Breaking

Search Content

Follow Us

শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২

এই 2 টি শিবলিঙ্গে আছে কলিযুগ ধ্বংসের রহস্য || জানুন অলৌকিক শিব মন্দিরের রহস্য

 


নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু। 


বন্ধুরা আপনারা অনেক সময়ই বিভিন্ন মানুষের কাছে এই পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার গল্প শুনেছেন হয়তো অধিকতর মানুষ এই বিষয়ে আলাদা আলাদা কথা বলে থাকে। কিন্তু আপনি কি জানেন আজকালকার দিনেও আমাদের পৃথিবীতে এমন একটি শিবলিঙ্গ রয়েছে যেখানে দুনিয়ার প্রলয় সম্পর্কে অনেক রহস্য লুকিয়ে রয়েছে।


বন্ধুরা দেবাদী দেব মহাদেবের পূজা করার জন্য ভক্তরা জ্যোতির্লিঙ্গ হোক কিংবা অন্য কোন শিব মন্দির, সেখানে গিয়ে হাজির হয়ে যান মহাদেবের আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য। বন্ধুরা আজকে আপনাদের ঠিক এমনই দুটি শিব মন্দির সম্পর্কে বলতে চলেছি যেখানে শিবলিঙ্গের আকার দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর এই বাড়তে থাকা শিবলিঙ্গের আকার মহাপ্রলয়ের দিকে নির্দেশ করে।


গুজরাটের মুরুদেশস্বর শিব মন্দির প্রলয়ের সংকেত দেয়। এমনটা বলা হয় এখানে বেড়ে চলা শিবলিঙ্গের আকার কলিযুগে বাড়তে চলা পাপের প্রতীক। স্থানীয় মানুষরা বলে থাকেন যেই দিন এই শিবলিঙ্গের উচ্চতা সাড়ে আট ফুট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে মন্দিরের ছাদ ছুয়ে নেবে সেই দিন কলিযুগ নিজের অন্তিম সীমায় পৌঁছে যাবে। এই প্রসঙ্গে বন্ধুরা আপনাদেরকে বলে দেই যে, শিবলিঙ্গের আকার চালের একটি ছোট্ট দানার মত ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। যেই কারণেই এই শিবলিঙ্গ টিকে মন্দিরের ছাদ ছুঁতে লাখ লাখ বছর লেগে যাবে। এই মন্দিরটির আরেকটি বিশেষ দিক হল এখানে আপনা থেকেই প্রাকৃতিক মাধ্যমে শিবলিঙ্গের উপরে জলের ধারা পড়তে থাকে। শীতকাল হোক কিংবা গরমকাল এই জলের ধারা কখনোই থেমে থাকে না। এই মন্দিরটি ভবিষ্যতে কলিযুগ তথা পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার একটি প্রতীক বলে গণ্য। কিন্তু বন্ধুরা এই সম্পর্কে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ আজও মেলেনি।


বন্ধুরা এরপর দ্বিতীয় যে মন্দিরটি সম্পর্কে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব তা হল - উত্তরাখণ্ডের পৃথ্বীরাপুর জেলায় অবস্থিত পাতাল ভুবনেশ্বর গুহা মন্দির। এই মন্দির সম্পর্কে পুরাণেও বর্ণনা করা হয়েছে। মান্যতা অনুসারে এই গুহার ভিতরে দুনিয়া শেষ হওয়ার রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। এই মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা খুবই সরু। এমনটা মনে করা হয় এই গুহার খোজ সূর্যবংশের রাজা ও ক্রেতা যুগে অযোধ্যায় শাসন করা নরেশ ঋতুপর্ণা করেছিল। সেই সময় তারা এখানে নাগরাগ অধিশেষের দেখা পেয়েছিলেন। অধিশেষ ঋতুপর্ণা কে গুহার ভেতরে নিয়ে যান। যেখানে তিনি দেবী দেবতাদের সঙ্গে ভগবান শিবের দেখা পান। 


পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী কলিযুগে জগতগুরু আদি শংকরাচার্য এই গুহার খোঁজ করেছিলেন। তখন তিনি এই গুহায় তামার শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। শুধু তাই নয় এই গুহায় ব্রহ্মা-বিষ্ণু মহেশ্বর এই তিনজনারই মূর্তি রয়েছে। এখানে চারটি যুগ অর্থাৎ সত্যযুগ, ত্রেতা যুগ, দ্বাপর যুগ ও কলি যুগের প্রতীক হিসেবে চারটি পাথর স্থাপিত রয়েছে। এই চারটি পাথরের মধ্যে কলিযুগের পাথরটি উঁচু এবং অন্যান্য তিনটি যুগের প্রতীক পাথর একই উচ্চতার। এমনটা মান্যতা রয়েছে যেইদিন কলি যুগের প্রতীক পাথরটির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে গুহার ছাদের সঙ্গে মিশে যাবে সেই দিন কলিযুগ ধ্বংস হয়ে যাবে। বন্ধুরা এখন পর্যন্ত কলিযুগের মাত্র 5000 সাল পর্যন্তই হয়েছে। যে কারণেই এই কলিযুগ ধ্বংস হতে এখনো অনেক সময় বাকি আছে। 


তো চলুন বন্ধুরা এখন আপনাদের শিবলিঙ্গের কিছু গুরুত্বপূর্ণ রহস্য সম্পর্কে জানানো যাক।


প্রথমত, ব্রহ্মাণ্ডের প্রতীক:-পুরো ব্রহ্মাণ্ড সেইরকমই যেমন শিবলিঙ্গের রূপ। শিব লিঙ্গের রূপ ব্রহ্মাণ্ডে ঘুরতে চলা সেই পিন্ডের মত যেখানে জীবন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বায়ু পুরাণে উল্লেখ রয়েছে প্রলয় কালে সম্পূর্ণ সৃষ্টি যেখানে লীন হয়ে যায় ও পুনঃ সৃষ্টিকালে যার মাধ্যমে সৃষ্টি প্রকট হয় তাকে শিবলিঙ্গ বলা হয়। এইভাবে বিশ্বের সম্পূর্ণই শিবলিঙ্গের প্রতীক।


দ্বিতীয়ত, শিবের আদি ও অনাদি রূপ:- ভগবান শংকর কিংবা মহাদেব শিবলিঙ্গেরই ধ্যান করে থাকে। শূন্য, আকাশ, অনন্ত, ব্রহ্মাণ্ড ও নিরাকার পরম পুরুষের প্রতীক হওয়ার কারণে একে শিব লিঙ্গ বলা হয়েছে। আবার অন্যদিকে শিব পুরানে মহাদেব কে এই দুনিয়ার উৎপত্তির কারণ বলা হয়েছে। এই পুরান অনুযায়ী ভগবান শিব একমাত্র প্রাণপুরুষ ও নিরাকার ব্রহ্মা।


তৃতীয়ত, নিরাকার জ্যোতির প্রতীক:- পুরানে শিবলিঙ্গকে অনেকগুলি নামে সম্বোধন করা হয়েছে। যেমন - প্রকাশ স্তম্ভ লিঙ্গ, অগ্নিস্তম্ব লিঙ্গ, উর্যা স্তম্ভ লিঙ্গ, ব্রহ্মাণ্ডীয় স্তম্ভ লিঙ্গ। বেদ অনুসারে জ্যোতির্লিঙ্গের 12 টি খন্ড রয়েছে। শিব পুরাণ অনুযায়ী - ব্রহ্ম, মায়া, জীব, মন, বুদ্ধি, চিত্ত, অহংকার, আকাশ, বায়ু, অগ্নি,জল ও পৃথিবী কে জ্যোতির্লিঙ্গ কিংবা জ্যোতির প্রতীক বলা হয়েছে। 


চতুর্থত, শিবলিঙ্গের বিন্যাস :- বন্ধুরা শিবলিঙ্গ তিনটি অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশ যেটা নিচে ভূমির দিকে গোল করে থাকে, এরপর মধ্যভাগ যেখানে একটি দিক কিছুটা ছড়ানো থাকে এবং সবশেষে উপরিভাগ। 


তো বন্ধুরা আপনারা জানতে পারলেন ভারতের শিব লিঙ্গের সঙ্গে যুক্ত কিছু অজানা রহস্য। আশাকরি বন্ধুরা, লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। যদি লেখাটি পড়ে সমৃদ্ধ হয়ে থাকেন তাহলে আপনজনের উদ্দেশ্য অবশ্যই শেয়ার করবেন। আজ এখানেই শেষ করলাম। নমস্কার, ধন্যবাদ । ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।


আরো পড়ুন:- মৃত্যুর সময় আত্মা শরীর থেকে কিভাবে বাইরে বের হয়? CLICK HERE


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা