পঞ্চপান্ডবেরা দ্রৌপদীকে নিয়ে স্বর্গের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। আর শুধু যুধিষ্ঠিরই ছিল যে স্বশরীরে স্বর্গে পৌঁছেছিল। কিন্তু, বন্ধুরা আপনি এটি হয়তো জানেন না যে, পান্ডবদের স্বর্গের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার পর হস্তিনাপুরের সিংহাসনে কে বসেছিল? আর আজও কি পান্ডব রাজবংশের কেউ জীবিত রয়েছে? আর যদি জীবিত থেকেই থাকে তাহলে তারা বর্তমানে কোথায় রয়েছে? এই সমস্ত কিছু বিষয় সম্পর্কে জানাবো আপনাদের আজকের এই বিশেষ লেখাটিতে।


বন্ধুরা মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ চলাকালীন যখন অর্জুনের পুত্র অভিমন্যুর মৃত্যু হয় তখন সেই সময় তাঁর পত্নী উত্তরা গর্ভবতী ছিল। তখন অশ্বথমা ব্রহ্মশীর অস্ত্র দিয়ে উত্তরার গর্ভে প্রহার করেছিল। তখন পুরো ব্রহ্মাণ্ড কেঁপে উঠেছিল, কেননা সেই অস্ত্রটি এমনই অস্ত্র ছিল যে কখনো খালি হাতে অর্থাৎ শত্রুপক্ষকে ঘায়েল না করে ফিরে আসত না। উত্তরার গর্ভে ধীরে ধীরে বড় হতে থাকা ওই ছোট্ট শিশুটি সেই অস্ত্রের প্রহারের ফলে মারা যায়। কিন্তু এই ঘটনার পর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজের শক্তির মাধ্যমে উত্তরার মৃত পুত্রকেও বাঁচিয়ে দেয়। আর এরই সাথে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অশ্বত্থামা কে একটি বিশাল অভিশাপ দেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অশ্বথামাকে অভিশাপ দিয়ে বলেন - তুমি অনেক যুগ পর্যন্ত এই পৃথিবীতে ঘুরতে থাকবে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অভিশাপ এই মৃত্যুলোকে আসতে চলা মানুষদের জন্যও একটি সচেতনতা মূলক বাণী ছিল। এর মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্মকে এটা বুঝে নেওয়া উচিত যে, গর্ভে ভ্রুণ হত্যা সকল অপরাধের থেকে বড় অপরাধ বলে গণ্য। আর এমনটা করা মানুষ সবথেকে বড় সাজার অধিকারী রূপে গণ্য হবে। শ্রীমদ্ভগবতদ্গীতা তেও লেখা রয়েছে যে, গর্ভের ধীরে ধীরে বড় হতে থাকা বাচ্চাটিকে মুনি বলা হয়। আর তাকে হত্যা করা একটি ঋষিকে হত্যা করার সমান অপরাধ বলে গণ্য। কেননা সেই অজন্মী আত্মা সকল কর্ম থেকে মুক্ত। আর সে শান্তি ও জ্ঞানের শিখরে নিবাস করে। যে কারণে অশ্বথমা আজও তার সাজা ভুগছে। বলা হয়ে থাকে অশ্বথামা আত্মা আজও এই পৃথিবীতে রয়েছে। শ্রীকৃষ্ণের অভিশাপের ফলে অশ্বত্থামার আত্মা আজ পর্যন্ত মুক্তি লাভ করতে পারেনি। বন্ধুরা এবার আপনাদের বলি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ উত্তরার গর্ভে থাকা যেই শিশুটিকে জীবিত করে তুলেছিল সেই শিশুটি পরবর্তীকালে বড় হয়ে পাণ্ডবরা স্বর্গের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার পরে হস্তিনাপুরের সিংহাসনে বসেছিল। বন্ধুরা হস্তিনাপুরের এই রাজার নাম ছিল রাজা পরীক্ষিৎ। 


পরীক্ষিৎ খুবই প্রতাপী একজন রাজা ছিলেন। তিনি আগে থেকেই জানতে পেরে গিয়েছিলেন যে, আজ থেকে প্রায় সাত দিন পরে একটি নাগের ছোবলে তার মৃত্যু হবে। যেই কারণে তিনি নাগের হাত থেকে বাঁচার জন্য কাঁচের তৈরি একটি ঘর বানিয়ে ছিলেন। এছাড়াও অনেক বড় বড় সাপুড়েদের ডেকে আনা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও মৃত্যুকে কেউ আটকাতে পারে না। এরপরে এমত অবস্থায় তার দাসীরা একদিন তাকে আপেল খেতে দেন। আর সেই আপেলের মধ্যেই নাগটি লুকিয়ে ছিল। যেই রাজা পরীক্ষিত আপেলটি খাবার জন্য হাতে নিতে যান, তখনই সেই নাগটি তাকে ছোবল মারে। আর এভাবেই রাজা পরীক্ষিৎ -এর মৃত্যু হয়।


বন্ধুরা আপনি যদি পান্ডব বংশের দিকে একটু নজর দেন তাহলে দেখবেন যে অর্জুনের পুত্র অভিমন্যু, অভিমন্যুর পুত্র পরীক্ষিৎ ও পরীক্ষিৎ এর পুত্র জনমেজয় বা জন্মেজয়; যিনি পরীক্ষিতের পরে হস্তিনাপুরের সিংহাসন ও রাজ পাট সামলান। এরপর জনমেজয় থেকে অশ্বমেধ, দলিল ও ছত্রপাল হন পরবর্তী বংশধর। এভাবেই অর্জুনের ৮১ তম বংশক হন - তুঙ্গরাজ। তার পুত্র রাজা অনংগপাল তংবর ছিলেন দিল্লির সংস্থাপক। এছাড়াও উত্তর প্রদেশের মথুরা জেলায় গোবর্ধন তেইশীল ক্ষেত্র ও রাজস্থানের ভারতপুর জেলার কিছু অংশে পাণ্ডব বংশীরা আজও নিবাস করেন। আগে এদের নামের প্রথমে কৌন্তেয় যুক্ত থাকত। কিন্তু পরবর্তীতে সময়ের সাথে সাথে মানুষেরা একে কুন্তল করে দেয়। যেমন প্রাচীনকালে ব্রাহ্মণরা 'চতুর্বেদি' লিখতেন। কিন্তু, পরে সময়ের সাথে সাথে জাতি, উপজাতি ও উপনাম বদলে যেতে থাকে। এমনটা বলা হয়ে থাকে যে মথুরা ও ভরতপুরের কিছু মানুষেরা আজও নামের আগে পাণ্ডব লিখতে পছন্দ করেন। বলা হয়ে থাকে এরা আজকের দিনে এই মানুষগুলির বংশধররা নিজেদের 'তোমর' অথবা 'তংবর রাজপুত' হিসেবে লেখেন। 'তোমর', 'তংবর' অথবা 'রাজপুত' - আপনি ভারতের অনেক স্থানেই পাবেন। 


বন্ধুরা পান্ডবদের মত ভগবান কৃষ্ণ ও শ্রী রামেরও বর্তমান বংশধর রয়েছে। কিন্তু, সময়ে সময়ে তাদের উপরে নানান ধরনের প্রশ্ন এসেছে, সমালোচনা এসেছে। আপনিই ভাবুন একটি যুগ কম করে ৪ লাখ বছর হয় এই সময়ের মধ্যে প্রায় লাখ লাখ বংশধর জন্ম নেয় ও মরেও যায়। তাহলে এটা কি করেই বা ঠিক হবে যে ওই বংশের বংশধর আজও জীবিত রয়েছে। এর সাথে বন্ধুরা এর কোনো লিখিত প্রমাণও নেই। এই কারণে প্রাচীনকাল থেকে এখনো পর্যন্ত এটি একটি রহস্যই রয়ে গেছে যে, কে কোন বংশের। কিন্তু, বন্ধুরা সবশেষে একটা কথাই বলব যে পাণ্ডবের বংশধর আজও এই পৃথিবীতে বেঁচে রয়েছে। হয়তো এমন মানুষেরাও হতে পারেন তারা নিজেই হয়তো জানেন না যে তারা পাণ্ডবদের বংশধর। 


তো বন্ধুরা আশাকরি লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। আজ এখানেই শেষ করলাম, ভালো লাগলে আপন জনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ।। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো পড়ুন:- মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এত কষ্ট কেন ভোগ করতে হয় ! || Why people suffer in life ?CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা