Breaking

Search Content

Follow Us

শনিবার, ২৮ মে, ২০২২

বিবাহিত মহিলাদের শাখা পলার গোপন রহস্য - হাতের শাখা বা নোয়া বেড়ে গেলে বা ভেঙে গেলে যা করতে হয়


 নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।  


সনাতন ধর্মের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আজকে এই লেখার মাধ্যমে আপনাদের সামনে আলোচনা করব তা হলো - বিবাহিত মহিলাদের শাখা পলা যদি কোনো কারণে বেড়ে যায় অর্থাৎ যদি শাখা পলা ভেঙ্গে গিয়ে থাকে তাহলে কখনই যে কাজ করা উচিত নয় - সেই সম্পর্কে।


শাখা বা পলা যদি কখনো ভেঙে গিয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই সেই ভেঙে যাওয়া শাখা বা পলাকে এই জায়গায় ফেলতে হয়, নচেৎ সংসারের অমঙ্গল নেমে আসে এবং আপনাদের সামনে আলোচনা করব হিন্দু বিবাহিত মহিলারা কেন শাখা বা পলা পরিধান করেন? - এর পেছনে কোন তাৎপর্য লুকিয়ে রয়েছে? এগুলি শুধুমাত্র অলংকার নাকি আরো অন্য কিছু জড়িয়ে রয়েছে এর সঙ্গে? - নিঃসন্দেহে এই বিষয়গুলো জেনে আপনি এর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবেন - আজকের এই লেখাটির এবং যারা এই বিষয়গুলি জানে না তাদের উদ্দেশ্যে লেখা টি অবশ্যই শেয়ার করবেন।


হিন্দু বাঙালি বিবাহিত নারীর এক অবিচ্ছেদ্য অলংকার হল - এই শাখা বা পলা এবং নোয়া। যদিও আধুনিককালে অনেক বিবাহিতা এই শাখা পলা পড়াকে বাধ্যতামূলক মনে করেন না, তথাপি শাখা, পলা, নোয়া হিন্দু বাঙালি বা সদবা নারীর অন্যতম ভূষণ বলে আজও মনে করা হয়। তবে বিবাহিত নারীর এই শাখা-পলা-নোয়া শুধুমাত্র তাদের ভূষণ বলেই নয়, এরই সাথে স্বামী ও সংসারের মঙ্গল কামনার উদ্দেশ্যেও এগুলি পরিধান করা হয়। তবে তার থেকেও বড় কারণ রয়েছে - 'আধ্যাত্বিক কারণ' এবং এটি সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শাখার সাদা রং- 'সত্ত্বগুণের' প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়। 


অন্যদিকে পলার রং- লাল যা 'রজোগুণের' প্রতীক এবং নোয়া পড়া হয় অর্থাৎ, লোহা পরা হয় সেটির রং হয়- কালো। এটি তমগুনের প্রতীক। সংসারকে সুন্দর ভাবেই পরিচালনা উদ্দেশ্যে নারীকে নিজেই তিনগুণের সামঞ্জস্য রাখতে হয়। সত্ত্ব, রজঃ, তম - এই তিন গুণে সামঞ্জস্য বিধানের উদ্দেশ্যে শাখা, পলা, নোয়া পরিধান করার কথা বলা হয়েছে। যার মাধ্যমে নারী যেমন প্রয়োজনবোধে সত্ত্বগুণের প্রকাশ ঘটিয়ে সংসারের সুখ ও শান্তি নিয়ে আসতে পারে। ঠিক তেমনি রজোগুণের প্রকাশ ঘটিয়ে পরমাসুন্দরী হয়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি তমগুণের বিকাশ ঘটিয়ে অশুভ শক্তিকে ধ্বংস করতে পারে। তাই এই শাখা,পলা, নোয়া - পরিধান করার অর্থ হলো নারীর তিনটি শক্তিকে জাগ্রত করা।


বন্ধুরা এই শাখা, পলা, নোয়া পড়ার মাধ্যমে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো মানসিক এবং সামাজিক কারণ। মূলত বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মানসিক সম্পর্ককে মজবুত করে এই শাখা, পলা, নোয়া। এগুলি পরিধানের মাধ্যমে বৈবাহিক বন্ধন আরো দৃঢ়তা প্রাপ্তি পায়। নারী যখন পিতার সংসার ত্যাগ করে স্বামীর সংসারে প্রবেশ করে তখন স্বাভাবিকভাবেই মনের ভেতর একটা শূন্যতা তৈরি হয়। আর এই শূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে এই সিঁদুর, শাঁখা, পলা, নোয়া ইত্যাদি পরিধান করার মাধ্যমে।


বন্ধুরা এর পাশাপাশি জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে পলা বা লাল প্রবাল অশুভ, অমঙ্গলের হাত থেকে রক্ষা করে। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী লাল রং সাহসের প্রতীক। তাই লাল রং-এর 'পলা' পরিধান করার মাধ্যমে মহিলাদের কর্মক্ষমতা, সাহস, মনোবল এবং সুস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।


অন্যদিকে শাখা পরিধান করার মাধ্যমে মহিলাদের শরীর ও মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে গরম আবহাওয়ায় এই বিষয়টি আরও বেশি করে কার্যকরী হয়। এই কারণেই রাজস্থানের মহিলাদের নিজেদের হাতে একের অধিক বেশি পরিমাণে শাখা পড়তে দেখা যায়। বৈজ্ঞানিক কারণ অনুযায়ী শাখার যে সাদা রং তা - পবিত্রতা, সতীত্ব এবং যে কোনো রকমের শুভ সূচনার প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়।


আশাকরি বন্ধুরা হিন্দু বিবাহিত মহিলারা কেন শাখা, পলা, নোয়া পরিধান করে - এই বিষয়টি বুঝতে আপনি সক্ষম হয়েছেন।


বন্ধুরা যদি কোনো কারণে এই শাখা, পলা, নোয়া ভেঙে গিয়ে থাকে তখন কি করা প্রয়োজন? - তাহলে আপনাদের বলি, যদি কখনো এই শাখা-পলা বা নোয়া ভেঙে গিয়ে থাকে তাহলে এই কথাটি মুখ থেকে কখনোই বলতে নেই। কারণ এই বিষয়টিকে অমঙ্গল হিসেবে গণ্য করা হয়। তাই এই শাখা বা পলা যদি কোনো কারণে ভেঙে গিয়ে থাকে তখন বলতে হয় যে, এটি বেড়ে গেছে। কারণ ভাঙ্গার প্রসঙ্গ তখনি আসে যখন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয় বা বিশেষ করে স্বামী যখন মারা যান তখন হাতের এই নোয়া ও শাখা ভেঙে দেওয়া হয়।তাই 'ভেঙে গেছে' এই কথাটি কখনোই বলতে নেই। যদি কখনো শাখা, পলা কিংবা নোয়া ভেঙে গিয়ে থাকে তাহলে সেই ভেঙে যাওয়া শাখা, পলা, নোয়া কখনোই হাতে পরিধান করবেন না। এই বিষয়টি অত্যন্ত অমঙ্গলজনক বলে বিবেচনা করা হয়। তাই ভেঙে যাওয়া শাখা, পলা কিংবা নোয়া কে প্রথমে একটি কাগজে মুড়িয়ে কোনো নদী, পুকুর বা অন্য কোনো জলাশয়ে ফেলে দিন। কিন্তু, কোনভাবেই সেটিকে ড্রেনে ফেলবেন না বা বাড়ির যত্রতত্র রেখে দেবেন না। যদি আপনার বাড়ির আশেপাশে কোনো প্রকার জলাশয় না থাকে তাহলে আপনার বাড়িতে যে তুলসী গাছে রয়েছে সেই তুলসী গাছের নিচে মাটিতে পুতে দিন। 


বন্ধুরা এই প্রসঙ্গেই বলি তুলসী গাছের সঙ্গে শাখার কি সম্পর্ক - সেটা কি আপনি জানেন? না জেনে থাকেন সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। পরবর্তী কোনো লেখাতে এই বিষয়টি সম্পর্কে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব।


বন্ধুরা আশাকরি এই লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক। 


আরো পড়ুনঃ- মহাভারতের সাতজন মায়াবী ও শক্তিশালী মহিলা।CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা