নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
আজকে আপনাদের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হলো - খাবার খাওয়ার সময় আমাদের সর্বদা কোন দিকে মুখ করে বসে খাওয়া উচিত এবং মাসের কোন কোন দিন কোন কোন খাবার খাওয়া আমাদের শরীরের পক্ষে একেবারেই উচিত নয়? এছাড়াও খাবার খাওয়ার সময় আমাদের কোন বিষয়ের উপর সচেতনতা অবলম্বন করা প্রয়োজন? এই সকল কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করব আজকে আপনাদের সঙ্গে। কারণ এই সমস্ত বিষয়ের উপর অনেকটাই নির্ভর করে আপনার পরিবারের সুখ এবং শান্তি সর্বদা বজায় থাকবে কিনা, মা লক্ষ্মী আপনার গৃহে স্থায়ী ভাবে অবস্থান করবেন কিনা এবং পরিবারের সদস্যদের কোনো প্রকার অসুখ-বিসুখ হচ্ছে কিনা - এই সমস্ত কিছুই কিন্তু এই বিষয়ের উপর অনেকটাই নির্ভর করে। তাই বন্ধুরা যখনই আপনি আহার করবেন এই বিষয়ে অবশ্যই সচেতনতা অবলম্বন করুন। আশাকরি এই লেখাটি থেকে আপনি সনাতন ধর্মের অনেক কিছুই জানতে পারবেন এবং সেগুলি নিজের জীবনে প্রয়োগ করতে সক্ষম হবেন।
বন্ধুরা ভারতীয় সনাতন ধর্ম অনুযায়ী এক এক দিকে মুখ করে খেতে বসার এক এক রকম ফল রয়েছে। আমাদের জীবন ঠিক কতটা ভাল কাটবে তার কিছুটা হলেও নির্ভর করে আমাদের এই দৈনন্দিন চলাফেরার উপর। আমরা দৈনন্দিন চলাফেরার মধ্যে না জেনে এমন কিছু ফেলি যা অনেকাংশে আমাদের জীবনকে বিব্রত করে ফেলে। অনেক চেষ্টার পরেও এর কারণ আমরা একেবারেই বুঝতে সক্ষম হই না। বিশেষ করে খেতে বসার সময় খেয়াল রাখতে হবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যার মধ্যে প্রথমে যে বিষয়টি পড়ে তা হল - কোন দিকে মুখ করে আপনি খেতে বসছেন।
বন্ধুরা প্রথমেই বলি অনেকেই কিন্তু রয়েছেন যারা পূর্ব দিকে মুখ করে খান। এই দিকে মুখ করে খাওয়া অত্যন্ত ভালো। যদি পূর্ব দিকে মুখ করে কেউ খেতে বসে তাহলে শাস্ত্র অনুযায়ী তাদের আয়ু বৃদ্ধি পায়। তাই শাস্ত্র অনুযায়ী যদি আপনি নিজের আয়ু বৃদ্ধি করতে চান তাহলে সর্বদা পূর্ব দিকে মুখ করে খেতে বসতে হবে।
দ্বিতীয় যে বিষয়টির কথা বলব তা হল অনেকেরই কিন্তু পূর্ব দিকে মুখ করে খেতে বসা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। এই কারণে অনেকে পশ্চিম দিকে মুখ করে খেতে বসেন। যদি আপনি পশ্চিম দিকে মুখ করে খেতে বসেন তাহলেও সনাতন ধর্ম অনুযায়ী তা অত্যন্ত শুভ। পশ্চিম দিকে মুখ করে খেতে বসলে মা লক্ষ্মী এবং ধনদেবতা কুবের অত্যন্ত প্রসন্ন হন। শাস্ত্র অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিম দিকে মুখ করে খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করেন তাহলে তিনি আর্থিক অভাব এবং দারিদ্রতার বন্ধন থেকে ধীরে ধীরে মুক্ত হন। তার ধন সম্পত্তি দিনে দিনে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়।
বন্ধুরা এরপর আসবো উত্তর দিকটি নিয়ে। বন্ধুরা যে ব্যক্তি উত্তর দিকে মুখ করে সর্বদা অন্ন গ্ৰহণ করে থাকেন সেই ব্যক্তি নিজের আদর্শে অটল থাকতে পছন্দ করেন এবং সেই ব্যক্তি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে জীবন কাটাতে চান। তাই নিজের আদর্শে সর্বদা যদি অটল থাকতে চান সে ক্ষেত্রে উত্তর দিকে মুখ করে খেতে বসতে হবে। কিন্তু বন্ধুরা এই প্রসঙ্গে বলে রাখি শাস্ত্র অনুযায়ী এইদিকে মুখ করে খেতে বসার কিছু অসুবিধা রয়েছে। তবে সেই অসুবিধা আবার সকলের ক্ষেত্রে নয়। যাদের সন্তান রয়েছে অর্থাৎ আপনার যদি সন্তান থেকে থাকে অর্থাৎ সন্তানের মা কিংবা বাবার উত্তর দিকে মুখ করে খেতে বসা অনুচিত। এতে সন্তানের অমঙ্গল হয়।
বন্ধুরা সর্বশেষ আসবো দক্ষিণ দিকের বিষয়ে। যিনি অত্যন্ত যশ ও সম্মানের অভিলাসী হন তিনি অবশ্যই দক্ষিণ দিকে মুখ করে খাবার খেতে বসবেন। তবে এক্ষেত্রেও শাস্ত্রের কিছু বিধি নিষেধ রয়েছে। শাস্ত্রে বলা হয়েছে মা এবং বাবা বেঁচে থাকাকালীন অবস্থায় দক্ষিণ দিকে মুখ করে কখনোই খেতে বসতে নেই।
বন্ধুরা শাস্ত্র অনুযায়ী এই বিষয়েও উল্লেখ রয়েছে যে আমরা যদি প্রতিদিনের নিয়ম মেনে সঠিক সময়ে স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করি তাহলে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাবো। এই সকল নিয়মের মধ্যে একটি রয়েছে যেমন - প্রতিপদ তিথিতে কখনোই চাল কুমড়ো খেতে নেই, অন্যথায় অর্থহানী হয়। এছাড়াও দ্বিতীয়তে পটল খেলে শত্রু বৃদ্ধি পায়। চতুর্দিতে কখনোই মূলো খেতে নেই, এতে অর্থ নাশ হয়। পঞ্চমীতে কখনোই বেল খেতে নেই, এতে কলঙ্ক বাড়ে। ষষ্ঠীতে নিম পাতা খেলে সন্তান ভাগ্য খারাপ হয়। সপ্তমীতে তাল খেলে স্বাস্থ্য হানি ঘটে। অষ্টমীতে নারকেল খেলে মূর্খতা প্রাপ্ত হয়। দশমীতে কখনোই কলমি শাক খেতে নেই । একাদশীতে সীম খাওয়া উচিত নয় এবং শাস্ত্র অনুযায়ী অতিরিক্ত ভোজন সর্বদাই নিষিদ্ধ। এছাড়াও বন্ধুরা চলতে চলতে খাদ্য গ্ৰহন কখনোই করা উচিত নয়। শুধু তাই নয় খুব সকালে বা সন্ধা বেলাতে খাওয়া কখনোই উচিত নয়। বন্ধুরা সবশেষে খাবার পাত্রে একটু উচ্ছিষ্ট রেখে তবেই খাবার পাত্র ত্যাগ করতে হয়। কিন্তু জল,দুধ,মধু,ক্ষীর নিজের টা নিজেকেই গ্ৰহন করতে হয়। কখনোই তা উচ্ছিষ্ট রাখতে নেই।
তো বন্ধুরা আশাকরি আজকের লেখার মাধ্যমে আপনারা কোন দিকে মুখ করে খাবার খেলে কি হয় সেই সম্পর্কে জানতে সক্ষম হয়েছেন। যদি লেখাটি পড়ে আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আজ এখানে শেষ করলাম।
নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
আরো পড়ুন:- বিড়ালের রাস্তা কাটাকে অশুভ মনে করা হয় কেন? || বিড়াল কি সত্যিই অশুভের প্রতীক ? CLICK HERE
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা