Breaking

Search Content

Follow Us

বুধবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২৩

সাত্ত্বিক জীবন গ্ৰহণ করবেন কিভাবে? || বেড়ে চলা বয়সের সাথে কিভাবে নিজেকে স্বাস্থ্যকর ও ফিট রাখবেন?



নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু। 


বন্ধুরা আজকে আপনাদের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হল - আপনি কিভাবে সাত্ত্বিক জীবন ধারণ করতে পারেন এবং আর নিজের বেড়ে চলা বয়সের সাথে সাথে নিজেকে সুস্বাস্থ্যকর ও ফিট রাখতে পারেন - সেই সম্পর্কে।


বন্ধুরা, সময় যত এগিয়ে চলেছে ততই মানুষের জীবন ছোট হয়ে চলেছে। যেখানে আগে মানুষ প্রায় 100 বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতেন সেখানে আজকের দিনে কেউ খুব মুশকিলে 80 বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। শুধু তাই নয় এই বয়সের মধ্যে আগের তুলনায় এখন মানুষের বেশি পরিমাণে হার্ট অ্যাটাকও হচ্ছে। এর সব থেকে বড় কারণ হলো যুগের সাথে পাল্টে যাওয়া জীবনধারণ করার প্রক্রিয়া। আজকাল মানুষ নিউট্রিশন যুক্ত ও পুষ্টিকর খাবার বাদ দিয়ে বিদেশি খাবার যেমন পিজ্জা, বার্গার ও পাস্তা প্রভৃতি ফ্যাট জাতীয় খাবার খেতে শুরু করেছে এবং এরই সঙ্গে রাতে দেরি করে ঘুমানো ও সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা এই সমস্ত জিনিস মানুষের জীবন ধারণ করার প্রক্রিয়ার মধ্যে সামিল হয়েছে। সেখানেই মানুষ অন্যদিকে শরীরচর্চা এবং অন্যান্য ভালো ভালো জিনিসের উপর নজর দিচ্ছে না। যার সোজাসুজি প্রভাব পড়ছে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর। যার ফলে ডায়বেটিস, হাই ব্লাড প্রেসার ও হার্ট সংক্রান্ত একাধিক সমস্যা শুধুমাত্র বৃদ্ধদের মধ্যেই নয় বরং কম বয়সী মানুষদের মধ্যেও বেড়ে গিয়েছে। এই সব কিছু থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজন একটি স্বাস্থ্যকর জীবন ধারণের প্রক্রিয়া গ্রহণ করা। কারণ একটি স্বাস্থ্যকর জীবন লাভের থেকে বড় কোনো এচিভমেন্ট হতেই পারে না। এই জন্য বলা হয়েছে - "health is wealth" .


বন্ধুরা এই কারণেই আজকালকার দিনে মানুষদের সাত্বিক জীবন গ্রহণ করার উপদেশ দেয়া হয়ে থাকে। ভারতীয় আয়ুর্বেদ সাত্ত্বিক জীবন গ্রহণ করার সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গী ভাবে যুক্ত। আর করোনার পর থেকে তো আয়ুর্বেদের গুণাবলী পুরো দুনিয়াই স্বীকার করেছে। ভারতীয়রা যদি করোনার মতো মারণঘাতী রোগ থেকে বাঁচতে পারে তাহলে এর পেছনের সব থেকে বড় কারণ হচ্ছে - আয়ুর্বেদ। দেশি গাছগাছড়া দিয়ে তৈরি একাধিক ঔষধি যা আমাদের শরীরকে নানান রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। আর এটাই কারণ যেই কোরোনা সবকিছুকে ধ্বংস করে দিচ্ছিল সেই করোনা থেকে মুক্তি পেতে সাত্ত্বিক খাবার আমাদের একান্তভাবে সাহায্য করেছিল। আর এটাই কারণ বর্তমানে আজকের দিনে সাত্ত্বিক খাবার লাখ লাখ মানুষের জীবন ধারণ করার একটি অংশ রূপে গণ্য হয়েছে।


আয়ুর্বেদে এরকম অনেক গুণগুলি রয়েছে যেগুলি আপন করার পর আপনি সাত্ত্বিক জীবন ধারণ করতে পারবেন। আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে একটি স্বাস্থ্যকর শরীর সেটাই যা ভেতর ও বাইরে দু দিক থেকেই সুস্বাস্থ্যকর। যখন আমরা সাত্ত্বিক জীবন গ্রহণ করি তখন সেটা আমাদের চিন্তা ভাবনাকেও পাল্টে ফেলে। এটা আপনাকে শুদ্ধ ও সহানুভূতিশীল মনের মানুষ হিসাবে গড়ে তোলে। শুধু তাই নয় এই সাত্ত্বিক জীবন আপনাকে সকলের সাহায্যকরি রূপে গড়ে তোলে; ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাস বাড়ায়। সাত্ত্বিক জীবন ধারণ করার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম সাত্ত্বিক আহার গ্রহণ ও সাত্ত্বিক বিচার করতে হবে। সাত্ত্বিক ভোজন যা আপনার শরীরকে স্বাস্থ্যকর রাখবে ও শরীরকে একাধিক রোগব্যাধির হাত থেকে বাঁচাবে। আর সেখানেই অন্যদিকে সাত্ত্বিক বিচার আপনাকে মানসিক শান্তি দেবে। অনেক মানুষ এমনটা মানেন যে তারা যদি আমিষ খাবার না খান তবেই সে সাত্ত্বিক হয়ে গেল। কিন্তু এমনটা কেন! 


তাহলে বন্ধুরা এই প্রসঙ্গে বলি যে, তামসিক ও রাজসিক ভোজন ছাড়ার সাথে সাথে আপনাকে তামসিক ও রাজসিক বিচার গুলিকেও ছাড়তে হবে। সাত্ত্বিকতায় ভালো বিচার গুলিকে শামিল করতে হবে। যার মাধ্যমে আপনি নিজেকে ভালোর দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। আপনি যখন পূর্ণ সাত্ত্বিক জীবন গ্রহণ করে ফেলবেন তখন দেখবেন আপনার মধ্যে কোনো প্রকার ছলনা নেই। আপনি অন্য কোন মানুষকে দুঃখ দেওয়ার কথা ভুলেও ভাবতে পারবেন না। সত্ত্বিকতা আপনার ভেতরের আধ্যাত্মিকতাকে জাগায়। নিজের খাবারে সবসময় বেশি করে টাটকা শাকসবজি, তাজা ফল ও ড্রাই ফ্রুটস কে শামিল করুন। ঠান্ডা এবং বাসি খাবার কখনোই খাবেন না। বিশেষ করে রাত্রের বেঁচে যাওয়া খাবার পর দিন সকালে গরম করে খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। কারণ এটা আপনার শরীরকে খারাপ করে। বেশি পরিমাণে লিকুইড ডায়েট নিন। আর সলিড ডায়েট কম রাখুন। কেননা সলিড খাবার হজম হতে অনেক সময় লেগে যায়। এই কারণেই লিকুইড ডায়েটের মধ্যে - বিভিন্ন রকমের ফলের রস, ডাবের জল, বিভিন্ন সবজির রস, লেবুর রস বেশি করে খান। আর যখন আপনি খাবার খাবেন তখন নিজের পুরো পরিবারের সঙ্গে বসে খাবার খাবেন। যদি দিনে তা সম্ভব না হয় তাহলে রাত্তিরে অবশ্যই এটি চেষ্টা করবেন। আর যখন আপনি খেতে বসবেন তখন সবসময় ভালো এবং পজিটিভ বিচারের সঙ্গে খাবার কে গ্রহণ করবেন। এই সময় না তো নিজের মোবাইল ফোনকে নিজের হাতে রাখবেন, না তো টিভি দেখবেন। বরং এই সময় আপনি আপনার পরিবারের সঙ্গে কথা বললেন এবং খাবার গ্রহণ করলেন। এইভাবে খাবার গ্রহণ করলে সেই খাবারটি আপনাকে প্রাণ ভরপুর এনার্জি দেয়। যার ফলে একাধিক রোগ ব্যাধি আপনার আশেপাশে ঘেষতে পারে না। বিভিন্ন রকমের জাঙ্ক ফুড, ফাস্টফুড আর বাজারে পাওয়া প্যাকেটজাত খাবারগুলি একদম বরখাস্ত করুন। না আপনি নিজে এই খাবারগুলি খাবেন, আর না তো এই খাবারগুলি নিজের ছোট বাচ্চাদের কিনে দেবেন। বর্তমান দিনে আজকালকার বাবা-মা নিজের ছোট্ট সন্তানদের প্যাকেটজাত চিপস, কোল্ড ড্রিংকস ইত্যাদি কিনে দেয়। কিন্তু এগুলি আপনার সন্তানের শরীরের জন্য একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। বরং ছোট বয়স থেকেই আপনি আপনার সন্তানকে রোগের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।


খাবার পরে সাত্ত্বিক জীবনের সবথেকে বড় কাজ হচ্ছে - যোগ। রোজ সকালে ১৫ মিনিট থেকে আধঘণ্টা অব্দি অবশ্যই যোগ ব্যায়াম করুন। এই যোগ আর প্রাণায়াম আপনাকে শারীরিক দিক থেকে ফিট রাখে। আয়ুর্বেদ আর যৌগিক সাইন্সে লেখা রয়েছে সকল রকম রোগ সারানো যায় এই যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে। এই কারণে ভারতের যোগ ব্যায়াম গুলি আজ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে। আর এর ফলে মানুষদের অনেক শরীর সম্পর্কিত উপকার মেলে।


তো বন্ধুরা এই হলো কিছু পদ্ধতি যার মাধ্যমে আপনি সাত্ত্বিক জীবন ধারণ করতে পারেন। আর নিজের বেড়ে চলা বয়সের সাথে সাথে নিজেকে সুস্বাস্থ্যকর ও ফিট রাখতে পারেন। সত্ত্বিকতা আপনার মন, শরীর, আত্মা ও বুদ্ধি কে পবিত্র করে। যার ফলে আপনি একটি সহজ সরল ও হাসিখুশি জীবন কাটাতে পারেন।


আরো পড়ুন:- গঙ্গাসাগর মেলা কেন আয়োজিত হয়? || গঙ্গাসাগরের মেলার ইতিহাস ও পৌরাণিক কাহিনী?

CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা