নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম।ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু ।
আজকে আপনাদের সামনে যে বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব তা হল - খেতে বসে এই কাজ করলে মা লক্ষী (Maa laxmi) ঘরছাড়া হবেনই হবেন ||
অন্ন বা খাবার আমরা মা লক্ষ্মীর প্রতীক হিসেবেই চিনি। খাবার শুধুমাত্র মানুষের জীবনযপনের ক্ষুধানিবৃত্তি করে না। প্রয়োজনে অনেক কিছু উদ্ভাবনের অনুঘটক হিসেবেও কাজ করে এই খাবার। আমাদের বেঁচে থাকার অন্যতম উপায় বা মাধ্যম হলো এই অন্য বা খাবার। অথচ খাবারের সময় বা খেতে বসে আমরা অনেক সময় এই সমস্ত বিষয়গুলি খেয়াল রাখি না, বলা যেতে পারে নিজের অজান্তেই এই সমস্ত ভুল গুলো করি অথবা শৈশব থেকেই আমাদের মধ্যে এই ধরনের কুঅভ্যাস তৈরি হয়েছে। যে কারণে আমরা খাবার সময় এই ধরনের কাজগুলো করে থাকি। অথচ এই সমস্ত কাজ গুলির উপর গৃহে মা লক্ষ্মীর অবস্থান অনেকটাই নির্ভর করে।
আবার বৈজ্ঞানিক দিক থেকে দেখলে এই সমস্ত জিনিস গুলো শুধুমাত্র সংস্কার নয়। এগুলি বৈজ্ঞানিক দিক থেকেও সমানভাবে সত্য। কারণের ওপর আপনার শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক বিষয় নির্ভর করে। তাই চেষ্টা করলেই সমস্ত বিষয়গুলি কখনোই খাবার খাওয়ার সময় করবেন না।
সবার প্রথমে যে বিষয়টির কথা বলব তা হল-
১) খাবারের সময় কোনো কোনো ব্যক্তি পা দোলান। এটি কিন্তু একেবারেই অনুচিত। এতে মা লক্ষ্মী অত্যন্ত রুষ্ট হন। ফলে জীবনে অন্যান্য কষ্ট গুলো দেখা যায়। সংসারের চূড়ান্তরূপে অমঙ্গল দেখা দিতে পারে, তাই কখনোই কিন্তু খাবারের সময় পা দোলাবেন না। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এক্ষেত্রে বলা হয় যে খাবারের সময় যে ব্যক্তি পা দোলায় তার সেই খাবার সহজে পরিপাক হয় না এবং তা থেকেই সৃষ্টি হয় হজমের গোলমাল। সেখান থেকেই পেটের রোগের উৎপত্তি হয়। আর সমস্ত রোগের মূল উৎস কিন্তু এই পেটের রোগ। তবে আমাদের শাস্ত্র কিন্তু এ বিষয়ে পরিষ্কার করে বলেছে কোন ব্যক্তি যদি খাবারের সময় পা দোলানো তাহলে তার ঘরে মা লক্ষী প্রবেশ করেন না। এখন বৈজ্ঞানিক নাকি শাস্ত্র কোন বিষয়টিকে আপনি প্রাধান্য দেবেন সেটি সম্পূর্ণ আপনার নিজস্ব ব্যক্তিগত ব্যাপার।
২) দ্বিতীয় যে বিষয়টির কথা বলব তা অনেক ক্ষেত্রেই আমরা করে থাকি। যখন আপনি খেতে বসছেন সেইসময় সম্পূর্ণ খাওয়া শেষ হওয়া পর্যন্ত কখনোই কিন্তু উঠে যাবেন না। খেতে বসে যদি আপনি এই ধরনের কাজ করে থাকেন তাহলে তার অর্থ অন্নকে অর্থাৎ খাবারকে তিরস্কার তথা অবমাননা করা। এই খাবার খেতে বসে এইরূপ উঠে যাওয়া বা বারবার এই ধরনের কাজ করা গৃহে ঘোড় মঙ্গল ডেকে আনে। এতে মা লক্ষ্মী অত্যন্ত রুষ্ট হন। আপনি বেঁচে রয়েছেন কিসের জন্য? - খাবার খাওয়ার জন্য, তাই দিনে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল এই খাবার খাওয়া। আর তাকেই যদি তিরস্কার করে আপনি উঠে চলে যান সে ক্ষেত্রে মা লক্ষ্মী তো রুষ্ট হবেনই হবেন। কেবলমাত্র বড় ধরনের কোনো সমস্যা অথবা জীবন সংকটের প্রশ্ন দেখা দিলে তখনই আপনি খাবার ছেড়ে উঠতে পারেন না। নচেৎ যেকোনো ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কারণের জন্য এই রূপ খাবার ছেড়ে আপনি বারবার ওঠেন তাহলে সেক্ষেত্রে মা লক্ষী তো রুষ্ট হবেনই হবেন এবং আপনার গৃহে কখনোই স্থায়ীভাবে মা লক্ষ্মী অবস্থান করবে না। বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে যদি এক্ষেত্রে বিচার করা হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে বলা হয় যে খেতে বসে এইরূপ বারবার উঠে যাবার ফলে আমাদের কিন্তু শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতি হয়। খাবারের সময় আমাদের মুখ থেকে যে লালা নিঃসরিত হয় তা আমাদের পরিপাকে সাহায্য করে। এইরূপ বারবার যদি আপনি খাবার ছেড়ে উঠে যান তাহলে সেক্ষেত্রে শরীরের পক্ষে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে হজমের গন্ডগোল হয় এবং তা থেকে নানান ধরনের রোগের উৎপত্তি হয়।
বন্ধুরা এই বিষয়ে অধিক জানতে আমাদের অমৃতকথা ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওটি প্রয়োজন বোধ করলে দেখে নিতে পারেন-
৩) তৃতীয়তঃ যে বিষয়টির কথা বলব সেটি হল- আমরা অনেক ক্ষেত্রে দেখে থাকি গামছা পড়ে অনেক ব্যক্তি খায়। এই বিষয়টি একেবারেই করবেন না। গামছা পড়ে কখনোই খাবেন না, এতে সংসারের অভাব কমবে না। আপনি যতই উপার্জন করে থাকুন না কেন অভাব আপনার কোনো দিন যাবেনা। গৃহে সবসময় অলক্ষী বিরাজ করবে এবং দারিদ্রতা ডেকে আনবে। তাই গামছা পড়ে কখনোই খেতে যাবেন না। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এক্ষেত্রে বলা হয় যে গামছা বা তোয়ালে আমরা মূলত স্নানাগারে ব্যবহার করে থাকি আর স্নানাগারের কোনো জিনিস আপনি খাবার খাওয়ার সময় ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে রোগ-বিরোগ বাড়বে বৈ কমবে না। এর সাথে সাথেই আপনি যদি গামছা অথবা তোয়ালে পরে খেতে বসেন সেটি সুসভ্য বিষয় নয় এবং অনেকটা দৃষ্টিকটু। যদি বাইরের কোনো বিশেষ অতিথি আপনার গামছা পরে খাওয়ার মুহূর্তে আপনার গৃহে প্রবেশ করেন এবং আপনাকে সেই অবস্থায় দেখেন, তাহলে সেই বিষয়টি কেমন হতে পারে আপনি নিশ্চয়ই অনুভব করতে পারছেন।
৪) চার নম্বরের বিষয়টি অনেক ক্ষেত্রেই আমরা মনের ভুলে করে বসি। বিশেষ করে বাচ্চারা এই ধরনের কাজ করে। খাবারের সময় খাবারের থালায় আঁকিবুকি কাটা।এই জিনিসটি কখনোই কিন্তু করবেন না, এক্ষেত্রে অভাবের কারণ হতে পারে।
অনেকেই কিন্তু খাবার পরে পাত চেটে খান এই বিষয়টি কিন্তু কখনোই করবেন না। এই ক্যু অভ্যাসটি অনেকেরই থাকে। এতে মা লক্ষ্মী অত্যন্ত রুষ্ট হন।এর ফলে সেই পরিবারে অভাব নেমে আসে। তাই খাবারের সময় এইরূপটা না করে বরং আপনি উঠে যান, উঠে আপনার হাতটা ধুয়ে নিন।
৫) সবশেষে যে বিষয়টির কথা বলব তা 100 জন মানুষের মধ্যে 90 জনই করে থাকেন। তা হল খাবারের সময় জল পান করা। আপনি হয়তো ভাবছেন এর সঙ্গে মা লক্ষ্মীর সম্পর্ক কি! মা লক্ষ্মীর সম্পর্ক এই ক্ষেত্রে সরাসরি না থাকলেও, আপনি যদি খাবারের সময় ক্রমাগত জল পান করতেই থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই কিন্তু ক্ষতিকারক। কারণ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে খাবারের সময় বারবার জল পান করা সম্পূর্ণরূপে স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। একমাত্র গলায় যদি আটকে যায় অথবা বিষম খান তখনই আপনি জল খেতে পারেন। তবে তার সামান্য উপযুক্ত পরিমাণে, কখনোই কিন্তু পেট ভরে নয়। সত্যি কথা বলতে জল খাওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না যদি আপনি খাবার খাওয়ার সময় ধীরে ধীরে আহার গ্রহণ করেন এবং চিবিয়ে চিবিয়ে খান।
সর্বোপরি খাবার খাওয়ার পূর্বে খাবারের সামনে বসে অন্নদাত্রী মা লক্ষীকে প্রণাম জানান এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটি হল কখনোই কিন্তু খাবার নষ্ট করবেন না।
আশাকরি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছে ভালো লাগলে আপন জনের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন অথবা আমাদের অমৃতকথা ইউটিউব চ্যানেলটিকে ফলো করতে পারেন।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
নমস্কার, ধন্যবাদ।।
ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা