Breaking

Search Content

Follow Us

বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২১

এই তিনটি বিশেষ লক্ষণের ব্যক্তিরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয় ||

  নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম।ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই চ্যানেল এর প্রধান বিষয়বস্তু ।

আজকে আপনাদের সামনে যে বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব তা হল- "তিনটি এমন লক্ষণের ব্যক্তি যা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অত্যান্ত প্রিয়।"


বন্ধুরা শ্রীমৎভগবত গীতায় শ্রীকৃষ্ণ- অর্জুনকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন ও জীবনের অনেক মূল্যবান জ্ঞান প্রদান করেছেন এবং আমাদের জীবনে ভগবত গীতার মহাত্ম্য কতটা সেটা বলার প্রয়োজন পড়ে না। পাঁচ হাজার বছর আগে শ্রী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের -অর্জুনকে বলা কথা গুলি আজও আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শ্রী ভগবান কথাগুলি শুধুমাত্র অর্জুনকে বলেননি ।অর্জুনকে লক্ষ করে সমগ্র মানবজাতিকে বলেছেন। সমগ্র মানবজাতির কল্যাণের জন্য বলেছেন। শ্রীকৃষ্ণ ভগবান- অর্জুনকে মানুষের মধ্যে থাকা কিছু বিশেষ গুণের কথা বলেছেন এবং শ্রীভগবান এটাও বলেন যে যাদের মধ্যে এই বিশেষ গুন গুলি থাকবে শ্রীভগবান তাদের উপর সদাসর্বদা বর্ষিত হবেন। তাদের সকল ভার শ্রী ভগবানই নেবেন, তাদের সকল প্রকার বিপদে ভগবান তাদের পাশে থাকবেন। সে মহাসংকটে ও নিরাপদে জীবনযাপন করতে পারবে। শ্রী ভগবানের বলা লক্ষণ গুলি যদি কারো মধ্যে না থাকে তা হলেও সে অভ্যাস বেসে এই লক্ষণগুলি নিজের মধ্যে আনতে পারে।


শ্রী ভগবানের বলা প্রথম বিশেষ লক্ষণটি হল- তার কথায় বিশ্বাস রাখা। প্রচুর মানুষ আছে যারা ভগবানের উপর বিশ্বাস রাখে। তারা নিজের মুখেই বললে যে, আমার ভগবানের উপর বিশ্বাস আছে ।কিন্তু যখন পরিস্থিতি তাদের সাধ্যমতো হয়না, কিংবা তাদের জীবনে কিছু সমস্যা এসে উপস্থিত হয় ,তখন তারা ভগবানের উপর আর বিশ্বাস করে না । তারাই তখন ভগবানকে বিশ্বাস না করার বিভিন্ন যুক্তি প্রদান করেন এবং ভগবান কে দোষারোপ করেন। বেশিরভাগ মানুষ এটা ভুলে যান যে শ্রী ভগবান বলেছেন যে, তার স্মরণকারী সকল ভক্তের দুঃখ-কষ্ট স্বয়ং ভগবান নিজেই দূর করেন। তার ভক্ত যত বড়ই বিপদে পড়ুক না কেন শ্রীভগবান তাকে অবশ্যই রক্ষা করবেন। বিপদের সময় বেশিরভাগ মানুষই শ্রীভগবানের এই কথাটার উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু যারা কোন পরিস্থিতিতে শ্রী ভগবানের উপর বিশ্বাস হারায় না, তাদের সকল বিপদ থেকে শ্রীভগবানই রক্ষা করেন। তাদের মাথার উপর শ্রীভগবানের হাত সব সময় থাকে এবং তাদের সর্বদা কৃপা করেন।

 

শ্রী ভগবানের বলা দ্বিতীয় লক্ষণটি হলো নিঃস্বার্থভাবে সেবা করা। প্রচুর মানুষ আছে যারা পরোপকারে নিজেদের সর্বোচ্চ কিছু দান করে দেয় ।কিছু না ভেবেই বিপদের সময় মানুষের বা পশু পাখিদের নিঃস্বার্থভাবে সেবা করে ও পাশে দাঁড়ায়। কিন্তু প্রচুর মানুষ এরকম আছে যারা কামনা লাভের উদ্দেশ্যে বা পুণ্য লাভের উদ্দেশ্যে সেবা করে। আবার এরকম মানুষ আছে যারা শুধুমাত্র নিজেদের কথাই ভাবে এবং অন্যের দরকারে কখনো এগোয় না। যারা স্বার্থ লাভ বা পুণ্য লাভের উদ্দেশ্যে অন্যের সেবা করেন বা শুধুমাত্র নিজের কথা ভাবে ,শ্রীভগবানের মত সেই সকল ব্যক্তির কখনো উন্নতি হয় না। এছাড়া এই রকম মানুষ কখনোই ভগবানের প্রিয় হন না। কিছু মানুষ যারা নিঃস্বার্থভাবে ভগবানের সেবা করেন এবং অন্যান্য মানুষ এবং পশু পাখিদের পাশে এসে দাঁড়ায় বিপদের সময়, তাদের উপর ভগবানের কৃপা দৃষ্টি সব সময় থাকে।


শ্রীভগবানের বলা তৃতীয় বিশেষ লক্ষণটি হলো স্মরণ করা। অনেক মানুষ আছে যারা সব সময় যে রকমই পরিস্থিতি হোক না কেন ভগবানকে স্মরণ করে। আবার অনেক মানুষ এরকমও আছে যারা কেবল বিপদের সময় ভগবানকে স্মরণ করেন এবং বিপদ কেটে গেলে ভগবান কে ভুলে যান। এরকম ব্যক্তিরা কখনোই ভগবানের কৃপা লাভের অধিকারী হন না। কিন্তু যারা সুখ-দুঃখ সদাসর্বদা ভগবানকে স্মরণ করেন তাদের উপর ভগবানের কৃপা দৃষ্টি সদা সর্বদায়ই থাকে। সকল বিপদ থেকে ভগবান এদেরকে রক্ষা করেন। অর্থাৎ যতই খারাপ পরিস্থিতি হোক না কেন, যদি এরকম পরিস্থিতিতে আপনার বিশ্বাস থাকে যে তিনি অবশ্যই সবকিছু ঠিক করে দেবেন এবং আপনি ঈশ্বরে অবিশ্বাসী না করে, ঈশ্বরকে দোষারোপ না করে, নিজের কাজ নিষ্ঠার সাথে করে যান এবং ঈশ্বরের প্রার্থনা জপ- ধ্যান করেন তাহলে বুঝবেন যে ,আপনার মাথার উপর সর্বদা ঈশ্বরের হাত আছে। তার কৃপা সর্বদা আপনার উপর বর্ষিত আছে। কারণ মানুষের মধ্যেই বিশেষ লক্ষণটি শ্রীভগবানের অত্যন্ত প্রিয়। এছাড়া এই খারাপ সময় গুলি হল আপনার জীবনের একটি পরীক্ষা। পরীক্ষায় পাশ করলেই আপনার জীবনে আসবে সুখ ও শান্তি। 


'মহাভারতে' বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সকলকে যে সমস্ত উপদেশ দিয়েছিলেন সেগুলি এবার পরিবেশন করা হবে। এই কথা গুলি মন দিয়ে পড়ুন, বড়ই বিচিত্র আমাদের এই মন। শরীরের কোন অঙ্গে মন বসবাস করেন এটা কেউ জানে না। কিন্তু আমাদের সম্পূর্ণ এই শরীর মনের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য সদা সর্বদা চেষ্টা করতে থাকে। যদি কিছু খাওয়ার মন করে ,তাহলে ব্যক্তি সেই ইচ্ছা পূরণ করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যম কে ক্রমাগত খুঁজতেই থাকে। আবার যদি মন কাউকে শত্রু বলে মেনে নেয়, তাহলে ব্যক্তি সেই শত্রুকে ধ্বংস করার জন্য প্রয়াস করতেই থাকে। আবার যদি মন কাউকে ভালোবাসে তাহলে তার প্রসন্নতার জন্য ব্যক্তি সব সীমা লংঘন করতেও রাজি থাকে। জীবন যদি সুখময় করতে হয় তার জন্য দরকার মনের খালি থাকা। ঠিক একটা বাঁশির মত, এর মধ্যে কিছুই নেই না রাগ আছে; না হিংসা আছে ;তাই জন্য এর ভিতর থেকে এত সুন্দর মধুর সুর বের হয়। ঠিক এই প্রকারই মনকে সমস্ত ভাবনা থেকে দূরে রাখা আবশ্যক। সব সময় মনে রাখতে হবে যে মনের ভিতর যদি তুমি কোন জিনিস ভরে রাখতে চাও !তাহলে তুমি মন ভরে বাঁচতেই পারবে না এবং জীবনটাকে হাসিখুশি ভাবে খুশির সাথে উপভোগ করতে পারবে না। যখন থেকে মানুষ্য জাতির অস্তিত্ব শুরু হয়েছে ,তখন থেকে যুদ্ধেরও শুরু হয়েছে। যুদ্ধ হলো এমন একটি জিনিস যা কখনো ধন সম্পত্তি বিষয়ক সমস্যা হয় আমাদের সামনে আসে। আবার কখনো সুরক্ষার হাতিয়ার হয়ে আমাদের সামনে আসে। কখনো এটা বিজয়লাভের চিহ্ন হিসেবে আসে ।আবার কখনো পরাজয় কে এড়িয়ে যাবার হিসেবে আসে। কিন্তু বাস্তবিকতা তো এটাই যে যদি আপনি সামনে এগোতে চান তাহলে আপনাকে চলার পথে যুদ্ধ করতেই হবে। কিন্তু যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকা এতটা গুরুত্বপূর্ণ নয় ,যতটা গুরুত্বপূর্ণ এটা বোঝা যে যুদ্ধ কে কি করে এড়িয়ে যাওয়া যায়। কারণ সব থেকে সকল যুদ্ধতো এটাই হয় যে যেখানে কখনো লড়াই করার প্রয়োজন পড়ে না। আপনি যুদ্ধে বিজয় লাভ করে তো নিজের সম্মান বাড়িয়ে নেবেন, কিন্তু নিজের শক্তি ক্ষয় করে ফেলবেন। এই জন্য ভালো এটাই হয় যে যুদ্ধ কে এড়িয়ে চলুন। আপনার যা শক্তি আছে সব সঞ্চয় করে রাখুন। যাতে যুদ্ধ যখনই ধর্ম হয়ে আপনার সামনে আসে আপনি তখনি আপনার সমস্ত শক্তি দিয়ে তাতে লড়াই করে বিজয়ী হতে পারেন। বলুনতো সংসারের সব থেকে বড় শক্তিটি আসলে কি? অনেকেই হয়তো বলবেন অস্ত্র। কেউ বলবেন শাস্ত্র। আবার কেউ বলবেন বুদ্ধি। কেউ আবার বলবেন ক্ষমতা। কিন্তু এই সবকিছুই প্রকৃতপক্ষে আসন্ন। আসলে সংসারে সবথেকে বড় শক্তি হলো বন্ধুত্ব। যদি কেউ সত্যি করেই জীবনে বন্ধুত্ব পেয়ে যান, তাহলে এটাই হলো আপনার জীবনের সবথেকে বড় সম্পদ। যখন আপনি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে থাকবেন। তখন এই বন্ধুত্ব আপনাকে অস্ত্র রূপে সাহায্য করবেন। যদি আপনি জীবনে চলার পথে কোথাও ফেঁসে যান তাহলে বুদ্ধির হয়ে সেই বন্ধু আপনাকে সেই সমস্যা থেকে বার করবে। আর যদি কখনো একা হয়ে যান তাহলে আপনাকে ক্ষমতা হয়ে সব সময় সাহায্য করবে। যদি এই সংসারে কিছু উপার্জন করতে চাও তাহলে ধন সম্পদ নয়, মিএ হয়ে বন্ধুত্ব উপার্জন করো। আর সবসময় মনে রাখবেন যে আপনি যদি একটু বন্ধু হয়ে পড়তে পারেন বা কারো মিত্রতা লাভ করতে পারেন তাহলে আপনি হলেন এই সংসারে সবথেকে শক্তিশালী প্রাণী।


আশাকরি লেখা টি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন অথবা আমাদের অমৃত কথা ইউটিউব চ্যানেলটি ফলো করতে পারেন। 

ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

নমস্কার, ধন্যবাদ।।

 ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা