নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
বন্ধুরা এই কলিযুগে হিমালয়ের চার ধাম যাত্রাকে সত্যযুগ তুল্য বলে মনে করা হয়। চারধাম অর্থাৎ যমুনোত্রী থেকে শুরু করে গঙ্গোত্রী ও কেদারনাথের পরে বদ্রীনাথের এই যাত্রা - যার সোজাসুজি বিচার মন, ভাবনা ও আত্মার শুদ্ধি । আর এই সত্যটি নিয়ে আপনারা সকলেই জানেন হয়তো, যে- হালেই 3ই মে প্রবিত্র অক্ষয় তৃতীয়ায় গঙ্গোত্রী ও যমুনোত্রী ধামের দরজা খোলার সাথেই চারধাম যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। আর বন্ধুরা যখনই কেদারনাথ ও বদ্রীনাথ ধামের দরজা খুলেছে তখনই এই চারটে ধামে তীর্থযাত্রীদের আগমন খুবই বেড়ে গেছে। এমনটা হওয়া স্বাভাবিক, কেননা বছরে একবার প্রাপ্ত হয় এই সৌভাগ্যকে কেইবা ছাড়তে চাইবে। কিন্তু, অনেক সময় বহু তীর্থযাত্রী এমন দুর্ঘটনারও শিকার হন যারা মোক্ষ লাভের এই পথে চলতে চলতেই মৃত্যুর দর্শন করে নেয়। এরকম সময় মানুষের মনেও বহু প্রশ্ন জাগে। যে কিভাবেই-বা একজন মানুষ তীর্থযাত্রা করতে করতে সোজা ভগবানের কাছে চলে যান? আর এরকমভাবে মরা ব্যাক্তি কি স্বর্গলোক লাভ করেন? - বন্ধুরা যদি এই প্রশ্নের উত্তর আপনিও জানতে চান তাহলে আজকের এই লেখা টি সম্পূর্ণ পড়ুন।
বন্ধুর সবার প্রথমে আপনাদের উদ্দেশ্যে একটি প্রশ্ন, আপনি কি চার ধামের মাহাত্ম্য সম্পর্কে জানেন?
যদি না জেনে থাকেন তাহলে বলি, চারটি ধামে সম্মিলিত দিবিও আত্মাদের নিবাস বলে মানা হয়েছে। আর হিন্দু ধর্মে এই চার ধাম কে সব থেকে পবিত্র স্থানের উপাধিও দেয়া হয়েছে। কেদারনাথ কে যেখানে ভগবান সংকটের আরাম করার স্থান বলা হয়েছে সেখানে অন্যদিকে বদ্রীনাথকে সৃষ্টির অষ্টম বৈকুণ্ঠ বলা হয়। এখানে ভগবান বিষ্ণুর ছয় মাসের জন্য নিদ্রায় থাকেন। আর বাকি ছয় মাস জাগ্রত অবস্থায় থাকেন। এখানে স্থাপিত বদ্রীনাথের মূর্তি শালগ্রাম শিলা দিয়ে তৈরি। চতুর্ভুজ ধ্যান মুদ্রাতে রয়েছে যেখানে নর-নারায়ণ বিগ্রহের পূজা হয়। শুধু তাই নয় এখানে নিরন্তর ভাবে জ্বলা অখন্ড দ্বীপটিও জ্ঞানজ্যোতির প্রতীক।
শি্ব পুরাণের কটি রুদ্র সহিতাতে স্পষ্টরূপে বর্ণিত রয়েছে যে, বদ্রীনাথের স্থাপনা সত্যযুগে নারায়ন করেছিলেন। মান্যতা তো এটাও রয়েছে যে, ভগবান কেদারেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের দর্শনের পর ভগবান বদ্রীনাথে নর-নারায়ণের দর্শন করতে পারলে মানুষের সকল পাপ ধুয়ে যায়। আর সে জীবন মরণের এই প্রক্রিয়া থেকে মুক্ত হয়।
কেদার ঘাঁটির কথা বললে বলতে হয় যে, কেদার ঘাঁটিতে দুটি পর্বত রয়েছে। এগুলি হল - নর এবং নারায়ণ। পুরাণ অনুসারে এগুলি ভগবান বিষ্ণুর 24 টি অবতারের মধ্যে নর এবং নারায়ণের তপভূমি। পুরাণে বর্ণিত রয়েছে যে - এই দুজনার তপস্যাতে খুশি হয়ে ভগবান শিব কেদারনাথে দর্শন দিয়েছিলেন।
তো চলুন বন্ধুরা লেখাটির মুখ্য বিষয়ের সঙ্গে জুড়ে এই যাত্রার সুফল গুলি সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
পুরাণে বর্ণিত রয়েছে যে, চারধাম যাত্রা করলে ব্যক্তির সকল প্রকার পাপ নষ্ট হয়। এরই সাথে এটাও বলা হয় যে, এই যাত্রাতে মৃত্যু প্রাপ্ত হওয়া কোনো অশুভ সংকেত নয়। বরং , এটি একটি শুভসংকেত। যা এটা বলে দেয় যে, সেই ব্যাক্তি এখন জীবন মরণের প্রক্রিয়া থেকে মুক্তি পেয়েছে।
বন্ধুরা বদ্রিনাথ সম্পর্কে একটি প্রচলিত কাহিনী সম্ভবত আপনিও শুনেছেন।
" যে যায় বদ্রী ,
সে না আসে উদরী । "
অর্থাৎ যে ব্যক্তি বদ্রীনাথ দর্শন করে নেয় তাকে পুনরায় উদরে অর্থাৎ গর্ভে আসতে হয় না।
শি্ব পুরাণ অনুসারে কেদার তীর্থস্থানে পৌঁছে সেখানে অবস্থিত কেদার জ্যোতির্লিঙ্গের পূজা করার পর যেই মানুষ সেখানে জলপান করেন তার পুনর্জন্ম কখনোই হয় না।
তো বন্ধুরা আশাকরি আজকের এই লেখাটি পড়ে আপনি এটা সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পেরেছেন যে, চারধাম যাত্রা সময় যদি কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হয় তাহলে তাঁর সঙ্গে কি হয়। এরই সাথে শেষ করতে করতে আপনাদের একটি বিষয় বলে দেই যে, যেই মানুষ চার ধামের যাত্রা করে তার জীবনে অনুভব এর বিস্তার হয়। আর তার বিচার ও চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এরই সাথে সেই ব্যক্তি নিজের জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে স্পষ্ট হতে পারে।
বন্ধুরা বেশিরভাগ সময় মানুষ নিজের জীবনের অন্তিম পর্যায়ে এরকম তীর্থযাত্রায় গিয়ে থাকেন। কিন্তু, যদি কারো যুব অবস্থায় এই সৌভাগ্য প্রাপ্ত হয় তাহলে এটা মেনে নিতে হবে যে, তার জীবনের সবকিছুই লাভ হয়েছে ও তার জীবন ধন্য হয়েছে।
বন্ধুরা আশাকরি লেখাটি পড়ে আপনারা সম্বৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।।
আরো পড়ুনঃ- আচার্য চানক্য অনুযায়ী- কোন ৩টি সময় নিজের স্ত্রীকে কখনো একা ছাড়তে নেই?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা