Breaking

Search Content

Follow Us

শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০২২

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মতে, কোন কোন কর্মের পাপ আমাদের লাগেনা? | Karma that are not Evil


নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।


বন্ধুরা আপনারা গীতার উপদেশ দেওয়া এরকম অনেক জ্ঞানী মহাত্মাদের কাছে কর্মের বিষয়ে বলতে শুনেছেন হয়তো যে, কর্মের সাজা এই জনমেই ভুগতে হয়। এই কথা শোনার পরেই অনেক লোক তাদের নিজের জীবনে করা সকল পাপ এর ব্যাপারে মনে করা শুরু করে দেন। কিন্তু, এর মধ্যে বেশির ভাগ লোক এটা জানেন না যে, ভগবদ্গীতায় এমন কিছু কর্ম সম্পর্কে বলা হয়েছে যেই কর্মের পাপ আমাদের লাগেনা। আর সেই কর্ম গুলি কি কি - চলুন বন্ধুরা জেনে নেয়া যাক আজকের এই লেখাতে।


বন্ধুরা ভগবদ্গীতা এরকম একটি গ্রন্থ যেখানে মানুষের মনে উৎপন্ন হওয়া সকল প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়। যেমন ধর্মশাস্ত্র বিশেষজ্ঞ অধিকতম মানুষ এটা জানেন হয়তো ভগবদ্গীতার জ্ঞান মহাভারতের যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে দিয়েছিলেন। কেননা অর্জুন যুদ্ধ শুরুর সময় মহোমায়াতে পড়ে ভাইয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে রাজি হয়নি। তখন ভগবান কৃষ্ণ অর্জুনকে এমন কিছু জীবনের কঠিন সত্য ও রহস্য সম্পর্কে বলেছিলেন যার অনুসরণ করে যে কোনো মানুষ মুক্তি লাভ করতে পারে। যার মধ্যে একটি অধ্যায় অনুযায়ী অর্জুন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে বলেন - হে পরমাত্মা, আপনি তো সব সময় বলেন যদি মনকে পুরোপুরিভাবে বশে রাখা যায় তাহলে মুক্তির দুয়ার খুলে যায়। কিন্তু, আপনি কি আমাকে এর জন্য কোন সোজা উপায় বলতে পারেন? 

এরপর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে - হে অর্জুন, তুমি যদি এমনটাই চাও তাহলে মুক্তি পাওয়ার জন্য একটি সরল রাস্তা রয়েছে। কিন্তু, একটি সরল হওয়ার সাথে সাথে জটিলও। এইজন্য তোমাকে ধীর মতি হতে হবে। মতি অর্থাৎ বুদ্ধি। যেই মানুষটি ধীরমতি সম্পন্ন তার কাছে মুক্তি লাভ করা কোনো জটিল ব্যাপার নয়। কিন্তু, এরই বিপরীত যেই মানুষের মতি শান্ত নয় সে তার পুরো জীবন কালে এই কার্য টি করতে পারবে না।


উত্তর পাওয়ার সাথে সাথেই অর্জুন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে আবার জিজ্ঞাসা করলেন - হে প্রভু, এখন আপনি আমাকে এটা বলুন নিজের মনকে কিভাবে শান্ত করা যায়? 


এর উত্তর দিতে গিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বললেন - হে পার্থ, নিজের মনকে শান্ত রাখার জন্য সবথেকে বড় জিনিস হলো বিশ্বাস। যেই ব্যক্তি পরমাত্মাতে বিশ্বাস করে নিজের কর্তব্যকে পালন করে চলে তার মন সব সময় শান্ত থাকে। আর ওই ব্যক্তি নিজের মন কে বশ করে নিজের জীবনের পথে সবসময় এগিয়ে চলে। 


শ্রীকৃষ্ণের এই কথার পরেই অর্জুন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে বলেন - হে প্রভু, আমি আপনার বলা সকল কথা ও শিক্ষা নিজের জীবনে অবশ্যই অনুসরণ করব। কিন্তু, এখন আপনি আমাকে এটি বলে কৃপা করুন যে, কোন পাপ কর্মের ফল মানুষের ভোগ করতে হয় না?


তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বললেন - হে অর্জুন, যদি কোনো কাজ নিষ্কাম কর্মযোগে ভালোর জন্য করা হয়, তাহলে সেই কাজের নাতো পাপ লাগে নাতো পূর্ণ। এরপরে অর্জুন ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে বললেন- হে মাধব, এই নিষ্কাম কর্মযোগ মানে কি? আমি এই ব্যাপারে কিছুই জানিনা; কৃপা করে আমাকে এই ব্যাপারে বলুন। এর সাথে এটাও বলুন - এই কাজটি কি করে করতে হয়? 


এরপর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন - মানুষ যেই সময় থেকে ফল পাওয়ার বদলে নিজের কর্তব্য নেভানোর জন্য কাজ করতে শুরু করে সেই সময় থেকেই সে নিষ্কাম কর্ম সাধকরূপে গণ্য হয়। এর সাথে শ্রীকৃষ্ণ আরো বলেন - যদি কোনো মানুষ ফলের আশা ত্যাগ করে কর্ম করতে শুরু করে, তাহলে তার কোনো প্রকার পাপ অথবা পুণ্য লাগেনা।


এরপরেই অর্জুন আবার তার প্রশ্ন করলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে - যদি কোন ব্যক্তি ফলের আশা ত্যাগ করে কর্ম করতে শুরু করে তাহলে তার কোনো উদ্দেশ্যই হবে না। তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের এই বিভ্রান্তি দূর করে উত্তর দেন - হে পার্থ, কখনো ফল পাওয়ার উদ্দেশ্যে কর্ম করা উচিত নয়। বরং কর্মতো নিজের কর্তব্য পালন করার জন্য করা উচিত। কেননা কর্মের ফল তোমার হাতে নেই। কর্মই হলো সেই জিনিস যা তোমার হাতে রয়েছে। এইজন্য কখনো ফলের আশা করা উচিত নয়।


বন্ধুরা এই প্রসঙ্গে আপনাদের বলে দি আরো কিছু ধর্মগ্রন্থে এমন কর্মের বর্ণনা পাওয়া যায় যার পাপ আমাদের লাগেনা। এর মধ্যেই একটি কর্ম হল 'কর্তব্য'। যা ভগবানকে অর্পণ করে দিলে যে কোন প্রকার কর্মের পাপ আমাদের লাগেনা। এছাড়াও যে কর্ম করার শুরুতেই মনে ভগবান কে নিয়ে কর্মটি শুরু করা যায় এমন সকল কর্মের পাপ অথবা পূর্ণ আমাদের লাগেনা। এছাড়া সেই কর্ম যা আমাদের বেদ ও পুরাণে নিষিদ্ধ, আর যা করলে পাপ বলে গণ্য করা হয় - এই ধরনের কাজ অথবা কর্ম থেকে সকল মানুষকেই সাবধানে থাকতে হবে। সকল জন-মানুষকে এই ধরনের কাজ করা থেকে এড়িয়ে চলতে হবে। 


তো বন্ধুরা এই ছিল সেই কাজগুলো করলে আমাদের পাপ অথবা পূর্ণ লাগেনা। এই ধরনের কর্ম বা কাজগুলি করার পর মানুষদের কোন পাপের ভাগীদার হতে হয় না।


বন্ধুরা আশাকরি লেখাটি পরে আপনারা সম্মৃদ্ধ হয়েছে। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আজ এখানেই শেষ করলাম। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো পড়ুনঃ- ভগবান মহাকাশের কোথায় থাকেন | বেদে উল্লিখিত 10 টি আয়াম কোথায় অবস্থিত | 10 Dimensions in Hinduism CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা