নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু ।
আপনাদের সামনে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হল - ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত এক গোপন রহস্য সম্পর্কে। আজও কি বেঁচে আছে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের হৃদপিণ্ড? ভগবান শ্রীকৃষ্ণের হৃদপিণ্ড এখনো জীবন্ত রয়েছে ভারতে। (Untold secret of Lord Krishna)
বন্ধুরা ভগবান কৃষ্ণ দ্বারা দেওয়া গীতাজ্ঞান আর তার বিভিন্ন প্রকার লীলা সম্পর্কে আপনারা তো জানেনই। আজকে আপনাদের ভগবান কৃষ্ণের সঙ্গে যুক্ত একটি বড় রহস্য বলতে চলেছি।
মহাভারত যুদ্ধের পর ভগবান কৃষ্ণ 36 বছর পর্যন্ত দ্বারকা নগরীতে রাজত্ব করেছিলেন। তারপর তিনি তাঁর দেহত্যাগ করেন। কিন্তু, আপনি কি জানেন যখন তার দেহ সংস্কার করা হচ্ছিল তখন তার দেহের একটি অঙ্গ পড়েনি। ওই অঙ্গটি আজও এই পৃথিবীতে রয়েছে। চলুন বন্ধুরা জানা যাক ভগবান কৃষ্ণের মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত সেই বড় রহস্যটি।
বন্ধুরা মুষলপর্ব মহাভারতের আঠারোটি পর্বের মধ্যে একটি। যা আটটি অধ্যায়ের সংকলন। এই পর্বে ভগবান কৃষ্ণের মানব রুপ পরিত্যাগ করা এবং তার মৃত্যুর পর দারোকা নগরির সমুদ্র তলে ডুবে যাওয়ার বর্ণনা পাওয়া যায়। মৌষল পর্বের বর্ণনা অনুযায়ী গান্ধারী ও ঋষি দুর্বাসা অভিশাপের কারণে যদু বংশের নাশ হয়ে যায়। নিজের বংশের নাশের ফলে শ্রীকৃষ্ণ থেকে ভেঙ্গে পরলেন। তিনি তার মনকে শান্ত করার জন্য দ্বারকা নগরী থেকে একটু দূরে একটি বনে চলেগেলেন। তারপর তিনি সেখানে একটু বিশ্রাম নিতে থাকলো। আর তখনই সেখানে জিরু নামের এক ব্যাধ উপস্থিত হল শিকারের জন্য। আর তখনই সে দূর থেকে শ্রীকৃষ্ণের পা দেখে হরিণের মুখের মত ভেবে তীর চালায়। কিন্তু, যখন সে নিকটে পৌঁছায় দেখে সেখানে ভগবান কৃষ্ণ। তারপর সে নিজের অপরাধ বোধের জন্য খুবই ভয় পেয়ে যায় এবং ভয়ের কারণে সে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে ক্ষমা চাইতে থাকে। সে শ্রীকৃষ্ণের চরণে পড়ে বলেন - হে মাধব, আমি না জেনে এই ভুলটি করেছি; সত্যিই আমি খুব বড় একজন পাপী। আপনি আমাকে এর জন্য মৃত্যু দন্ডের শাস্তি দিন যাতে এমন আমি আর অন্য কোন দেবতার সাথে না করতে পারি।
জিরুর এই কথাগুলি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শোনার পর তাকে বললেন তুমি এমনিই বিলাপ করছো। আসলে এটা তো আমার পূর্বজন্মের কর্মের ফল। আসলেই তুমি আগের জন্মে মহারাজা বালি ছিলে, যাকে আমি আমার রাম অবতারে লুকিয়ে হত্যা করেছিলাম। তাই এই জন্মে আমার মৃত্যু আমি নিজেই স্বয়ং তোমার হাতে লিখেছি। এই কথা বলার পর ভগবান কৃষ্ণ নিজের দেহ ত্যাগ করে দেন।
এরপর পাণ্ডবরা যখন শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যুর খবর পান, তখন পাণ্ডবেরা পুরো শাস্ত্রের বিধান মত শ্রীকৃষ্ণের দেহের অন্তিম সংস্কার বা শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। তার পুরো শরীর পুড়ে ছাই হয়ে গেলেও তার 'হৃদয় বা হৃদপিণ্ড' তা আগুনের শিখায় জ্বলেই যাচ্ছিল। এইদৃশ্য দেখে পাণ্ডবেরা আশ্চর্য হয়ে যান। এরপর তারা শ্রীকৃষ্ণের হৃদপিণ্ডটিকে একটি নদীতে প্রবাহিত করে দেয়।
আরো পড়ুন:- প্রভু শ্রী রাম ও লক্ষণ কিভাবে নিজের মানব শরীর পরিত্যাগ করেন?Click here
এরপর একদিন সকাল বেলা নদীর জলে স্নান করতে করতে একটি নরম বস্তু ভেসে যেতে দেখেন রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন। (রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের আস্থা ছিল জগন্নাথদেবের উপর। তিনি ছিলেন জগন্নাথ দেবের উপাসক।) ইন্দ্রদ্যুম্ন সেই নরম বস্তুটি পাওয়ার পর দ্রুত জগন্নাথ মন্দিরে এসে জগন্নাথ দেবের মুর্তির মধ্যেই তা স্থাপন করেন। কিন্তু, তা এমন ভাবে করা হয় যাতে তা কেউ দেখতে না পায়। বর্তমানে আজকে জগন্নাথ ধাম হিন্দু ধর্মের চারটি দামের মধ্যে একটি। যেখানে প্রত্যেক বছর বিশাল রথযাত্রা হয় এবং বিপুল সংখ্যায় ভক্তরা সেখানে উপস্থিত হয়।
বন্ধুরা এই ছিল মূলত ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা একটি গোপন রহস্য। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজের দেহ ত্যাগ করে গেলেও তার হৃদপিণ্ড আজও এই পৃথিবীতে জীবিত আছে।
আশা করি বন্ধুরা লেখা টি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজন দের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
আরো পড়ুন:- 2022 মহা শবরাত্রি পূর্ণাঙ্গ সময়সূচী - শিবরাত্রি কেন পালন করা হয়? Click here
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা