নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
বন্ধুরা বর্তমানে আমরা যে কলি যুগে বসবাস করছি তার ভবিষ্যৎ জানার জন্য বিজ্ঞান নানান রকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আপনি এটি জেনে অবাক হবেন যে, এই যুগে শুরুর প্রথমে আমাদের ধর্মগ্রন্থতে অনেক ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছে, এই যুগ সম্পর্কে - যা আজকে সত্য বলে প্রমাণ হচ্ছে। হ্যাঁ বন্ধুরা, আমাদের ধর্ম শাস্ত্র তে কলিযুগের অন্ত সম্পর্কে অনেক ধরনের ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছে। এমনকি মানুষের জন্ম থেকে শুরু করে তার আচার-ব্যবহার ও তার ধর্মপরায়ণতা সম্পর্কে অনেক ধরনের কথাই আমাদের এই ধর্মশাস্ত্র তে উল্লেখ রয়েছে। আর আজকের এই বিশেষ লেখাটির মাধ্যমে এরকমই সত্যি হওয়া কিছু ভবিষ্যৎবাণী সম্পর্কে আপনাদের জানাতে চলেছি, যা ১০০০ বছর আগে আমাদের ধার্মিক ভগবত পুরাণে বর্ণনা করা হয়েছে।
বন্ধুরা আমরা আজকের এই যুগে যা দেখছি তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে দিন দিন ধর্ম লোপ পাচ্ছে। মানুষ শুধু বর্তমানে উপরে উপরে দেখানোর জন্য অনেক কিছুই করছে। শুধু তাই নয় কিছু কিছু মানুষ আবার ধর্ম শাস্ত্র তে লেখা কথাগুলোর উপরেও উল্টে প্রশ্ন করছে। এমনকি বিজ্ঞানের মত ধর্ম শাস্ত্র তে লেখা সকল কথাগুলোর প্রমাণ চাইছে বর্তমান যুগের মানুষ। এছাড়াও live in relationship-এর মতো নতুন খেয়াল ও নিজেকে জ্ঞানী মনে করা ভন্ড সাধুর রমরমা চলছে বর্তমান যুগে। বন্ধুরা আপনাদের বলে দেই যে এই সকল বিষয় সম্পর্কেই হিন্দু ধর্মগ্রন্থ তে আগে থেকেই লেখা রয়েছে। যেইভাবে বর্তমান যুগের মানুষের আচার-ব্যবহার ও একজন মানুষের অন্যজনার প্রতি দেখার নজর হয়ে গেছে সেই সমস্ত কিছুর উল্লেখই আমাদের ধর্মগ্রন্থ তে পাওয়া যায়।
বন্ধুরা সবার প্রথমে আলোচনা করা যাক ১৮ টি পুরাণের মধ্যে একটি শ্রীমৎ ভগবত পুরাণের। যেখানে লেখা রয়েছে কলিযুগের ন্যায় কেবল 'শক্তি' অর্থাৎ 'বলের' আধারের উপর লাগু হবে। ধর্ম ও ন্যায়ের কথা অন্যান্য যুগের মত কলিযুগে প্রাসঙ্গিক বলে গণ্য হবে না। যেই মানুষ গরীব হবে ও যেই মানুষ ঘুষ দিতে অসামর্থ্য হবে সে কখনো উচিত ন্যায় পাবে না। যেই মানুষের কাছে যত ধন থাকবে সে ততই গুণবান ও চালাক বলে গণ্য হবে। আর চালাক ও স্বার্থবান লোকই এই যুগে বিদ্বান বলে গণ্য হবে। শুধু তাই নয় কলিযুগের ব্রাহ্মণ শুধুমাত্র পৈতে ধারণ করে, ওই পৈতের বলেই নিজেকে বিদ্বান বলে দাবি করবে। এছাড়াও বর্তমানে আপনি এবং আমি যে বিষয়টিকে live in relationship-বলে থাকি, সেই পাপের ভবিষ্যৎবাণী আগেই পুরানে করা হয়েছিল। শ্রীমদ্ভগবত পুরাণে লেখা রয়েছে যে, কলিযুগে নারী ও পুরুষ বিবাহ না করেই একে অপরের সঙ্গে থাকতে কোনো দ্বিধাবোধ করবে না। আর বন্ধুরা আপনি হয়তো পুরাণের এই কথাটি কে সত্য হতে অবশ্যই দেখেছেন।
বন্ধুরা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে কথাটি এই পুরাণে আলোচনা করা হয়েছে তা হলো মানুষের বয়স নিয়ে। এতে লেখা রয়েছে কলিযুগে মানুষের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে সীমিত থাকবে। হতে পারে এটা শুনে আপনি অবাক হচ্ছেন, আপনার বিশ্বাস হচ্ছে না। কিন্তু, একটু ভাবুন সত্য যুগ, দ্বাপর যুগ ও ত্রেতা যুগে কেমন করে ঋষি মুনিরা দীর্ঘদিন যাবত বেঁচে থাকতেন ও তাদের নিজস্ব তপস্যা করতে থাকতেন। ঋষি মুনিদের সাথে সাথেই সাধারণ মানুষের জীবনও প্রায় ১০০ বছর ও তার অধিক হত, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা কমতে থাকে। আপনার যদি মনে থেকে থাকে তাহলে আপনি দেখবেন যে, বিংশ শতাব্দীতেই এরকম অনেক মানুষই ছিলেন যারা ১০০ বছর ও তার অধিক বেঁচে ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে এমন মানুষ খুব কমই দেখা যায়। বর্তমান যুগে মানুষের আয়ু কাল ৬০-৭০ বছর পর্যন্তই ধরা হয়। এখন সবে মাত্র কলিযুগের ৫০০০ বছরই কেটেছে। এমত অবস্থায় ৩ লক্ষ ৯৬ হাজার বছর অতিক্রম হতে হতে এই কথাগুলোও সত্য হবে যে, মানুষের আয়ু কাল ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে সীমিত হবে।
বন্ধুরা কলিযুগের মানুষেরা নানান রকমের রোগে আক্রান্ত থাকবে ও কোনো সময় সুখী থাকতে পারবে না। এছাড়াও আগে যেমন মানুষেরা নিজেদের মাতা পিতাকে সম্মান করতো কলি যুগে আর সেমনটা হবে না। এই যুগে মানুষ মাতা পিতাকে অসম্মান করবে, তাদের নিন্দা করবে। এমনকি নদী ও পাথরকে পূজা করলেও মাতা পিতাকে সম্মান করবে না। মানুষের লক্ষ্য সমাজের কল্যাণ নয় বরং শুধুমাত্র নিজের পেট ভরা হবে। শারীরিক সুন্দরতাই সবথেকে বড় হবে, মানুষ ভেতর থেকে আরেকটি মানুষকে জানার বদলে শুধুমাত্র শারীরিক সুন্দরতার ভিত্তিতেই অন্য মানুষকে ভালো ভাবতে শুরু করবে। মানুষদের প্রকৃতির বিমুখ হওয়ার পরিনাম এই হবে যে, কখনো অত্যন্ত খরা ; আবার কখনো অতিবৃষ্টি দেখা দেবে। পৃথিবীর কোন অংশে মানুষ বন্যায় ডুবে মারা যাবে আবার অন্য জায়গায় কোন কোন মানুষ জল না পেয়ে মারা যাবে। শুধু তাই নয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন - বন্যা, খরা প্রভৃতি কলিযুগের বিনাশের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আর কিছুকাল ধরে বন্ধুরা আমরা এটাই লক্ষ্য করছি যে কোথাও একটু বৃষ্টি হলেই সেখানে বন্যা প্লাবিত হয়ে যায়। এ থেকেই বন্ধুরা বোঝা যাচ্ছে কলিযুগে সম্পর্কে করা আমাদের ধর্মগ্রন্থের ভবিষ্যৎবাণী তা ধীরে ধীরে কিন্তু সত্যি হতে চলেছে। বন্ধুরা আপনারা হয়তো এটাও লক্ষ্য করেছেন বর্তমানে বেশ কিছু কৃষক তাদের জমিতে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ফসল ফলাতে পারেনি যে কারণে অনেক কৃষক আত্মহত্যা পর্যন্ত করে নেয়।
বন্ধুরা সব মিলিয়ে আমাদের স্বাস্থ্যে বলা হয়েছে পৃথিবীতে ধর্ম লোপ পাবে। মানুষ ধর্মকে মন থেকে মানার পরিবর্তে শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য ধর্মীয় কার্যকলাপ গুলি করবে। এমনকি পন্ডিতের সম্মান থেকে ভগবানের পূজা পর্যন্ত মানুষ লোক দেখানোর জন্যই করবে। নিজের লাভের জন্য মানুষ সবকিছু করতেই রাজি হয়ে যাবে। এমনকি কলিযুগের অন্তের সময় মানুষ একে অপরের হত্যা করতেও পিছপা নেবে না।
বন্ধুরা ভগবত পুরাণ ছাড়াও রামচরিত মাণষেও কলি যুগ সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে কলিযুগের মানুষ কেমন ধরনের আচার ব্যবহার করবে। তুলসীদাস রামচরিত মাণষে লিখেছেন, কলিযুগে যে মানুষ বুদ্ধি ও কৌশল খাটিয়ে কাজ করবে তাকেই সত্য বলে মেনে নেয়া হবে। এমনকি যেই মানুষের যা মন হবে সে সেই পথ অনুযায়ী চলবে। সেই রাস্তাটি যতই খারাপ হোক না কেন।
তো বন্ধুরা, এই ছিল কলিযুগের বর্ণনা যা আমাদের ধর্মগ্রন্থে পূর্বেই আলোচনা করা রয়েছে। আশা করি বন্ধুরা আজকের লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন এবং কলিযুগের এই বর্ণনাগুলো বর্তমান বাস্তবের সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন, আজ এখানেই শেষ করলাম। নমস্কার, ধন্যবাদ।। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
আরো পড়ুন:- মৃত্যুর পরে আপনি কোন রূপে জন্ম নেবেন? || মানুষ্য নাকি ভূত ! || What Form Will You Take after Rebirth? CLICK HERE
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা