নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
"হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ ;
কৃষ্ণ কৃষ্ণ, হরে হরে ;
হরে রাম, হরে রাম ;
রাম রাম, হরে হরে।।"
বন্ধুরা আজকে আমরা এই লেখার মাধ্যমে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যেমন সুখ আসে ঠিক তেমনই আসে দুঃখ। ভালো সময় যেমন আমাদের জীবনে প্রবেশ করে ঠিক তেমনই খারাপ সময়ও চক্রাকারে আমাদের জীবনে আবর্তিত হয় কিন্তু একটি বিষয় আমরা সবাই জানি যে বিপদ কখনও বলে কয়ে আসেনা। মুহূর্তের মধ্যে এমন বিপদ আমাদের সামনে ঘনিয়ে আসে যা আমাদেরকে স্তম্ভিত করে দেয়, তখন আমাদের মনে হয় এই বিপদের কথা যদি আগে আমরা জানতে পারতাম তাহলে হয়তো এর সম্পর্কে সাবধান হয়ে যেতে পারতাম এই বিপদকে আমরা এড়িয়ে যেতে পারতাম।
বন্ধুরা বিপদ হঠাৎ করে এলেও প্রকৃতি কিন্তু আমাদের সেই সতর্কবার্তা অনেক আগেই দিয়ে দেয়। আমরা সেই বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব প্রদান করি না যে কারণে হঠাৎ করেই বিপদ আমাদের সামনে চলে আসে। আমাদের প্রাচীন শাস্ত্র অনুযায়ী বিপদ আসার আগেই প্রকৃতি আমাদের বেশ কিছু সংকেত প্রদান করে থাকে আর প্রকৃতির এই সংকেত আসলে ভগবানেরই সংকেত যা আপনাকে সাবধান করিয়ে দিচ্ছে আর ভগবানের দেওয়া এই সংকেত গুলোকে আমরা যদি কিছুটা গুরুত্ব প্রদান করি তাহলে হয়তো আমরা এই আগাম বিপদের হাত থেকে অনেকটাই রক্ষা পেতে সক্ষম হব। এই বিপদ হতে পারে প্রিয়জনের মৃত্যু অথবা আর্থিক ক্ষতি অথবা শারীরিক অসুস্থতা বা অন্য কোনো ধরনের বিপদ। শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা অনুযায়ী যখন অশুভ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পায় তখনই এই বিপদ ঘনিয়ে আসে আর তখনই বেশ কিছু সংকেত বিপদের পূর্বে পরিলক্ষিত হয় তাই বন্ধুরা অনুগ্রহ করে লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন, আশা করি এই লেখা থেকে আপনি অনেকখানি উপকৃত হবেন।
বন্ধুরা সবার প্রথমে যে বিষয়টির কথা বলব তা হলো, আমাদের প্রত্যেকেরই কর্মসূত্রে বাড়ির বাইরে বের হতে হয়, এইরকম যদি কোনো সময় অর্থাৎ যখন আপনি কোনো দিন, বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন ঠিক সেই সময় যদি আপনার মাথার ওপর দিয়ে কোনো কাক উড়ে চলে যায় এবং সেই কাক যদি আপনার গায়ে কোনোরূপ কোনো ময়লা ফেলে তাহলে তৎক্ষণাৎ আপনি যাত্রা ভঙ্গ করুন। আমাদের শাস্ত্র অনুযায়ী এই বিষয়টি কিন্তু বিপদের সংকেত, আপনি যে কাজটি করতে যাচ্ছেন সেই কাজটি অসম্পন্ন হওয়ার সংকেত, তাই এই সময় অতি অবশ্যই আপনি আপনার যাত্রা স্থগিত রাখুন। কিছুক্ষণ স্থগিত রাখার পর আপনি আকাশের দিকে মুখ তুলে করজোরে ভগবানের কাছে মনে মনে প্রার্থনা করুন যে, আপনার যাত্রা যেন শুভ হয়। এইভাবে প্রার্থনা করার পরেই আপনি যাত্রা শুরু করবেন।
দ্বিতীয় যে বিষয়টির কথা বলব তা হলো, যদি পূজার সময় হঠাৎ করে ঠাকুরের প্রদীপ নিভে যায় অথবা কোনো ঠাকুর দেবতার ছবি বা মূর্তি হঠাৎ করেই পড়ে যায় এবং ভেঙে যায়, এই বিষয়টি কিন্তু অশুভ শক্তির প্রভাব কে নির্দেশ করে এই বিষয়টি যদি আপনার জীবনে বার বার ঘটে থাকে তাহলে একটা ভয়ংকর বিপদের বার্তা প্রকৃতি আপনাকে প্রদান করছে। তাই এই সময় অতিঅবশ্যই সচেতন হন, আপনার আশেপাশে কি ঘটছে সেগুলি পর্যবেক্ষণ করুন এবং ঠাকুর পূজোর সময় কখনোই মন অন্যদিকে নিবিষ্ট করবেন না।
তৃতীয় যে বিষয়টির কথা বলব তা হলো, অনেক সময়ই এই বিষয়টি হয়তো আপনারা দেখতে পান যে, কোনো একটি স্থানে অথবা কোনো একটি বাড়ির চারপাশে অনেকগুলি কাক একসঙ্গে ঘোরাফেরা করছে এবং তারা সশব্দে চিৎকার করছে। এই বিষয়টি কিন্তু আগাম বিপদের সংকেত প্রদান করে থাকে কোনো প্রিয়জনের মৃত্যু অথবা কোনো দুর্ঘটনার খবর। এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে প্রকৃতি আমাদের প্রদান করছে।
চতুর্থত আমরা জানি যে, পেঁচা হল একটি নিশাচর প্রাণী তাকে সাধারণত আমরা রাতের বেলায় দেখে থাকি, যদি কোনো অবস্থাতে দিনের বেলায় পেঁচা দৃশ্যমান হয় তা অশুভ হিসেবে মনে করা হয় এবং সেই প্যাঁচা যদি মাথার ওপর ঘুরতে থাকে তাহলে এই বিষয়টি এক মারাত্মক বিপদের সংকেত প্রদান করে থাকে। কোন প্রিয়জনের মৃত্যু অথবা বিরাট আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে আর এরকমটা দেখা গেলে অবশ্যই মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রটি ১০৮ বার প্রত্যেক সোমবার দিন জপ করবেন।
পঞ্চমত শাস্ত্র অনুযায়ী, কোনো অসুস্থ ব্যক্তি যদি কোনো প্রয়াত প্রিয়জনের নাম ধরে ডাকতে শুরু করেন, তাহলে এই বিষয়টি বুঝে নিতে হবে যে, ওই ব্যক্তির মৃত্যু আসন্ন এবং সেই অসুস্থ ব্যক্তির পাশে যদি কালো বেড়াল ঘোরাফেরা করে অথবা একদৃষ্টিতে কোনো কালো কাক কারো প্রতি যদি তাকিয়ে থাকে তাহলে এই বিষয়টি সংকেত প্রদান করে যে সেই ব্যক্তির জীবনে একটি ঘোর বিপদ ঘনিয়ে আসছে।
ষষ্ঠত, ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র অনুযায়ী বাড়িতে যদি হঠাৎ করে কাঁচ ভেঙে যায় এবং বারবারই কোনো কারন ছাড়া এই ধরনের যদি কাঁচ বা আয়না ভেঙে যায় তাহলে কিন্তু এই বিষয়টিও বিপদের সংকেত প্রদান করছে। অর্থাৎ আপনি ধরুন নতুন আয়না কিনে আনলেন অথবা কোন কাঁচ কিনে আনলেন বা কাঁচের পাত্র কিনে আনলেন হঠাৎ করেই কোনো কারণবশতই ভেঙে গেল তাহলে অবশ্যই সাবধান ও সচেতন হয়ে যান। এই বিষয়টি ইঙ্গিত প্রদান করে যে গৃহে অশুভ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, তার প্রতিকার অতি অবশ্যই করা প্রয়োজন এবং সর্বশেষে বলবো এই প্রকৃতিতে অনেক প্রাণী এমন রয়েছে যারা বিপদের আগাম সংকেত পেয়ে থাকে, তার মধ্যে এক অন্যতম প্রাণী হল, কুকুর। বাড়িতে যদি কারো মৃত্যু আসন্ন থাকে বা কোনো ভয়ংকর বিপদ থাকে, তাহলে পোষা কুকুর অস্বাভাবিক আচরণ করে থাকে। তারা জানালার নিচে দাঁড়িয়ে মাথা নত করে চেঁচায়, এই বিষয়টি যদি কখনো দেখতে পান তাহলে এই বিষয়টি কিন্তু ভয়ঙ্কর বিপদের সংকেত প্রদান করে, আর এই বিপদ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হল ভগবান শ্রী হরিকে স্মরণ করা কারন কথায় বলে, 'রাখে হরি মারে কে, মারে হরি রাখে কে', তাই যখনই কোনোরূপ কোনো বিপদে পড়বেন ভগবান শ্রী হরি কে স্মরণ করবেন তার মহা মন্ত্রটি জপ করবেন, "হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে , হরে রাম হরে রাম, রাম রাম হরে হরে", সমস্ত প্রকার বিপদ আপনি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবেন।
শ্রী হরির কৃপায় আপনার পরিবার সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধময় হয়ে উঠুক এই কামনা করে আজকের লেখাটি এখানেই শেষ করলাম।
আরো পরুন - কেমন হয়ে থাকে - যমলোক !? || হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী যমলোকের বর্ণনা CLICK HERE
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা