Breaking

Search Content

Follow Us

মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০২২

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অনুযায়ী এই 4টি অভ্যাস জীবন থেকে দরিদ্রতা দূর করে | Amrita kotha

 


নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।   


আজকে আপনাদের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হল -  শ্রীকৃষ্ণের মতানুযায়ী 4টি অভ্যাস সম্পর্কে। যে অভ্যাস গুলো প্রতিদিন করার ফলে জীবন থেকে দারিদ্রতা দূর হয়।


বন্ধুরা যে কথাগুলি আমরা বারংবার বলে থাকি বা যে বিষয়গুলি আমরা বারবার করে থাকি তাকেই আমাদের অভ্যাস বলা হয়। অভ্যাস দুই প্রকারের হয় - খারাপ অভ্যাস এবং ভালো অভ্যাস। আমাদের অভ্যাস গুলি আমাদের স্বাস্থ্য, আচার-আচরণ, খাওয়া-দাওয়া, ব্যবহার প্রভৃতি বিষয় গুলির উপর ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলে। এর সাথেই আমাদের ভাগ্যোও এই অভ্যাসের দ্বারা প্রভাবিত হয়। আমাদের অভ্যাস গুলো যদি ভালো হয় তাহলে নিশ্চিত রূপে আমাদের জীবনে উন্নতি হবে। আর আমাদের জীবনেও এটার একটা পজেটিভ প্রভাব পড়বে। আর এর বিপরীত হলো খারাপ অভ্যাস। এই খারাপ অভ্যাসের ফলে আমাদের জীবনে খারাপ প্রভাব পড়ে।


বন্ধুরা আমরা সকলেই আমাদের আরাধ্য দেবদেবীর মনোযোগ সহকারে পূজা-অর্চনা করার চেষ্টা করি এবং সবসময়ই তার কৃপা দৃষ্টি যেন আমাদের উপর থাকে সেই আশায় থাকি। এর জন্য আমরা একাধিক ভাবে চেষ্টা করি যাতে ভগবানের কৃপা দৃষ্টি যেন আমাদের উপর সর্বদা থাকে। কিন্তু বর্তমানের এই জীবনে আমরা একাধিক কারণে ব্যতিব্যস্ত থাকায় পূজা পাঠের জন্য অতিরিক্ত সময় বার করতে পারিনা। আর এই বিষয়টির দুঃখই আমাদের মনে সবসময় দোলা দেয়। কিন্তু বন্ধুরা ঈশ্বর কখনো বেশি পরিমাণে পূজার্চনা করলে কিংবা অধিকমাত্রায় উপবাস করলে প্রসন্ন হন না। বরং আমাদের ভালো অভ্যাস, ভালো আচার-আচরণ, ভালো কাজের উপর নির্ভর করে তিনি আমাদের উপর প্রসন্ন হন। আমরা যদি সৎ মনে ভগবানকে কাছ থেকে অনুভব করতে চাই তাহলে আমাদেরকে আমাদের জীবনের কিছু অভ্যাসগত পরিবর্তন অবশ্যই করতে হবে। কিছু ভালো অভ্যাস কে নিজের জীবনে অবশ্যই শামিল করতে হবে। এরকমটা করার ফলে আপনি আপনার আরাধ্য দেবদেবীর কৃপা অবশ্যই পাবেন। আর যখন ভগবান আমাদের উপর প্রসন্ন হন তখন আমাদের জীবন সব রকমের আনন্দ ও খুশিতে ভরে ওঠে। এর প্রভাব আমাদের আর্থিক দিক থেকেও দেখা যায় এবং এর সাথেই পারিবারিক জীবনের সকল সমস্যা সমাধান হয়। 


এই কারণেই বন্ধুরা আজকে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চলেছি - ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দ্বারা বলা 4টি অভ্যাস সম্পর্কে। এই অভ্যাসগুলো প্রতিনিয়ত করতে পারলে কেউ যদি জীবনে পূজা পাঠ করার সময় নাও পান, এই অভ্যাস গুলির ফলে তার জীবনে সুখ-শান্তি নেমে আসবে। 


প্রথমত, বন্ধুরা ঈশ্বরের থেকে বড় কেউ নয়। এইজন্য ঘুম থেকে ওঠার পর আমাদের সবার প্রথমে নিজেদের আরাধ্য দেবদেবীর স্মরণ করা উচিত। আমাদের পরিবারের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আমাদের ওপর আমাদের কুলদেবতার কৃপা দৃষ্টি থাকা আবশ্যক। আপনি যদি রোজ পূজা পাঠ করার সময় নাও পান, সেক্ষেত্রেও ঘুম থেকে উঠে নিজের কুল-দেবতাকে বা আরাধ্য দেবদেবীকে প্রতিদিন স্মরণ করা উচিত। কুল দেবতার বার হিসাবে সপ্তাহের সেই দিনটি বেছে নিয়ে মন্ত্র উচ্চারণ এর মাধ্যমে কুলদেবতাকে স্মরণ করা উচিত। পরিবারের সকল সদস্যদের প্রতিদিন নিয়ম করে সকাল সন্ধ্যা কুলদেবতাকে স্মরণ করা উচিত। আর যদি বাড়িতে তুলসী মন্দির থাকে তাহলে তুলসী মন্দিরে রোজ অবশ্যই একটি প্রদীপ জ্বালানো আবশ্যক। এই একটি অভ্যাস প্রত্যেকদিন করলে আপনার পরিবারের উপর আপনার কুল দেবতার আশীর্বাদ সব সময় থাকে। 


দ্বিতীয়ত, আমাদের ধর্মে এটা মানা হয় সকালবেলায় স্নানপর্ব না সেরে রান্না ঘরে প্রবেশ করা উচিত নয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনেকেই এই বিষয়টি মেনে চলেন না। কারণ বর্তমান সময়ের পরিস্থিতি আগের থেকে অনেকটাই পরিবর্তন হয়ে গেছে তাই অনেকে চাইলেও এই অভ্যাসটি করে উঠতে পারেন না। এই কারণেই স্নান করতে না পারলেও অন্তত সকালবেলায় হাত মুখ ধোয়ার পরে রান্না ঘরে প্রবেশ উচিত। রান্না ঘরে প্রবেশ করার পর ভাত বা অন্ন, কিমবা কিছু রান্না করার আগে রান্নাঘরে উনুনের আগুনকে অর্থাৎ অগ্নিদেবকে অবশ্যই একবার প্রণাম করে নিন। এমনটা করার ফলে অগ্নিদেবের সাথে সাথে মাতা অন্নপূর্ণারও আশীর্বাদ পাওয়া যায়। এর সাথে এই বিষয়টিও মাথায় রাখবেন কখনো অন্নের অপমান যেন না হয়। 


তৃতীয়ত, বন্ধুরা কিছু কথা এমনও রয়েছে যেগুলো যদি আমরা আমাদের অভ্যাসে পরিবর্তন করে নিতে পারি তবে আমরা ঈশ্বরকে প্রসন্ন করার সাথে সাথে আমাদের নিজের মনেও আনন্দ হয়ে থাকে এবং সন্তুষ্টির ভাবনা জেগে ওঠে আমাদের মনে। এর ফলে আমাদের জীবনে পজিটিভ এনার্জি গুলোও বেড়ে ওঠে। এই অভ্যেস গুলি হল - যেমন ধরুন অকারনেই কখনো কোনো খারাপ কথা না বলা, যার ফলে অন্য কারো মন খারাপ হয়ে যায়। কখনোই কোনো কারণ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তির অপমান করা উচিত নয়। কখনোই বাড়ির গুরুজনদের এবং বৃদ্ধ মানুষদের অসম্মান করা কিংবা অপশব্দ প্রয়োগ করে কথা বলা উচিত নয়। বাড়ির মহিলাদের সুরক্ষা এবং সম্মান যাতে বজায় থাকে সেই বিষয়টি মাথায় রাখা, বাড়িতে কোনো গরীব দুস্থ কিংবা কোনো ভিখারি এলে তাদেরকে যথাসম্ভব দিয়ে সাহায্য করা, যে কোনো পশুর উপর কখনো অত্যাচার না করা প্রভৃতি। এই অভ্যাসগুলো যদি আপনি আপনার মধ্যে আনতে পারেন তাহলে ভগবানের কৃপা আপনার উপর সবসময় থাকবে।


চতুর্থত, মানুষদের চলার পথে নিরন্তর এই বিষয়টির উপর খেয়াল রাখা উচিত তার পায়ের নিচে বা পায়ের পাড়াতে কোনো ছোট কীটপতঙ্গ বা ছোট পিঁপড়ে পোকামাকড় প্রভৃতির মৃত্যু যেন না হয়। যখনই বাড়ির বাইরে কোথাও বেরোবেন অবশ্যই ভগবানের নাম স্মরণ করে তারপরে বেরোনো উচিত। যেই মানুষদের মধ্যে এই অভ্যাসগুলো থাকে সেই মানুষ ভগবানের খুবই প্রিয় হন। এই ধরনের মানুষকে ভগবানও আকাশ থেকে হাত জোড় করে প্রণাম করেন। 


এই অভ্যাসগুলো যে মানুষ নিজের জীবনে শামিল করতে পারবেন সেই মানুষের জীবনে সব সময় পজিটিভ এনার্জি বিরাজ করবে এবং নেগেটিভ এনার্জি কিংবা দরিদ্রতা তাকে ছুঁতেও পারবে না। 


তো বন্ধুরা এটাই ছিল সেই চারটি অভ্যাস যা নিজের জীবনে শামিল করলে ভগবানের আশীর্বাদ সর্বদা মানুষের সাথে থাকে।


বন্ধুরা আশাকরি লেখাটি পরে আপনারা সম্মৃদ্ধ হয়েছে। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আজ এখানেই শেষ করলাম। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক। 

আরো পড়ুন:- Bhagwat Geeta Saar - ভগবত গীতার পুরো সারাংশ || How to reach God?  CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা