Breaking

Search Content

Follow Us

সোমবার, ১৩ জুন, ২০২২

কে, কেন চালিয়েছিল শ্রীকৃষ্ণের উপর ১২ টি ঘাতক বাণ? || মহাভারতের যুদ্ধের - এক রহস্যময় ঘটনা।


নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।


আজকে আপনাদের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হল - শেষমেষ কোন যোদ্ধা চালিয়েছিল ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ওপর ১২ টি ঘাতক তীর? 


বন্ধুরা বলা হয় যে, মহাভারতের যুদ্ধে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুন এবং দূর্যোধন কে দুটি শর্ত দিয়েছিলেন। এক, হয়তো সে ভগবান কৃষ্ণ, যিনি যুদ্ধ চলাকালীন কোন অস্ত্র তুলবেন না - তাকে বেছে নিক আর না হয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শক্তিশালী নারায়নীকে সেনা বেছে নিক, যা কখনো  কোনো যুদ্ধে হারেনি। দূর্যোধন নারায়ণী সেনাকে বেছে নিয়েছিলেন আর অর্জুন স্বয়ং ভগবান কৃষ্ণকে বেছে নিয়েছিলেন। এবার এরকম সময় প্রশ্ন ওঠে যে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণতো কোনরকম অস্ত্র না নিয়ে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তাহলে, সেই যোদ্ধা কে ছিল - যে স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ওপর ১২ টি তীর চালিয়েছিল অর্থাৎ বারোটি ঘাতক বান ছেড়েছিল।  বন্ধুরা আপনাদের বলে দেই সেটা আর কেউ ছিলনা স্বয়ং সূর্যপুত্র কর্ণ ছিলেন।


চলুন বন্ধুরা জানা যাক সেই সময় ঠিক কি হয়েছিল, যার কারণে কর্ণকে ১২ টি তীর ভগবান কৃষ্ণের ওপর চালাতে হয়েছিল।


এই কথা যুদ্ধের ১৭ তম দিনের, যখন কর্ণ এবং অর্জুন সামনাসামনি ছিলেন। দুজনের মধ্যে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হচ্ছিল, দুই যোদ্ধা একে অপরের ওপর বিভিন্ন রকমের অসীম শক্তির প্রয়োগ করেছিল, বিভিন্ন রকম ঘাতক তীর চালাচ্ছিল। কর্ণের নীতি ছিল যে, সে অর্জুনকে শেষ করতে চায় আর অর্জুন চাইছিলো যে সে কর্ণকে শেষ করবে। কারণ দুজনের মধ্যেই ছোটবেলা থেকেই প্রতিশোধের আগুন জ্বলছিল। দুজনেই একে অপরকে সর্বশ্রেষ্ঠ ধনুরবীর বলে মনে করত। তারপর সেই সময় খুব তাড়াতাড়িই এগিয়ে এলো, যখন কর্ণ অর্জুনকে হারানোর জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী বান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই বান কর্ণ অনেক বছর ধরে যত্নে রেখেছিল অর্জুনের ওপর চালানোর জন্য। বাস্তবে এই বান পাতালে অশ্বসেন নামে এক নাগ যে অর্জুনের পরম শত্রু ছিল এবং তার শত্রুতার মুখ্য কারণ ছিল খান্ডব বনে অর্জুন তার সম্পূর্ণ ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ফেলেছিলো, আর যে সমস্ত সাপ খান্ডব বনে ছিল তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিয়েছিল, অশ্বসেন তখন থেকেই অর্জুন কে হত্যা করার জন্য সুযোগ খুঁজছিল। বিভিন্ন রকম ধার্মিক মহাভারত সিরিয়ালে আপনি দেখেছেন হয়তো - অর্জুনকে তক্ষক নাগ মারতে চেয়েছিল। মহাভারতের বিভিন্ন আলাদা আলাদা গ্রন্থে তাকে আলাদা আলাদা নাম দেওয়া হয়েছে। কেউ অশ্বসেন বলে আবার কেউ তক্ষক নাগ। আর মুখ্য যুদ্ধের সময় অশ্বসেন প্রথমেই কর্নের বানকে বেছে নিয়েছিল। কেননা সে জানতো শুধুমাত্র কর্ণই অর্জুন কে হত্যা করতে পারবে। সে সুযোগ খুঁজছিল, কর্ণকে সর্প বান প্রয়োগ করতে দেখে অশ্বসেন নিজে কর্নের বানের মধ্যে গিয়ে বিরাজ করে। কর্ণ - অর্জুনের উপর তীরের নিশানা চালায়। অর্জুন বানরূপ ধারণ করা নাগকে চিনতে পারেনি, যেখানে অর্জুনের রথের সারথি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ - অশ্বসেনকে তখনই চিনতে পেরেছিলেন । আর অর্জুনের প্রাণের রক্ষার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার পা দিয়ে রথকে মাটিতে ডাবিয়ে দেয়। রথের চাকা মাটিতে ফেঁসে যায়, ঘোড়া বসে যায় আর তীর অর্জুনের গলার বদলে শ্রীকৃষ্ণের মস্তক অর্থাৎ তাঁর মুকুটে লেগে ছিটকে পৃথিবীতে পরে। এইভাবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বাঁচিয়ে নেন। অর্জুন আর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ রথের ফেঁসে যাওয়া চাকা বার করার জন্য নীচে নামে আর তখনই সুযোগ দেখে কর্ণ অর্জুনের ওপর অস্ত্র চালানো শুরু করে দেয়। তখনই অর্জুনের ঢাল হয়ে আর কেউ নয় স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এসে দাঁড়ায়। এই সময় বারোটি তীর অর্থাৎ 12 টি ঘাতক বাণ গিয়ে শ্রীকৃষ্ণের শরীরে গেঁথে যায়। সৃষ্টির রচয়িতা ভগবান বিষ্ণুর অবতার স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ওই বানের আঘাত সহ্য করে নেন। তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ - অর্জুনকে অশ্বসেনের কথা বলেন আর অর্জুন ছয়টি তীরের সাহায্যে অশ্বসেনকে টুকরো টুকরো করে দেয়। এইভাবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং আঘাত সহ্য করে তাঁর পরমপ্রিয় অর্জুনকে বাঁচিয়ে নেন।

                                    

শুধুমাত্র এই কারণে কর্নের বারোটি তীরের আঘাত স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পেয়েছিলেন।


বন্ধুরা আশাকরি লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো পড়ুনঃ- ভালো মানুষেরা খুব তাড়াতাড়ি মারা যান কেন? CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা