Breaking

Search Content

Follow Us

রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২২

এই ১১ টি কর্ম নির্ণয় করে আমাদের পরবর্তী জন্ম - গরুড় পুরাণ অনুসারে

 


নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু। 


বন্ধুরা আপনারা তো জানেনই যেই মানুষ যেমন কর্ম করে তাকে ঠিক সেরকমই ফল ভোগ করতে হয়। কিন্তু, আপনি কি জানেন আমাদের মানুষের দ্বারা করা কিছু কর্ম এমনও হয় যেগুলি মরার পরেও আমাদের পিছু ছাড়ে না। আর এই কর্মগুলিই অনেক সময় আমাদের পরবর্তী জন্ম নির্ধারণ করে। আর এই কর্মগুলো সম্পর্কে শুধুমাত্র গরুড় পুরাণেই বিস্তারের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। আর আজকে আপনাদেরকে এই পুরাণ থেকেই নেওয়া 11টি এমন কর্ম সম্পর্কে জানাবো, যার উপর ভিত্তি করে মানুষ বিভিন্ন পাখি কিংবা পশুর যোনি প্রাপ্ত হয়।


তো চলুন বন্ধুরা জেনে নেওয়া যাক এই 11 টি কর্ম সম্পর্কে। বন্ধুরা এই সংসারে কারোর সঙ্গে মিত্রতা বা বন্ধুত্বের সম্পর্ক খুবই অদ্ভুত। বলা হয় একজন সত্যিকারের বন্ধু আপৎকালীন সময়ে প্রয়োজনে নিজের জীবন পর্যন্ত দিতে পারে। কিন্তু, বন্ধুরা তখন কি হবে? যখন কেউ তার সত্যিকারের বন্ধুকেই ঠকাতে থাকে ! গরুড় পুরাণে এই সকল ব্যক্তিদের সম্পর্কে বিস্তারের সঙ্গে বলা হয়েছে - যখন কোনো ব্যক্তি নিজের সত্যিকারের বন্ধুর সঙ্গে ছলনা করে থাকে, তখন মরার পরে সেই ব্যক্তিকে নরকে তো অবশ্যই যেতে হবে। এরই সাথে তাকে পরবর্তীতে পাহাড়ে থাকা শকুন হিসাবে জন্ম নিতে হয়। যাকে পচা-গলা মাংস খেয়ে নিজের জীবনযাপন করতে হয়।


বন্ধুরা এই সংসারে কিছু এমন মানুষ রয়েছেন যারা শুধু নিজের নয় বরং অন্যান্য ধর্মেরও আদর করে থাকেন। এরই সাথে অন্যদিকে কিছু এমন মানুষও রয়েছেন যারা নিজের ধর্মকে তো একদমই ভালোবাসেন না, তার সাথে অন্য ধর্মকেও সম্মান করেন না। এই ধরনের মানুষেরা সর্বদাই পুরাণে লেখা কথা গুলিকে অবিশ্বাস করে নিজের অল্প বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে থাকেন। এই ধরনের মানুষ সম্পর্কে গরুড় পুরাণে বলা হয়েছে - মরার পরে এরা নরকে তো যাবেই তারই সাথে এদের পরবর্তী জন্ম কুকুরের যোনিতে হবে। যার ফলে তারা কুকুর রূপে যতই ডাকুক না কেন, না তো কেউ তাদের কথা শুনবে, আর না কেউ তাদের ডাকে কোনরকম প্রতিক্রিয়া দেবে। 



বন্ধুরা এই সংসারে যে কোনো মানুষের জীবন বিনা পরিবার-পরিজন ছাড়া পূর্ণ নয়। আর এই পরিবারের মধ্যে সবথেকে শ্রেষ্ঠ হচ্ছে মাতা-পিতা। তারা হলেন পরম শিক্ষাগুরু। আর কোনো মানুষকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দেওয়ার কাজ কেবল গরুই করতে পারেন। কিন্তু বন্ধুরা, যেই মানুষ নিজের গুরুর অবমাননা করে থাকেন, তাদের জীবনে কখনো উন্নতি সম্ভব নয়। শুধু তাই নয় সেই সমস্ত মানুষের জীবাত্মা মৃত্যুর পরে আবার যখন পুনরায় মানুষ্য যোনি প্রাপ্ত হয়ে গর্ভলাভ করে, তখন তারা যতবারই গর্ভ থেকে বাহির হওয়ার চেষ্টা করে ঠিক ততবারই তাদের মৃত্যু হয়। এই সমস্ত জীবাত্মা কে একাধিকবার গর্ভ-মৃত্যুর মত কঠিন শাস্তি পেতে হয়।


বন্ধুরা আপনারা তো জানেনই আমাদের সনাতন ধর্মে ব্রাহ্মণদের কতটা অধিক মাহাত্ম্য রয়েছে। আর এই সংসারের প্রত্যেকটি ব্রাহ্মণের কর্তব্য যেকোনো মানুষ অথবা শিষ্য যেমনই হোক না কেন, সে যতই তার ইচ্ছামত দক্ষিণা প্রদান করতে অসমর্থ্য হোক না কেন; কিন্তু ব্রাহ্মণ দেবের কর্তব্য সে তার জ্ঞানের মাধ্যমে সেই মানুষটিরও কল্যাণ করুক। কিন্তু বন্ধুরা যদি কোন ব্রাহ্মণ এমনটা না করে তাহলে এই জন্মে তার তো খ্যাতি নষ্ট হবেই ; তারই সঙ্গে তারপর পরবর্তী জন্ম ষাড়ের যোনিতে হবে এবং তাকে আজীবন নিজের কৃত্যের উপর পশ্চাতাপ করতে হবে।


বন্ধুরা এই সংসারে অনেক এমন মানুষ আছে যারা নিজের কাজের মাধ্যমে অনেক মানুষের হৃদয় জয় করে নেন। আবার অন্যদিকে কিছু ধূর্ত-ঠকবাজ মানুষেরাও রয়েছে, যারা নিজের চালাকির মাধ্যমে লোককে সর্বদা ঠকিয়ে যান। কিন্তু এই ঠকবাজ মানুষদের এটা জানা নেই যে, এই পুরো সংসার এভাবেই চলছে না, এই সংসারের মালিক উপরওয়ালা। তিনি সেই সব ঠকবাজ মানুষদের সকল কর্ম লক্ষ্য করছেন। বন্ধুরা এই ধরনের মানুষদের সম্পর্কে গরুড় পুরাণে বলা হয়েছে এই মানুষরা তাদের পরবর্তী জন্মে পেঁচা রূপে জন্ম নেয় এবং সারা জীবন পশ্চাতাপ করেন।


বন্ধুরা যেই প্রকার ভাবে সকল সন্তানের কর্তব্য নিজের মাতা পিতার সেবা করে তারই সাথে নিজের দাম্পত্য জীবন নির্বাহ করা। ঠিক একই প্রকার ভাবে একজন আদর্শ গৃহবধূরও একই কর্তব্য। কিন্তু, এরই বিপরীত যদি কোনো স্ত্রী নিজের শশুর-শাশুড়ির সেবা না করে এবং তাদের প্রতি অপশব্দ ব্যবহার করে এবং যখন খুশি তখনই গৃহে অশান্তি সৃষ্টি করে, তাহলে পরবর্তী জন্মে তাদের রক্ত পান করা জোকের রূপে জন্ম নিতে হয়। 


বন্ধুরা আমাদের সনাতন ধর্মে অন্নদানকে সবথেকে বড় দান বলে মনে করা হয়। যে সকল মানুষেরা অন্নদান করে তারা না শুধু মাত্র জীবিত থাকাকালীন অবস্থায় বরং তারই সাথে মৃত্যুর পরেও স্বর্গলোকে সম্মান প্রাপ্ত হয়। এর কারণেই মানুষ প্রতিভোজের আয়োজন করে। কিন্তু, এরই মাঝে কিছু মানুষ এরকমও রয়েছে যারা চাল অথবা খাবার-দাবাদের অন্য কোন জিনিসের চুরি করে কিংবা ভেজাল মিশিয়ে থাকেন। এই সকল মানুষের ক্ষেত্রে গরুড় পুরাণ বলে যে, মরার পরে এই সকল মানুষের পরবর্তী জন্ম ছুঁচো কিংবা ইঁদুর রূপে হবে। যার ফলে তারা সেই জন্ম প্রাপ্তির পর খাদ্যশস্যের এক একটি দানার জন্য কষ্ট ভোগ করবে।


বন্ধুরা আপনারা তো জানেনই মানুষের কন্ঠে মা সরস্বতীর বাস হয়। এই কারণে শাস্ত্রে বলা হয়েছে মানুষদের কখনো এমন শব্দ উচ্চারণ করা উচিত নয় যা অন্যের ভাবনার হানি ঘটাবে। কিন্তু বন্ধুরা তাও বহু মানুষেরা অপশব্দ ব্যবহার করতে পিছু হটেনা এবং ছোট ছোট কথায় অন্যান্য মানুষদের গালিগালাজ করতে থাকে। এই ধরনের মানুষেরা তখন শিক্ষা পায় যখন তাদের পরবর্তী জন্ম ছাগল রূপে হয় এবং তারপরে কোনো কসাইয়ের দরুন হত্যা হয়।


বন্ধুরা এই সংসারে কিছু এমন পুরুষও রয়েছে যারা স্ত্রীকে খুবই সম্মানের দৃষ্টিতে দেখেন। কিন্তু, অন্যদিকে কিছু মানুষ এরকমও রয়েছে যারা সংসারের প্রত্যেক স্ত্রী কে খারাপ নজর দিয়ে দেখে। সেই সকল মানুষের মনে সবসময় কাম ভাবই চলতে থাকে। কিন্তু এই মূর্খরা এটা জানেনা যে তাদের কৃত্য সম্পর্কে কেউ জানুক আর না জানুক উপরআলা নিশ্চয়ই জানে। আর সময় আসলে উপরওয়ালা এর ন্যায় অবশ্যই করবে। এই সকল লোকের সম্পর্কে গরুড় পুরাণ বলে, মরার পর পরবর্তী জন্মে এই সকল মানুষের জীবাত্মাদের গাধার যোনিতে জন্ম নিতে হয়। আর তখন বন্ধুরা এই গাধারা কোন স্ত্রীর প্রতি বাসনা রূপ দৃষ্টিতে নজর দিতে পারেনা।


বন্ধুরা আপনি হয়তো নিশ্চয়ই দেখেছেন এই সংসারের বেশিরভাগ স্ত্রীই তাদের পতিব্রতা হয়। তাদের মনে নিজের পতি ছাড়া কখনো অন্য কোনো পর পুরুষের ভাবনা আসে না। কিন্তু, বন্ধুরা সংসারের সকল স্ত্রীরা সমান হয় না। অনেক স্ত্রীরা নিজের স্বভাব থেকেই ব্যভিচারিনী হয়। এই ধরনের মহিলাদের নিজেদের কীর্তির জন্য অনেকবার সমাজে অপমানিত হতে হয়। শুধু তাই নয় মৃত্যুর পরে পরবর্তী জন্মে এদের গিরগিটি অথবা চামচিকা রূপে জন্ম নিতে হয়।


বন্ধুরা আমাদের শাস্ত্রে বলা হয়েছে মানুষ্য জীবন আমরা অনেক কষ্ট করে পাই। কিন্তু, বন্ধুরা তাও আমাদের মধ্যেই কিছু অজ্ঞানী লোক শুধু শুধু সাংসারিক বিবাদে জড়িয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ি এবং পরমাত্মা দ্বারা দেওয়া এই অমূল্য সম্পদ বা মানুষ্য জীবন শেষ করে দেই নিজের হাতে। এই ধরনের মানুষদের ক্ষেত্রে গরুড় পুরাণ বলে, এদের পরবর্তী জন্ম সর্পরূপে নিতে হয় এবং ভুল সংশোধন করতে হয়। তাহলেই তারা পরমাত্মা দ্বারা দেওয়া এই মানুষ্য জীবনের মর্ম বুঝতে পারেন।


তো বন্ধুরা এই ছিল সেই যোনি গুলি - যেগুলো মানুষেরা কর্মের অনুসারে পেয়ে থাকেন। সবশেষে বন্ধুরা সকলের উদ্দেশ্যে বলবো নিজের কর্ম সবসময় সৎ রাখুন, সেক্ষেত্রে আপনার পরবর্তী জন্ম মঙ্গলময় হবে। আর আপনি যদি আপনার কর্ম খুবই ভালো করেন সেক্ষেত্রে ঈশ্বর আপনার প্রতি প্রসন্ন হবে এবং আপনাকে আর এই মৃত্যু লোকে আসতেই হবে না। নিজের কর্ম ঠিক করলে সেই ব্যক্তির সঙ্গে কখনোই খারাপ হয় না।


আশাকরি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। আজ এখানেই শেষ করলাম ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ।

ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো পড়ুন:- দূর্বা ঘাসের উপকারিতা | দূর্বা ঘাসে চমৎকারি প্রয়োগ - CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা