শিব পুরাণে বর্ণিত ১০টি সংকেত, যা পেলে বুঝবেন আপনার মৃত্যু নিশ্চিত || Shiv puran

নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু । 

আপনাদের সামনে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হল - "শিব পুরাণে- বর্ণিত মৃত্যুর ১০ টি সংকেত" সম্পর্কে।

বন্ধুরা মৃত্যু হচ্ছে একটি অটুট সত্য। কিন্তু অধিকতর মানুষই একে স্বীকার করতে চান না। এর সাথে এই বিষয়টিও দেখা গিয়েছে যে বেশির ভাগ মানুষ মৃত্যুকে ভয় পায়; কিন্তু, তা সত্ত্বেও মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয় গুলি জানতে সকলেই খুবই আগ্রহী। যেমন ধরুন আমাদের মৃত্যু কখন কিভাবে হবে এই সম্পর্কিত বিষয় জানতে প্রত্যেকটি মানুষেরই ব্যাপক কৌতূহল আছে। এটি স্পষ্টভাবে বলা খুবই কঠিন যে আমাদের মৃত্যু কখন কিভাবে হবে। কিন্তু, বন্ধুরা তা সত্ত্বেও এমন কিছু সংকেত রয়েছে, যেই সংকেত গুলির মাধ্যমে বোঝা সম্ভব সেই ব্যক্তির মৃত্যু নিশ্চিত। শিব পুরাণের স্বয়ং ভগবান শিব মাতা পার্বতী কে এই সংকেত গুলি সম্পর্কে বলেছিলেন। চলুন বন্ধুরা জেনে নেওয়া যাক সেই সংকেত গুলি সম্পর্কে। 

বন্ধুরা মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত এই সংকেত গুলি খুব সহজেই বোঝা যায়। শিব পুরাণ অনুসারে একবার মাতা পার্বতী ভগবান শিব কে জিজ্ঞাসা করলেন- মৃত্যুর চিহ্ন কেমন হয় এবং এর সংকেত গুলি কি কি? মৃত্যু নিকটে আসলে মানুষেরা কোন কোন লক্ষণ গুলি দেখতে থাকেন? 

মাতা পার্বতীর এই প্রশ্নগুলির উত্তর দিতে গিয়ে ভগবান শিব বললেন মানুষের ১০ টি সংকেত দেখা দেয়। যার মধ্যে প্রথম সংকেতটি হল- 

১) বন্ধুরা আমাদের মনে হয় মৃত্যু হলো কিছু সময়ের প্রক্রিয়া। কিন্তু, এমনটা একেবারেই নয়। আপনি জেনে অবাক হবেন মৃত্যুর প্রক্রিয়া প্রায় ৬ মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়। শিব পুরাণ অনুযায়ী মৃত্যুর আভাস সবার প্রথমে মস্তিষ্কের আগে নাভিতে প্রাপ্ত হয়। অর্থাৎ মৃত্যু আসার প্রায় ৬ মাস আগে থেকেই নাভি চক্র ধীরে ধীরে খারাপ হতে শুরু করে। কোনো ব্যক্তির যদি তার নাভিচক্র খারাপ হওয়ার আভাস প্রাপ্ত হয় তাহলে তার বুঝে নেওয়া উচিত তার মৃত্যু কাছিয়ে এসেছে।

২) দ্বিতীয় সংকেতটি হল- 

বন্ধুরা শিব পুরাণ অনুযায়ী মৃত্যু কাছিয়ে এলে মানুষেরা স্বপ্নেতে তার পূর্বপুরুষদের দেখতে পান। শুধু তাই নয় জেগে থাকা অবস্থাতেও তারা আশেপাশে তাদের পূর্বপুরুষরা আছেন এরকম একটা প্রভাব বুঝতে পারে। এর সাথেই সেইসব মানুষদের নিজের আশপাশের লোকেদের উপর বেশী গুরুত্ব থাকেনা। যদি কোন ব্যক্তির সঙ্গে এরূপ হয়ে থাকে তাহলে তাকেও বুঝে নিতে হবে আগামী ছয় মাসের মধ্যে তার মৃত্যু হতে পারে।

৩) তৃতীয় সংকেত- 

শিব পুরাণ অনুযায়ী যেই মানুষ বেঁচে থাকা অবস্থায় অনেক পাপ করে সে নিজের আশেপাশে মৃত্যুর আগে মৃত্যুদূত অর্থাৎ যমদূত দেখতে পান এবং সেই সব ব্যক্তি ভয়ে কেঁপে ওঠে। বন্ধুরা নিজের আশেপাশে মৃত্যুদূত দেখা এটিও একটি অশুভ সংকেত বলে গণ্য। এটি এই সংকেত প্রদান করে যে সেই ব্যক্তির মৃত্যু খুবই কাছিয়ে এসেছে।

৪) শিব পুরাণ অনুযায়ী যখন কোনো ব্যক্তির গায়ের রং হলদেটে বর্ণের হয়ে যায় কিংবা সাদা বা লাল বর্ণের হয়ে যায় তখন তা ওই দিকে ইশারা করে যে ওই ব্যক্তির মৃত্যু নিকটে।

৫) পঞ্চম সংকেত-

এরপর ভগবান শিব মাতা পার্বতীকে বলেন- যখন কোন ব্যক্তির নিজের ছায়া জল অথবা আয়নায় ঠিক ভাবে দেখা যায় না বা অস্পষ্ট দেখা যায়, তা এই দিকেই ইশারা করে যে সেই ব্যক্তির মৃত্যু হতে চলেছে।

৬) ষষ্ঠ সংকেত- 

এছাড়া বন্ধুরা যেসব ব্যক্তি নিজের বাস্তবিক বয়সের থেকে বেশি পরিমাণে বেঁচে থাকেন, সেই সকল ব্যক্তিদের নিজের ছায়া দেখা যায় না। আর দেখা দিলেও তাদের শুধুমাত্র ধর অপদি ছায়া দেখা যায়। এই ধরনের ব্যক্তিদের মৃত্যু খুব শীঘ্রই হবে।

৭) সপ্তম সংকেত- 

যখন কোনো মানুষের বা হাতে অদ্ভুত ধরনের মচকা লেগে থাকে বা অদ্ভুত ভাবে হাতটি কুঁচকে যায় এবং তা এক সপ্তাহের বেশি ধরে জারি থাকে। বুঝে নেওয়া উচিত সেই মানুষটি আর বেশি দিন বাঁচবেন না।

৮) অষ্টম সংকেত-  

অষ্টম সংকেত বলতে বলতে ভগবান-শিব মাতা পার্বতী কে বলেন যখন কোনো মানুষের এটা অনুভব হতে থাকে যে জীব, চোখ, নাক এবং কান পাথরের মত শক্ত হয়ে যাচ্ছে, তাহলে বুঝে নেওয়া উচিত ওই ব্যক্তির মৃত্যু খুব শীঘ্রই হতে চলেছে।

৯) নবম সংকেত-

এটাও জেনে নিন যখন কোন ব্যক্তি চন্দ্রমা, সূর্য এবং অগ্নির দেখতে অসমর্থ হন বা দেখতে পান না, তাহলে এটাও হল একটি মৃত্যুর ঘনিয়ে আসার সংকেত। আগামী ৬ মাসের মধ্যে হতে চলেছে।

১০) দশম সংকেত- 

শিব পুরাণ অনুযায়ী যখন কোনো মানুষের মৃত্যু নিকটে এসে দাঁড়ায় তখন তার থেকে এক অদ্ভুত ধরনের গন্ধ বের হতে থাকে। এই গন্ধটি প্রচন্ড গ্যাস যুক্ত এবং অসহনীয়।

তো বন্ধুরা এই সমস্ত সংকেতগুলি জানার পরে আপনার এই কথাটিও জানা উচিত যে জন্ম আর মৃত্যু একটি কয়েনের দুটি পিঠ। এমনটা বলা হয়ে থাকে যখন কোন মানুষ এই সংসারে জন্ম নেন তখনই তার এই সংসার থেকে যাওয়ার সময় এবং দিন ঠিক হয়ে থাকে। এই জন্য আমাদের মৃত্যু সঠিক কোন দিনে কখন হবে এটা বলা সম্ভব নয়। কিন্তু শিব পুরাণ অনুযায়ী কিছু সংকেত , যে সংকেত গুলি কোনো ব্যক্তির মধ্যে দেখলে আন্দাজ করা যায় খুব শীগ্রই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।

আরো পড়ুন:- মহাভারতের শকুনির কিভাবে স্বর্গলোক প্রাপ্ত হলো? তিনি কি এমন পুন্যের কাজ করলেন?https://www.amritakatha.com/2022/02/why-shakuni-went-to-heaven.html?m=1

আশাকরি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ।

 ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।