Breaking

Search Content

Follow Us

বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০২২

আপনার ভাগ্য কখন ঠিক করা হয়? || জন্মের আগে, নাকি জন্মের পরে ! || Is Your Future Already Decided?

 


নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু। 


ভবিষ্যৎ কি আগে থেকেই ঠিক থাকে? বন্ধুরা এই প্রশ্নটি সবসময়ই সমালোচনা মূলক রয়ে গিয়েছে। কিছু মানুষ মনে করেন ভবিষ্যৎ আমাদের কর্মের উপর নির্ভরশীল। আমরা যেরকম কর্ম করি তার ভিত্তিতেই আমাদের আসতে চলা কালকের দিনটি নির্ভর করে। আবার অন্যদিকে কিছু মানুষ মনে করেন - আমাদের ভবিষ্যৎ আমাদের ভাগ্যের উপর নির্ভরশীল। তো বন্ধুরা আজকের এই বিশেষ লেখাটিতে আমরা একত্রে মিলে এটি জানার চেষ্টা করব যে, সত্যিই ভবিষ্যৎ কি আগে থেকে ঠিক করা থাকে? নাকি কর্মই আসল, যা আমাদের ভবিষ্যতের ধারা নির্ণয় করে।


বন্ধুরা আকাশবাণী হয়েছিল যে দেবকির অষ্টম পুত্র কংসের বধ করবে। তখন কংস ভাবল যে, অষ্টম পুত্রটি তো তখন আমার বধ করবে যখন আমি তাকে উৎপন্ন হতে দেব। এই চিন্তা ভাবনার সঙ্গে কংস দেবকির পুত্র গুলি জন্মানোর সাথে সাথেই তাদেরকে মেরে ফেলতে থাকে। এইভাবে দেবকির অষ্টম পুত্র যখন জন্ম নেওয়ার সময় হয় তখন সে নাতো খালি জন্ম নেয় বরং সে অর্থাৎ ভগবান কৃষ্ণ স্বয়ং কংসকে বধও করেন। এমনটা এই কারণে হয়েছিল কারণ কংসের ভবিষ্যৎ-এর পরিণতি প্রথম থেকেই নিশ্চিত ছিল। কংসের মৃত্যু কবে হবে, কিভাবে হবে এবং কার হাতে হবে - এগুলি তার জন্মের পূর্বেই লেখা হয়ে গিয়েছিল। শুধু কংসই নয় বরং এই সংসারে জন্ম নেয়া সকল মানুষের ভাগ্য প্রথম থেকেই নিশ্চিত হয়। কোনো মানুষ কবে জন্ম নেবে, তার সঙ্গে কি কি হবে, সে কোন কোন অসুবিধার সম্মুখীন হবে - এই সবকিছুই বিধির বিধান। যাকে কেউ চাইলেও বদলাতে পারবেনা। 


কংস ছাড়াও হিন্দুধর্মে অনেক পৌরাণিক কথায় ও গ্রন্থতে অন্যান্য কিছু মানুষের ভাগ্য আগে থেকেই লিখিত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। যেমন এমনটা প্রথম থেকেই ঠিক ছিল যে - ভগবান রাম, মাতা সীতা ও লক্ষণকে বনবাসে যেতে হবে। কারণ শ্রী রামের বনবাসে যাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল শ্রী রামের হাতে রাবণের বধ হওয়া। আপনি ভেবে দেখেন যদি এমনটা না হতো তাহলে শ্রীরামের হাতে রাবণের বধ কি করে সম্ভব হতো !


বন্ধুরা এই বিষয়টি কি আপনি এভাবেও বুঝতে পারেন যে এই পুরো সংসারটি একটি নাটকের সমান। যার মূল কথা ভগবান আগে থেকেই লিখে রেখেছে। আমরা শুধুমাত্র এই নাটকের একটি ছোট পাঠ। যাদের কোনো না কোনো উদ্দেশ্যে এই সংসারে জন্ম হয়েছে। বন্ধুরা আবার ভবিষ্যৎ কে ভাগ্যের সঙ্গে জুড়েও দেখা যায়। যা অনেকাংশে ঠিক, কিন্তু আপনার এই ভাগ্য আপনার কর্মের উপর অবশ্যই নির্ভর করে। সেই কাহিনীটি আপনি শুনেছেন হয়তো যে, যেমন কাটাবে তেমনি হবে। ঠিক সেরকমই যদি আপনি ভালো কাজ করেন তাহলে আপনার সঙ্গে ভবিষ্যতে ভালোই হয়। কিন্তু যদি আপনি আপনার জীবনে সব সময় খারাপ কাজ থাকেন, তাহলে আপনার ভাগ্য খারাপ হবেই। অর্থাৎ আপনার আসতে চলা ভবিষ্যৎ আপনার কর্মের মত খারাপই হবে। এই কারণে আমাদের হিন্দু ধর্ম শাস্ত্র তে সবসময় ভালো ও সৎ কর্ম করার কথা বলা হয়েছে। কেননা এই ভালো ও সৎকর্মই আমাদের জন্ম মৃত্যু চক্র থেকে মুক্তি দিতে পারে। নচেৎ খারাপকর্ম করা ব্যক্তির ভগবানের চরণেও ঠাঁই মেলে না। শুধু তাই নয় তুলসীদাসজি নিজে লিখেছেন, কর্মই প্রধান। যে যেরকম ধরনের কর্ম করে, সে সেই রকমই ফল পায়।


বন্ধুরা, যখন অর্জুনের হাতে কর্ণের বধ হল তখন অর্জুন বলেছিল, হে মাধব ! আমার হাত কাঁপছিল । তখন আপনি আমাকে বুঝিয়েছিলেন আমি একটি সৎ আত্মাকে তার শরীর থেকে মুক্ত করছি। কিন্তু, এটা কি হলো? আপনি তো আমার মাথার উপর নিজেরই জ্যেষ্ঠের হত্যার একটি বড় কলঙ্ক লাগিয়ে দিলেন ! তখন শ্রীকৃষ্ণ বললেন, মানুষ্যকে প্রারব্ধ দেওয়ার আমি কে? মানুষকে প্রারব্ধ তার কর্ম দেয়। একটি বীজ থেকে ভালো একটি বৃক্ষ জন্মাবে অথবা সেই বীজটি শুকিয়ে কোনো গাছই হবে না - এই বিষয়টি তো পুরো ওই বীজ উপর নির্ভর করে, নিজের ধারা বেছে নিয়ে। এরপর শ্রীকৃষ্ণ বলেন, হে পার্থ ! তুমি ধর্মের পথ বেছে নিয়েছো, আর কর্ণ অধর্মের পথ - এমত অবস্থায় আমি কি করতাম ! তুমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছো আর অঙ্গরাজ কর্ণ সবকিছু জেনেও চুপ রয়েছে। আমি অনেকবার কর্ণকে তার পক্ষ বদলাতে বলেছিলাম। এবারই সে দুর্যোধনের ও তার মিত্রতার পক্ষ নেয়। এমত অবস্থায় তুমি বলো আমি কি করতাম ! 


বন্ধুরা, গীতার এই অধ্যায় থেকে আমরা এটা বুঝতে পারছি যে ভগবান আমাদের অনেকবার ভালো কর্ম করার সুযোগ দেয়। কিন্তু, আমরা তেমনটা করি না। যার পরে আমরা আমাদের খারাপ ভাগ্যের জন্য কান্না করতে থাকি। তো বন্ধুরা, সবশেষে এটাই বলব ভবিষ্যৎ আগে থেকেই লেখা থাকে। কিন্তু, ভবিষ্যতের সম্পর্কে লেখা আমাদের কর্মের উপরই নির্ভর করে। আমাদের কর্ম যদি ভাল হয় তাহলে আমাদের আসতে চলা ভবিষ্যৎ-ও ভালো হবে। অন্যথায় আমরা যদি খারাপ কর্ম করে থাকি তাহলে আমাদের খারাপ কর্মের ফল ভোগ করা আবশ্যক। এই কারণেই বন্ধুরা সব সময় ভালো কর্ম করুন, সৎ কর্ম করুন। আর সর্বদা ভগবানের স্মরণ করুন। 


আশা করি বন্ধুরা লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আজ এখানেই শেষ করলাম। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। নমস্কার, ধন্যবাদ।। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।


আরো পড়ুন:-জেনে নিন পুরাণের ভবিষ্যৎবাণী, কতটা ভয়ানক হবে কলিযুগের অন্ত? || Hindu puran's prediction about Kalyug CLICK HERE

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।

If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.

( Please don't enter any spam link in the comment box.)

Thank You very much.

অমৃত কথা