Breaking

Search Content

Follow Us

শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২

এমন কি ঘটল যখন কর্ণের আত্মা - পঞ্চপান্ডবের সামনে এলো? || Karna SOUL meet Pandava's



নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু। 


বন্ধুরা, মহাভারতের দানবীর কর্ণ এমন এক পাত্র ছিলেন যার সাথে জন্মের পর থেকেই অন্যায় হওয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল। ক্ষত্রিয় রাজবংশের জন্ম হওয়া সত্ত্বেও তাকে আজীবন সুত পুত্র বলে মনে করা হয়েছে। যার কারনে তাকে বহুবার অপমানিত হতে হয়েছে। কিন্তু, আপনি কি জানেন মহাভারতে বীর গতি প্রাপ্ত হওয়ার পর তাঁর আত্মা পাণ্ডবদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। কর্ণের আত্মাকে পান্ডবরা কি বললেন - সেই বিষয়টি সম্পর্কে জানাবো আজকে আপনাদের। 


বন্ধুরা মহাভারতের যুদ্ধ ১৮ দিন পর্যন্ত চলেছিল। এই যুদ্ধের ১৭ তম দিন কৌরবদের সেনাপতি কর্ণ বীরগতি প্রাপ্ত হয়েছিল। বলে দেই যে, ভীষ্ম পিতামহ ও গুরু দোনাচার্যের মৃত্যুর পরে কর্ণকে কৌরবদের সেনা দলের নেতৃত্ব দিতে বলা হয়েছিল। কর্ণ পাণ্ডবদের সেনাকে ধ্বংস করে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনই তার সামনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের রথ নিয়ে হাজির হলেন। এটাই ছিল সেই সময় যখন যুদ্ধ ভূমিতে কর্ণ ও অর্জুনের সামনাসামনি যুদ্ধ হয়েছিল। বলে দেই যে, এই দুজন যোদ্ধা মহাভারতের প্রচন্ড শক্তিশালী যোদ্ধা ছিল। কিন্তু, ভগবান পরশুরামের দেওয়া অভিশাপের জন্য কর্ণ অর্জুনের সঙ্গে সামনাসামনি যুদ্ধের সময় তার সকল যুদ্ধ নীতি গুলি ভুলে যান। শুধু তাই নয়, কর্ণ তার দিব্যিও অস্ত্র গুলি চালানোর মন্ত্রও ভুলে যান। এমত অবস্থায় এই বিষয়টির লাভ উঠিয়ে ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা অনুযায়ী অর্জুন - কর্ণকে বধ করেন। সেখানেই অন্যদিকে মাতা কুন্তী কর্নের বধের জন্য নিজেকে দায়ী ভাবতে থাকে। তখন মাতা কুন্তী তার পুত্র কর্ণের শেষ কৃতকার্য সম্পন্ন করতে চাচ্ছিলেন। তখন তিনি শ্রীকৃষ্ণের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন কিভাবে তিনি এটি সম্পন্ন করবেন? উত্তরে শ্রীকৃষ্ণ বললেন, এখন পান্ডবদের কাছে আর কর্ণের জন্ম সংক্রান্ত ঘটনাটি লুকিয়ে রাখা ঠিক হবে না। সবশেষে যখন মাতা কুন্তী তার চোখের জল ঝরাতে ঝরাতে পান্ডবদের কাছে গিয়ে বললেন কর্ণের শেষ কৃতকার্য সম্পন্ন করতে, তখন পাণ্ডবরা সবাই অবাক হলেন। সেই সময় মাতা কুন্তী পান্ডবদের নিজের জীবনের সবথেকে বড় রহস্য বললেন, কর্ণ তার প্রথম সন্তান ছিল। এই শুনে সকল পান্ডবদের চোখ দিয়ে জল ঝরে এলো। তাদের পায়ের নিচ থেকে যেন মাটি সরে গেল। মাতা কুন্তীর মুখে সকল সত্যি শোনার পর যুধিষ্ঠির অত্যন্ত দুঃখী হয়। এরপর যুধিষ্ঠির মাতা কুন্তীকে বলেন, আপনি এত বড় একটা সত্যি লুকিয়ে আমাদের সকলকে জ্যৈষ্ঠ ভ্রাতৃত্বের হত্যার পাপে দোষী করলেন। এমত অবস্থায় যুধিষ্ঠির ক্রোধের বসে এসে সমস্ত নারী জাতিকে অভিশাপ দিয়ে বলেন - 


" আমি আজ এখন সমস্ত নারী জাতিকে অভিশাপ দিচ্ছি  যে, কোনো নারী নিজে চাইতেও কোনো কথা তার হৃদয়ে লুকিয়ে রাখতে পারবে না। "


আর বন্ধুরা ধর্মরাজ্ যুধিষ্ঠির এই অভিশাপের কারণেই বর্তমান যুগে কোনো নারী তার কোনো কথা নিজের পেটের মধ্যে লুকিয়ে রাখতে পারে না।


সেখানেই শ্রীকৃষ্ণ ও মাতা কুন্তীর বলার ফলে পাণ্ডবেরা কর্ণের অন্তিম সংস্কার করেন। তখনই আকাশে অঙ্গরাজ কর্ণের আত্মা প্রকট হয়। এই দেখে মাতা কুন্তী কর্নের কাছে ক্ষমা চান। এরই সাথেই পঞ্চপান্ডবেরাও নিজের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতৃত্ব হত্যার জন্য কর্ণের কাছে ক্ষমা চান।


বন্ধুরা আপনাদের বলে রাখি, কর্ণের মৃত্যুর পর তার অন্তিম সংস্কার ভূমিতে করা হয়নি। কারণ তিনি শ্রীকৃষ্ণের কাছে বর চেয়েছিলেন যে, আমার মৃত্যুর পর আমার দেহ এমন জায়গায় অন্তিম সংস্কার করতে হবে যেখানে কোনো পাপ হয়নি‌। সম্পূর্ণ জগতে এরকম স্থান খোঁজার চেষ্টা করা হলো কিন্তু কোথাও এরকম স্থান পাওয়া গেল না। শেষমেষ শ্রীকৃষ্ণের হাতই এমন একটি জায়গা ছিল যেখানে কোনো পাপ হয়নি। এই কারণে কর্ণের অন্তিম সংস্কার কৃষ্ণের হাতে দুর্যোধনের সাহায্যে করা হয়েছিল।


বন্ধুরা মাতা কুন্তি নিজের তপস্যার মাধ্যমে ঋষি দুর্বাসাকে প্রসন্ন করেন। যার ফলে ঋষি তাকে একটি মন্ত্র প্রদান করেন এবং বর হিসেবে দেন। ঋষি বলেন এই মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে যেই দেবতাকে স্মরণ করা হবে সেই দেবতা থেকে পুত্র সন্তান উৎপন্ন হবে। মাতা কুন্তী এই মন্ত্রটি পরীক্ষা করার জন্য সূর্যদেবকে আহবান করেন সবার প্রথমে। যার ফলস্বরূপ সূর্যপুত্র কর্ণের জন্ম হয়। কিন্তু, বিবাহের পূর্বেই সন্তান - এই বিষয়টি ভেবে লোকলজ্জায় কুন্তী সেই সন্তানটিকে নদীর জলে ভাসিয়ে দেন। কিন্তু, মাতা কুন্তী সবসময়ই এই পুত্রের মোহতে জর্জরিত থাকতেন। এরপর কুন্তীর বিবাহ রাজা পান্ডুর সঙ্গে হয়, আর সেই মন্ত্র পাঠের মাধ্যমেই মাতা কুন্তীর যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন এবং রাজা পান্ডুর দ্বিতীয় পত্নী মাদ্রির থেকে নকুল ও সহদেব জন্ম নেয়। কিন্তু কুন্তি কখনোই কর্ণের কথা কাউকে জানাননি।


তো বন্ধুরা আপনারা দেখলেন কর্ণের মৃত্যুর পর কিভাবে মাতা কুন্তী তার অন্যান্য সন্তানদের কর্ণের ব্যাপারে আসল সত্য জানালেন। আশা করি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনাদের ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো পড়ুন:- আপনার ভাগ্য কখন ঠিক করা হয়? || জন্মের আগে, নাকি জন্মের পরে ! || Is Your Future Already Decided? CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা