বিড়ালের রাস্তা কাটাকে অশুভ মনে করা হয় কেন? || বিড়াল কি সত্যিই অশুভের প্রতীক ?

নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু। 

বন্ধুরা ভারতে পুরাতন কাল থেকে অনেক বিশ্বাস চলে আসছে, যার মধ্যে একটা হল - যদি বিড়াল রাস্তা কাটে তো লোকেরা থেমে যায়। আর অপেক্ষা করতে থাকে, যতক্ষণ না কোন দ্বিতীয় ব্যক্তি আগে যায় ততক্ষণ কেউ আগে যায় না। কিন্তু আপনি এটাকি জানেন যে, বিড়ালের রাস্তা কাটা শুভ নাকি অশুভ। কিছু লোকেরা এটাই মানেন যে এটা কোন অশুভ লক্ষণের  চেয়ে কম কিছু না। আবার কিছু মানুষ এমনও আছে যারা এর কিছু বিশ্বাস করে না। আবার কিছু মানুষ এমনও আছে যাদের সামনে থেকে বিড়াল রাস্তা কেটে যায় তখন তারা থুতু ফেলে দেয়। আর কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তারপর রাস্তা পার করে। এর পেছনে কতটা সত্য আছে? বাস্তবে কি বিড়ালের রাস্তা কাটা অশুভ কোন লক্ষণ? আর এসব বিশ্বাসের পেছনের কারণ কি? আপনারা কি কখনো এসব ভেবেছেন? বন্ধুরা আজ আপনাদেরকে এসবের পেছনের কারণগুলি বলবো এবং কেন এই ধরনের বিশ্বাস সে সম্পর্কে জানাবো।

বন্ধুরা জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে রাহুকে অশুভ গ্রহ মানা হয়। আর এই রাহু আপনার জীবনে অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে এবং এর অশুভ প্রভাবে জীবনে অন্ধকার শক্তি ও মানসিক বুদ্ধি লোপ পায়। যার কারনে আমাদের জীবনে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। বিড়ালকে বৈদিক জ্যোতিষ শাস্ত্রে রাহুর বাহন বলা হয়েছে। রাহুর বাহন হওয়ার কারণে ভারতীয় জনমানুষে বিড়ালের রাস্তা কাটাকে অশুভ মানে করে। অর্থাৎ মানুষ বিড়ালকে নয় বিড়ালের উপর বসে থাকা রাহুর জন্য বিড়ালের রাস্তা কাটাকে অশুভ মনে করা হয়। আবার এটাও মানা হয় যে রাহু যেরকম দুর্ঘটনার কারণ ঐরকম বিড়ালেও রাস্তা কাটালে সমস্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় অথবা চলাচল করার সময় কিছু ভুল হয়। এই কারণে বিড়ালে রাস্তা কাটলে সচরাচর মানুষ এগিয়ে না গিয়ে থেমে যায়। 

বন্ধুরা এখন আপনাদেরকে জানাবো বিড়ালে রাস্তা কাটলে অশুভ হওয়ার আরেকটি কারণ সম্পর্কে। ধার্মিক গ্রন্থ অনুসারে ধনদেবী লক্ষ্মীর বোন অলক্ষী দরিদ্রতার দেবী বলে মনে করা হয়ে থাকে। অলক্ষী সবসময় জীবনে গরিবানা ও সমস্যা নিয়ে আসে। শুধু তাই নয় অলক্ষী যাতে গমন করেন সেই প্রাণীটি হলো - বিড়াল, অর্থাৎ অলক্ষীর বাহনও বিড়াল। এইভাবেই বিড়াল ভারতীয় জনমানুষের মধ্যে অশুভতার প্রতীক বলে মনে করা হয়। কিন্তু বন্ধুরা এই প্রসঙ্গে আপনাদেরকে বলে দেই দীপাবলীর দিন যদি বিড়াল বাড়িতে আসে তাহলে সেটাকে শুভ বলে মনে করা হয়। এর পেছনের কারণটি হলো দীপাবলির দিন বিড়াল যদি বাড়িতে আসে তাহলে এটা মনে করা হয় যে, অলক্ষী কে আপনার গৃহ থেকে সেই বিড়ালটি নিয়ে যেতে এসেছে।

বন্ধুরা এমনিতে তো বিড়ালের রাস্তা কাটা অশুভ বলে মনে করা হয় সেখানেই অন্যদিকে দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে মান্ডিয়া জেলা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি ছোট্ট গ্ৰামে বিড়াল কে শুভ বলে মানা হয় এবং সেখানে বিড়ালের মন্দিরও রয়েছে। শুধু তাই নয় মিশরেও বিড়ালকে দেবীরূপে পূজা করা হয়। 

ভারতের সাথে সাথে পুরো দুনিয়া জুড়ে বিড়ালকে নিয়ে এক এক ধরনের আলাদা আলাদা মান্যতা রয়েছে। তো বন্ধুরা চলুন এমত অবস্থায় আপনাদের সঙ্গে বিড়ালের সঙ্গে যুক্ত কিছু শুভ এবং অশুভ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাক। বন্ধুরা, এমনিতে তো আমরা সকলেই জানি কুকুর কান্না করলে তা অত্যন্ত অসুখ বলে গণ্য হয়। বন্ধুরা ঠিক সেরকমই বিড়ালের কান্না কেও অশুভ বলে মনে করা হয়। বলা হয়ে থাকে বিড়াল যদি বারবার কান্না করতে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রেতে খুব জলদিই খারাপ কিছু ঘটতে পারে। শুধু তাই নয় যদি বিড়ালের মুখে কোন সময় মাংসের টুকরোর দেখা মেলে তাহলে তা শুভ বলে গণ্য। এর ফলে আপনার সকল থেমে থাকা কাজ খুবই তাড়াতাড়ি পূর্ণ হয়ে যেতে থাকে।

বন্ধুরা বিড়ালকে নিয়ে আবার এমনটাও মান্যতা রয়েছে যদি কোন গৃহে বিড়ালের লড়াই করতে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে বুঝে নেওয়া উচিত সেই ঘরে শীঘ্রই জুর ঝামেলা আসতে চলেছে। আর এর সাথে আপনার হয়ে যাওয়া কাজ গুলো ও দেরিতে হতে পারে। কিন্তু বন্ধুরা অন্যদিকে যদি বিড়াল তার বাচ্চাদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে রাস্তায় যেতে দেখা যায় তাহলে তা একটি শুভ সংকেত বহন করে। মান্যতা অনুসারে খুব জলদি আপনার গৃহে কোন আত্মীয়-স্বজনেরা আসতে পারে এবং তারা কোন শুভ খবর সঙ্গে করে নিয়ে আসবেন। 

তো বন্ধুরা আজকের এই লেখাটির মাধ্যমে আপনারা জানতে পারলেন বিড়ালের রাস্তা কাটার শুভ নাকি অশুভ - এই বিষয়টি সম্পর্কে। যদি লেখাটি পড়ে আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আজ এখানে শেষ করলাম। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।

আরো পড়ুন:- নতুন বছরের শুরুতে মানিব্যাগে রাখুন এই সামান্য জিনিস 🔥🔥🔥 সারাবছর আর্থিক সমৃদ্ধি হবে আপনার  CLICK HERE