নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম।ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়।
আজকে আপনাদের সামনে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।আর তা হলো - "শ্রীকৃষ্ণের মতে", গরীব দুঃখীকে বা কোনো পশু পাখিকে সাহায্য করে থাকলে বা দানধর্ম করলে কী হয়? -সেই সম্পর্কে।
আপনি যদি কখনো কোনো গরিব দুঃখীকে বা কোন পশু-পাখিকে সাহায্য করে থাকেন তাহলে এই লেখা টি থেকে আপনি জীবনের এক মহা মূল্যবান বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। বন্ধুরা এই পৃথিবীতে বহু এমন মানুষ রয়েছেন যারা অন্যের দুঃখ কষ্ট দেখতে পারেন না এবং নিজের কথা না ভেবে নিঃস্বার্থভাবে মানুষ বা জীবজন্তুর সেবায় নিজেকে নিযুক্ত করেন , গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করেন ,প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়ান যারা এরকম দান ধ্যান সেবা করেন বা যারা করেন না উভয়ই অবশ্যই এই ভিডিওটি মন দিয়ে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ দেখুন।কারণ এই ভিডিওর মাধ্যমে দানের বিষয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বলা এক মহৎ শিক্ষা, লাভ করতে পারবেন ।যা আপনার জীবনে এক বিরাট পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
একদা একটিগ্রামে একজন হতদরিদ্র মানুষ বাস করতেন তিনি খুবই কৃষ্ণ ভক্ত ছিলেন তিনি প্রত্যেক দিন ই সন্ধ্যাবেলায় নিয়ম করে গীতা পাঠ করতেন এরকমই একদিন সন্ধ্যাবেলায় হ্যারিকেন জ্বালিয়ে তিনি গীতা পাঠ করেছিলেন হঠাৎ হ্যারিকেন টির তেল শেষ হয়ে সেটি নিভে যায় তার বাড়িতে অতিরিক্ত তেল ও নেই যার মাধ্যমে তিনি আবার এই হ্যারিকেনটি জ্বালাতে পারবেন। তখন সে মনের দুঃখে ভগবানের উদ্দেশ্যে বলতে থাকে ,হে ভগবান তুমি আমাকে এত গরিব করে কেন পাঠালে তেল কিনে যে তোমার মুখনিঃসৃত বাণী শ্রবণ করব সেই সামর্থ্য টুকু ও আমার নেই ,এই বলে তার অঝোরে চোখ দিয়ে জল গড়াতে থাকে ।তার ঘরের পাশেই আর একজন ব্যক্তির ঘর ছিল সে প্রতিদিন কাজ থেকে ফিরে এসে মদ্যপান এবং অন্যান্য নেশায় নিজেকে ডুবিয়ে রাখত।গ্রামে সেই ব্যক্তি দুশ্চরিত্র হিসেবেই পরিচিত ছিল। প্রত্যেক দিনের মতো মদ্যপান করা অবস্থায় সে যখন বাড়ি ফিরছিল তখন সে দেখতে পেল তার পাশের ঘরটি সম্পূর্ণ অন্ধকার কিন্তু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে একটা কান্নার আওয়াজ আসছে ,তখন সেই ব্যক্তি মদ্যপান অবস্থায় কৃষ্ণ ভক্ত ব্যাক্তির দরজায় কড়া নাড়ে হতদরিদ্র ব্যক্তিটি দরজা খোলার পর মাতাল ব্যক্তিটি জিজ্ঞেস করে যে, তুমি এরকম ভাবে কাঁদছো কেন? উত্তরে হতদরিদ্র ব্যক্তিটি বলে যে আমি এতই গরীব যে তেল কিনে গীতা পাঠ করবো সেই সামর্থ্য টুকুও আমার নেই।মাতাল ব্যক্তিটি তখন বলল তুমি কেঁদো না তোমার জন্য আমি খুব শীঘ্রই এক টিন তেল নিয়ে আসছি ,এই বলেই সে সেখান থেকে চলে গেল।কিছুক্ষণ পর সেই মাতাল ব্যক্তিটিএক টিন তেল কিনে নিয়ে এসে সেই হতদরিদ্র মানুষটির হাতে দিয়ে বললো, আমি জীবনে আর কোনদিন মদ খাবো না এতদিন মদ কেনার জন্য যে টাকা আমি ব্যয় করতাম সেই টাকা দিয়ে এবার থেকে তোমার গীতা পড়ার জন্য আমি তেল কিনে নিয়ে আসবো এবং এবার থেকে রোজ এসে তোমার কাছে গীতা পাঠ শুনবো।
কিন্তু দুর্ভাগ্য বসতো পরের রাতে সেই মাতাল ব্যক্তিটি মারা যান, সে এলাকায় দুশ্চরিত্র ও মাতাল হিসেবে পরিচিত ছিল বলে গ্রামের কোন ব্যক্তি ই তাকে শ্মশানে নিয়ে যেতে রাজি হলো না এমনকি তার মৃতদেহ গ্রামের শ্মশানে দাহ পর্যন্ত করা হবে না বলে গ্রাম বাসীরা স্থির করল। অতঃপর মাতাল ব্যক্তিটির দেহ সবাই মিলে দূরের একটি জঙ্গলে ফেলে রেখে আসলো, তারা চাইছিলো যে তার দেহ যাতে হিংস্র বনের জন্তু জানোয়াররা খেয়ে ফেলে। কিন্তু ভগবানের কি অসীম লীলা সেই মাতাল ব্যক্তিটির দেহ তিন দিন তিন রাত জঙ্গলে পড়েছিল সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায়, বনের কোন হিংস্র জন্তু জানোয়ার তো দূরের কথা সামান্য পোকামাকড় পর্যন্ত তার দেহ স্পর্শ করেনি ।এরকম ভাবেই চারদিন কেটে যাওয়ার পর সেই স্থান দিয়ে তিনজন ব্যক্তি যাচ্ছিলেন তারাও কৃষ্ণ ভক্ত ছিলেন ,গ্রাম থেকে বহুদূরে জঙ্গলে এই রূপ মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে তারা যথেষ্ট অবাক হন ।তারা স্থির করেন যে, এই মৃত দেহটি তারা সৎকার করবেন ,তারা শ্মশানে গিয়ে এই মৃত দেহটিকে দহন করবেন ।ফলস্বরূপ তারা এই মৃতদেহটিকে জঙ্গল থেকে তুলে নিয়ে গেলেন শ্মশানে এবং সেখানে প্রথমে মৃতদেহটিকে স্নান করানোর পর দহন কার্য শুরু করলেন ।এর জন্য তারা গ্রামবাসীদের সাহায্য চাইলেন,কিন্তু এলাকাবাসীরা বলল যে একজন নেশাখোর দুশ্চরিত্র মানুষের দহন কার্যে তারা কখনোই সাহায্য করবে না।তখন সেই তিনজন ব্যক্তির মধ্যে যিনি সবথেকে বয়স্ক তিনি গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে বললেন , এই গ্রামের মধ্যে এমন কেউ কি নেই যে এই মৃত ব্যক্তির যেকোনো একটি ভালো কাজের কথা বলতে পারেন। তখন গ্রামবাসীদের মধ্যে থেকে একজন লোক হাত তুললেন, সেই লোকটি হলেন সেই দোকানদার যার কাছ থেকে মাতাল ব্যক্তিটি কেরোসিন তেল কিনেছিলেন হতদরিদ্র মানুষটির জন্য। দোকানদার তখন বললেন আমি এই ব্যক্তিটিকে বলতে শুনেছি যে, জীবনে আমি অনেক পাপ কাজ করেছি দেখি এই ভালো কাজের জন্য ভগবান আমায় ক্ষমা করতে পারেন কিনা। এরকমই সময় একেবারে পেছন থেকে আরেকটি হাত দেখা গেল আর হাতটি হল সেই হতদরিদ্র মানুষটির হাত, মানুষটি তখন সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো যে- আমি কাল রাতে একটা স্বপ্ন দেখেছি, আমার গীতা পাঠ করার জন্য যে আমাকে তেল কিনে দিয়েছিল সেই ব্যক্তি, বিষ্ণুলোকে অর্থাৎ বৈকুণ্ঠ লোকে প্রবেশ করেছে ।সেই মাতাল ব্যক্তির সামান্য দান তার সমস্ত পাপ থেকে তাকে উদ্ধার করল।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ 'শ্রীমৎভগবত গীতা'য় অর্জুনের উদ্দেশ্যে বলেন দান ধর্মের মহিমা কী? যে ব্যক্তি অন্যের সেবায় নিজেকে নিযুক্ত করেন তিনি প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরের ই-সেবা করছেন ,ভগবানের কৃপা তার ওপর সর্বদাই বর্ষিত হয়, সকল জীবের মধ্যেই ঈশ্বর বিরাজমান, তাই আমাদের সকলকে নিঃস্বার্থ ভাবে সকল জীবের সেবা করা উচিত। শাস্ত্রে বলা হয়েছে সেবাই হলো পরম ধর্ম।।
পারলে আপনজন দের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন । আজ এই পর্যন্তই নমস্কার 🙏ধন্যবাদ ভগবান আপনার মঙ্গল করুক।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা