Breaking

Search Content

Follow Us

শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০২২

শ্রীকৃষ্ণের অন্তিম সংস্কারের পরেও - কেন আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়নি, এই অঙ্গটি?


নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।


বন্ধুরা যখন কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হয় তখন তার শরীর শিথিল হয়ে যায়, আর সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু, যখন ভগবান কৃষ্ণ তাঁর শরীর ত্যাগ করেছিলেন আর তাঁর অন্তিম সংস্কার করা হয়, তখন তাঁর শরীরের একটি অংশ জীবিত ছিল। বন্ধুরা হতে পারে এটা শুনতে কিছুটা অদ্ভুত মনে হবে, কিন্তু পুরানে দেওয়া আছে যে - আজও ভগবান কৃষ্ণের একটি অঙ্গ জীবিত রয়েছে। যেটাকে একটি মন্দিরের মূর্তিতে সুরক্ষিত করে রাখা হয়েছে। তাহলে শ্রীকৃষ্ণের সেই অঙ্গ কোনটি, আর সেটিকে কোথায় রাখা হয়েছে? - এই বিষয়টি সম্পর্কেই জানাবো আজকে আপনাদের এই লেখাটিতে।


দ্বাপর যুগে যখন ভগবান শ্রী হরি - শ্রীকৃষ্ণের রূপে অবতরণ হয়। তখন সেটা তার মানব রূপ ছিল, আর সৃষ্টির নিয়ম অনুসারে সমস্ত মানুষের মতনই ভগবান বিষ্ণুর এই রূপের মৃত্যুও নিশ্চিত ছিল। বলা হয় যে মহাভারত যুদ্ধের শেষে গান্ধারী ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে অভিশাপ দিয়েছিলেন যে, যেভাবে আমার বংশের বিনাশ হয়েছে সেইভাবে তোমার এবং তোমার বংশেরও বিনাশ হবে। বন্ধুরা যুদ্ধ শেষ হওয়ার 36 বছর পর গান্ধারীর এই অভিশাপের প্রভাব দেখা দিল। অভিশাপের কারণে দ্বারকায় বিপদ দেখা দিল, আর একটি গৃহযুদ্ধে সমস্ত যাদব বংশীয়দের মৃত্যুও হয়ে গেল। এরপর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দ্বারকা ছেড়ে চলে যান। তারপর তিনি একটি গাছের নিচে বসে ধ্যান (বিশ্রাম) করছিলেন। ঠিক তখনই সেখানে জিরু নামের এক ব্যাধ একটি হরিণের পেছনে করতে করতে সেখানে পৌঁছে যায়, কৃষ্ণের পা কে হরিণ ভেবে সে তীর চালায়। আর সেই তীর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পায়ে গিয়ে লাগে। জিরু কাছে গিয়ে দেখে ও তখন তার ভুল বুঝতে পারে। সে ভগবানের কাছে  ক্ষমা চাইতে থাকে। কিন্তু জিরু জানতো না যে তার হাত দিয়ে ভগবান কৃষ্ণের মৃত্যু হওয়া স্বয়ং ভগবানের লীলার একটি অংশ ছিল। এরপর শ্রীকৃষ্ণ তাকে বোঝায় যে এতে তার কোন দোষ নেই, বরং তাকে এভাবেই পৃথিবী ত্যাগ করতে হবে। ভগবান বলেন যে, ত্রেতা যুগে শ্রীরামের অবতারদের মধ্যে সুগ্রীবের বড় ভাই বলী কে তিনি লুকিয়ে বধ করেছিলেন। আর সেই পূর্ব জন্মের শাস্তি তাকে এই জন্মে পেতে হয়েছে। আর জিরুই পূর্ব জন্মে বলী ছিলেন। এই কথা বলে শ্রীকৃষ্ণ তার শরীর ত্যাগ করেন।


মান্যতা অনুসারে ভগবান কৃষ্ণ শরীর ত্যাগ করার পরে অর্জুন আর বাকি পাণ্ডবেরা তার অন্তিম সংস্কার করেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুরো শরীর অগ্নির মধ্যে মিলিয়ে যায়। কিন্তু, তাঁর হৃদয় যেটি একইভাবে কম্পিত হচ্ছিল, আর এই দৃশ্যটি দেখার পরে সেখানে উপস্থিত সমস্ত লোক অবাক হয়ে যায়।  কিন্তু, কেউ কিছু বোঝার আগেই এক আকাশবাণী হয়। যাতে বলা হয়- এটি ব্রহ্মার হৃদয় আর এটিকে সমুদ্রের প্রবাহিত করে দেওয়া হোক। এরপর অর্জুন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের হৃদয় কে সমুদ্র প্রবাহিত করে দেন। 


বন্ধুরা বলা হয় যে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের হৃদয় আজও পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে উপস্থিত রয়েছে। যেখানে সেটি মূর্তির মধ্যে বিরাজমান রয়েছে। ভগবানের এই হৃদয় অংশটিকে ব্রহ্মপদার্থও বলা হয়। ভগবান শ্রী জগন্নাথের মূর্তি নিমের কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়, আর প্রত্যেক 12 বছরে যখন ভগবান জগন্নাথের মূর্তি পরিবর্তন করা হয় তখন এই ব্রহ্মপদার্থ কে পুরানো মূর্তি থেকে বার করে নতুন মূর্তিতে রাখা হয়। বন্ধুরা যখন এই অনুষ্ঠানটি করা হয় সেই সময় সমস্ত শহরের বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার পরে মূর্তি পরিবর্তন করা পূজারী ভগবানের হৃদয় কে পরিবর্তন করেন। আর যিনি এই কাজ করে তার চোখে কাপড় বেঁধে দেওয়া হয়। কেননা মান্যতা অনুসারে, যে এই হৃদয়কে দেখে নেবে তার তখনই মৃত্যু ঘটবে। এই অনুষ্ঠান করা পূজারীরা বলেন যে, যখন তারা হৃদয়কে একটি মূর্তি থেকে অন্য মূর্তিতে রাখেন, তখন সেই সময় তারা হৃদয়ের কম্পন অনুভব করে। আর যখন তারা সেটিকে হাতে ধরে তখন তাদের মনে হয় যে কোনো একটি ছোট খরগোশ তাদের হাতে খেলা করছে। 


তাহলে বন্ধুরা আশাকরি আজকের লেখা টি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার ধন্যবাদ ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো পড়ুনঃ- শ্রীকৃষ্ণ অনুসারে 3টি এমন কার্য - যার ফলে মানুষ হয়ে যায় বরবাদ || What Krishna says on "Why we Fail " ? CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা