Breaking

Search Content

Follow Us

মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৩

সাত্ত্বিক জীবন গ্রহণ করা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ || এই মানুষগুলি সাত্ত্বিক জীবন গ্রহণ করে বর্তমানে স্বাস্থ্যকর ও মানসিক দিক থেকে ফিট !



নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। বন্ধুরা আজকে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব - সাত্ত্বিক জীবন গ্রহণ করা কেন গুরুত্বপূর্ণ? সত্ত্বিক জীবন গ্রহণ করে বর্তমানে স্বাস্থ্যকর ও মানসিক দিক থেকে ফিট জীবন যাপন করছেন এমন ব্যক্তিদের উদাহরণ সম্পর্কে।


বন্ধুরা সময়ের সাথে সবই বদলে গেছে। বর্তমান টেকনোলজির সাথে রান্নাবান্না করা খুবই সহজ হয়ে গেছে। আগে কোনো প্রকার মসলা তৈরি করা কত কষ্টকর ছিল, কিন্তু এখন মিনিটের মধ্যে মিক্সার গ্রাইন্ডারে মসলা তৈরি হয়ে যাচ্ছে। আটা মাখা হোক কিংবা রুটি বানানো হোক সব কাজের জন্য এখন মেশিন তৈরি হয়ে গিয়েছে। যেই ভাত তৈরি হতে প্রায় ঘন্টাখানেক সময় লেগে যায়, সেখানে প্রেসার কুকার শুধুমাত্র কিছু মুহূর্তের মধ্যেই সেই ভাত তৈরি করে ফেলে। এরকম অনেক কাজ রয়েছে যেগুলো করার জন্য মানুষকে অনেক কষ্ট করতে হতো। সেগুলি এখন মেশিন থাকার জন্য খুবই সহজ হয়ে উঠেছে। এই সকল মেশিনের জন্য জীবন ধারণের প্রক্রিয়া সাহজ তো হয়েছে কিন্তু, এইসবের জন্য আরো অন্যান্য সমস্যা জেগে উঠেছে। মেশিনের ফলে খাবারের শুদ্ধতা কমে গেছে। আবার অন্যদিকে মেশিন আসার জন্য মানুষ কষ্ট করে সেই সমস্ত জিনিস গুলি তৈরি করতে ভুলে গেছে। কোথাও এর ফলে মানুষ "কষ্ট করে তৈরি করতে হবে" এই জিনিসটাও ভুলে গেছে। এই সবকিছুর পরিনাম শেষমেষে এই দাঁড়ায় যে একাধিক রকমের রোগ ব্যাধি মানুষকে ঘিরে ধরে। প্যাকেটজাত বিভিন্ন খাবার এবং বাইরের তেলেভাজা খাবার এই রোগ ব্যাধি কে ডেকে আনতে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। এখন যখন মানুষ রোগ ব্যাধির প্রকোপে বিপুল পরিমাণে পড়তে থাকছে, তখন মানুষ আবার পুরনো জীবনধারণ গ্রহণ করতে চাইছে। আর করোনার পরে মানুষ তো আরো জাগ্রুক হয়ে গেছে। করোনা মানুষকে সেই সব কিছু করা শিখিয়েছে যেগুলি জন্য আমরা বলতাম - আমাদের কাছে ওটা করার সময় নেই। প্রত্যেকটি মানুষকে করোনা অর্থের থেকে অধিক শরীরের সুস্বাস্থ্য কে গুরুত্ব দিতে বাধ্য করে। করোনা প্রত্যেকটি মানুষকে এটা বলে দেয় যে, আপনার কাছে যতই টাকা পয়সা থাকুক না কেন সেগুলো কোন কাজেই লাগবে না যদি আপনি আপনার স্বাস্থ্যের প্রতি নজর না দেন।


বন্ধুরা এই সমস্ত কিছু বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে বহু সংখ্যক মানুষ সাত্ত্বিক জীবন ধীরে ধীরে গ্রহণ করতে শুরু করেছেন। বন্ধুরা এই সাত্ত্বিক জীবন গ্রহণ করলে যে সকল চমৎকারী লাভগুলি হয় সেগুলি জেনে নেওয়া যাক। বন্ধুরা আমাদের আশেপাশে এরকম অনেক লোক দেখা যাবে যারা সাত্ত্বিক জীবন গ্রহণ করে নিজেকে অনেক বড় বড় রোগ থেকে বাঁচিয়েছেন, আর নিজেকে শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে ফিট করেছেন। এমনই একটি গল্প রয়েছে বেঙ্গালুরুতে বসবাসকারী আরশীর। যে প্রেগনেন্সির পরে - পোস্টমর্টেম স্ট্রেস, মাইগ্রেন আর অ্যাকনির সমস্যায় ভুগছিলেন। এই রোগ গুলির কারণে সে তার গর্ভ সন্তানের প্রতিও যত্ন নিতে পারছিল না। সে তার নিজের গর্ভ সন্তানের সঙ্গে কানেকশন ফিল করতে পারছিল না। শুধু তাই নয় সে তার মা হওয়ার অনুভূতিগুলোকেও উপভোগ করতে পারছিল না। সে প্রত্যেক মুহূর্তে নিজের রোগের কথা ভাবতে থাকতো। তখন আরশী সাত্ত্বিক লাইফ স্টাইল গ্রহণ করলো, তখন তার জীবনে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসতে শুরু করলো। সাত্ত্বিক খাবার এবং ব্যায়ামকে সে তার ডেইলি রুটিনে সামিল করতে লাগল। আর ধীরে ধীরে সে নিজেকে সকল রকমের রোগ ব্যাধি থেকে বের করে আনলো। আরশী ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করতে শুরু করে এবং শান্তবাদ বা সাধুবাদ ও অ্যানিমা থেরাপীর দ্বারা নিজেকে ডিটক্সিফাই করে। আরশী জানালেন যখন সে রোগ থেকে মুক্তি পায় তখন সে আপনা থেকেই হাসিখুশি থাকতে লাগে। আর নিজের সন্তানের ওপর ভালো করে ফোকাস করতে পারে। সাত্ত্বিক লাইফ স্টাইল তার পুরো জীবনকে বদলে দেয়। তিনি মনে করেন সাত্ত্বিক জীবন গ্রহণ করে আপনি সকল প্রকার রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে পারেন।


এরকমই আরেকটি গল্প রয়েছে অনন্যা সিং এর। সে নাগপুরের একজন বাসিন্দা এবং তার বয়স ২১ বছর। অনন্যার খুব বাজে ভাবে "হেয়ার ফল" (চুল পড়া) হচ্ছিল। তার মুখেও প্রচুর পরিমাণে ব্রণ ছিল যেই কারণে সে তার কনফিডেন্ট দিন দিন হারিয়ে ফেলছিল। তার দীর্ঘ এক বছর পর্যন্ত পিরিয়ড হয়নি। যার ফলে সে ডিপ্রেশনের শিকার হয়। অনন্যা বলেন, তিনি যখন ডাক্তারের কাছে যান তখন ডাক্তার তাকে একাধিক ঔষধ দিয়ে দেন। কিন্তু তার সুবিধা ততক্ষণ পর্যন্তই হতো যতক্ষন সে ঔষধ গ্রহণ করত। কিন্তু ঔষধ না খেলেই তার সমস্যা বাড়তো। তখন অনন্যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সাত্ত্বিক লাইফস্টাইল সম্পর্কে জানতে পারলেন এবং সাত্ত্বিক লাইফ স্টাইল কে নিজের জীবনের অংশ করলেন। আর এক মাসের মধ্যেই অনন্যা পরিবর্তনটি বুঝতে পারে। যেই পিরিয়ড আগে এক বছর পর্যন্ত আসেনি সেটি তখন প্রতিমাসেই রেগুলার হয়ে গেছে। তার মুখে ব্রণের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমতে থাকে। শুধু তাই নয় তার চুল পড়াও কমে যায়। ধীরে ধীরে অনন্যা ডিপ্রেশন থেকে বাইরে বেরিয়ে আসতে থাকে। আজকে সে খুবই খুশি আর মানুষদের সাত্ত্বিক জীবন গ্রহণ করার জন্য সে উৎসাহিত করে।


বন্ধুরা সাত্ত্বিক জীবন গ্রহণ করা এরকম আরেকজনের গল্প আমরা আপনাদেরকে শোনাচ্ছি, যে ব্যাঙ্গালুরুতে থাকে। তার নাম হলো - নেয়না গোখলে। নেয়না গোখলের বয়স ২৩ বছর। আর যখন সে চার পাঁচ বছরের ছিল তখন থেকেই সে ওজন বাড়ার সমস্যায় ভুগছিল। শুধু তাই নয় যখন সে ছোট ছিল তখন মানুষ তাকে বেশি ওজন হওয়ার কারণে রাগাতো। শুধু তাই নয় কখনো কখনো তার শিক্ষকও মজা করে তাকে রাগাতো। যার ফলে তার মনে সুইসাইড করার মতো খেয়াল আসে। যখন সে ২২ বছরের ছিল তখন পর্যন্ত তার ওজন দিন দিন বেড়েই চলেছিল। এত ওজন বাড়ার ফলে তার ওজন তখন গিয়ে দাঁড়ায় ৮৮ কেজি। কিন্তু বন্ধুরা আপনারা কি বিশ্বাস করবেন এর পরবর্তী চার মাসে সে ২৪ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলে। আর নিজেকে ডিপ্রেশন থেকেও বাইরে বার করে। এই সবকিছুই সত্যি হয় সাত্ত্বিক জীবনের ফলে। তিনি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুরু করেন এবং নিজেকে ডিটক্সিফাই করেন। নিজের খাবারে শুধুমাত্র সাত্ত্বিক খাবারগুলোকেই যুক্ত করেন। যার ফলে তার জীবনে অনেক চেঞ্জ আসতে শুরু করে। সে সবসময় এনার্জেটিক ও ফ্রেশ ফিল করতে থাকে। সাত্ত্বিক লাইফ স্টাইলে তিনি যোগাকেও শামিল করেন। যার ফলে তার ওজন কমতে থাকে। সাত্ত্বিক জীবন তার পুরো জীবন ধারণ করার প্রক্রিয়াই পাল্টে দেয়। 


শুধু সাধারণ মানুষই নয় বরং এমন কিছু বলিউডের অভিনেতা অভিনেত্রীরা রয়েছেন যারা সাত্ত্বিক জীবনকে গ্রহণ করে নিজের জীবনে অনেক পরিবর্তন আনতে পেরেছে। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছে সুপারহিরো - রাহুল রয়। যাকে সকলেই চেনেন। তার একটি মুভি - 'আশিকি' খুবই হিট হয়েছিল সেই সময়। কিন্তু তার জীবন কখনো সহজ ছিল না। একজন অভিনেতা হওয়ার কারণে তার লাইফ স্টাইল পুরোপুরি ভাবে গড়বড় হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে তাকে একাধিক রোগ ব্যাধি ঘিরে ধরেছিল। কিন্তু যখন তার ব্রেন স্ট্রোক হয় তখন তার পুরো জীবনই পাল্টে যায়। তখন রাহুল সাত্ত্বিকতার জুড়ে তাকে নিজের জীবনের অংশ করে নেন। সবার প্রথমে তিনি সিগারেট ও অ্যালকোহলকে ছাড়েন। আর নন ভেজ থেকে পুরোপুরি নিজেকে দূরে রাখেন। তারপরে সাত্ত্বিক আহার কে নিজের ডেইলি রুটিনে সামিল করেন। সাত্ত্বিক লাইফ স্টাইল কে গ্রহণ করার পর রাহুল রয়ের জীবনে অনেক পরিবর্তন আসে। সে স্বাস্থ্যকর ও ফিট থাকতে শুরু করেন।


তো বন্ধুরা, রাহুল রয়, নেয়না, আরুশি ও অনন্যার মত অনেক মানুষ রয়েছেন যারা সাত্ত্বিক জীবনকে গ্রহণ করে নিজেকে পরিবর্তন করেন। আর নিজেকে ডিপ্রেশন থেকে বাইরে বার করেন। আর এখন বর্তমানে একটি কনফিডেন্ট ভরপুর লাইফ কাটাচ্ছেন। এই তিনজনাই আমাদেরকে প্রেরণা দেয় সাত্বিক জীবন গ্রহণ করার। এই কারণেই বন্ধুরা আমাদের উচিত সাত্ত্বিক জীবনকে গ্রহণ করা।


তো বন্ধুরা আজকের এই লেখাটির মাধ্যমে আমরা শিখতে পারলাম কিভাবে একাধিক মানুষ নিজের জীবনে কঠোর রোগব্যাধি দ্বারা জর্জরিত হওয়ার পরেও হার না মেনে পরিশ্রম করে সাত্ত্বিক জীবন গ্রহণ করে নিজের জীবনকে পরিবর্তন করেছেন। আশাকরি বন্ধুরা আপনারা সকলে চেষ্টা করবেন নিজের জীবনে সত্ত্বিকতার ছোঁয়া আনতে।


তো বন্ধুরা আজ এখানেই শেষ করলাম। আশাকরি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো পড়ুন:- সাত্ত্বিক জীবন গ্ৰহণ করবেন কিভাবে? বেড়ে চলা বয়সের সাথে কিভাবে নিজেকে স্বাস্থ্যকর ও ফিট রাখবেন? CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা